সপ্নে সাপ দেখলে

সপ্নে সাপ দেখলে কি হয়
স্বপ্নে এদের দেখা পাওয়া এমন বিশ্বাস হিন্দুদের মাঝে খুব প্রভাবিত।
ন্যাচারাল উপায়ে আজীবন ডায়াবেটিস মুক্ত থাকুন।

পড়ুন – পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সাপের গল্প।
সাপ কি গরুর দুধ খায়
নানা ধরনের গুজব রয়েছে। এগুলোর অন্যতম হলো, এরা গরুর বাঁট থেকে দুধ খায়। গরুর বাঁটে এমন কিছু চিহ্ন থাকে, যেগুলো থেকে যুগ যুগ ধরে এই ধারণা শিকড় গেড়েছে মানুষের মনে। যে কৃষকেরা গরু লালন পালন করেন, তাদের চোখে এ দৃশ্য ধরা পরে।
প্রথমেই বলি গরুর পায়ে আঁশের চিহ্ন দেখা নিয়ে। এই চিহ্ন দেখে গৃহ্স্থ মনে করেন প্রাণীটি রাতে গরুর পা জড়িয়ে ধরে দুধ খেয়েছে। এভাবে যখন গরুর পা জড়িয়ে থাকে, গরু তখন নড়াচড়া করতে পারে না।

বাঁটের ওপরে ছোট ছোট লালচে যে দাগ দেখা যায়, সেগুলো তাহলে কী? সেটা যাই হোক এভাবে বাঁটে দাগ হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিষধর হলে তো কথাই নেই। বিষধর দাঁত যদি বসে যায় বাঁটে, মারা পড়বে গরু। তাহলে এগুলো কিসের দাগ?
কখনো দেখেছেন, গৃহস্থ কিভাবে গাভীর দুধ দোহন করে ? যদি দেখে থাকেন, নিশ্চয় এ-ও দেখেছেন, দুধ দোহনের পরে অনেকে বাঁট ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলেন। কেউ কেউ তেলও লাগান। এর কারণ আছে। দুধ দোহনের পরে বাঁট পরিষ্কার না করলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। গরুর বাঁট ও এর আশপাশে ব্যাসিলাস মাইকোব্যাকটেরিয়াম নামের ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এ ছাড়া কেনডিডা এপিডার্মোফাইটেন নামের ছত্রাকের সংক্রমণও হতে পারে।
যারা নিয়মিত বাঁট পরিষ্কার করেন, তাদের গরুর বাঁটে এ ধরনের দাগ দেখা যায় না। বাঁট পরিস্কার করার পর সরিষার তেল মাখানো হয়। এই তেল জীবাণু প্রতিরোধে কাজ করে। কিন্তু যারা দুধ দোহনের পর গরুর বাঁট ঠিকমতো পরিষ্কার করেন না। পরিস্কার শেষে বাঁটে সরিষার তেল মাখেন না, তাঁদের গরুর বাঁটে এ ধরনের ছোট ছোট দাগ দেখা যায়। এটাকে সাপের দাগ বলে মনে করার কোনো কারণ নেই।
জীবনে সফল হতে চাইলে যে বইটি আপনার পড়া দরকার।

এখন কেউ হয়তো কথার খাতিরে বলতে পারেন, বাঁট থেকে দুধ খেতেও তো পারে! তাহলে জেনে রাখুন, সর্প বাঁট থেকে দুধ চুষে খেতে পারে না। এভাবে বাঁট থেকে দুধ চুষে খাওয়ার জন্য অবশ্যই উপযুক্ত ঠোঁট ও জিভ থাকতে হয়। এদের জিভ স্তন্যপায়ী প্রাণীর জিভের মতো নয়। এদের জিভ সরু ও চিকন। এই জিভ দিয়ে কখোনেই বাঁট থেকে দুধ চুষে খাওয়া সম্ভব নয়।
তা ছাড়া তরল চুষে খেতে হলে মুখের এবং বুকের ভেতরকার চাপ হঠাৎ অনেকটা কমিয়ে ফেলতে হয়। মানুষের বেলায় বুক ও পেটের মাঝখানে মধ্যচ্ছদা নামের পর্দা থাকে। মধ্যচ্ছদা নিচের দিকে নেমে গিয়ে বুকের ভেতরকার চাপ অনেকটা কমিয়ে দেয়। ফলে মানুষ জিভ দিয়ে চুষে দুধ খেতে পারে।
কিন্তু সর্পের কোনো মধ্যচ্ছদা নেই। এ জন্য এদের পক্ষে কোনো কিছু জিভ দিয়ে চুষে খাওয়া সম্ভব নয়। ফলে গরুর বাঁট থেকে দুধ চুষে খাওয়ার কোনো উপায় নেই ।
মাঝে মাঝে তাহলে গরুর বাঁট শুকিয়ে থাকে কেন? শুকিয়ে থাকা বা চুপসে থাকার বিষয়টাকে বলে প্রতিবর্ত। এটা হল জীবের এমন একটা শারীরিক বৈশিষ্ট্য। যা অনেকটাই জীবের অজান্তেই ঘটে। ভয় পেলে যেমন মানুষ ঘেমে ওঠে, নিজের অজান্তেই গরুও তেমনি সাপের ভয় পায়। সেটা সর্পের ভয়েই হতে পারে। অনেক সময় গৃহস্থ দেখতে পান, সকালে সর্প বাবা গোয়াল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখনই হয়তো খেয়াল করেন, গরুর বাঁট চুপসে আছে।
সহিংস মুভি দেখার অভ্যাস থাকলে, এই লিঙ্কে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।

এরও ব্যাখ্যা আছে। সাপ শীতল রক্তের প্রাণী। এরা পরিবেশের তাপমাত্রা অনুযায়ী শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তন করতে পারে না। তাই শীতকালে একটু উষ্ণতার খোঁজে অনেক সময় গোয়ালে আশ্রয় নেয়। কারণ গোয়ালে খড়কুটো রাখে মানুষ, তারপর শীতকালে গোয়াল উষ্ণ রাখার জন্য ছাই ছিটিয়ে দেন। গরমে গোয়ালে ইঁদুরের উপদ্রব হয়। সাপ ইঁদুরে পিছু নিয়ে গোয়ালে এসে আশ্রয় নিতে পােরে।সেখানে উষ্ণতা খুঁজতে চায় গরু। সাপ দেখে গরু ভয় পেয়ে যায়। তখন অজান্তেই বাঁট সংকুচিত হয়ে যায়।
আরেকটা কথা বলা জরুরি। স্তন্যপায়ী প্রাণী ছাড়া আর কোনো প্রাণীর শরীর দুধ খাওয়ার উপযোগী নয়। সাপের শরীর দুধ হজম করতে পারে এমন কোনো প্রমাণও নেই। তবে পানির দরকার হয়, সাপ পানি পান করতে পারে। দুধ খায় এমন কোনো প্রমাণ আজ পর্যন্ত মেলেনি। বাঁট চুষে দুধ পান করা তো সাপের পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয়।
ডিম কেন খাবেন, প্রতিদিন কয়টা খাবেন। জেনে বিস্তারিত কথা।

এদেশে কখন সাপ কামড়ায়
