কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই – মুক্তির উপায় ৪ ধরনের পুষ্টিতে Why do I get sick so often – the solution is in 4 types of nutrition

কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই 

ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগে। এরপর কাশি। এন্টিবায়োটিক ছাড়া যায়ই না। প্রায়ই পেটের গোলমাল। ঔষধ লেগেই আছে সারা বছর। তারপরও রেহাই মিলছে না। নানান রোগ তাপে আপনি ক্লান্ত। পরিবারে শান্তি নষ্ট। সমস্যা কোথায় ?
একটা জায়গায় উন্নতি করুন, তাহলে সুস্থ থাকতে পারবেন। কোন জায়গায় উন্নতি করবেন ? জানতে হলে, এই খাবার গুলোর দিকে খেয়াল করুন।
১. লেবু, পেয়ারা, আমড়া, কমলা,মাল্টা, আমলকি,স্ট্রবেরি,ক্যাপসিকাম এই খাবার গুলোতে ভিটামিন সি আছে।
২. গাজর, পালং, শাক, কুমড়া, মিষ্টি আলু, ব্রোকলিতে আছে ভিটামিন এ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট।
৩. বাদাম (কাঠবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম), কুমড়ার বীজ, ছোলা, মসুর ডাল, সামুদ্রিক মাছ (স্যালমন, টুনা) এসব খাবারে পাওয়া যায় যথেষ্ট পরিমানে জিঙ্ক।
৪. ডিম, মাংস, মাছ, চিজে আছে প্রোটিন। রসুন, আদা, হলুদ, মধু এ খাবার গুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

ঘন ঘন অসুস্থতা থেকে রেহাই  

এজাতীয় খাবার যদি আপনার খাবারে প্রতিদিন না থাকে, তাহলে রক্তে শ্বেত কনিকার পরিমান কমে যায়। আর শ্বেত কনিকা কমে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কেন কমে যায় ?
শ্বেত কনিকার গুলোর মধ্যে একটির নাম হল ‘ ম্যাক্রোফেজ ‘। এরা ছোট বাচ্চাদের মত হামাগুরি দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যায়। রোগ সৃষ্টির অণুজীব গুলো খেয়ে ফেলে।
আরও উপকারি কাজ করে। তা হল, অণুজীবের আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ খেয়ে ফেলে। এতে রোগ ছড়াতে পারেনা।
যে মৃত কোষ গুলো শরীরে ঝামেলা তৈরি করে সেগুলোও খেয়ে ফেলে। বোঝা গেল, ম্যাক্রোফেজ যদি না থাকে, অণুজীবেরা আনন্দে নাচানাচি করে। অতএব খাবারের নামে বাজে খাবার নয়। স্ন্যাক্স এর নামে সিঙ্গারা, পুরি, চিকেন ফ্রাই, চানাচুর এজাতীয় খাবার নয়। পরিপূর্ণ সুস্থ জীবন যাপন করতে চাইলে আরও দুটো বিষয় খেয়াল করুন।
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

ঘন ঘন অসুস্থতায় পেটের সমস্যা  

বিশেষজ্ঞরা বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বড় অংশ থাকে মানুষের অন্ত্রে বা পেটে। বিজ্ঞানিরা এখন পাকস্থলীকে দ্বিতীয় ব্রেইন বলছেন। আমাদের পাকস্থলীর ‘গ্যাস্ট্রোইন্টেসটাইনাল ট্র্যাক্ট’য়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাস করে। যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সরবরাহ করে। সেই সাথে খারাপ ব্যাকটেরিয়াও বাস করে।

অন্ত্রে খারাপ এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে সমস্যা শুরু হয়। অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পাশাপাশি বাড়বে বিভিন্ন ‘অটোইমিউন ডিজিজ’ ও প্রদাহের আশঙ্কা। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া খাবার হজম করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এদের অভাবে বিভিন্ন পেটের সমস্যা বেড়ে যাবে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।

খাবারের পর যদি পেটের মধ্যে কোঁ কোঁ শব্দ হয়, পেট ফুলে থাকে, পেটে গ্যাস হয়। ঘন ঘন টয়লেটে যেতে হয়, তাহলে ধরে নিতে পারেন পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়ার অভাব রয়েছে। একারনে নিয়মিত প্রোবায়টিক যুক্ত খাবার খেতে হবে। টক দই, সাউয়ার ক্রাউট, ডার্ক চকলেট, কিমচি, ভিনেগার প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার। যদি প্রতিদিন খাবারে টক দই থাকে পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়বে। সাউয়ার ক্রাউট এক্ষেত্রে সেরা খাবার হতে পারে। এটি ঘরেই তৈরি করতে পারেন।

প্রোবায়োটিক ছাড়া কোন দিন সুস্থ হতে পারবেন না 

কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

ঘন ঘন অসুস্থতায় ঘুমের অভাব

ঘুম হচ্ছে ন্যাচারাল ঔষধ। ঘুমের অভাব হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। একারনে প্রচুর ক্ষুধা লাগে। অতিরিক্ত খেয়ে ওজন বাড়ে। হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। শরীরের শক্তি ও সহনশীলতা কমে যায়। ঘুম কম হলে আমরা অল্প পরিশ্রমেই আমরা ক্লান্ত হয়ে পরি। ত্বকের নিচে কালো দাগ পরে। চেহারা বিধ্বস্ত দেখায়।

পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায়। বাইক বা গাড়ি চালাতে গেলে ভুল হয়। তরুনেরা অযথাই রাত জাগে। একারনে তারা প্রচুর বাইক এক্সিডেন্টের শিকার হয়। বড়দের স্মৃতি শক্তি কমে যায় ঘুম কম হলে। মেজাজ খিটখিটে হয়। ডিপ্রেশন এবং উদ্বেগ বাড়ে। অফিসের কাজে বা পারিবারিক কাজে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন দীর্ঘস্থায়ী ঘুমের অভাব হলে, স্ট্রোক, হৃদরোগ, আলঝেইমার, ডিমেনশিয়া ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ে। বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, যাদের ভালো ঘুম হয় তাদের থেকে বাজে ঘুমের ব্যক্তিদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর নিয়মিত লেগে থাকে, ঠাণ্ডা, জ্বর, সর্দি, কাশি।

আর কোনদিন ঘুমে ডিস্টার্ব হবে না 

কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

ক্রমাগত স্ট্রেসে ঘন ঘন অসুস্থ  

স্ট্রেস শরীর এবং মনের উপর দারুন প্রভাব রাখে। বলেছিলাম ঘুমের অভাবের কথা। স্ট্রেস থাকলে ভালো ঘুম হয় না। মাঝপথে ঘুম ভেঙে যায়। একবার ঘুম ভেঙে গেলে বিছানায় গড়াগড়ি। আর ঘুম আসতে চায় না। হজমের সমস্যা দেখা দেয়, এতে করে গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া নিয়মিত বিষয়ে পরিনত হয়। উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে।

ফ্যামিলি প্র্যাকটিস জার্নালে প্রকাশিত ১১টি গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, ৭-৯ ঘণ্টার কম ঘুম উচ্চ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে দীর্ঘ ঘুমের কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব নেই। ঘুমের মান খারাপ হলে তাও সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রনে ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করবেন। কিছু সময় ধরে দোয়া করবেন। বেশ হাল্কা অনুভব করবেন। নিয়মিত ব্যায়াম করবেন। বাইরে যাওয়ার সুযোগ না থাকলে ঘরেই করতে পারেন ২০/৩০ মিনিট ব্যায়াম। আর নিশ্বাসের ব্যায়াম করবেন প্রতিদিন ১০ মিনিট। ইউটিউবে ডাঃ ওয়েল ব্রিদিং সেশন ৪-৭-৮ লিখে সার্চ দিবেন। তাহলেই সেশন চলে আসবে। ধ্যান বা মেডিটেশন ভালো কাজ দেয়। সেটাও করতে পারেন।

কেন আমরা অসুস্থ হই এ বিষয়ে বলছেন ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির 

কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই
কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই

সহজ এই নিয়ম গুলো মেনে চললে, কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই, একথা আর বলতে হবে না। ইনশাআল্লাহ। যারা ঘন ঘন অসুস্থ হন তাদের কে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – তাং – ১৯/০৯/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

2 thoughts on “কেন ঘন ঘন অসুস্থ হই – মুক্তির উপায় ৪ ধরনের পুষ্টিতে Why do I get sick so often – the solution is in 4 types of nutrition

  1. Pingback: যেসব কারনে সব ভুলে যাই - ৬ টি খাবার এবং ১ টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সমাধান Reasons why we forget everything - 6 foods and 1 important ingredient s

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *