আক্রান্ত
কেন পরকীয়ায় আক্রান্ত হয় মানুষ ? পরকীয়া নিয়ে একটি ফরাসি গল্প শোনাব আপনাদের। সমাজে পরকীয়া মহামারী আকার ধারন করেছে। কেন পরকীয়া এভাবে আমাদের জীবন সংসার নষ্ট করছে। বিষয় টা জানা দরকার। তার আগে আমরা জেনে নিই বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত পরকীয়ার ঘটনা।
মনির হোসেন।
তিনি ছিলেন ধনী ব্যবসায়ী। তার মা ছিলেন নামী ডাক্তার মেহেরুন্নিছা। ৯ ই এপ্রিল ১৯৮৯ এ নিজ স্ত্রী সারমিন হত্যার দায়ে তিনি অভিযুক্ত হন।সারমিনের বাবা ছিলেন নিজাম উদ্দিন আহমেদ বিবিসি সংবাদ দাতা। মনিরের দীর্ঘদিন ধরে আফেয়ার চলছিল হোসনে আরা খুকুর সঙ্গে। খুকু বয়সে মনিরের বড় ছিল।
তখন খবরের কাগজে মনিরের খবর নিয়মিত প্রকাশিত হত, ফলোআপ থাকত। মানুষ পুরো আগ্রহ নিয়ে মনির, সারমিন, খুকু বিষয়ক খবর পড়ত।
২১ শে মে ১৯৯০ এ বিচারে মনির এবং খুকুর ফাঁসি হয়। ১৯৯৩ এ মনিরের ফাঁসি কার্যকর হয়। আপিলে খুকুর হয় যাবজ্জীবন। সময় বদলেছে, পরকীয়ার ব্যপকতা বাড়তে বাড়তে এখন মহামারী রুপ নিয়েছে। এই বিষাক্ত মাদকে আক্রান্ত পরিবার গুলোতে বইছে দোযখের হাওয়া।
জেনে নিন – হাসির গল্প এভাবে বউকে বললে ……….
পরকীয়া আক্রান্ত শীর্ষ দেশ গুলো
ডেটিং অ্যাপ অ্যাশলে ম্যাডিসন নামক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পরকীয়ায় শীর্ষ দেশের শিরোপা জিতেছে আয়ারল্যান্ড। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে জার্মানি। আর তৃতীয় স্থান দখল করেছে কলোম্বিয়া।
বিশ্বের এই দেশের জীবন-যাত্রা অনেক উন্নত। যে কারণে এসব দেশের নর-নারীরা নতুন নতুন রোমাঞ্চের খোঁজে থাকতে বেশি পছন্দ করে। এই তিন দেশের পুরুষ ও নারীরা বেশি দিন এক ব্যক্তিতে আটকে থাকতে চায় না।
গবেষণা অনুযায়ী, আয়ারল্যান্ডে প্রতি ৫ জন বাসিন্দার মধ্যে একজন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের এই দ্বীপ রাষ্ট্রে বিবাহে প্রতারণার হার প্রায় ২০ শতাংশ। বছরের অর্ধেক সময় মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায় থাকা দেশটির মানুষেরা প্রেমের সম্পর্কে থাকতেই বেশি ভালোবাসেন।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা জার্মানির প্রায় ১৩ শতাংশ নাগরিক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ইউরোপের অন্যতম শিল্পোন্নত এই দেশটিতে পুরুষ ও নারীরা যার যার মতো জীবন-যাপন পছন্দ করেন। যে কারণে এখানে ব্যক্তিকেন্দ্রীক ভাবনা বেশি জোরদার।
আর সমীক্ষার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে কলোম্বিয়ার নাম। দক্ষিণ আমেরিকার ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের তটরেখায় অবস্থিত দেশটিতে শ্রেণিবৈষম্য বেশ প্রখর। দেশটিতে মাদক ব্যবসা জমজমাট। মিশ্র সংস্কৃতির এই দেশে পরকীয়ার সম্পর্কও অনেক জনপ্রিয়।
গবেষণায় বলছে, ১০ ধরনের পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়া করে। আর সেগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আছে সামাজিক কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা। তারপরে আছে শিল্প ও বিনোদন শিল্পের লোকজন।
এরপর তৃতীয় স্থানে আছে শিক্ষাক্ষেত্র। তারপর আছে আইন পেশার মানুষ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসা ক্ষেত্র, মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, ফিন্যান্সের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ব আর উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীরা।
তবে গবেষণায় পরকীয়া আক্রান্ত শীর্ষ দেশ এর তালিকায় নেই রাজনীতিবিদরা।
পরকীয়া মানে কি ? কেন মানুষ পরকীয়া করে।
ডেসমন্ড জন মরিস একজন ইংরেজ প্রাণীবিজ্ঞানী, নৃতাত্ত্বিক এবং পরাবাস্তববাদী চিত্রশিল্পী, সেইসাথে সমাজবিজ্ঞানের একজন জনপ্রিয় লেখক।
তার লেখা একটি বই প্রকাশিত হয় ” The naked man” ২০০৭ সালে । সেখানে তিনি লিখেন পুরুষের একটি আদিম স্ট্রাটেজি হচ্ছে ” যখনি সম্ভব এবং যেখানেই সম্ভব পুরুষ তার বীজ বপন করতে চায় “।
যদি একটি পুরুষ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর সংস্পর্শে আসে , যে তার পরিবারের লোক নয়, তখন সেই নারীর সঙ্গে পুরুষটি একটি সংক্ষিপ্ত যৌন লীলায় রত হতে তীব্র আকাঙ্খা বোধ করতে পারেন। যদিও পুরুষ অন্যখানে বীজ বপনের তাড়না বোধ করেন, শেষ বিচারে পুরুষ পরিবারেই থাকতে চান।
জেনে নিন – কেন এত ডিভোর্সের ছড়াছড়ি।
এখন প্রশ্ন হল নারী কেন তার বৈধ পার্টনার থাকতে অন্য পুরুষের সঙ্গে পরকীয়া করেন। দৈহিক সম্পর্কের ঝুকি নেন। যেখানে ধরা পড়লে পরিবার ভেঙে যেতে পারে। সন্তানদের জীবনে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়।
দুটি কারনে
ডেসমন্ড মরিস বলেন, মনেহয় প্রকৃতি নারী দেহকে দুইভাবে প্রোগ্রাম করে দিয়েছে। নারী চায় দুটি ভিন্নভাবে পুরুষের মুল্যায়ন করতে। প্রথমত নারী মুল্যায়ন করেন তার পুরুষটি সামাজিক ভাবে সফল কি না। পুরুষটি কি তার সন্তানদের প্রতি মনযোগী হবেন ? পুরুষটি বিশ্বস্ত থাকবেন কি না। দ্বিতীয় মুল্যায়নে নারী চান সুদর্শন, সন্তান উতপাদনে সমর্থ পুরুষ। শারীরিক ভাবে সক্ষম পুরুষ।
সেলফোন সময়ের আগে নারী পুরুষ পরস্পর সংস্পর্শে আসতে বাস্তবেই দেখা করতে হত। এখন স্মার্ট ফোনের কল্যানে পরস্পর সংস্পর্শে আসা মামুলি ব্যাপার। নারী বা পুরুষ চাইলেই স্মার্ট ফোনে একান্তে সময় কাটাতে পারে। সবকিছু মিলিয়েই পরকীয়া প্রেম এখন সহজলভ্য। আশাকরি জানতে পারলেন কেন পরকীয়ায় আক্রান্ত হয় মানুষ ?
ভালোবাসেন সহিংস মুভি। কি সর্বনাশ হচ্ছে আপনার জীবনের জেনে নিন।
পরকীয়া আক্রান্ত নিয়ে ফরাসি গল্প
ফরাসি যুবক চার্লস। প্যারিস ছেড়ে কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছে। বন্ধুকে বলল ” আমার বউকে নিয়ে খুব সন্দেহ হচ্ছে। মনে হচ্ছে সে পরকীয়া আক্রান্ত। কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছি। বউ কি না কি করে ! বন্ধু বলল ” কোন চিন্তা করিস না, তোর অবর্তমানে আমি তোর বউয়ের খেয়াল রাখব। পাহারা দেব।”
দু সপ্তাহ পর চার্লস ফিরে এল। বন্ধুর কাছে খবর নিতে গেল। বন্ধুকে বলল ” কি খবর, কিছু জানতে পেরেছিস? ” বন্ধু বলল, হ্যাঁ খবর আছে ! প্রথম রাতেই দূর থেকে একটি লোককে তোর বাড়িতে ঢুকতে দেখলাম। তোর বউ দরজা খুলে তাকে জড়িয়ে ধরল। এরপর দরজা বন্ধ করে দিল। আমি উপায় না পেয়ে তোর ঘরের পাশের গাছে চরে বসলাম। জানালার পর্দার ফাক দিয়ে তাদের উপর নজর রাখলাম। কিন্ত তারা হঠাৎ রুমের বাতি নিভিয়ে ফেলায় আমি আর কিছুই দেখতে পেলাম না।
তাহলে তুই ব্যর্থ হলি, আমি এখন সন্দেহ দূর করি কিভাবে? চার্লস হতাশ কণ্ঠে বলল।
মেয়েরা কেন বিবাহিত পুরুষের প্রেমে পরে।
সেলিম হোসেন – ২২/০৯/২০২২ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী