কুমড়োর বীজের উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়ার বীজ উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস। কোনো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই । এটি একটি নিরাপদ প্রোটিনের উৎস। এই বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস কপার,ভিটামিন ই, আয়রন ও ফাইবার।
কুমড়ো বীজ প্রধানত সালাদে খেতে হয়। এছাড়াও মাছের তরকারিতে দিতে পারেন। সব্জির সাথেও খেতে পারেন। ভেজে খেলে এর পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যায়।
১. কুমড়োর বীজ খাওয়ার জন্য এগুলোকে রোস্ট করে, অঙ্কুরিত করে বা ওটসে যোগ করে খাওয়া যেতে পারে।
২. কুমড়োর বীজ সালাদ, তরকারি, স্যুপ ইত্যাদিতেও অ্যাড করে খাওয়া যায়।
৩. কুমড়োর বীজ গুঁড়ো করেও খাওয়া যায়।
৪. কুমড়োর বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি এবং চর্বি থাকে, তাই প্রচুর পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ খেতে পারেন।
৫. কুমড়োর বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই এটা প্রচুর পরিমাণে খেলে ফোলাভাব, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। খাওয়ার আগে ২/৩ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। তাহলে কোন সমস্যা হবে না।

কুমড়োর বীজের উপকারিতা ১১ টি
১. মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে ভিটামিন ই, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেগুলো শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। ইমিউনিটি ভালো থাকলে যেকোনো রোগ সহজে প্রতিরোধ করা যায়।
২. মিষ্টি কুমড়ার বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এটি গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৩. কুমড়োর বীজের ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
৪. এই বীজের ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
৫. মিষ্টি কুমড়ার বীজ প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা নিবারণ করার পাশাপাশি খাওয়ার প্রবৃত্তি কমায়। ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় এটি যোগ করা উচিত ।
৬. এই বীজে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় এটি বোন ডেনসিটি বৃদ্ধি করে হাড়কে মজবুত করে।
জেনে নিন – ন্যাচারালি কিভাবে দূর করবেন পেট ফাঁপা, পেট ভরা, বুক জ্বলা এসিডিটি সমস্যা।

৭. হতাশা ও উদ্বেগ হ্রাসে সহায়ক
৮. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
৯. চুলে পুষ্টি যোগায় এবং মজবুত করে
১০. ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে ত্বক ভালো রাখে
১১. পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে
কুমড়োর বীজের উপকারিতা এবং দাম
বাজারে এখন প্রায় সব দোকানেই কুমড়ো বীজ কিনতে পাওয়া যায়। আবার অনলাইনে অর্ডার করেও কিনতে পারেন। দাম সাধারনত ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যে পাবেন।
যে ১০ সাস্থ্যকর খাবার অবশ্যই খাবেন। ডাঃ স্টেন একবারগ।

কুমড়োর বীজের তেল কীভাবে তৈরি করবেন
কুমড়োর বীজের উপকারিতা আরও একটি। এটি স্পেশাল তাই আলাদা ভাবে এই তেলের কথা বলছি। পাকা মিষ্টিকুমড়া কেটে বীজ বের করে নিন। বীজের গায়ে লেগে থাকা কুমড়ার অংশ হালকা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। এরপর পরিষ্কার শুকনা একটি পাত্রে বীজ গুলো রেখে দিন। রুমের সাধারন বাতাসে বীজ শুকিয়ে যাবে। রোদে রাখবেন না। ঘরে এসিও চালাবেন না।
বীজ শুকিয়ে গেলে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে অলিভ ওয়েল নিন। তাতে বীজগুলো ঢেলে দিন। বীজের পরিমাণ যদি ২০০ গ্রাম হয়, তাহলে তেলও নিতে হবে ২০০ গ্রাম। মৃদু আঁচে জ্বাল দিন। স্বচ্ছ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। মাঝে মধ্যে কাঠের চামচ দিয়ে নেড়ে দিন।
তেল ফুটে উঠলেই চুলা থেকে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে একটি কাচের বোতলে রেখে দিন। এভাবে তৈরি করা তেল দুই মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। ত্বকের জন্য মিষ্টিকুমড়ার তেল তো তৈরি হলো। এই তেল কীভাবে ব্যবহার করতে হবে ?
ত্বকে মিষ্টিকুমড়ার তেল
ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যবহার করবেন। এটি ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার। প্রতিদিন ব্যবহার করুন। গোসলের পর এবং ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। যেকোনো ধরনের ত্বকেই এই তেল ব্যবহার করা যায়। বিশেষত যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের ত্বকে এই তেল চমৎকার কাজ করে।

আখরোটের উপকারিতা
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, হৃদযন্ত্র ভালো রাখে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, গর্ভস্থ শিশুর জন্য উপকারি, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, মানসিক চাপ কমায়, শিশুর মস্তিস্কের বিকাশ করে, হাড় মজবুত করে, এবং ভালো ঘুম হয়।
সালাদে কুমড়োর বীজের উপকারিতা
শসা, গাজর, টমেটো, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, ৮/১০ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা আখরোট এবং কুমড়া বিচি, পেঁয়াজ, কাচামরিচ, আপেল সিডার ভিনেগার, এক্সট্রা ভার্জিন ওলিভ ওয়েল, গোল মরিচের গুড়ো, পিঙ্ক সল্ট।
উপদান গুলো আপানার পছন্দমত সাইজে কেটে নিন। পেঁয়াজ মরিচ কেটে নিন।
ড্রেসিং করুন
একজনের জন্য
এক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন ওলিভ ওয়েল, একচামচ ভিনেগার, পরিমান মত পিঙ্ক সল্ট, একটু খানি গোল মরিচের গুঁড়ো একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তৈরি হল আপনার ড্রেসিং। এবার কেটে রাখা উপকরনের উপর ড্রেসিং ঢেলে দিন। ভালভাবে মিশিয়ে নিন। তৈরি হল আপনার সাস্থ্যকর সালাদ আখরোট, কুমড়ো বিচি সহযোগে।
জেনে নিন – কেন খাবার শুরু করবেন সালাদ দিয়ে।

প্রতিদিন একই ধরনের সালাদ খাবেন না। মাঝে মাঝে ধরন টা পরিবর্তন করবেন। এতে পুষ্টি এবং স্বাদের ভিন্নতা আসবে। ভালো লাগবে সালাদ খেতে। এটা হতে পারে আপনার সাস্থ্যকর ইফতার। অথবা যে কোন লাঞ্চ বা ডিনারের পূর্বে একবাটি খেয়ে নিবেন। ওজন কমানোর জার্নিতে থাকলে কুমড়ো বীজ মিশ্রিত খাবার অবশ্যই একবেলায় খাবেন।
খেতে কেমন লাগল হেলদি সালাদ কমেন্ট বক্সে লিখে জানান।
সেলিম হোসেন – ২২/০২/২০২৪ ইং
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.