অতিথি অভ্যর্থনা আফ্রিকায়
অতিথিকে আন্তরিক ভাবে আপ্যায়ন করতে হয়। এটা সব দেশে সব সামাজিক রীতিতে বিদ্যমান আছে। এতে আত্মীয়তার বন্ধন মজবুত হয়, সম্প্রীতি বাড়ে। কিন্ত আফ্রিকার একটি জনগোষ্ঠীর অতিথি অভ্যর্থনা দেখলে অবাক হতে হয়। কারও কাছে বিষয় টা গা ঘিন ঘিন ব্যাপার। পৃথিবীর আর কোন দেশের জনগোষ্ঠী এমন কাজ করে না। কিভাবে তারা অতিথিদের সেবা করে সেটা আমারা জানব। তবে তার আগে আফ্রিকানদের আরও কিছু চমকপ্রদ সামাজিক প্রথা সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার।
জীবনে সফলতা পেতে পিছনে তাকাবেন না। তাকালে কি হয় জানেন ?

১. যুবক দেড় নৃত্য

২. ঠোঁটে প্লেট লাগানো
৩. ষাঁড়ের পিঠের উপর লাফালাফি খেলা
এই ইথিওপিয়ারই আরেক নৃ গোষ্ঠী হামার। এই গোষ্ঠীর যুবকেরা ষাঁড়ের উপর লাফালাফির প্রদর্শনী আয়োজন করে। ষাড়গুলো লাইন করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। প্রত্যেক যুবককে অন্তত ১৫ টি ষাড়ের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। সফল হলে বুঝতে হবে তার পিতা-মাতা কর্তৃক নির্বাচিত কোন মেয়েকে বিবাহ করতে প্রস্তুত হয়েছে। বড্ড কঠিন পরীক্ষা বটে ! সফল না হলে বিয়ে করতে আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হয় যুবককে। বার বার ফেল করলে কি হয় সে বিষয়ে তথ্য নেই।
কেন স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিলেন স্ত্রী।

৪. থু থুতে ঘৃণা নেই বরং দোয়া
৫. নাচের তালে তালে সম্মোহন

৬. বিয়ের পোশাক
৭. বিয়ের পাত্রীকে কিডন্যাপ

অতিথি অভ্যর্থনা হিম্বাদের মাঝে
আফ্রিকার নামিবিয়ার একটি উপজাতি ‘ হিম্বা’। আধা-যাযাবর উপজাতি বলে বিশ্বের কাছে পরিচিত এরা। এই উপজাতির মানুষেরা মূলত নামিব মরুভূমিতেই বসবাস করেন। এদের জীবনযাত্রা যেমন বৈচিত্র্যে ভরা, তেমনই যৌনতা নিয়েও তাদের রয়েছে অদ্ভুত রীতিনীতি।
যা আধুনিক সমাজের মানুষ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না। সেখানে অতিথি অভ্যর্থনায় নিজের স্ত্রীদের অতিথির সঙ্গে রাত্রিযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়। আর এই কাজে উৎসাহ দেন স্বামী নিজেই।
এমনকি কোনও নারী যদি অতিথির সঙ্গে মিলনে না-ও রাজি হন তবুও তাকে শারীরিক ভাবে স্পর্শ না করেই অতিথির ঘরে রাত কাটাতে হবে। এই রীতিকে তারা বলেন ‘ওকুজেপিসা ওমুকাজেন্দু’, যার সহজ অর্থ অতিথির কাছে নিজের স্ত্রীকে অর্পণ করে দেওয়া। এই প্রথা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। স্বামীদের সম্মতিতেই এই উপজাতির বিবাহিত নারীরা পর্যটক বা ঘুরতে আসা অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন।
ইঁদুর বিড়ালের অবাক করা ঘটনা, ইউনেস্কোর প্রথম হেড অফিসে।

বহুবিবাহ হিম্বাদের একটি প্রচলিত বিষয়। প্রায় প্রত্যেক মহিলাই সতীনের সঙ্গে সংসার করেন। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন বৌ ঘরে আনলে তাকে সাদরে বরণ করে নেন প্রথম স্ত্রী। তেমনি মহিলাদেরও অন্য পুরুষদের সঙ্গে রাত্রী যাপনে বাঁধা দেওয়া হয়না। বরং তাদের সমাজে এটা দোষের কিছু নয়।
অতিথি অভ্যর্থনা এবং পিতা কে
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, হিম্বা পুরুষদের ৭০ শতাংশেরও বেশি এমন এক সন্তানকে লালন-পালন করেন, যার জন্মদাতা পিতা অন্য পুরুষ। হিম্বারা বিয়ের বাইরে সন্তান জন্ম বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখে। স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অপরিচিত ব্যক্তি বা অতিথি ঘরে রাত কাটালে ঘরের বাইরে স্বামীর রাত কাটানোও সেখানকার সুপ্রাচীন রীতি।
হু হু করে বাড়ছে কিডনি রোগী। আজীবন কিডনি সুস্থ রাখার উপায় জেনে নিন।

হিম্বা উপজাতির বিয়ের রীতিও অত্যন্ত প্রথাগত এবং ঐতিহ্যবাহী। যা তাদের সমাজের সংস্কৃতি ও জীবনের অঙ্গ। হিম্বা সমাজে বিয়ের আগে বর ও কনের পরিবারের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সাধারণত, পুরুষকে তার বাগ্দত্তার পরিবারকে কিছু গবাদি পশু (গরু বা ছাগল) প্রদান করতে হয়। যা পুরুষের সামাজিক অবস্থান এবং পরিবারের ক্ষমতা চিহ্নিত করে।
কুনেনে হিম্বা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস করেন। মূলত পশুপালনই তাদের পেশা। জীবনযাপনের জন্য কৃষিনির্ভর হলেও গবাদি পশু পালন তাদের জীবিকার প্রধান উৎস। পশুপালন, রান্না করা, ঘর গোছানো এবং শিশুদের যত্ন নেওয়ার মতো গৃহস্থালির কাজ করে থাকেন পরিবারের মহিলারাই।
আফ্রিকায় বিপজ্জনক সময়, ডকুমেন্টারিতে দেখুন।

নামিবিয়ার বাকি সমাজ থেকে তুলনামূলকভাবে বিচ্ছিন্ন হিম্বারা। তবে পশ্চিমি সভ্যতার আলোয় ধীরে ধীরে শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হচ্ছেন হিম্বাদের নতুন প্রজন্ম। প্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং বিশ্বায়নের প্রভাব পড়ছে হিম্বাদের উপরেও। বিদেশি পর্যটকদের আগমন, যাঁরা হিম্বাদের সংস্কৃতি দেখতে আসেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে হিম্বাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও। হয়তোবা এখন তারা বউ দিয়ে অতিথি অভ্যর্থনার এই প্রথা থেকে খুব দ্রুতই বের হয়ে আসবেন।
সেলিম হোসেন – তাং – ০২/০২/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।