এ দেশের আইন অনুয়ায়ী, দেশের ৬০% বনভূমি থাকতে হবে। কিন্তু এই বনভূমি ওদের রয়েছে ৭১%। যেখানে আমাদের মাত্র ৮%।ফলাফল ভুটানই পৃথিবীর একমাত্র ‘কার্বন নেগেটিভ’ দেশ। যার অর্থ হলো, এখানে যত কার্বন উৎপাদন হয়, সবটুকু কার্বন প্রকৃতি শুষে নেয়।
২০১০ সাল থেকে এখানে যে কোনো রকম তামাক, ড্রাগ জাতীয় দ্রব্যের উৎপাদন, বন্টন, বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। প্রথম দিকে বিষয় টি বাস্তবায়ন করতে তাদের কে অনেক বেগ পোহাতে হয়।
আমরা জানি সুস্থ থাকতে, ন্যাচারাল খাবার এবং মাদক মুক্ত থাকা আবশ্যক।
আমরা সমাজে দেখতে চাই সুস্থ, সবল, হাস্যজ্জল মানুষ। যে কাজটা ভুটান পেরেছে, শ্রীলঙ্কা পেরেছে, সিকিম পেরেছে আমরাও পারব।
ভুটানের রাজধানী কোনটি?
থিম্পু , ভুটানের রাজধানী। দেশের পশ্চিম-মধ্য অংশে অবস্থিত শহরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭০০০ ফুট (২০০০ মিটার) উপরে রায়ডাক (থিম্পু বা ওং নামেও পরিচিত)। নদীর তীরে হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত।
বহু বিবাহ অনাদিকাল থেকে চলে আসছে ভুটানে। ইসলামে শুধু পুরুষদের প্রয়োজনে বহু বিবাহের অনুমতি আছে। কিন্ত এখানে নারী পুরুষ উভয়েই বহুবিবাহ করতে পারেন। একজন পুরুষ চাইলে একই পরিবারের কয়েক বোনকে বিয়ে করতে পারেন। তেমনি একজন নারীও একই পরিবারের কয়েক ভাইকে বিয়ে করতে পারেন। এদেশের রাজারাও এর বাইরে নন। তবে দেশটির বর্তমান রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল এই রীতি অবসানে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
৩১ বছর বয়সী রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল গত ২০১১ সাল অক্টোবর মাসে বিয়ে করেছেন তাঁর চেয়ে ১০ বছরের ছোট জেটসান পেমাকে। প্রাচীন রাজধানী পুনাখার একটি দুর্গে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
রাজা জিগমে খেসার এই বিয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন গত মে মাসে। তখনই তিনি ঘোষণা দেন, জেটসান পেমা হবেন তাঁর একমাত্র স্ত্রী। রাজা জিগমে খেসারের এই অবস্থান বিয়ে সম্পর্কে তাঁর বাবা ও দেশটির সাবেক রাজা জিগমে সিংহে ওয়াংচুকের অবস্থান থেকে আলাদা। জিগমে সিংহে ওয়াংচুক ১৯৭৯ সালে একসঙ্গে একই পরিবারের চার বোনকে বিয়ে করেছিলেন। একই অনুষ্ঠানে চার স্ত্রীকেই রানির মর্যাদাও দেন তিনি।
ভুটানে ১৯০৭ সাল থেকে বর্তমান রাজবংশের রাজত্ব চলছে। বর্তমান রাজা ছাড়া আগের চার রাজার মধ্যে তিনজনই একাধিক নারীকে বিয়ে করেন।
ভুটান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও লেখক ফ্রাঙ্কোয়িস পোমারেট বলেন, এখানকার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক কাঠামোতেই একাধিক বিয়ের রীতির মূল প্রোথিত। তিনি বলেন, দেশের কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চলে একাধিক বোনকে বিয়ে করার ঘটনা বেশি। আর উত্তরাঞ্চলে একাধিক ভাইকে বিয়ে করার ঘটনা বেশি দেখা যায়। একই পরিবারে সম্পদ ধরে রাখতে এটা করা হয়।
এখন বহুবিবাহ অনেকটা কমে এসেছে। এর কারণ হলো, নাগরিকদের ধারণার পরিবর্তন। দেশটিতে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন নিষিদ্ধ ছিল। বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম ছিল। তবে এখন টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার জনগণের ধারণায় পরিবর্তন এনেছে।
ফ্রাঙ্কোয়িস পোমারেট আরও জানান, বর্তমান রাজা শুধু বিয়ের ধারণা থেকেই তাঁর বাবার কাছ থেকে আলাদা, তা নয়। গত বিয়ে-পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজা জিগমে খেসার জনসমক্ষে তাঁর নতুন স্ত্রীর হাত ধরেন ও চুমু খান। ভুটানের সংস্কৃতিতে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া একেবারে চোখে পড়ে না এমন নয়। কিন্তু রাজা জিগমে খেসারের আগে কোনো রাজা প্রকাশ্যে এমন আবেগ দেখাননি।
সেলিম হোসেন – ১৯/০৭/২০২১ ইং – ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।