জামাই শাশুড়ি
একটা শব্দের ব্যাবহার বেশ শ্রুতিকটু, বিদঘুটে হয়ে গেছে। যেমন ধরুন কোন মেয়ে তার বান্ধবীকে বলছে ” জানিস জানুয়ারিতে আমার জামাই আমাকে থাইল্যান্ড নিয়ে যাবে। আসলে বান্ধবীকে সে তার স্বামীর বিষয়ে বলছে। আবার হয় কোন মেয়ে বেড়াতে গিয়েছেন, কারও বাসায়। তারাতারি বাসায় ফিরতে চান। তখন মেয়েটি বলছে ” আমাকে এখুনি যেতে হবে আমার জামাই বাসায় চলে আসবে। এখানেও মেয়েটি স্বামীর বিষয়ে বলছে।”
জামাই শব্দের এমনি বিশ্রী ব্যাবহার চলছে সমাজে। মেয়েটির স্বামী আসলে তার মায়ের জামাই বা তার বাবার জামাই।
জামাই অর্থ কি
এবার উদাহরন সহ বুঝে নিন। শেখ হাসিনার জামাই কে ? ওয়াজেদ মিয়া ? না ওয়াজেদ মিয়া নন। শেখ হাসিনার জামাই হচ্ছে – খন্দকার মাসরুর হোসেন মিতু। যিনি হাসিনার মেয়ে পুতুলের স্বামী। পুতুলের সাথে ডিভোর্স হয়েছে মিতুর। বর্তমানে মিতু দুবাই অর্থ পাচার মামলায় দুবাইয়ে জেল খাটছেন।
জামাই আদর নিয়ে গল্প ১
মিয়ার ব্যাটাদের নানারকম মুখরোচক গল্প চালু আছে আমাদের সমাজে। গল্পটি পুরনো দিনের। শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছে মাস্টার জামাই। বেশ আদর যত্নে আছে। খাওয়া দাওয়া ভালো চলছে। শুয়ে বসে অলস সময় পার করছেন মাস্টার সাহেব। সকাল বেলায় নাস্তা খেয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। কি আরাম, কি শান্তিতে দিন গুলো কেটে যাচ্ছে। এমন সময় টয়লেটের ডাক পেল।
বদনা হাতে চলে গেলেন পায়খানায়। মনের আবেগে পায়খানার কালো টিনের বেড়ায় সাদা চক দিয়ে লিখলেন ” শ্বশুর বাড়ি, মধুর হাঁড়ি।” কাজ শেষে বের হয়ে এলেন মাস্টার সাহেব। এরপর প্রাকৃতিক কাজ সারতে পায়খানায় ঢুকলেন শ্বশুর মশাই। তিনি খেয়াল করলেন টিনের বেড়ায় লেখাটি। তিনিও মাস্টারের লেখার নিচে একটি লাইন লিখলেন ” খাও ব্যাটা দিন চারি।”
পরদিন সকালে মাস্টার পায়খানায় ঢুকলেন। শ্বশুরের লেখা টা পড়লেন। বোধগম্য হল না । শ্বশুরের লেখার নিচে একটি লাইন লিখলেন ” সে আবার কেমন ?” শ্বশুর যখন পায়খানায় ঢুকলেন। লেখাটি খেয়াল করলেন। এবার শ্বশুর আরও একটি লাইন লিখলেন ” নেরি কুকুর যেমন।” জামাই যখন পরদিন প্রাকৃতিক কাজ সারতে গেলেন। লেখাটি পড়লেন। প্রচণ্ড লজ্জা পেলেন। তারাতারি বউকে শ্বশুর বাড়ি ছাড়লেন। শ্বশুর বেঁচে থাকতে আর কোনদিন ও বাড়িতে যান নি মাস্টার সাহেব।
দেখুন – জামাই নাম্বার ১ নাটক ।অলস মিয়ার ব্যাটারা কি সমস্যা তৈরি করে।
জামাই আপ্যায়ন ২
এই শব্দটির একটা আলাদা মর্যাদা আছে সমাজে। তাদের আদর আপ্যায়ন করা হয়, করতে হয়। বেশি বেশি আদর না পেলে অনেক মিয়ার ব্যাটা দারুন গোস্বা করেন। মেয়ের সুখ শান্তির কথা ভেবে তাই সব বাবা মাই প্রচুর আদর যত্ন করেন জামাই কে। তবে মিয়ার ব্যাটার বাড়ি যদি শ্বশুর বাড়ীর কাছাকাছি হয়, তাহলে আদর ন্যাচারালি কমে যায়।
তো এমনি বাড়ীর পাশের জামাই এলেন শ্বশুর বাড়িতে। এসে দেখেন সবাই খেতে বসেছেন। কেউ তাকে তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না। এমন সময় শ্বশুর বললেন ” জামাই কি ভাত খাবে ? বেচারার খাওয়ার খুব ইচ্ছা। কিন্ত সরাসরি তো বলা যায় না। একটু কৌশল করে, বললেন ” তা কি তরকারি দিয়ে। শ্বশুর বললেন ” ঠিক আছে, না খেলে, অন্যদিন খেও। “
জামাই আর শাশুড়ি ইটালিয়ান গল্প ৩
আনন্দের ছুটি কাটাতে সবাই গিয়েছিলেন, ইটালির ভেনিসে। ভদ্রলোকের সাথে ছিলেন স্ত্রী–কন্যা। আর ছিলেন শাশুড়ি। আনন্দ করেই ভ্রমণের পুরো সময়টা কাটানোর কথা। কিন্তু মাঝপথে ফিরে আসেন তিনি। তাও আবার পরিবারের সদস্যদের ফেলে রেখে। কারণটা শুনলে চোখ কপালে উঠবে যে কারও!
ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রীর টুথপেস্ট ব্যবহার করেছিলেন শাশুড়ি। আর তাতেই রেগেমেগে একশেষ হয়ে যান তিনি। ঝগড়াঝাঁটি করে, স্ত্রী–কন্যা–শাশুড়িকে ফেলে একাই বাড়িতে ফিরে আসেন। নিজেই শেয়ার করেন ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যম রেডিটে। ভাইরাল হয় তাঁর ওই পোস্ট।
লোকটার বয়স ৩৮ বছর, স্ত্রীর ৩৫। এই দম্পতির একমাত্র মেয়ের বয়স ৫ বছর। তবে তাঁদের নাম–পরিচয় প্রকাশ করেনি সংবাদমাধ্যম। পোস্টে ওই ব্যক্তি বলেন, ভেনিসে ঘুরতে যাওয়া ছিল তাঁর স্ত্রীর স্বপ্ন। হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে সব কাজ তাঁর স্ত্রী গুছিয়ে আনেন। ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে তাঁর শাশুড়িও সঙ্গে জুটে যান। বিষয় টা মোটেও ভালো লাগেনি তার।
বিপত্তি বাধে ভেনিসে গিয়ে। ভদ্রলোকের স্ত্রী হোটেলে একটিমাত্র কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন। যদিও তাতে বড় দুটি বিছানা ছিল। কিন্তু শাশুড়ি নাকি ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রীর বিছানায় বেশির ভাগ সময় বসে থাকতেন। এমনকি তিনি (শাশুড়ি) মেয়ের ফেসওয়াশ, শ্যাম্পু ও লোশন ব্যবহার করতে থাকেন। এটা ওই লোকটি মেনে নিতে পারেননি।
পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর একান্ত সময় কিভাবে উপভোগ করবেন।
এর মধ্যে একদিন দেখেন, শাশুড়ি তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর টুথপেস্ট ব্যবহার করছেন। মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। রেডিটে তিনি লেখেন, তিনি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে পছন্দ করেন। তাঁর ব্যবহারের টুথপেস্ট আরেকজন ব্যবহার করছেন। এটা দেখে তিনি ‘অসুস্থ’ বোধ করেন।
ঘটনাটি নিয়ে বচসা হয়। শাশুড়িও উল্টো দুকথা শুনিয়ে দেন। এরপর ভদ্রলোক সবাইকে রেখেই উড়োজাহাজের টিকিটের তারিখ বদলে বাড়িতে ফিরে আসেন। অবশ্য এ ঘটনা নিয়ে রেডিটে পোস্ট দেওয়ায় অনেকে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এতে নিজের ভুল বুঝতে পারেন তিনি। মন্তব্যকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইবেন তিনি। নিউজ টি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়। প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ২৯
শাশুড়ি বা শ্বশুর, তাদের প্রতি আমাদের যথেষ্ট শ্রদ্ধা রাখা উচিত। তার মেয়ে আমার সন্তানের মা। আমার শারীরিক, মানসিক আনন্দের কারন। সুখ দুঃখের সাথী, জীবন সঙ্গিনী।
সেলিম হোসেন – ২৫/০৮/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী