বাড়ছে ডিভোর্স – মন মস্তিষ্কে আরিয়ান আর শাহরুখ খান। Divorce is 3 important issues

ডিভোর্স
বাড়ছে ডিভোর্স – মন মস্তিষ্কে আরিয়ান আর শাহরুখ খান।

রাত ২ঃ১২ মিনিট।

জিনিয়ার ফোনে ঘুম ভাঙে নেহালের।
নেহাল ঃ হ্যালো, কোন উত্তর নেই, জিনিয়ার কান্না শোনা যাচ্ছে।
হ্যালো, হ্যালো ,
এ্যাঁ এ্যাঁ ইঁ ইঁ জিনিয়ার কান্না থামছে না।
উদ্বিগ্ন হয়ে নেহাল জিজ্ঞেস করল ” কি হয়েছে জান, বল ” তোমার কিছু হয়েছে ?
জিনিয়া ঃ না
নেহাল ঃ তাহলে, অ্যান্টির কিছুর হয়েছে ?
জিনিয়া ঃ না
নেহাল ঃ আঙ্কেলের কিছু হয়েছে, বল তারাতারি বল।
জিনিয়া ঃ না
নেহাল ঃ তাহলে
জিনিয়া ঃ আরিয়ান কে ওরা জামিন দেয়নি।
নেহাল ঃ আরিয়ান আবার কে ?
জিনিয়া ঃ শাহরুখ খানের ছেলে।
ডিভোর্স

বাড়ছে ডিভোর্স – মন মস্তিষ্কে আরিয়ান আর শাহরুখ খান।

নেহাল অনেক বড় একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে দাঁতে দাঁতে চেপে বলল ” তাতে তোমার কি ?
জিনিয়া বলল ” ছেলের জামিন না হওয়াতে শাহরুখ খানের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না, মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। আর তখন থেকেই মনে হচ্ছে, আমার বুকের ভিতরে হৃৎপিণ্ড টা নেই। হৃৎপিণ্ড থেকে শরীরে রক্ত পাম্প হচ্ছে না, অক্সিজেন পাচ্ছে না। মনে হচ্ছে শরীরের প্রত্যেক টা কোষ দিয়েই বাইরের বাতাস থেকে অক্সিজেন ঢুকছে, বেশ শীত শীত লাগছে।
নেহাল বলল ” একটা কাজ কর পাতলা কাথা মুরি দিয়ে শুয়ে পর”।
জিনিয়া ঃ বাবু খাইছো ?
নেহাল ঃ খাইছো মানে ?
জিনিয়া ঃ ভুষি খাইছো ?
নেহাল ঃ দেখ জিনিয়া, রাত এখন আড়াইটা বাজে, ফাজলামি করার সময় না।
জিনিয়া ঃ জান আমার, ফাজলামি কিসের ? বিকেলে ফুচকা খাওয়ার সময় তুমি বললেনা, তোমার কষা সমস্যা আছে। তখনই তো তোমাকে বললাম বাসায় ঢোকার আগে দোকান থেকে ইসবগুলের ভুষি কিনে নিও। ভুষি টা খেয়েছ কি না, সেটা জানতে চাচ্ছি।
নেহাল ঃ ও , বুঝতে পেরেছি।
ডিভোর্স
প্রেমের প্রথম দিকে প্রেমিক যুগলেরা এমন অসংলগ্ন কথা বার্তা বলে এবং অযাচিত কাজকর্ম করে। বিজ্ঞানিরা বলছেন এসময় আমাদের শরীরে অক্সিটোসিন নামক এক ধরনের হরমোন নির্গত হয়। একারনেই যুগলেরা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে এবং উল্টা পাল্টা কাজ করে। এসময় উভয়েই একে অপরকে ভাবে অসাধারন মানুষ, কেউ কারও মাঝে কোন দোষ ত্রুটি দেখতে পায়না। সময় গড়াতে থাকে, অক্সিটোসিন নির্গত হওয়া কমতে থাকে, একে অপরের দোষ ত্রুটি দেখতে পায়। অক্সিটোসিন একসময় নির্গত হওয়া বন্ধ হয়। ফ্যান্টাসি পর্ব শেষ হয়। এরপর সম্পর্ক টা বিয়েতে গড়ায়।
বাড়ছে ডিভোর্স – মন মস্তিষ্কে আরিয়ান আর শাহরুখ খান।
পত্র পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী ডিভোর্স এর সংখ্যা আতঙ্কজনক ভাবে বাড়ছে। কারন কি ? সমাজ বিজ্ঞানিরা বলছেন, আমাদের জীবন এখন খুবই স্ট্রেসফুল । চাকরি, ব্যাবসা, সংসার সবখানেই স্ট্রেস। এই চাপ সামলাতে না পেরে, স্বামী, স্ত্রী একে অপরের প্রতি বিরক্ত হচ্ছে, আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, ঘটছে অনাকাঙ্খিত সব ঘটনা এবং ডিভোর্স।

ডিভোর্স

ডিভোর্স সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
(আবু দাউদ : ২১৭৭)। আল্লামা তীবি (রহ.) বলেন, তালাক ইসলামে বৈধ হলেও তা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়, কেননা শয়তানের কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো। সুতরাং শয়তানের প্রিয় কাজ আল্লাহর কাছে কখনো পছন্দনীয় হতে পারে না।
ডিভোর্স দিতে কত দিন সময় লাগে?
চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে যে তারিখে নোটিশ পৌঁছাবে, সেদিন থেকে ৯০ দিন পর বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক কার্যকর হবে। এ নোটিশ পাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করতে হবে।সমঝোতার উদ্যোগ নিতে হবে। নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সালিসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও তালাক কার্যকর বলে গণ্য হবে।
ডিভোর্স
ডিভোর্স এড়াতে উপায় কি ? 
উপায় আছে, স্ত্রীদের ক্ষেত্রে ছেলে বন্ধুদের সাথে খাজুরে আলাপ মেলামেশা বন্ধ করতে। স্বামীকে সঙ্গ দিন। তিনি আপানকে অবশ্যই ফিল করেন।  একই কথা স্বামীদের ক্ষেত্রে, বান্ধবীদের সঙ্গ ত্যাগ করুন। আপনার স্ত্রীই অনেক সুন্দর ভালোভাবে খেয়াল করুন। তার অনেক গুন আছে যা আপনি এখনো আবিস্কার করতে পারেন। কখনো পর্ণ সাইটে যাবেন না। পর্ণ আপনাদের সেক্স লাইফ কে ধ্বংস করে। বাসায় ফিরে কখনো ডিভাইস নিয়ে বা সিনেমা নাটক নিয়ে ব্যস্ত হবেন না। স্ত্রী এবং বাচ্চাদের সময় দিন।
জীবন থেকে স্ট্রেস কমাতে হবে। সুখের খোঁজে রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরাঘুরি করা বন্ধ করতে হবে। রাত ১১ মধ্যে ঘুমুতে যেতে হবে। আর এটা করতে অবশ্যই হেলদি খাবার খেতে হবে। জাঙ্ক ফুড, প্রসেস ফুড, সফট ড্রিঙ্ক ছেড়ে দিতে হবে। সকাল বেলায় ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে ২ টা রোজা রাখতে হবে অথবা ফাস্টিং করতে হবে। উইম হফ বা ডাঃ উইলস ( ৪-৭-৮ ব্রিথিং টেকনিক ) এর মেথড অনুযায়ী শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে।
ডিভোর্স
প্রেমের প্রথম দিকের সেই ফ্যান্টাসি আর কখনোই ফিরে আসবে না, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু জীবনে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা ফিরে আসবে, শান্তি বজায় থাকবে। পরিবারই মানুষের জন্য সবচেয়ে সুন্দর আশ্রয়।
পরিবারে আমরা অনেকেই মনযোগ কমিয়ে দেই। স্ত্রীর প্রতি দায়সারা দায়িত্ব পালন করি। বিষয় টা কেমন, একটি আমেরিকান গল্প বলি। স্ত্রীর প্রতি যৌনতায় কম আগ্রহ বোধ করেন। এমন একজন আমেরিকান গেলেন ডাক্তারের কাছে। তিনি তাকে ভায়েগ্রা খাওয়ার পরামর্শ দিলেন। বললেন – দেহ মিলনের এক ঘণ্টা পূর্বে একটি ভায়েগ্রা ট্যাবলেট খাবেন।
ডিভোর্স
বাসায় ফিরলেন ভদ্রলোক। চাকরিজীবী স্ত্রী বাসায় ফিরবেন। সময় টা হিসাব করলেন। স্ত্রী আগমনের এক ঘণ্টা পূর্বে একটি ভায়েগ্রা খেয়ে নিলেন। কিন্ত কিছুক্ষনের মধ্যে স্ত্রী ফোন করে জানালেন, অফিসে কাজের চাপ, ফিরতে ঘণ্টা তিনেক দেরি হবে।
নিরুপায় ভদ্রলোক তখন ডাক্তারকে ফোন করলেন। ডাক্তার বললেন ” কিন্ত ততক্ষনে তো ভায়াগ্রার কার্যকরীতা থাকবে না। ওষুধ টির কার্যকরীতা এভাবে নষ্ট করা ঠিক হবে না। আপনার বাসায় কোন মেইড ( কাজের মেয়ে ) নেই ? হ্যা আছে, কিন্ত ওর বেলায় তো আমার ভায়েগ্রা দরকার হয় না।
সেলিম হোসেন – ২০/১০/২০২১ – ছবি গুলো প্রতীকী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *