কম বয়সীদের লিভার সমস্যা

লিভার সমস্যা দায়ী কে

লিভার সমস্যার লক্ষন
১. ক্লান্ত এবং দুর্বল শরীর
যখন কেউ শারীরিকভাবে দুর্বলতা অনুভব করে। ক্রমাগত ক্লান্তি বোধ করে। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি তিনি লিভার সমস্যায় ভুগছেন। সাধারণত ক্লান্তি আসে লিভারের টক্সিন প্রক্রিয়াজাত হতে। এই প্রক্রিয়ায় লিভার কে প্রচুর শক্তি ব্যয় করতে হয়। শরীরে যে প্রোটিন শক্তি প্রদান করে তার উৎপাদন কমে যায়। সারারাত ঘুমানোর পরেও ক্লান্তি দূর হয় না। এটাও লিভার রোগের লক্ষন হতে পারে।
২. পেট ফোলা এবং ব্যাথা
লিভার সমস্যা হলে পেটের উপরের দিকে ব্যাথা বা অস্বস্তি হতে পারে। এই ব্যথা তীব্র বা কম হতে পারে। ডুবো সয়াবিন তেলে ভাজা খাবার খাওয়ার পরে ব্যাথা বেশি হতে পারে। এছাড়াও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হলে পেটে ফোলাভাব দেখা যায়। যা অ্যাসাইটস নামে পরিচিত।
৩. ত্বক এবং চোখে হলুদ রঙের আভা
জন্ডিস লিভার সমস্যার স্পষ্ট লক্ষন। যা দেখে আমরা সাধারন মানুসেরাও বুঝতে পারি লিভারে গণ্ডগোল হয়েছে। লিভার যখন কার্যকর ভাবে বিলুরুবিন প্রসেস করতে পারে না, তখন চোখ হলুদ হয়ে যায়। পাশাপাশি ত্বকও হলুদাভ রঙ ধারন করে।
বিনা ঔষধে আজীবন ডায়াবেটিস মুক্ত থাকুন

৪. ঘন হলুদ রঙের প্রস্রাব
যখন লিভার সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন রক্তপ্রবাহে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে পারে। এসময় প্রস্রাবে গাঢ় বাদামী বা হলুদ রঙ দেখা দেয়। যদি প্রস্রাব অস্বাভাবিকভাবে গাঢ় দেখায়, তাহলে এটি লিভারের চাপ বা ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে যদি এর সাথে ক্লান্তি বা জন্ডিসের মতো অন্যান্য লক্ষণ থাকে।
৫. বমি বমি ভাব
বিশেষ করে খাওয়ার পরে বমি বমি ভাব হয়। অনেকের ক্ষেত্রে বমি হয়েও যায়। যখন লিভার অতিরিক্ত চাপে পড়ে বা ফুলে যায়। তখন মেটাবোলিজমের হার কমে যায়। একারনে হজম শক্তি কমে যায়। যার ফলে আমরা ক্রমাগত অসুস্থতা অনুভব করি। এই লক্ষন গুলির সাথে যদি পেটে ব্যাথা এবং ক্লান্তি থাকে, তাহলে ধরেই নিতেই পারি লিভার ক্ষতিগ্রস্ত।
৬. ক্ষুধা কমে যাওয়া
লিভারের ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। অথবা মনে পেট ভরা আছে। এই লক্ষণটি প্রায়শই দেখা দেয় কারণ লিভার পুষ্টি সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যর্থ হয়। স্বাদের ভালো লাগে না। কি খাব, কি খাব মনের মধ্যে ভাবনা। কিন্ত পছন্দের খাবার টাও খেতে পারেন না। অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। এটা লিভার সমস্যার লক্ষন।
গর্ভাবস্থায় আর ডায়াবেটিস হবে না

৭. ত্বকে চুলকানি
ত্বকে চুলকানি, যা প্রুরিটাস নামেও পরিচিত। লিভার রোগের আরেকটি লক্ষণ। লিভারের কাজ কমে যায়। যে কারণে ত্বকে পিত্ত লবণ জমা হয়। তখন ত্বক চুলকায়। যদি চুলকানি স্থায়ী হয় এবং জন্ডিস থাকে। পেটে ব্যথার মতো অন্যান্য লক্ষণগুলি থাকে। তাহলে সচেতন হোন।
৮. রক্তপাত
রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্যকারী জমাট বাঁধার উপাদান তৈরিতে লিভার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন সহজেই ক্ষত এবং রক্তপাত হতে পারে। কারণ শরীর সঠিকভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। যদি শরীরে সহজেই ক্ষত হয় বা ঘন ঘন নাক দিয়ে রক্তপাত হয়, তাহলে এটি লিভারের রোগের লক্ষণ হতে পারে।
কেন এত হার্ট অ্যাটাকে মানুষ মারা যাচ্ছে, বাচার উপায় জেনে নিন

৯. পা এবং গোড়ালি ফোলা
পা এবং গোড়ালিতে ফোলাভাব। যা এডিমা নামেও পরিচিত। লিভার রোগের আরেকটি প্রাথমিক লক্ষণ। এটি তখন ঘটে যখন লিভার পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যালবুমিন তৈরি করতে অক্ষম হয়। অ্যালবুমিন একটি প্রোটিন যা শরীরে তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ, নীচের অংশে তরল জমা হতে শুরু করে, যার ফলে ফোলাভাব দেখা দেয়।
১০. পরিবর্তিত মলের রঙ
মল আপনার লিভারের স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করতে পারে। ফ্যাকাশে, মাটির রঙের মল পিত্তনালীর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যা লিভারের রোগের কারণে হতে পারে। অন্যদিকে, স্বাভাবিকের চেয়ে গাঢ় রঙের মল অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ইঙ্গিত দিতে পারে।
ঔষধ ছাড়াই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্ত হউন

লিভার সমস্যা নিরাময়ের উপায়
ঐ যে পিজি হাসপাতালে ভর্তি মেয়েদের কথা বলছিলাম। মনে আছে ? তারা বাজে খাবার খেত। আলট্রা প্রসেসড খাবার খেত। কোক, সেভেন আপ, মোজো, স্পীড, দোকানের জুস ছিল তাদের প্রিয় পানীয়। এসব বাজে খাবার গুলো হজমে প্রচুর চাপ তৈরি করে। সব চাপ গিয়ে লিভারের উপর। একসময় লিভার আর চাপ নিতে পারে না। তখন হাসপাতাল ছাড়া উপায় থাকে না।
আশা করি আমরা বুঝতে পারলাম মুল শত্রু হচ্ছে, বাজে খাবার। আমাদের সন্তানদের ভালোভাবে বেড়ে ওঠায় সহায়তা করা আমাদের মুল দায়িত্ব। আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি সন্তানদের বাজে খাওয়াব না। তাদের কে সাস্থ্যকর খাবার খাওয়াব। যেমন – শাকসবজি, সালাদ, লাল চালের ভাত, নদীর মাছ, সামুদ্রিক মাছ, ডিম, মাংস, টক দই, বাধাকপির সাউয়ার ক্রাউট, সবরকম বাদাম, কুমড়ো বিচি, সূর্যমুখীর বিচি ইত্যাদি।
লিভার সমস্যা থেকে ডাঃ জাহাঙ্গীর কবিরের ভিডিও টি দেখুন।

সবাইকে সচেতন করতে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ৩১/০৮/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.
Pingback: কিছুই ভালো লাগেনা - সোশ্যাল মিডিয়ায় অশান্ত হৃদয় ১০ উপায়ে মুক্তি Nothing feels right - 10 ways to release a troubled heart on social media - OVIZAT
Pingback: সন্তানদের শৈশব ও কৈশোর কাল - স্বপ্নময় শৈশবে বাবা মায়ের ৫ টি ভুল - Children's Childhood and Adolescence - 5 Mistakes Parents Make in Dreamy Childhood -
Pingback: স্বপ্নময় শৈশব কৈশোরে বাবা মায়ের ৫ টি ভুল - 5 mistakes parents make in their dreamy childhood and adolescence - OVIZAT