পর্ণগ্রাফি থেকে বাঁচার উপায়: কারণ, ফলাফল ও বৈজ্ঞানিক সমাধান
পর্নোগ্রাফি আসক্তি (Pornography Addiction) বর্তমান সমাজে একটি ভয়াবহ বাস্তবতা। সম্প্রতি খুলনায় এক তরুণের গ্রেপ্তারের ঘটনাটি আমাদের সমাজে এর গভীর প্রভাবের একটি ছোট চিত্র মাত্র। অনলাইনে কৌশলে নগ্ন ছবি সংগ্রহ বা এর প্রতি তীব্র আসক্তি—এটি কেবল পশ্চিমা সংস্কৃতিতে সীমাবদ্ধ নয়, আমাদের তরুণ সমাজকেও মারাত্মকভাবে গ্রাস করছে।
দাদি নানিদের মুখে শোনা গল্প ভুলে গেছেন ?

সমস্যার গভীরতা: বৈশ্বিক পরিসংখ্যান ও প্রভাব
পর্নোগ্রাফি এখন একটি বিশাল লাভজনক শিল্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেবল প্রাপ্তবয়স্ক ওয়েবসাইটের বাজারই বছরে ১.১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে পরিচালিত জরিপগুলো বলছে, তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ নিয়মিত পর্নো দেখছেন। এর ভয়াবহ ফলাফল হলো:
- যৌন দুর্বলতা: গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, তরুণদের মধ্যে যৌন সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
- সম্পর্কে অবিশ্বাস: আসক্তির কারণে ব্যক্তিগত জীবনে, বিশেষ করে বিবাহিত জীবনে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিরাসক্তি ও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।
- ডিভোর্স বৃদ্ধি: ডিভোর্সের হার বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পর্নোগ্রাফি আসক্তিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। জীবনসঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ কমে যাওয়া বা অবহেলার কারণে ঝগড়া, অশান্তি ও অবশেষে বিচ্ছেদের পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই।
শৈশবের স্মৃতি কি আপনাকে নস্টালজিক করে দেয় ? বিখ্যাত লেখক খুসবন্ত সিং কেমন অনুভব করেন।

আসক্তি যেভাবে কাজ করে: মস্তিষ্ক একটি ‘লার্নিং মেশিন’
আমাদের মস্তিষ্ককে একটি ‘লার্নিং মেশিন’ বা শিক্ষণ যন্ত্র বলা যায়। এটি ক্রমাগত যা দেখে, তাই শেখে। স্মার্টফোনের মাধ্যমে হাতের মুঠোয় যখন পর্নোগ্রাফির জগৎ উন্মুক্ত, তখন যেকোনো বয়সের মানুষ সহজেই এই দৃশ্যে আসক্ত হতে পারে।
যখন কেউ দিনের অনেকটা সময় পর্নোগ্রাফি দেখে, তখন মস্তিষ্ক ভুলভাবে শিখে নেয় যে যৌন সুখ পাওয়ার দ্রুততম এবং সেরা উপায় হলো এই দৃশ্যগুলো উপভোগ করা। এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এটি একটি তীব্র আসক্তিতে পরিণত হয়।
ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক পরিণতি
পর্নোগ্রাফি আসক্তির কারণে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়:
১. দাম্পত্যে নিরাসক্তি: আসক্ত ব্যক্তি তার বাস্তব জীবনসঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন, কারণ জীবনসঙ্গী পর্নোগ্রাফির অভিনেতা বা অভিনেত্রীর মতো আচরণ করেন না।
২. শারীরিক সমস্যা: পুরুষদের ক্ষেত্রে ‘ইরেকটাইল ডিসফাংশন’ (Erectile Dysfunction) বা পুরুষত্বহীনতার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. বিচ্ছেদ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাড়ে একে অপরের প্রতি অবহেলা, ঝগড়া ও অশান্তি, যার চূড়ান্ত ফল ডিভোর্স।

পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকে মুক্তির বৈজ্ঞানিক উপায়
যেকোনো আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মস্তিষ্কের পুরোনো ভুল শিক্ষাকে মুছে ফেলার প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, কোনো আসক্তি থেকে পুরোপুরি বিরত থাকতে পারলে এক টানা ৩০ দিন পর মস্তিষ্ক সেই আসক্তির উপর নির্ভরতা ভুলতে শুরু করে।
৩০ দিনের ‘কেমোথেরাপি’ কৌশল: ধর্মীয় বা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই ৩০ দিনের একটানা বিরত থাকার প্রক্রিয়াটি আসক্তি নিরাময়ে ‘কেমোথেরাপির’ মতো কাজ করে।
- ব্রেনের রিসেট: ৩০ দিন বিরত থাকলে মস্তিষ্ক পর্নো দেখে সুখ পাওয়ার সেই পুরোনো শিক্ষা ভুলে যায়।
- বাস্তবে ফেরা: আপনার জীবনসঙ্গীর প্রতি স্বাভাবিক আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। ‘ইরেকটাইল ডিসফাংশন’-এর মতো সমস্যা দূর হয়।
- শান্তি ও ভালোবাসা: দাম্পত্য জীবনে তৃপ্তিময় গভীর যৌন আনন্দ ফিরে আসে, যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ বাড়ায় এবং ডিভোর্সের হার কমাতে সাহায্য করে।
এই আসক্তিতে আক্রান্ত প্রতিটি নারী-পুরুষের জন্য ৩০ দিনের এই প্রক্রিয়াটি এক মহা সুযোগ।
আপনার মুক্তির পথ: আজ থেকেই শুরু করুন
পর্নোগ্রাফি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে আজ, এই মুহূর্ত থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিতে হবে:
১. একটানা বিরত থাকুন: কমপক্ষে ৩০ দিনের জন্য পর্নোগ্রাফি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার প্রতিজ্ঞা নিন।
২. বিকল্প অভ্যাস: অবসর সময় বই পড়া, মসজিদে নামাজ আদায় করা, ব্যায়াম করা বা অন্য কোনো গঠনমূলক কাজে ব্যস্ত থাকুন।
৩. পরামর্শ নিন: প্রয়োজন হলে অভিজ্ঞদের (মেন্টর, কাউন্সিলর বা বিশ্বস্ত চিকিৎসক) পরামর্শ নিন। লজ্জা বা দ্বিধা বোধ করবেন না।
পর্নোগ্রাফি থেকে মুক্ত থাকুন। একটি সক্ষম, সুস্থ পুরুষ বা নারী হিসেবে আপনার জীবনসঙ্গী ও পরিবারের সাথে সুখের জীবন উপভোগ করুন।

মুম্বাই শহরে পর্ণগ্রাফির গল্প !
শহরবাসীর উপর যৌন অভ্যাসের জরিপ পরিচালনা করেন একদল গবেষক। কয়েক বছর আগে। যখন মোবাইল ফোন আসেনি। অতএব সোশ্যাল মিডিয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তবে সেই সময়ে বিনোদনের জায়গা হিসেবে মুম্বাইতে অনেক গুলো যৌন পল্লী ছিল। গবেষক গন বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসায়ীদের সাক্ষ্যাতকার গ্রহন করেন।
তাদের বেশকিছু প্রশ্নের মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল – যৌন মিলন শেষ করার পরপরই আপনি কি করেন ? প্রশ্নের উত্তর গুলো ছিল চমৎকার। দশ শতাংশ উত্তর দেয় যৌন মিলন সেরেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন। আরও দশ শতাংশের উত্তর ছিল, তারা নিজেদের ধৌত করে সামান্য কিছু খায় বা পান করে। যেমন – ফলের রস, পানি বা স্যান্ডউইচ।
পর্ণগ্রাফি থেকে মুক্তি পেতে একটি টেড টক ভিডিও দেখুন।

অবশিষ্ট আশি শতাংশ সরাসরি বলে না। তারা নানান ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উত্তর দেয় ” যৌন কর্ম সেরে আমরা বাড়ি ফিরে যাই। “
রমজান যেহেতু তিনটে পার হয়ে গিয়েছে। তারপরও বলব সময় আছে। আজ থেকেই শুরু করুন। যারা রোজা রাখেন না তারা রোজা রাখা শুরু করুন । পর্ণ দেখা বন্ধ করুন। আর যারা রোজা রাখেন কিন্ত ইফতারের পর পর্ণ দেখেন, তারা নিয়ত করুন আজ থেকে আর পর্ণ দেখবেন না।
পর্ণগ্রাফি থেকে মুক্ত থাকুন। সক্ষম পুরুষ থাকুন। বিয়ে করুন। স্বামী স্ত্রী সুখের জীবন উপভোগ করুন।
ব্লগ পোস্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ০৪/০৩/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া









