যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ভায়াগ্রা
আমাদের এক বন্ধুর ফার্মেসি আছে। পাবনা জেলার কাশিনাথপুরে। মার্কেটের ভিতরে, দোকানের সামনে বেশ খানিক টা স্পেস আছে। সেখানে চেয়ার নিয়ে বসা যায়। আড্ডা দেয়া যায়। বাড়িতে গেলে বেশ কিছু সময় সেই আড্ডায় কেটে যায়। সন্ধ্যার পরে কয়েক বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম।
একটা জিনিস চোখে পড়ল। কিছু ক্রেতা সন্ধ্যার পর আসেন। যাদের বয়স ৪০ পেরিয়েছে। তারা কিছুটা উদাস ভঙ্গিতে এসে কাউন্টােরের সামনে দাঁড়ান। বন্ধুটিও নিরাসক্ত মুখে তাদের হাতে ছোট কাগজের প্যাকেট ধরিয়ে দেয়।
এলাকার একজন চাচা, বয়স ৬৫ মত হবে। তিনিও আসলেন, প্যাকেট নিয়ে চলে গেলেন। কৌতূহল বশত বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম ‘ এদের কাছে কি বেচিস ?’
রাত জাগার ট্যাবলেট। ভায়াগ্রার বিকল্প, দামে কম। বন্ধুটি বলল।
চাচাও কি এই ট্যাবলেট নেয় ? ওনার হার্টে তো রিং পরানো। আমি প্রশ্ন করলাম।
হ্যা, নেয়। সেদিন চাচি এসেছিল। অনুরোধ করে বলে গেছে ‘ বাবারে, তোর চাচার কাছে ঐ ঔষধ আর বেচিস না।’ শুধু চাচা নয় অনেক কম বয়সীরাও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট নেয়।
একান্ত সময়ে স্ত্রীকে খুশি করতে যা করবেন।

যৌন সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যান না। ফার্মেসিতে গিয়ে নিজের পছন্দমত যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট কিনেন। এরপর সেবন করেন। রাত জাগেন। এটি এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কিন্তু যারা এভাবে কিনছেন তারা হয়তো জানেনই না প্রকৃত অর্থে তার সমস্যা কী এবং কোথায়।
ইরেকটাল ডিসফাংশন যে ব্যক্তির হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের বয়স কম। তাদের ক্ষেত্রে এর কারণগুলো প্রথমে শনাক্ত করা জরুরি। কেন এমন হচ্ছে শনাক্ত করে চিকিৎসা করতে হবে। স্বল্প সময়ের জন্য ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে ন্যাচারালি যৌন সমস্যা দূর করা যায়। সঠিক লাইফ স্টাইলের মাধ্যমে।
ঔষধ ছাড়াই যেভাবে আজীবন সুস্থ ও সক্ষম থাকবেন।

যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ভায়াগ্রা আবিস্কার কাহিনী
যে ভায়াগ্রার বিকল্প হিসেবে আমরা এগুলো খাচ্ছি সেই ব্লু ম্যাজিক পিল আবিস্কারের এক চমকপ্রদ কাহিনী আছে। পশ্চিমে প্রায় সব মানুষ হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত। ১৯৮৯ সালে ফাইজার ঔষধ কোম্পানি পরিকল্পনা করে বাজারে ব্লাড প্রেসারের ঔষধ আনতে। যাতে বিরাট ব্যবসা করা যায়।
প্রজেক্টের প্রধান করে দেন রসায়নবিদ ডেভিড ব্রাউন কে। যথারীতি ঔষধ তৈরি হয়। ট্রায়াল শুরু হয় Phase 01. ব্রিটেনের ওয়েলস প্রদেশের কয়লা শ্রমিকদের উপর। ১৯৯৩ সাল ফাইজারের কর্তা ব্যাক্তিরা বিরক্ত। ডাকা হল ডেভিড ব্রাউন কে। কোম্পানির মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড নষ্ট করায় ঝারি খেলেন ডেভিড। বলে দেয়া হল কোম্পানি আর একটি পেনিও খরচ করতে রাজি নয়।
আধা পাগল হয়ে ডেভিড ছুটলেন কয়লা শ্রমিক কাছে। যেখানে Phase 01 ট্রায়াল চলছিল। শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করলেন ডেভিড ‘ এই ঔষধ খেয়ে তোমরা কি কোন প্রতিক্রিয়া পেয়েছ ?’
একজন শ্রমিক মুখে কৌতুক পূর্ণ হাসি নিয়ে বলল ‘ প্রতিরাতে আমার যৌনাঙ্গের উত্তেজনা বেড়ে যায়। সাথে সাথে সবাই একসাথে বলে উঠল ‘ আমারও’।
প্রচণ্ড উত্তেজনা নিয়ে ডেভিড ছুটলেন কোম্পানির কর্তা ব্যাক্তিদের কাছে। তারপর Phase 02, Phase 03 সম্পন্ন করে ১৯৯৮ সালে বাজারে আসল ভায়েগ্রা। বাকিটা ইতিহাস।
একটা ঔষধ বাজারজাত করতে ৩ টা ট্রায়ালের প্রয়োজন হয়। এরপর সরকারের অনুমোদন। আর ফার্মেসিতে থেকে ঔষধ সংগ্রহ করেও চলে নিয়মিত মনিটরিং।
আমাদের দেশে এতকিছু লাগে না। ঔষধ কোম্পানিতে সব ভালো মানুষেরা আছেন। সর্বশেষ ইউনুছের সাস্থ্য সংস্কার কমিশন যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তাতে বাজার থেকে ঔষধ নিয়ে মনিটরিংএর কোন ব্যবস্থার কথা বলা হয় নি।
যা করলে স্ত্রী আপনার জন্য উতলা হয়ে থাকবে।
যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট
যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ৫ টি সমস্যা
১. যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়। ,
২. রক্তচাপ বেড়ে যায়। যাদের উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিয়াক সমস্যা আছে তাদের শরীরে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রেশার হাই হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা মৃত্যুও হতে পারে।
৩.ঘাম হয়, বুক ধড়ফড় করে।
৪.মাথা ঝিমঝিম করে, মাথা ভার হয়ে যায়। কিডনি, লিভার, হার্ট বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৫.বমি বমি ভাব হয়, অস্থিরতা দেখা দেয়, মুখ শুকিয়ে যায়। এই ধরনের উপসর্গ দেখা যায় যারা অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ওষুধগুলো খান তাদের ক্ষেত্রে। আবার ডাক্তারের পরামর্শ মত খেলেও এমন টা হয়।
যাদের উচ্চরক্তচাপ থাকে, হার্টের সমস্যা থাকে, হার্টে রিং বসানো থাকে, বাইপাস সার্জারি থাকে তাদেরকে এই ধরনের যৌন উত্তেজক ওষুধ দেওয়া হয় না সাধারণত।
মুড়ির মত ঔষধ খায় সবাই, কি বিপদ ডেকে আনছে !

যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ভায়াগ্রা নিয়ে গল্প
ঘটনাটি একটু পুরনো। ১৯৯৮ সাল সবেমাত্র ভায়েগ্রা বাজারে এসেছে। অক্ষম দের যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট। তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। সংবাদ পত্রে ভাইরাল হয়ে যায় ভায়েগ্রা।
নিউইয়র্কের এক ৬০+ বছর বয়সী ভদ্রলোক এক কৌটা কিনেছেন। তার বউয়ের বয়স ৫০+। তিনি প্রতিরাতে ভায়েগ্রা খান এবং স্ত্রীর নিকট গমন করেন। স্ত্রী খুব বিরক্ত হন। কয়েক দিনের মধ্যে বিষয় টা অসহনীয় হয়ে উঠে স্ত্রীর নিকট।
রাতে যথারীতি স্বামী ভায়েগ্রা খেয়ে বিছানায় যান। স্ত্রী তাকে প্রশ্রয় দেন। হাত বুলাতে থাকেন স্বামীর পুরুষাঙ্গে। স্বামী মনে মনে বেশ খুশি হন। আয়েশে পা দুটো ছড়িয়ে দেন। পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে উঠে। এমন সময় আগে থেকেই বালিশের নিচে রাখা, চাকু দিয়ে গোড়া থেকে পোঁচ দিয়ে অংগ টি কেটে ফেলেন।
ইরেকটাইল ডিজফাংশন নিয়ে বিস্তারিত বলছেন ডাঃ এরিক বারগ।

পুরুষ টি ব্যাথা, যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠেন। মহিলা টেলিফোন তুলে ৯৯৯ এ ফোন করেন। পুলিশ কে বাসার ঠিকানা বলেন। আরও বলেন কর্তিত অংগ রাস্তায় ছুড়ে ফেলে বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
পুলিশ সাথে সাথে ঐ এলাকার সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন। যাতে পুরুষাঙ্গ কোন চাকার নিচে পরে থেতলে না যায়। তারা লোকটিকে বাসা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
উদ্ধারকারী দল ফুতপাথ থেকে অঙ্গটি উদ্ধার করে। ডাক্তার গন অঙ্গটি সঠিক ভাবে জোড়া লাগাতে সক্ষম হন। লোকটাকে বলেন ” আপনি এখন বিপদ মুক্ত “। আপনার পুরুষাঙ্গ টি সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে আগামী তিন বছর আপনি যৌন সঙ্গম করতে পারবেন না।
সেলিম হোসেন – তাং ১৮/০৬/২০২৫ ইং – ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।