স্টেম সেল কি এটা ছাড়া জীবন অচল
তিনটে চিল বেশ উঁচুতে পরস্পরের মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে চক্রাকারে আকাশে উড়ছে। ব্যালকনিতে বসে আকরাম খান তাকিয়ে দেখছিলেন। এই রুক্ষ ঢাকা শহরে চিলের দেখা মেলা ভাগ্যের ব্যাপার। আকরাম বেশ অবাক হলেন, চিল গুলোর ডানা নড়ছে না, কিন্ত তারা দ্বিধাহীন চিত্তে শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছে।
দাদু, ডাক শুনে পিছনে তাকালেন আকরাম, নাতনি তাসিনা দাঁড়িয়ে। বয়স ১৭ বছর, কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
তাসিনাকে আকরাম নুড়ি বলে ডাকেন। তাসিনার চেহারায় তিনি বড় বোনের মুখচ্ছবি দেখতে পান।
নুড়ি দেখ, কি সুন্দর করে আকাশে চক্রাকারে ঘুরছে চিল !
দাদু, ‘আল্লাহ আকবর’ জিকির কর। কারন তুমিও তো ঘুরছ।
ঔষধ ছাড়াই ফ্যাটি লিভার দূর করুন একদম ন্যাচারালি।

তার মানে ?
মানে অবশ্যই আছে। আমরা প্রত্যেকেই ঘুরছি। লাটিমের মত ঘণ্টায় ১৫২৯ কিলোমিটার গতিতে। ঢাকার অক্ষাংশ হিসাবে।
তাহলে তো আমার হাড়, মাংস খুলে বাতাসের সাথে মিশে যাওয়ার কথা। আর আমিতো স্থির হয়ে বসে আছি ! আকরাম বললেন
হুম, সে জন্যই বলছি ‘ আল্লাহ আকবর ‘ জিকির কর।
খুলে বল, তাহলে বুঝতে পারব।
হ্যা আরও আছে, সেটা হল আমরা শুধু লাটিমের মতই ঘুরছি না, একই সাথে একই সময়ে প্রচণ্ড গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অর্থাৎ পৃথিবী তার কক্ষপথে সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১০৭২২৫ কিলোমিটার বেগে।
এটা কিভাবে সম্ভব, তাহলে তো কিছুই টিকে থাকার কথা নয়। সবকিছু ধুলো হয়ে মহাশূন্যে মিশে যাওয়ার কথা !
সে জন্য বলছি আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। আল্লাহর বিশেষ দয়াতেই এই মহা বিশ্ব চলমান। যেমন – একটু সহজ করে বলি আমরা যখন বাসে করে যাই। তখন বাস প্রচণ্ড গতিতে এগিয়ে যায়। বাসের চলার সাথে আমাদের গতিও বাসের সমান থাকে। আমাদের কে বাসের সিটে বেঁধে রাখা হয় না। কিন্ত নড়াচড়া করতে পারি, পানি খেতে পারি, আরামে বসে থাকি। আমরা ছিটকে পরে যাই না। বিজ্ঞান আমাদের জানাচ্ছে এখানে গতি জড়তা সুত্র টা কাজ করে।
আজীবন সুস্থ থাকতে হেলদি খাবার গুলো সম্পর্কে জানা দরকার।

স্টেম সেল কি উপকারিতা কি
গতি জড়তার কারনেই পৃথিবী নামক গ্রহে আমরা এভাবেই টিকে থাকি, ছিটকে যাই না।
আমার মাথায় তো জট লেগে গেল ! তুমি পুরো বিষয় টা বিস্তারিত বল।
আরেক দিন বলব দাদু। তোমার শুক্রবারের ২১ ঘণ্টার ফাস্টিং শেষ, বেশ কিছু স্টেম সেল শরীরে তৈরি হয়েছে আশাকরা যায়। এখন খাবার খেয়ে নাও। ব্লাক রাইস গরম গরম না খেলে স্বাদ পাবে না।
ঠিক আছে, আরেক দিন শুনব। কিন্ত স্টেম সেল কি ? এতে উপকারই বা কি ? আমি খেতে খেতে তোমার মুখ থেকে সেটা শুনতে চাই।
ঠিক আছে বলছি।
আমাদের পরিপাকতন্ত্র অর্থাৎ নাড়িভুঁড়ি। এটা লম্বায় প্রায় ২০-২৫ ফুট। তুমি জান যে, এটা কোটি কোটি কোষ দিয়ে তৈরি।
হ্যা জানি।
এই লম্বা নাড়ির কিছু কোষ খাদ্য শোষণ করে। এদের বলা হয়ে enterocytes বা শোষণকারী কোষ। আবার goblet cell মিউকাস রস নি:সরণ করে পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাবারের প্রবাহ নিশ্চিত করে। একই সাথে এই মিউকাস খাবারের মাঝে অবস্থানরত জীবানু ও রাসায়নিক প্রদাহ থেকে পরিপাকতন্ত্রের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
হু হু করে বাড়ছে কিডনি রোগী। আজীবন কিডনি টাকে সুস্থ রাখুন ন্যাচারালি।

স্টেম সেল কি নতুন কোষ তৈরি করে
খাদ্যের পরিশোষণ, প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে enteroendocrine নামক কোষগুলো। এছাড়াও পরিপাকতন্ত্রে রয়েছে M-cell, tuft-cell নামক বিচিত্র সকল কোষ। সহজ কথায় বলতে গেলে, পরিপাকতন্ত্র বা নাড়ি-ভুড়ি কয়েকটি বিশেষ ধরণের কোষের সম্মিলনে তৈরি।
মজার ব্যাপার হলো, উপরে যে কোষগুলোর নাম বলা হলো তারা সবাই হলো differentiated cell (বিশেষায়িত কোষ)। অর্থাৎ, এরা সাধারণ অবস্থায় বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরী করতে পারে না। অথচ, আমাদের খাবার গ্রহনে বা অন্য উপায়ে পরিপাকতন্ত্রের ভিতরে ঢুকে পড়ছে রোগ জীবাণু, এসিড। প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে কোষ গুলো।
তাহলে তো একজন মানুষ ছোট থেকে বড় হতে হতে পরিপাকতন্ত্র নাই হয়ে যাওয়ার কথা। আকরাম খান বললেন
হ্যা এখানেই রহস্য লুকিয়ে আছে। তাসিনা বলল
সন্তান কেন বিপথে যায় ? সঠিক পথে সন্তানকে চালনার উপায়।

কোষ গুলো যেমন মারা যাচ্ছে ঠিক তেমনি নতুন করে আবার তৈরি হচ্ছে। আর এ কাজটাই করছে স্টেম সেল। পরিপাকতন্ত্রের মাত্র ১% এর কম কোষ হলো স্টেম সেল। কিন্তু, এই সামান্য কিছু কোষ সম্পূর্ণ অঙ্গটির সকল ধরণের কোষ প্রয়োজন অনুসারে সৃষ্টি করতে পারে। একই সাথে স্টেম সেল আবার নতুন স্টেম কোষও তৈরি করতে পারে। পরিপাকতন্ত্রের অন্য কোষের এই ক্ষমতা নেই।
আমাদের রক্তে, অন্যান্য অঙ্গেও আছেও স্টেম সেল। সব জায়গায় এর একই কাজ। অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গকে মেরামত করে নতুন অঙ্গে পরিনত করা। আরও মজার বিষয় হল আমরা যখন মারা যাই তখন শরীরে অল্প কয়েক টা স্টেম সেল জীবিত থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সঠিক পরিবেশ পেলে এই অল্প কয়েকটা স্টেম কোষ থেকে যে মানুষ টা মারা গেছেন তাকে আবার জীবিত করা সম্ভব। স্টেম সেল কি আশাকরি বুঝতে পেরেছ।
খুব দ্রুত ওজন কমানোর সাস্থ্যকর উপায়।

সুবহানআল্লাহ, তাহলে মানুষ একেবারেই মরে যায় না ? আল্লাহ বলেছেন আমাদের কে আবার জীবিত করবেন একেবারে নির্ভুল ভাবে। আল্লাহ সবই পারেন। আল্লাহ হয়ত স্টেম সেল থেকেই আমাদের কে কিয়ামতের মাঠে জীবিত করে দাঁড় করাবেন তার সামনে। আলহামদুলিল্লাহ্
আরও যেভাবে স্টেম সেল বাড়ানোর উপায়
১. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম
গভীর ঘুম এই সেলের পুনর্জন্ম এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
২. পুষ্টিকর খাদ্য
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার এই কোষ রক্ষা ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যেমন: ব্লুবেরি, ব্রকলি, পালং শাক,হলুদ (turmeric), আদা, মাছের তেল (omega-3), সবুজ চা (green tea)
৩. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (Intermittent Fasting)
মাঝে মাঝে না খেয়ে থাকা (যেমন ১৬ -২২ ঘণ্টা ফাস্টিং ) শরীরকে স্টেম সেল উৎপাদনে উৎসাহিত করে।
৪. ব্যায়াম (Exercise)
নিয়মিত শরীরচর্চা (বিশেষ করে হালকা দৌড় বা brisk walking) স্টেম কোষের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৫. স্ট্রেস কমানো
ধ্যান (Meditation), যোগব্যায়াম ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম স্ট্রেস হ্রাস করে, যা এই সেলের জন্য ভালো।
আমাদের সবারই সপ্তাহে ২ দিন কমপক্ষে ২০ ঘণ্টার ফাস্টিং করা উচিত। তাসিনা বলল
এই কোষ কিভাবে রোগ সারিয়ে তুলে তা নিয়ে গবেষণা পত্র পড়ুন
সেলিম হোসেন – তাং ২৫/০১/২০২৫ ইং – ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া