ব্রেইন সতেজ রাখার ১০ টি উপায়। স্মার্ট ব্রেইনের রহস্য 10 ways to keep your brain fresh

ব্রেইন সতেজ রাখার

ব্রেইন সতেজ রাখার ১০ টি উপায় 

তুই কি নিউজ টা দেখেছিস ? এক মুঠো মিক্স বাদাম মুখে দিতে দিতে বলল বেলাল আহমেদ। দুই বন্ধুর  আজকের আড্ডায় আজ খাবার হিসেবে আছে বাদাম আর শসা।
কোন নিউজ ? জানতে চাইল জাহিদ ইসলাম
ঐ যে পল্লবীতে জোড়া খুন।
না নিউজ টা চোখে পড়েনি।
বলিস কি ! একেবারে ভাইরাল নিউজ।
মিরপুর ১১ নম্বরের বি ব্লকের একটি পাঁচ তলায় সাবলেট থাকত দোলা। স্বামী চাকরি করত। বরগুনাতে একটি ঔষধ কোম্পানিতে।
চাকরির সুবাদে স্বামী নাজমুল হাসান পাপ্পু বরগুনাতে থাকত। বৃহস্পতিবার রাতে আসত শনিবারে চলে যেত।
ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
সপ্তাহের কয়েক টা দিন ফ্রি থাকত দোলা। এই সময়টুকু সে পরকীয়ায় মন দেয়। ফেসবুকে প্রেম করে সৌদি প্রবাসী গউস মিয়ার সাথে। বাড়ি গোপালগঞ্জে।
গত জানুয়ারি মাসে গউস মিয়া সৌদি থেকে বাংলাদেশে আসে। মিরপুর ১১ তে বাসা নেয়। গউস মিয়ার বাসাতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল দোলার। গউসের বাসাতে দিনের বেলায় তারা রোমাঞ্চকর সময় কাটাত।
ঘটনার দিন ২৮/০৫/২০২৫ ইং তারিখ সকালে দোলা এবং পাপ্পু সকালের নাস্তা খেতে হোটেলে যায়। গউস মিয়া দেখে ফেলে তাদের। দোলাকে অবিবাহিত জানত গউস মিয়া। সাথে অন্য পুরুষ দেখে মাথা খারাপ হয়ে যায় গউস মিয়ার।
সে তাদের পিছু নেয়। বাসা পর্যন্ত যায়। খবর নিয়ে জানতে পারে সাথের পুরুষটি দোলার স্বামী। খারাপ মেজাজের আগুনে ঘি ঢেলে পরে। গউস বাসায় গিয়ে বড় দুটো চাকু নিয়ে আসে। ঢুকে পরে দোলার বাসায়। কুপিয়ে দুজন কে হত্যা করে। পুলিশের কাছে সব কিছু স্বীকার করে গউস।
ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
গউস কেন এমন কাজ করতে গেল ? দুটো মানুষ কে একসাথে খুন। এরপর অকপটে স্বীকার। নির্ঘাত ফাসি হবে তার। একটানা কথা গুলো বলল বেলাল

জাহিদ বলল, তারা পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত ছিল। এই সম্পর্ক নিউরোসাইকোলজিক্যাল স্তরে গভীর প্রভাব ফেলে। সাময়িক ভাবে ইতিবাচক অনুভূতি দেয়। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে আবেগজনিত ভারসাম্যহীনতা, তীব্র মানসিক চাপ তৈরি করে। Betrayal Trauma Syndrome  প্রতারিত হলে মস্তিষ্কে অবিশ্বাস ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়ে। অনেকটা যুদ্ধপরবর্তী ট্রমার মতো।

প্রেমে পরে গউসের ব্রেইন ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল। ব্রেইন ড্যামেজের সমস্যা সমাজে বেড়ে চলেছে। ঘটছে নানান রকম ঘটনা, মানুষ অসুখী হয়ে পরছে। আমাদের প্রয়োজন ব্রেইনের বিশেষ যত্ন নেয়া, সতেজ রাখা। তাহলে আমরা শান্ত, সুখী জীবনযাপন করতে পারব। কি করতে হবে, বলছি সে কথা।
ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার

১. ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে 

ব্যায়াম মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করার এবং আপনার বুদ্ধি বৃত্তিক কার্যকারিতা বৃদ্ধির একটি দুর্দান্ত উপায়।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণা পরিচালনা করে। সেখানে তারা বলে, মস্তিষ্কের একটি অংশ হিপ্পোক্যাম্পাস। এটি স্মৃতিশক্তির সাথে সম্পর্কিত। যা ব্যায়ামের দ্বারা প্রচুর উপকৃত হয়। ব্যায়ামের ফলে হিপ্পোক্যাম্পাসে নতুন নিউরন তৈরি হয়, যার ফলে হিপ্পোক্যাম্পাসের আকার বৃদ্ধি পায়।

আমাদের বয়স যত বাড়ে হিপ্পোক্যাম্পাস ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যায়। এক্ষেত্রে আরও বিপদ ডেকে আনে বিষণ্নতা এবং আলঝাইমার রোগ। এই সব রোগীদের হিপ্পোক্যাম্পাস দ্রুত গতিতে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম এই প্রক্রিয়াটিকে ধীর করে দেয়। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স এবং মিডিয়াল টেম্পোরাল কর্টেক্সের পরিমাণও বেশি থাকে। মস্তিষ্কের এই দুটি অংশ চিন্তাভাবনা এবং স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে।

ব্যায়াম তোর মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ পর্যাপ্ত কার্যকারিতার জন্য জ্বালানির সরবরাহ উন্নত করে। নতুন রক্তনালী তৈরি করে। বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে এবং গ্রোথ হরমোন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে। যা মস্তিষ্কের কোষের স্বাস্থ্য এবং বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আরও আছে, ব্যায়াম রক্তনালীতে জমে থাকা কোলেস্টেরল কমিয়ে পরোক্ষভাবে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। যা স্ট্রোকের একটি প্রধান কারণ। ঘুম এবং মেজাজ উন্নত করে, ভাল লাগার হরমোন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে। ব্যায়াম স্ট্রেসও কমায় এবং কর্টিসল হরমোন হ্রাস করে।

ব্যায়াম BNP উৎপাদনও বাড়ায়। আমি রাজনৈতিক দলের বলছি না। এর মানে হল, ব্রেন ন্যাট্রিউরেটিক পেপটাইড। যা একটি প্রোটিন। BNP একটি স্নায়বিক সুরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।কারণ এটি মস্তিষ্কের রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং প্রদাহ কমায়।

ব্যায়াম মস্তিষ্কের আয়তন বৃদ্ধি করে, স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা উন্নত করে। পাশাপাশি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও কমায়। ব্যায়াম শারীরিক, মানসিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আশ্চর্যজনক।

তাই, ওয়ার্কআউট রুটিনে আধা ঘন্টা অ্যারোবিক ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।  কারণ এটি এমন একটি ওয়ার্কআউট যা মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি করবে। যদি আমরা চাই সুস্থ মস্তিস্ক আমাদের সচল রাখুক।

স্ট্রেস নিয়ে ভেড়ার উপর গবেষণায় কি পেলেন ইবনে সিনা। 

ব্রেইন সতেজ রাখার

২. ব্রেইন সতেজ রাখার উপায় সঠিক খাবার 

একটা উক্তি আছে, আমরা যা খাই, আমরা ঠিক তাই। খাবারের আছে রোগ নিরাময়, প্রতিরোধ এবং শরীর কে শক্তিশালী করার ক্ষমতা। তাই, আমরা জানি যে খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, কোন ধরণের খাবার ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য ভালো ?

প্রথমত সাস্থ্যকর ফ্যাট। যেমন ঘি, নারিকেল তেল, অলিভ ওয়েল, বাদাম, এভোকাডো। ওমেগা-৩ আমাদের খুব পরিচিত। ডাক্তাররা অনেক রোগীদের এই সাপ্লিমেন্ট লিখে দেন। এটা মস্তিষ্কের জন্য ভালো।

কেন চর্বি খাব ? আমাদের মস্তিষ্কে ৬০% চর্বি থাকে। স্বাস্থ্যকর চর্বি ওমেগা ৩ এখানে ভালো ভুমিকা রাখে।

বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ওমেগা-৩ এর ঘাটতি রয়েছে। এটি সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং ADHD প্রতিরোধেও প্রমাণিত। রক্ত ​​জমাট বাঁধা এবং স্ট্রোক প্রতিরোধেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ওমেগা-৩ এর সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, তিসির বীজের তেল এবং ডিমের কুসুম। দেশীয় নদীর মাছ যেমন – ইলিশ, পাঙ্গাস, রুই, মাছের ডিম। যারা বেশি অসম্পৃক্ত চর্বি (অর্থাৎ ওমেগা-৩) গ্রহণ করেন, তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের হার সম্পৃক্ত চর্বি (বার্গার, চিকেন ফ্রাই ) গ্রহণকারীদের তুলনায় কম। প্রতিদিন একমুঠো মিক্স বাদাম আর সপ্তাহে ৩ বার মাছ খেলে শরীরে  ওমেগা-৩ এর চাহিদা পূরণ হয়। ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য এসব খাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

হেলদি খাবার আজীবন সুস্থ রাখে। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার

সবুজ শাকসবজি এবং ফল। সুস্থতার জন্য এর গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এর মধ্যে কিছু খাবার আছে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে ভালো। সেই খাবার গুলো মস্তিস্কের বুড়িয়ে যাওয়াকে ধীর করে দেয়।  তা হল স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, কেল, পালং শাক, ব্রকলি।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ট্রিপটোফান গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি কারণ। এটি আমাদের শরীরের ভালো লাগার হরমোনগুলির মধ্যে সেরোটোনিনের সংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয়। ট্রিপটোফান সমৃদ্ধ খাবার হল কাজুবাদাম, ওটস, লাল চাল, বার্লি, কুমড়ো বিচি, সূর্যমুখীর বিচি।

এত কিছু তো খাব। কিন্ত কোন খাবার কি বাদ দিতে হবে ?

হ্যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর হল সাদা চিনি। কারণ এগুলি ইনসুলিন স্পার্ক করায়। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট খেতে হবে, যা ধীরে ধীরে হজম হয়। ইনসুলিন ধীরে ধীরে নিঃসৃত হয়।

হার্ভার্ডের গবেষণা মতে , সামুদ্রিক খাবার, ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য দানা, নদীর মাছ, বাদাম এবং  নারিকেল তেল, ঘি, অলিভ তেল থেকে প্রাপ্ত চর্বি গুলো সাস্থ্যকর। সামুদ্রিক খাদ্যে পাওয়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায়।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ট্রিপটোফ্যান ছাড়াও, খাদ্যতালিকায় সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন ইত্যাদির মতো সমস্ত ভিটামিন এবং খনিজ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণও উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পুষ্টি গ্রহণ সবচেয়ে ভালো।

জেনে নিন কোন খাবার গুলো কখনো খাবেন না। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার

৩. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ম্যানেজ 

প্রতিদিন আমাদের দেহমনে নানান চাহিদা তৈরি হয়। দেহমনে এই চাহিদার প্রতিক্রিয়াই হল স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। এটা স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয়। কিন্তু যখন স্ট্রেসের মাত্রা বেশি এবং স্থায়ী হয়। তখন আমাদের শরীর এবং মন উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এখানে প্রধান অপরাধী হল স্ট্রেস হরমোন, কর্টিসল। স্ট্রেস কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এটি আমাদের প্রয়োজনীয় হরমোন তবে অল্প পরিমানে। কিন্ত স্ট্রেস যখন বাড়তে থাকে এবং স্থায়ী হয়, তখন কর্টিসলের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। যে কারনে হাইপোথ্যালামাস সংকুচিত হয়, যার ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়। কোন কিছু শিখতে অনাগ্রহ তৈরি হয়।

কর্টিসলের উচ্চ মাত্রা সিন্যাপ্স নিয়ন্ত্রণকেও ব্যাহত করে। যার ফলে মানসিক এবং ব্রেইন উভয় দুর্বলতা দেখা দেয়। আবেগগত দুর্বলতার ফলে সামাজিক মেলামেশা কমে যায়। হতাশা এবং উদ্বেগের মতো মানসিক অসুস্থতায় লোকেরা সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। আত্মীয়স্বজনের বাসায় যায় না, বন্ধু বান্ধবের সাথে যোগাযোগ রাখে না।

তাই ক্ষতিকারক স্ট্রেস থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কিছু কাজ আমরা নিয়মিত করলেই স্ট্রেস থেকে মুক্ত থাকতে পারব। ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য যা খুব উপকারী।

যেভাবে দ্রুত ওজন কমাবেন। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার

কীভাবে স্ট্রেস কমানো যায় 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে দ্রুত হাঁটার মতো ব্যায়াম করার পরামর্শ দেয় । শারীরিক কার্যকলাপ ছাড়াও, উইমহফ মেথডে নিশ্বাসের ব্যায়াম, কোন ভালো বই পড়া। প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটানো, যেখানে সবুজ গাছপালা খোলা আকাশ আছে। মনোযোগ দিয়ে জামাতের সাথে নামাজ আদায়, যোগব্যায়াম এবং ডাঃ ওয়েলস এর ৪-৭-৮ নিশ্বাসের ব্যায়াম ভালো কাজে দেয়।

তা ছাড়া প্রিয়জনের সাথে কাটানো একটা উপায়। সামাজিক কাজ করা মানসিক চাপ কমানোর জন্য একটি দুর্দান্ত ধারণা। বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডায় হাসাহাসি করা চাপ কমাতে সাহায্য করে।

একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিভিন্ন রকম এ্যাপ মানসিক চাপের কারন হতে পারে। যেমন – ফেসবুক, ইউটিউব, ইমু, ইত্যাদি। চাপ কমাতে কোনরকম অযথা সময় এখানে দেয়া যাবে না। রাত ৯ টায় সমস্ত প্রকার এ্যাপ বন্ধ করে দিতে হবে। সকাল ৯ টার আগে কোন এ্যাপে ঢোকা যাবেনা।

নিজের বিরক্তিকর বিষয় গুলো নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে হবে। নেতিবাচক মানুষ এবং নেতিবাচক পরিবেশ এড়িয়ে চলাটা গুরুত্বপূর্ণ।

ঝেড়ে ফেলুন পেটের চর্বি ন্যাচারাল উপায়ে। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৪. গভীর ঘুম  
আমাদের মস্তিস্ক ঘুমায় না। এমনকি আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখনো না। ঘুমের সময় মস্তিস্ক জেগে ওঠে নতুন ভাবে। প্রতিদিন আমরা নতুন কিছু শিখি। সারাদিন আমাদের উপর অনেক চাপ যায়। শরীরে টক্সিন উৎপন্ন হয়।
ঘুমের সময় মস্তিস্ক এগুলোর মোকাবেলা করে। এখন আমরা সবাই জানি, প্রতিদিন আমাদের ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। কিন্ত আমরা কি সেভাবে ঘুমাই ? আমরা কি রাতে ঘুমাতে দ্রুত বিছানায় চলে যাই ?  

AARP দ্বারা পরিচালিত একটি স্লিপ-ব্রেন হেলথ জরিপ অনুসারে , দেখা গেছে যে ৫৩% প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুমিয়ে থাকতে অসুবিধা হয়। অর্থাৎ ৬-৮ কোটা পুরনের আগেই তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তারপর তাদের আর ঘুম আসে না। ৪৪% বলেছেন যে তারা সারা রাত ঘুমাতে পারেন না। পরীক্ষা করার সময়, এই ব্যক্তিদের গড় মানসিক সুস্থতার স্কোর কম ছিল।

একটি প্রচলিত ধারনা আছে বয়স বাড়লে ঘুম ভালো হয় না। আসলে বিষয় টা বিজ্ঞান ভিত্তিক নয়। সাস্থ্য বিজ্ঞান বলছে বয়স ৯০ বছর হলেও খারাপ মানের ঘুম হওয়া স্বাভাবিক নয়। তবে বয়স্ক ব্যক্তিরা ঘুমের ব্যাঘাতে ভোগেন। ছোটবেলা থেকেই কিছু ভালো ঘুমের অভ্যাসে থাকলে বেশি বয়সেও ভালো ঘুমানো যাবে।

রাতে ৬-৮ ঘন্টার কম ঘুমালে কি হয় ? মস্তিস্কের যুক্তি, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, দুর্বল জ্ঞান, পাশাপাশি ডিমেনশিয়া এবং আলঝাইমার রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমরা যখন গভিরভাবে ঘুমাই, তখন মস্তিস্ক শরীরে জমে থাকা টক্সিন পরিস্কার করতে ব্যস্ত থাকে।

এরকম একটি টক্সিন প্রোটিন হল অ্যামাইলয়েড প্লাক। যা সাধারণত আলঝাইমার রোগীর মস্তিষ্কে দেখা যায়। মস্তিস্কে এর উপস্থিতি আলঝাইমার রোগের লক্ষণ। ঘুম খারাপ হলে আলহঝেইমার রোগ হবে, বিষয় টি এমন নয়। কিন্ত এটি অবশ্যই আলঝেইমার রোগের কারন। ঘুমের অভাব মস্তিষ্কের কোষগুলির যে ক্ষতি করে তা অপরিবর্তনীয়, যা একটি গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে ।

স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নতুন তথ্য আমাদের মস্তিষ্ক দ্বারা প্রক্রিয়াজাত এবং সংশোধিত হয়। এই সব ঘটে যখন আমরা গভীর ঘুমে থাকি।

নিরবিচ্ছিন ঘুমাতে যা করবেন। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৫. ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য কাগজে লিখতে হবে 
আচ্ছা, তোর তো মনে আছে, স্কুলে আমরা লেখালেখির কাজ গুলো খাতায় করতাম। আমি এখনো কোন কিছু শিখতে গেলে খাতায় লিখি। আমাদের সময় ল্যাপটপ ছিল না। ক্লাসে নোট নেওয়ার জন্য কখনও ল্যাপটপ ব্যবহার করিনি। কোন মিটিঙে আমি এখনো নোট নেই খাতায়। ল্যাপটপের চেয়ে খাতায় লিখলে বিষয় ব্রেইনে ভালোভাবে গেঁথে যায়, মনে থাকে।

নিশ্চিত করে বলা যায়, হাতের লেখা আমাদের স্মৃতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। যখন ব্লগ ভিডিও বানাই, তখন কাগজে বড় বড় করে নোট লিখি। ভিডিও করার সময় সে লেখা আমার চোখের সামনে রাখি।

হাত দিয়ে লেখার ব্যাপারে কিছু গবেষণাও আছে। অ্যাসোসিয়েশন অফ সাইকোলজিক্যাল সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, হাতের লেখা আমাদের কে বিষয়গুলি আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে।

প্রিন্সটন টাইপিং-এ পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে , হাতের লেখা জ্ঞানীয় বিকাশকে উদ্দীপিত করে। ধারণা ধরে রাখতে এবং উদ্দীপ্ত করতে সহায়তা করে। হাতের লেখা সংবেদনশীল-মোটর দক্ষতা অনুশীলন এবং শক্তিশালী করার একটি খুব ভালো উপায়। হাতে লিখতে গেলে সময় বেশি লাগতে পারে। তবে লেখার জন্য হাতে কাগজে লেখাই সবচেয়ে ভালো উপায়।

বউকে গল্প বলতে গিয়ে কেন হাসপাতালে অমিত। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৬. ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য মস্তিস্কের উদ্দিপনা  
মস্তিস্ক যত ব্যবহার করা যায়, তত ক্ষমতা বাড়ে। ব্যবহার কমে গেলে ধীরে ধীরে এর কার্যকারিতা হারায়। কোন জিনিস মনে রাখতে অসুবিধা হবে। কেউ সামনে আসলে তার নাম মনে করতে অসুবিধা হবে। আবার চিন্তা করার ক্ষমতাও কমে যাবে। তোর মস্তিষ্ক যত জটিল কাজ করবে, মস্তিষ্কের জন্য ততই ভালো। কারণ এটি মস্তিষ্কের কোষগুলিকে উদ্দীপিত করে এবং তাদের সক্রিয় রাখে।

মস্তিষ্কের ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ? প্রশ্ন করতে পারিস সেটা আবার কেমন ? এই প্রশ্নের উত্তর হল – জ্ঞানের রিজার্ভ বা স্টোর উন্নত করা এবং বজায় রাখা। জ্ঞানের রিজার্ভ মূলত আমাদের মস্তিষ্কের যেকোনো ক্ষতি প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বোঝায়। যদি কোনও ক্ষতি হয়, তবুও কাজ করার জন্য আমাদের কাছে কিছু ধরণের ব্যাকআপ থাকবে।

এর মানে হল, যদি কেউ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাহলে সেই ব্যক্তির জীবদ্দশায় ডিমেনশিয়ার লক্ষণগুলিও নাও থাকতে পারে। কারণ তার মস্তিষ্ক রোগের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলা করার একটি উপায় জানে। মস্তিষ্কের ক্ষতি সত্ত্বেও কাজ সম্পন্ন করার জন্য একটি বিকল্প সমাধান নিজেই তৈরি করে।

জ্ঞানের রিজার্ভ আমাদের মস্তিষ্কের একটি ব্যাকআপ ড্রাইভের মতো। জ্ঞানের ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে মস্তিষ্কের রোগ কমে যায়। এবং চিন্তাভাবনার ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। আরও ভালো খবর হলো, সহজ মস্তিষ্কের ব্যায়ামের মাধ্যমে আমরা জ্ঞ্যানের ক্ষমতা উন্নত করতে পারি। কিভাবে ?

মস্তিস্কের ব্যায়াম হল, নতুন ভাষা শেখা, স্ক্র্যাবলের মতো শব্দের খেলা, ভালো বই পড়া, নতুন কোন কাজ শেখা ইত্যাদি। শেখার কাজে আমাদের মস্তিষ্ককে নিযুক্ত করে আমরা জ্ঞ্যানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি। মোদ্দা কথা, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত এবং সংরক্ষণের সর্বোত্তম উপায় হল  মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ব্যায়াম করানো।

ছাগল এবং তিনটি ঢাকাইয়া রম্য গল্প। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৭. মস্তিস্ক সতেজ রাখার উপায় সামাজিক মেলামেশা

যখন কেউ মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়, তখন সাইকোলজিস্ট গন রোগীদের সামাজিক মেলামেশা বাড়ানোর কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগ বাড়ালে বিষণ্ণতা প্রতিরোধ করা এবং ব্যক্তিগত মানসিক সুস্থতার উন্নতি করা যায়। পাশাপাশি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও কমানো যায়।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, বয়স্ক মহিলারা যারা ভালোভাবে সামাজিকীকরণ করতেন তাদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ২৬% কম। যারা প্রতিদিন তাদের সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করেন, তাদের ঝুঁকি ৫০% কম। যেমন – রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা।

এছাড়াও, যারা সামাজিক মেলামেশা করেন তারা স্মৃতিশক্তি এবং জ্ঞানীয় পরীক্ষায় ভালো পারফর্ম করেন। এমনকি কারো সাথে মাত্র ১০ মিনিটের কথোপকথন জ্ঞানীয় কাজে আপনার কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে।

আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ। তাদের উপহার সামগ্রী দেয়া। বইয়ের লাইব্রেরি, বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম, অথবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে স্বাভাবিক আড্ডা। এগুলো আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণভাবে সামাজিকীকরণের কারণগুলি কী পরিবর্তন করে তা এখনও জানা যায়নি। তবে সামাজিকীকরণের ইতিবাচক প্রভাবগুলি প্রমাণিত হয়েছে।

যারা সামাজিকীকরণ করেন তাদের আত্মসম্মান বেশি থাকে। তারা নিজেদের যত্ন ভালো নেন। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও দুর্দান্ত। মস্তিস্ক সতেজ রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের সামাজিক মেলামেশা বাড়াতে হবে ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য।

ড্যামেজ ব্রেইন সতেজ রাখার উপায় নিয়ে বলছেন ডাঃ স্টেন একবারগ। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৮. জামাতে নামাজ আদায় এবং ধ্যান 

জামাতে নামাজ আদায়ে আমরা অনেক মানুষ একসাথে হই। আমাদের চিন্তা চেতনা একই সাথে আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়। তখন আমাদের চারপাশের চৌম্বক ডাইপোল গুলো একটা প্যাটার্নে আস্তে আস্তে শৃঙ্খলিত হতে শুরু করে।

এতগুলো মানুষের মস্তিস্কের ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মান তো অনেক বড়। শৃঙ্খলিত চৌম্বক ডাইপোল আল্লাহর দিকে ছুটে যায়। বস্তু জগতের উপর এর প্রভাব চলে আসে। তাই জামাতে নামাজ আদায় স্রষ্টার সাথে যোগাযোগের দারুন সুযোগ। জামাতে নামাজ ব্রেইনকে দারুন সতেজ করে দেয়।  একারনে নামাজ শেষে মুসল্লিরা তৃপ্ত মনে মসজিদ থেকে বের হয়।

অমুসলিম রা ধ্যান বা মেডিটেশন করতে পারেন। এটি মনকে শান্ত হতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ককে ব্যাপকভাবে উপকৃত করে। ধ্যান আপনার মস্তিষ্কের সকল অংশকে প্রভাবিত করে। এটি আক্ষরিক অর্থেই মস্তিষ্কে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটায়। যা সংবেদনশীল, জ্ঞানীয় এবং আবেগগত প্রক্রিয়াকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ধ্যান মস্তিষ্কের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকেও ধীর করে দেয়।

প্রতিদিন ২৫ মিনিটের মননশীল ধ্যান আপনার মস্তিষ্কের কার্যনির্বাহী কার্যকারিতা উন্নত কর। মানসিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এবং “কথা বলার আগে চিন্তা করুন” অভ্যাস তৈরি করে। অর্থাৎ আমাদের মেজাজ উন্নত করে। ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য ভালো কাজ করে।

কারবালা নিয়ে যে কথা হুজুররা বলেন না। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
৯. মাল্টিটাস্কিং বা একসাথে অনেক কাজ 
অফিসের ডেস্কে বসেই কেউ কেউ চা শিঙারা খায় আর কম্পিউটারে কাজ করে। এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করে। এই অভ্যাস টাকে ছোট মনে হয়। পদ্ধতি টা বেশ কাজের ! এটাকে বলে মাল্টিটাস্কিং । ভুল একদমই ভুল।

মনে হতে পারে মাল্টিটাস্কিং সময় বাঁচাচ্ছে, কিন্ত এই ভাবনাটি সঠিক নয়। কারণ একটি গবেষণা অনুসারে, মাল্টিটাস্কিং আসলে ৪০% উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়! যখন আমরা মাল্টিটাস্কিং করি, তখন ত্রুটির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মাল্টিটাস্কিংকারীদের কাজে মনোযোগ ধরে রাখতেও অসুবিধা হয়। এটি চাপও বাড়ায় ফলে শরীরে কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

যখন আমরা একবারে একটি কাজ করি, তখন তুমি তাতে শতভাগ মনোনিবেশ করতে পারি। এতে ফলাফল ভালো হয় এবং চাপ কম হয়। ইতিমধ্যেই আমরা জেনেছি চাপ নিয়ন্ত্রণ করা মস্তিষ্কের জন্য ভালো।

আমাদের মস্তিষ্ক মাল্টিটাস্ক করার জন্য তৈরি নয়। এটি মাল্টিটাস্ক করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ একাগ্রতার সাথে একবারে শুধুমাত্র একটি কাজ করার জন্য তৈরি। তাই, যখন তুই মাল্টিটাস্ক করিস, তখন তোর কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। কারণ মস্তিষ্ক সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে না।

কাজের মধ্যে এদিক-ওদিক ঘুরাঘুরি করার ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়। চাপ বৃদ্ধি পায়। আক্ষরিক অর্থেই মস্তিষ্কের জন্য খুব ক্লান্তিকর। ব্রেইন সতেজ রাখার জন্য ক্ষতিকর।

জীবনে সফল হতে হলে যে বইটি আপনাকে পড়তে হবে কয়েকবার। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার

কেউ যদি মিডিয়া মাল্টিটাস্কার হয় অর্থাৎ যারা পড়াশোনা/কাজ করার সময় তাদের ফোন বার বার চেক করে।  তাহলে এর প্রভাব আরও খারাপ। সময়ের সাথে সাথে তাদের মস্তিষ্কের সেই অংশে মস্তিষ্কের ঘনত্ব কমে যায় যা সহানুভূতি এবং জ্ঞানের জন্য। কিন্তু সেই নোটিফিকেশন রিংগুলি সবচেয়ে খারাপ! যেটি শোনা মাত্রই মাল্টিটাস্কার চেক করা শুরু করে।

লন্ডনে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা মাল্টিটাস্ক করে, তাদের আইকিউ তাদের  কমে যায়। ঠিক যারা কম ঘুমান তাদের মত। যারা গাঁজা সেবন করে তাদের মত। তাহলে, সমাধান কী? একেবারে সহজ। একবারে একটি কাজ করতে হবে, ১০০% মনোযোগ দিয়ে।

আগে থেকে ঠিক করতে হবে। কি করব, কোন কাজ কখন কখন করব। কাজের বিবরন ক্রম অনুযায়ী খাতায় লিখে রাখা যেতে পারে। আর ইমেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া চেক করার জন্য একটি সময়সূচী নির্ধারণ করতে হবে। শুধুমাত্র সেই নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময় এগুলি চেক করা যাবেনা। নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে হবে। যাতে পিং শব্দ কানে না আসে। শব্দ কানে আসলেই নোটিফিকেশন চেক করতে ইচ্ছে করবে।

নিমিষেই খারাপ মন ভালো করে ফেলুন। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
১০. ব্রেইন সতেজ রাখার নিয়মের বাইরে 
আমাদের প্রতিদিনের রুটিন কী? ভোর রাতে ঘুম থেকে উঠো, তৈরি হও। নামাজ পড়। এরপর ব্যায়াম কর। জিমে যাও। লেবু বেকিং সোডা সহযোগে পানি খাও। তারপর অফিসে যাও। আমি যেহেতু প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টার ফাস্টিং তাই দেরিতে ব্রেকফাস্ট করি। অনেকে সকালেই ব্রেকফাস্ট করেন।
তারপর সারাদিন কাজ। কাজ শেষে তোর সাথে কিছুটা সময় আড্ডা দেয়া এরপর বাসায় ফেরা। কি গতানুগতিক শোনাচ্ছে ? আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু রুটিন আছে যা আমরা জেনে বা অজান্তে অনুসরণ করি। কিন্তু, একই রুটিন আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভালো নয়।

যখন আমরা প্রতিদিন একই জিনিস দেখি এবং একই রকম কাজ করি। তখন মস্তিষ্ককে কাজ করতে হয় না। এটি প্রতিদিন একই সমস্যাগুলি দেখেছ এবং সমাধান করছে। তাই মস্তিস্ক চুপচাপ বসে থাকে। সেইম রুটিনে সার্কিট একই কাজ করে।

কিন্তু যখন আমরা একটি নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাই। তখন মস্তিষ্ক মনোযোগ দেয়, কাজটি করতেই হবে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের মতে, যখন আমরা নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাই, তখন মস্তিষ্ক ধরে নেয় যে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে প্রাপ্ত/শেখা তথ্য ধরে রাখে। এটি সৃজনশীলতাকে উদ্দীপিত করে।

এই ধরনের নতুন, অভিনব অভিজ্ঞতা দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিকে সক্রিয় করে। এই ধরনের কাজ করার পড় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

আমরা মস্তিস্কে নতুন কিছু দিতে বাসায় ফেরার পথ কে সপ্তাহে ১/২ দিন পরিবর্তন করতে পারি। নাস্তার টেবিলে পরিবর্তন আনতে পারি। জিমে গিয়েও ব্যায়ামের রুটিন পাল্টাতে পারি। অফিস থেকে একটু আগে বা দেরিতে ফিরতে পারি।

আর বাইরে বেড়াতে গেলে তো অনেক ভালো। মস্তিস্ক নতুন অনেক কিছু পায়। ব্রেইন সতেজ রাখার পক্ষে কাজ করে।

কাশ্মীরিরা কেন স্বাধীন হতে পারছেন না। 

ব্রেইন সতেজ রাখার
ব্রেইন সতেজ রাখার
আমরা কি শিখলাম 

এতক্ষন কথা বলে আমরা ব্রেইন সতেজ রাখার উপায় শিখলাম। আমরা যা করতে পছন্দ করি তা আমাদের মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, মানসিক চাপ এবং আমাদের দৈনন্দিন রুটিন, সবকিছুই আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

পুরো লেখা গুলো কেউ মনযোগ দিয়ে বার বার পড়ে তাহলে, সে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। এই সবকিছুই তাকে একটি দুর্দান্ত ব্রেইন দিবে। এটা কেবল কর্মক্ষম বয়সেই উন্নতি করতে সাহায্য করবে না বরং আপনার মস্তিষ্ককে অবক্ষয়জনিত রোগ থেকে রক্ষা করবে। যার ফলে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত স্মৃতিশক্তি ভালো থাকবে।

সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য আজ থেকেই ব্রেইন সতেজ রাখার নিয়ম গুলো অনুসরন করতে হবে। জাহিদ কথা শেষ করল।

বেলাল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত সারে নটা। আজ অনেক সময় কথা হল, চল উঠি। বলল, বেলাল

সেলিম হোসেন – তাং ০৫/০৬/২০২৫ ইং – প্রতিকী ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া।

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *