পুতিন এক লৌহমানব। কিভাবে ক্ষমতায় এলেন ? কেন এবং কাকে বিয়ে করলেন ? Putin is an iron man. How came to power? Why and whom did you marry?

পুতিন
পুতিন যেভাবে ক্ষমতায় 

টালমাটাল রাশিয়ার রাজনীতি। বেশ কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল। সেদিন খ্রিষ্টীয় বর্ষবরণের আগমুহূর্ত ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সাল। হঠাৎ একটি খবর চাউর হয়ে বরিস ইয়েলৎসিন পদত্যাগ করেছেন। রাজনীতি অঙ্গন থেকে শুরু করে দেশবাসী সবাই হতবাক হয়ে যান।

কারন বরিস ইয়েলৎসিন সব সময় বলে এসেছেন, তাঁর পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্ত আজ সেই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি।’ তার এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়েই রাশিয়ার নতুন নেতা হিসেবে শুরু হয় পুতিনের পথচলা।

২০২৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পূর্ণ হল পুতিনের পঁচিশ বছরের শাসন। রাশিয়ার নতুন এই নেতা আড়াই দশক পরেও ক্ষমতায় আছেন। হয়তোবা আরও অনেক দিন থাকবেন। এরই মাঝে নানান ঘাত প্রতিঘাত পাড়ি দিয়েছেন তিনি। অনেকে হয়তো চিন্তাও করেননি, একদিন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে রাশিয়া। এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমাদের মুখোমুখি হয়েছে রাশিয়া। 
 
এ যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব পড়েছে। বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। আর এক কোটির বেশি ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
 
রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতিটাও কম নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে রুশ সামরিক বাহিনী। রাশিয়ার শহরগুলোয় নিয়মিত ড্রোন হামলা হচ্ছে। দেশটির কুরস্ক অঞ্চলের কিছুটা দখলে নিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। বড় কথা হলো, রাশিয়ার জনগণের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন বেড়েছে। 
 
গত ২৫ বছরে পুতিন অনেক বদলে গেছেন। আজকের দিনে চরম ক্ষমতালিপ্সু পুতিনের চেয়ে আগের পুতিন অনেক ভিন্ন ছিলেন। আজকের পুতিন আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুরুর দিকের পুতিন মেলানো খুবই কঠিন। এখন তিনি একদম সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। দেশের জন্য তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষাও বিশাল। একসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এই নেতা দেশকে সেদিকেই নিয়ে যেতে চাচ্ছেন।
 
 
পুতিন
পুতিন কি মুসলিম সহানুভূতিশীল 
 ২১  শে আগস্ট ২০২৪ সাল । 
কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রেসিডেন্ট চেচনিয়ায় যান। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চেচনিয়ার সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুতি দেখতে আকস্মিক চেচনিয়া সফর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। ২০১১ সালের পর চেচনিয়ায় এটিই পুতিনের প্রথম সফর।
 
চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ তার খুবই আস্থাভাজন। সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময় বিভিন্ন সময়ে কাদিরভও বেশ ঘন ঘন পুতিনকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সফরকালে, কাদিরভ এবং চেচনিয়ার গ্র্যান্ড মুফতির সাথে রাজধানী গ্রোজনির ঈসা নবী মসজিদে সময় কাটান প্রেসিডেন্ট পুতিন।

মসজিদে রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের সামনে পবিত্র কোরআনের একটি বিরল সংস্করণ উপস্থাপন করা হয়। পরে এটিতে তিনি শ্রদ্ধার সাথে চুম্বন করেন এবং তার বুকে জড়িয়ে ধরেন। এছাড়া চেচনিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি পবিত্র কোরআনের সূরা আল-আনফালের একটি আয়াতও তেলাওয়াত করেন এবং প্রেসিডেন্টের জন্য রাশিয়ান ভাষায় এর অনুবাদ করেন।

তরুন তরুণীদের জন্য কেন বিপদজনক সহিংস মুভি। 

পুতিন

পুতিনের লাইফ স্টাইল কেমন 

জীবনচচর্চায় কঠোর নিয়মশৃঙ্খলার জন্য পরিচিত তিনি। কিন্ত ঘুম থেকে পুতিন একটু দেরিতে উঠেন। কারন বেশ রাত জেগে তিনি কাজ করেন। প্রাকৃতিক কাজ সেরে তিনি জিমে ঢুকেন। ওজন নেন এবং সংবাদপত্রের খবর গুলো দেখেন। এরপর তিনি নেমে পরেন সুইমিং পুলে। তিনি নিয়মিত বেশ সময় নিয়ে সাঁতার কাটেন। 

ব্রেকফাস্ট সেরে নিয়ে খান কফি। এরপর থাকে একমগ ফলের রস। রান্না বিষয়ক লেখিকা আনিয়া ফন ব্রেমজেন বলেন, তীব্র ঠান্ডার মধ্যেও এই প্রেসিডেন্ট আইসক্রিম খেয়ে থাকেন। পিসটাশিও বাদামের তৈরি আইসক্রিম তাঁর পছন্দের। সম্ভবত বিশ্ব নেতাদের মধ্যে একমাত্র তিনিই আইসক্রিমের একনিষ্ঠ ভক্ত। 

২০১৯ সালে রাশিয়া সফরকালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে তিনি আইসক্রিম দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। এমন তথ্য অনেকেরই জানা। ওই বছরই জন্মদিনের উপহার হিসেবে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে আইসক্রিম পাঠিয়েছিলেন।

তবে সকাল-দুপুর-রাতে ভারী খাবার হিসেবে তিনি কী খেয়ে থাকেন, তা জানা যায় না। এটা একেবারেই গোপনীয় বিষয়। এ বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা প্রাভদা কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে জানায়, বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কের খাবারের তালিকায় টমেটো, শসা ও লেটুসের আধিক্য থাকে। কেফির নামে দুধের তৈরি একটি পানীয় তাঁর বিশেষ পছন্দ। রুশ প্রেসিডেন্ট সাধারণত অ্যালকোহল গ্রহন করেন না। 

অপহরণের অবাক করা কাহিনী। 

পুতিন

পুতিন লুডমিলাকে কেন বিয়ে করেছিলেন 

সাহসী, বেপরোয়া এবং ইস্পাত কঠিন হৃদয়ের মানুষ পুতিন। সাধারনভাবে মনেহয় তিনি একজন বেরসিক মানুষ, আসলে তারও কোমল হৃদয় আছে, তিনি প্রেমে পরেছিলেন। 

তাঁর একজন বন্ধুর মাধ্যমে লুডমিলা স্কেরিবেনভার সাথে পরিচিত হন। লুডমিলা সরকারি এয়ার লাইনের একজন ফ্লাইট এ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এক বন্ধুর সাথে তিন দিনের জন্য লেলিনগ্রাদে বেড়াতে এসেছিলেন। 

লুডমিলার সাথে পরিচয় এবং প্রণয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন -“আমি তখন সেইন্ট পিটার্সবার্গে কেজিবির প্রধান শাখায় কাজ করছিলাম। আমার এক বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে আরকাডে রাইকিন থিয়েটারে আমন্ত্রণ জানায়। সে আমাকে বলে সে আগেই টিকেট কিনে রেখেছে এবং আমাদের সাথে দুইজন তরুণীও থাকবে।”

পড়ুন – নিষেধাজ্ঞার শিকার পুতিনের দুই মেয়ে সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে। 

পুতিন

“আমরা নাটক দেখতে গেলাম এবং সেই তরুণীরাও আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল। পরের দিন আমরা আবার থিয়েটারে গেলাম এবং সেদিন আমি নিজেই টিকেট কিনেছিলাম। তৃতীয় দিনও সেই একই ঘটনা ঘটল। এরপর আমি দুই তরুণীর একজনের সাথে ডেট করা শুরু করলাম। আমি আমার ভবিষ্যৎ স্ত্রী লুডমিলার সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়লাম।” 

স্বামীর সাথে নিজের প্রেমের কথা স্মরণ করতে গিয়ে লুডমিলা বলেন “ভ্লাদিমিরের মধ্যে এমন কিছু একটা ছিল যা আমাকে আকর্ষণ করেছিল। তিন-চার মাসের মধ্যেই আমি বুঝে গিয়েছিলাম এই লোকটিকে আমার প্রয়োজন।”

ভিডিওতে দেখুন রাশিয়ার গ্রাম 

পুতিন

লুডমিলা তিন-চার মাসের মধ্যে বুঝে গেলেও পরিচয়ের তিন বছরের মাথায় পুতিন লুডমিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

বলেন “আমি জানতাম যদি আমি আর দুই কি তিন বছরের মধ্যে বিয়ে না করি তাহলে হয়তো আর কোনওদিনই করা হবে না।

আমিব্যাচেলর জীবনে সত্যিই বেশ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু লুডমিলা আমার জীবনে আসার পর সেটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল।” ১৯৮৩ সালের ২৮ জুলাই উভয়ে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। 

তারা দুজন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

২০১৩ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে তাঁদের ত্রিশ বছরের দাম্পত্যের ইতি ঘটে।

জীবনে সফল হতে আব্রাহাম লিঙ্কনের জীবনের এই ঘটনা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে। 

পুতিন  

সেলিম হোসেন – তাং – ১৮/০৮/২০২২ ইং – ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *