পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন
শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, শেখ হাসিনা নাই, শেখ হাসিনা পালায় না। দম্ভ করে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন ১৬ ই জুলাই। যখন ছাত্রদের আন্দোলন শুরু হয়। তখন শেখ হাসিনা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন। ছাত্রদের উপর গুলি চালান। ছাত্রদের রক্ত আর নিহত ডেডবডির আধিক্য দেখে জনগণ ফুঁসে উঠে। ছাত্র জনতা একসাথে রাস্তায় নেমে আসে। পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
তার প্রায় গত ১৬ বছরের শাসন আমলে তার নিয়োগকৃত লোক জনের মনোভাবও এমনই ছিল। সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমার রায়। তিনিও দম্ভ করেন। পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করেন ছাত্রদের কে। আসুন পুরুষের এই মূলধন প্রদর্শনের আরও কিছু কাহিনী। যেখানে আমরা দেখব একজন মোঘল সম্রাট কেন পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করেছিলেন। আমরা আরও জানব কেন মানুষ পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করে।
শিখ সুন্দরী যুবতী নারী এবং মুসলিম যুবকের প্রেম এবং বিয়ে। এরপর আদালতে, কি হয়েছিল আদালতে ?

১. পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন হাউন আঙ্কেল

২. পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করলেন ডাঃ রতন কুমার, সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের ততবাবধায়ক।
১৩ ই আগস্ট ২০২৪ ইং। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমার রায়। একদল ছাত্র কিছু অভিযোগ নিয়ে গেলেন ডাঃ রতন কুমারের কাছে। ছাত্রদের কাছে ছিল ৯ টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ।
১. হাসপাতালের সবগুলো ওয়াশরুম দুর্গন্ধযুক্ত ও অপরিষ্কার। সেখানে লাইট ও দরজার ছিটকিনি নেই।
২. মৃত্যু সনদ ও মারামারিজনিত কারণে মেডিকেল সার্টিফিকেট নিতে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়।
৩. রোগীদের খাবারের মান জঘন্য।
৪. দালালদের দৌরাত্ম্য।
৫. নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে বেশীরভাগ ডাক্তারকে পাওয়া যায় না।
৬. ইন্টার্ন মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্টদের দিয়ে ডাক্তারি কার্যক্রম চালানো হয়।
৭. ২/১ জন ব্যতীত ডাক্তারদের এটেনডেন্টরা দালালি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।
৮. হাসপাতালের প্রতিটি ডাক্তার ওষুধ কোম্পানির কাছে জিম্মি।
৯. রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মেশিনগুলোর অধিকাংশই নষ্ট।
অপহরণের এমন কাহিনী আপনি আগে শোনেননি।

ছাত্ররা চাইছিলেন ডাঃ রতন যেন এই অভিযোগ গুলো আমলে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেন। ডাক্তার আর হাসপাতালের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ শুনলেন রতন। রাগে ফেটে পরলেন। শিক্ষার্থীদের প্যান্টের চেইন খুলে দেখালেন । রতন তার অফিস রুমেই কাণ্ডটি করেন।
কেউ একজন ঘটনাটি মোবাইলে ধারন করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পুরুষাঙ্গ প্রদর্শনের ভিডিওটি।
ধারণকৃত ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ছাত্ররা বলছেন ” হাসপাতালের অনিয়ম গুলো আপনার দেখা উচিত। এ সময় ছাত্রদের কথার একপর্যায়ে রতন উত্তেজিত হয়ে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে খারাপ ভাষায় কথা বলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা কেন ভাষা খারাপ করে কথা বললেন ? এ কথায় রতন আরও উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের ছুরি দিয়ে গলা কেটে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
দিল্লি দখলের পর নাদির শাহ্ কি দেখেছিলেন !!

৩. মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ্র পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন
১৭৩৮ সালের ৬ নভেম্বর কাড়া নাকারা বাজিয়ে দিল্লির দিকে রওয়ানা করেন ‘ নাদির শাহ্ ‘। তৎকালীন ইরানের সম্রাট। তখন দিল্লির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ্। খুব দ্রুতই নাদির শাহ্ পৌঁছে গেলে আজকের পাকিস্তানের পেশোয়ারে। বাধাহীন ভাবে দখল করে নিলেন পেশোয়ার। এরপর তিনি এগোতে থাকেন লাহোরের দিকে।
লাহোরের মোগল সুবেদার জাকারিয়া খান তাকে বাধা প্রদানের অভিনয় করেন। এরপর আত্মসমর্পণ করেন। তিনি সৈন্যদের খরচা বাবদ নাদির শাহ্কে ২০ লাখ রুপি প্রদান করেন। নাদির শাহ্ জরিমানা গ্রহন করে তাকে ক্ষমা করে দেন। জাকারিয়া নাদির শাহ্র পায়ে চুমু খান।
নাদির শাহ্ আবার দিল্লির দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। তাকে বাধা প্রদান করা হয় কারনাল শহরে। যেখানে পরিখা খনন করে অবস্থান নিয়েছে মোগল বাহিনী। তিনি শহর অবরোধ করলেন। মোগল বাহিনী খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে পরে গেল। ১৭৩৯ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি মোগল বাহিনী যুদ্ধ শুরু করল। ২০ হাজার সৈন্য নিহত ও ৪০ হাজার সৈন্য গ্রেফতার হল নাদির শাহ্র হাতে।
সুখ কি ? কিভাবে সুখী হতে পারবেন।

সম্রাট মোহাম্মদ শাহ্ নিজেও গ্রেফতার হলেন। লজ্জায় মোগলের মুখ লাল, মাথা নত হয়ে রইল। নাদির শাহ্ তাকে বললেন ” শুধু আপনার অকর্মণ্যতা এবং অহংকার আমাকে আপনার রাজ্যে অগ্রসর হতে বাধ্য করেছে। আমি আপনার সাম্রাজ্য কেড়ে নেবনা। কিন্ত আমার অনেক খরচা হয়ে গেছে। লোকজন ক্লান্ত হয়ে গেছে। তাদের বিশ্রাম প্রয়োজন।
আমাদের বিশ্রাম নিতে যে কয়দিন লাগে এবং ক্ষতিপুরনের টাকাটা পেলেই আমরা দিল্লি ছেড়ে চলে যাব। মোগল সম্রাট এবং নাদির শাহ্ দিল্লিতে ফিরে এলেন। নাদির শাহ্র জন্য বিরাট সংবর্ধনার আয়োজন করা হল। তোপধ্বনি দিয়ে নাদির শাহ্কে দিল্লিতে অভ্যর্থনা জানানো হল। চরম অপমানিত, ভীত, লাঞ্চিত মোহাম্মদ শাহের এসব না করে উপায় ছিল না।
অফিসের কর্মী ছাঁটাই করতে গেলেই ঝামেলা। কিন্ত চায়না এই অফিস মালিকের কোন ঝামেলাই হল না !!

সন্ধ্যায় সম্রাটের দাওয়াতে নাদির শাহ্ উপস্থিত হলেন। অগ্নি মহরার উৎসব হল। এরপর শুরু হল নাচ গান। পান ভোজনের পালা শুরু। রুমে সম্রাট মোহাম্মদ শাহ্, নাদির শাহ্ এবং রাজন্যবরগ। মোহাম্মদ শাহ্ এত মদ গিলেছিল যে, সে ভুলে গেল কোন মেহমান কে সে আপ্যায়ন করছে ! সম্রাট পায়ে বাইজিদের মত নুপুর পরলেন। নাচতে শুরু করলেন। তার রাজ কর্মচারীরা নাচের প্রশংসা শুরু করলেন, কোন নাচনেওয়ালিও এত সুন্দর নাচতে পারে না। অথচ নাচের নামে তিনি লম্ফ ঝম্প করছিলেন।
হঠাৎ সম্রাট তার পরনের কাপড় তুলে ধরে পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করলেন। বললেন ” কোন নাচনেওয়ায়ালির কিন্ত এটা নেই। এর চেয়ে বড় যদি কেউ বের করে দেখাতে পারে, তবে তাকে একশ স্বর্ণমুদ্রা দেব।”
৪. পুরুষাঙ্গ প্রদর্শনকারী তরুণদের গল্প
সময় কাল ১৯৯২ সাল। তখন উত্তরবঙ্গ ( রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর ইত্যাদি) থেকে ঢাকার দিকে আগত গাড়ি গুলো ফেরিতে চড়ে নগরবাড়ি ঘাট হয়ে, আরিচা ঘাটে পৌঁছাত। এরপর ঢাকা আরিচা হাইওয়ে রোড ধরে গাবতলী প্রবেশ মুখ দিয়ে ঢাকায় ঢুকত। রাত ৯ টার পর থেকেই রাতের কোচ গুলো নগরবাড়ি ঘাটে পৌছাতে শুরু করত। নগরবাড়ি ঘাট পাওয়ার প্রায় ১ কিলোমিটার পূর্বেই রাস্তার পাশে কেতাব আলীর চায়ের দোকান।
সারাদিনই বেচাকানা চলে। দিনের বেলায় নানান রকম লোকজন চা খায়, গল্পগুজব করে। এলাকার কয়েকজন তরুন সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। সন্ধ্যার পর তরুণদের আড্ডাটা জমে উঠে দোকানটায়। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। বাড়ি ফেরার পথে তারা কারও টিনের চালে ঢিল ছুড়ে। মাঝরাতে চালের উপর বিকট শব্দে ভীতসন্ত্রস্ত বাড়িওয়ালার ঘুম ভেঙে যায়। কখনও বা কারও টিনের বেড়ার ছিদ্রতে চোখ রেখে দেখার চেষ্টা করে স্বামী স্ত্রীর আদিম লীলা।
প্রেম করে বিয়ে। কয়দিন পরেই স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। কিন্ত কেন ?

যখন কোচ গুলো আসতে শুরু করে নগরবাড়ি ঘাটের দিকে। তখন আড্ডারত যুবকদের চোখে কোচের হেড লাইটের তীব্র আলো পড়ত। বাসের লাইটের আলো তাদের জমে ওঠা গল্পে বাধার সৃষ্টি করত। গাড়ি গুলো যখন আসত তখন একসাথে অনেক গুলো আসত। তারা ভীষণ বিরক্ত হত। তখনকার সময়ে সবাই লুঙ্গি পড়ত। একদিন হল কি ! গল্প জমে উঠেছে এমন সময় গাড়ি আসা শুরু হল। হেড লাইটের আলো সবার চোখে মুখে। তরুণদের একজন উঠে গিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পরনের লুঙ্গি উপরের দিকে তুলে মাথা সহ শরীরের ঊর্ধ্বাংশ ধেকে ফেলল। শরীরের নিম্নাংশ, পুরুষাঙ্গ, পাছা হেড লাইটের আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠল।
উপরের ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি। কেন মানুষ পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করে ? যখন মানুষ বিরক্ত হয়। কেউ একজন বা কোন গোষ্ঠী তাকে অপমানিত করে। কিন্ত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে পারেনা, বা কিছু করার থাকে না। তখনই সে বিরক্তকারী ব্যাক্তি বা দলকে পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করে।
সেলিম হোসেন – তাং ২৫/১২/২০২৪ ইং – ছবি গুলো পেক্সেলস এবং অনলাইন থেকে নেয়া।