ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ঔষধ খাওয়ার
পিজি হাসপাতালে দেখানোর নিয়ম জানতে চান পরিচিত জনের কাছে। গাইনি ডাক্তারের তালিকা খুজেন গুগলে। বুকে ব্যাথা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ডাক্তার তালিকাটা দরকার। গ্যাসের সমস্যায় কোন ঔষধ ভালো ? আমরা কেন ঘুমের ওষুধ খাই, জানিনা।
বয়স বাড়ছে। অসুস্থ হবোই। মুঠো ভর্তি ঔষধ খেতে হবে। কারন ডাক্তার লিখেছেন। ডাক্তার আমাদের জীবনে অনিবার্য। প্রয়োজন অনস্বীকার্য এবং চিরন্তন। এমন ধারনা সঠিক। সমস্যা তখন, যখন ধারনা বদ্ধমুল হয়। ধারনা বদ্ধমুল হওয়ার যথাযথ কারন আছে। এই ঢাকা শহরে ঘর থেকে বের হলেই ঔষধের দোকান। রাস্তায় চলতে কয়েক গজ পরপর ক্লিনিক, ডায়াগনোসিস সেন্টার, হাসপাতাল, ডাক্তারের চেম্বার।
সারা দেশেও একই অবস্থা। গত পাঁচ বছরে ঔষধের দোকানের সংখ্যা দিগুণ হয়েছে। চলতে ফিরতে চোখে দেখা এমন দৃশ্য আমাদের অবচেতন মনে ঔষধ বিষয়ে প্রভাব ফেলে। বদ্ধমূল ধারনা তৈরি হয় অসুস্থ হবই। মুড়ির মত ঔষধ খেতে হবে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ঔষধ খাওয়ার কথা বলছে।

ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন গ্যাসের ঔষধ
ডাক্তার তো লিখেই, আমরা নিজেরাও বিড়ি সিগারেটের মত গ্যাসের ঔষধ খাই। যেমন অ্যাসিডিটি কমানোর জন্য ব্যবহৃত PPI (Proton Pump Inhibitor) (যেমন omeprazole, esomeprazole) বা H2 blocker (যেমন ranitidine, famotidine) ইত্যাদি। এগুলোর সাইড এফেক্ট আছে। যেহেতু মুড়ির মত ঔষধ গুলো খাই, তাই কিছু শারীরিক সমস্যায় আমরা পরব। কি সেই সমস্যা ? ।
১. পেটের সমস্যা – নিয়মিত খেলে পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যারা নিয়মিত খাচ্ছেন, তারা এই সত্যতা বুঝতে পারছেন।
২. শরীরে পুষ্টির অভাব – প্রতিদিন খাবার হজমে বিভিন্ন প্রকার এসিড পাকস্থলিতে প্রয়োজন হয়। গ্যাসের ওষুধ পাকস্থলীর সব ধরনের অ্যাসিড কমায়। ফলে নিয়মিত খেলে ভিটামিন B12, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদির শোষণ কমে যায়। এতে হাড় দুর্বল হয়ে হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
৩. কিডনিতে সমস্যা – কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদী PPI ব্যবহার কিডনি সমস্যা বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। মিরপুর কিডনি হাসপাতালের ভিড় দেখেলে ভীত হয়ে পরবেন।
৪. পেটে জীবাণুর আক্রমন – অ্যাসিড কমে গেলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সহজে পেটে ঢুকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে (যেমন Clostridium difficile সংক্রমণ)।
৫. স্মৃতি শক্তি কম বা ডিমেনশিয়া – কিছু গবেষণায় সম্ভাব্য সম্পর্ক দেখানো হয়েছে, যদিও এটা এখনও নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়নি। আরও অনেক সমস্যা তৈরি করে গ্যাসের ঔষধ। আমি শুধু পাঁচটির কথা বললাম। শুধু গ্যাসের ঔষধ নয়, যে ঔষধ গুলো আমরা নিয়মিত খাই, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। প্রতিটা ঔষধই আমাদের শরীরে দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যা তৈরি করে। তাহলে উপায় কি ?
ঔষধ ছাড়াই আজীবন সুস্থ থাকার উপায়।

আধুনিক ঔষধের জনক হিপপোক্রেট বলেছেন
Let food be thy medicine
And medicine be thy food.
( অর্থাৎ খাবার এমন ভাবে খেতে হবে, যেন খাবারই ঔষধের মত কাজ করে। )
আমরা যদি হেলদি লাইফ স্টাইলে চলি তাহলে সুস্থ থাকতে পারব আজীবন। ভালো ঘুম অর্থাৎ ১১ টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়া এবং তারাতারি বিছানা ছাড়া। প্রতিদিন ৩০- ৪০ মিনিট রোদে থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম করা। নিশ্বাসের ব্যায়াম করা। হেলদি খাবার খাওয়া।
আমরা যারা বয়স ৩০ পার করেছি তারা খাবারের পূর্বে আপেল সিডার ভিনেগার খাব। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাব। খাবারের সময় মনোযোগ দিয়ে খাব। খাবারের সময় মোবাইল দেখা বা অন্য কোন কাজ করব না। এক এক জনের হজম ক্ষমতা এক এক রকম। যে খাবার হজমে সমস্যা করে সে খাবার খাব না। বিশেষ ভাজা পোড়া খাবার প্রায় সবার জন্যই কম বেশি সমস্যা করে।
আপেল সিডার ভিনেগারের উপকারিতা জানুন, সুস্থ থাকুন আজীবন।

ডাক্তার রোগীর গল্প বদ্ধমুল ধারনা
এক লোকের ধারনা হয়েছে, তিনি শস্য দানা। মানুষ নন। কেউ তাকে বোঝাতে পারছেন না, তিনি মানুষ। ধারনা বদ্ধমূল, ঘুম হচ্ছেনা। মন অস্থির এই বুঝি শরীর থেকে গাছ বের হল।
গেলেন হাসপাতালে।
ফিজিসিয়ান পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেন। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন দেখে কর্তৃপক্ষ ভর্তি করে নিলেন।
১৫ দিন পর তাকে বললেন ” এখন কি আপনার মনে হয়, আপনি শস্য দানা ?
জেনে নিন – প্রতিদিন কয়টা ডিম খাবেন

লোকটি বললেন – না, মনে হয়না।
আপনি এখন পুরোপুরি সুস্থ। বাড়ি যেতে পারেন।
লোকটি ছুটি নিয়ে হাসপাতালের গেট দিয়ে বের হলেন। বের হতেই দেখেন, কয়েক টি মুরগি। এটা সেটা খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। তিনি দৌড়ে আবার হাসপাতালের ভিতর ঢুকে গেলেন।
হাসপাতালের ডাক্তার নার্সরা ছুটে এলেন। কি হয়েছে? কি হয়েছে?
জেনে নিন – মাছের ডিম কেন খাবেন

লোকটি বললেন ” গেটের বাইরে কয়েকটি মুরগী ঘোরাফেরা করছে।
তাতে আপনার কি ? আপনি তো শস্য দানা নন।
লোকটি বললেন ” আমি জানি আমি শস্য দানা নই। কিন্তু ওই মুরগী গুলো কি তা জানে ? ”
সেলিম হোসেন – তাং – ০১/০৪/২০২৪ ইং – কিছু ছবি পেক্সেল থেকে নেয়া।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.