তরুণদের মধ্যে ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED): কেন বাড়ছে এই উদ্বেগ ও পরিত্রাণের উপায়?
লিঙ্গ উত্থান বা দ্রুত বীর্যপাত—এই সমস্যাগুলো এখন আর কেবল বয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তরুণ বয়সীদের মধ্যেও।
উদ্বেগজনক তথ্য হলো:
- ২০-২৯ বছর বয়সী: শতকরা ৮ জন এই সমস্যায় ভোগেন।
- ৩০-৩৯ বছর বয়সী: এই হার কিছুটা বেশি, শতকরা ১১ জন পুরুষ ইরেকটাইল ডিসফাংশনে (ED) আক্রান্ত।
গবেষকরা বলছেন, ৪০-এর কম বয়সীদের মাঝে ED সমস্যা বেড়েই চলেছে। যৌন কর্মের সময় লিঙ্গের উত্থান কমে যাওয়া, পর্যাপ্ত সময় ধরে লিঙ্গ শক্ত না থাকা এবং দ্রুত বীর্যপাতের মতো লক্ষণগুলো যদি একটানা চলতে থাকে, তবে বুঝতে হবে এটি একটি গুরুতর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দেশেই নয়, পৃথিবীজুড়েই এক আশঙ্কাজনক রিপোর্ট।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন ১০টি মূল কারণ
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার পেছনে ১০টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন, যা তরুণ প্রজন্মকে এই সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে:
১. পর্নোগ্রাফি: পর্নো ফিল্মে নিয়মিত আসক্তি। ২. স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূল শরীর। ৩. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: ব্যায়াম অথবা খেলাধুলা না করা। ৪. ধূমপান ও মদ: ধূমপান এবং মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান। ৫. মানসিক স্বাস্থ্য: বিষণ্ণতা, উদ্বেগ (Anxiety) এবং মানসিক চাপ (Stress)। ৬. মাদক: বিভিন্ন ধরনের মাদকে আসক্তি। ৭. অপরাধবোধ: লজ্জা, নিজেকে দোষী ভাবা বা হীনমন্যতায় ভোগা। ৮. ঘুমের অভাব: অপর্যাপ্ত ও অনিয়মিত ঘুম। ৯. কিছু অসুস্থতা: ডায়াবেটিস বা কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো কিছু শারীরিক অসুস্থতা। ১০. ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালী: শরীরের রক্ত সঞ্চালনে বাধা (যা অন্যান্য কারণের ফলে হতে পারে)।
ঢাকা শহরে বাজে আবহাওয়ার জন্য ঠাণ্ডা কাশি লেগেই আছে। যা জানা সবার প্রয়োজন।

পর্নোগ্রাফির ভূমিকা: কেন এটি শারীরিক সমস্যা তৈরি করে?
ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার এক প্রতিবেদন এবং পুরুষত্ব বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্ড্রু স্মাইলারের মতামতে উঠে এসেছে পর্নোগ্রাফির ভয়াবহ প্রভাব।
ড. স্মাইলার বলেছেন, নিয়মিত পর্নো দেখার কারণে প্রতি ১০ জন তরুণের অন্তত একজনের লিঙ্গোত্থানে ব্যর্থতাজনিত সমস্যায় ভুগছে। তিনি আরও বলেন, তার কাছে আসা বেশিরভাগ রোগীর বয়স ১৩ থেকে ২৫-এর মধ্যে।
পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাগুলো:
- সংবেদনশীলতা হ্রাস: যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মনো-যৌনতা বিষয়ক চিকিৎসক ড. অ্যাঞ্জেলা গ্রেগরি বলেন, পুরুষরা মানসিক এবং শারীরিক উভয়ভাবেই নারীর সঙ্গে বাস্তব যৌন মিলনের সময় স্বাভাবিক উদ্দীপনা ও উত্তেজনার প্রতি সংবেদনশীলতা হারিয়ে ফেলছেন।
- অবাস্তব প্রত্যাশা: পর্নো মুভিতে দেখানো হয় খুব সহজে যৌনমিলন ঘটে, নানান রকম অস্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি চলে এবং মেয়েরা সব সময়ই প্রস্তুত থাকে। পর্নো দেখার ফলে পুরুষদের অবচেতন মনে যৌনতা সম্পর্কে এই কাল্পনিক ধ্যান-ধারণা তৈরি হয়, যা বাস্তব জীবনের যৌনতার সঙ্গে মেলে না। এর ফলে পারফরম্যান্স-সংক্রান্ত উদ্বেগ বাড়ে।
স্বামী স্ত্রীর যৌন মিলন কে কিভাবে আরও মধুময় করে তুলবেন।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং চিকিৎসার বিপদ: শর্টকাট নয়!
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইরেকটাইল ডিসফাংশনের জন্য ওষুধ সেবনের কারণে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। ভেজাল বা অনুমোদনহীন যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন করলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির ঝুঁকি থাকে অনেক বেশি।
নকল ওষুধের ঝুঁকি
এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আছেন, যারা কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে ভেজাল বা অনিয়ন্ত্রিত মাত্রার যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করেন। এদের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অনেকে না জেনে-বুঝে সেসব ওষুধ সেবন করেন এবং এর ফলে—
- চিরতরে যৌন ক্ষমতা হারাতে পারেন।
- শরীরের জন্য ক্ষতিকর এই ওষুধে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
বিপজ্জনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যেসব তরুণ শর্টকাট সমাধান চান, তারা প্রায়শই নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো নিয়ে ভোগেন:
- প্রচণ্ড মাথা ব্যথা ও ভার হয়ে যাওয়া।
- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া।
- ঘাম, বুক ধড়ফড় করা, অস্থিরতা।
- মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব।
এক্ষেত্রে যাঁদের বয়স বেশি, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা বা বাইপাস সার্জারি করা আছে, তাঁদের জন্য এই ধরনের যৌন উত্তেজক ওষুধ মহাবিপদ ডেকে আনতে পারে।
পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে যাচ্ছেন অনেক স্ত্রী। কিভাবে নিজের স্ত্রী কে নিয়ন্ত্রনে রাখবেন।

আমেরিকার কলেজ ছাত্রদের উদ্বেগ
আমেরিকায় ‘হানি প্যাকেটস’ নামের একটি কথিত প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ যৌনশক্তি বর্ধক ওষুধ কলেজ ছাত্রদের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এই প্যাকেটের ভেতর প্রায়ই ভায়াগ্রা ও সিয়ালিসের মতো প্রেসক্রিপশন ওষুধের উপাদান থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসব ওষুধ সেবনে উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যৌন পারফরম্যান্স এবং প্রতিযোগিতার প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগের কারণেই এসব ওষুধ সেবনের প্রবণতা বেড়েছে। অনেক পুরুষই ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের যৌন মিলনকে আদর্শ বলে মনে করেন এবং সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য ওষুধের আশ্রয় নিচ্ছেন।
প্রেমের বিয়ে তারপরেও কেন হিংস্র হয়ে উঠছেন স্ত্রীরা। স্বামীদের খুন নির্মম ভাবে খুন করছেন।

পরিত্রাণের উপায়: শান্ত ও বাস্তবমুখী জীবনধারা
তরুণদের ওপর এই মানসিক ও শারীরিক চাপ কমাতে পরিত্রাণের উপায় নিজেদের হাতেই রয়েছে। কল্পনা থেকে বাস্তবে ফিরে আসার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে:
১. বিয়ে ও বাস্তবতা: বিয়ের বয়স হলে ছেলেদের বিয়ে করা দরকার। এতে বাস্তব সম্মত যৌনতায় ছেলেরা অভ্যস্ত হবে এবং অবাস্তব পারফরম্যান্সের চাপ কমবে।
২. মানসিক নিয়ন্ত্রণ: নিজেকে শান্ত রাখা, স্ট্রেস ও হতাশা কমানো।
৩. আধ্যাত্মিকতা ও শৃঙ্খলা: নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত নামাজ আদায় করা বা আধ্যাত্মিক চর্চা করা। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠা।
৪. ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ: সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার একেবারে কমিয়ে নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। ৫. বইয়ের অভ্যাস: বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
তাহলেই জীবন কল্পনায় না ভেসে বাস্তবেই সুন্দর হবে এবং শরীর ও মন সুস্থ থাকবে।
সহজ ৫ টি বিষয় লিঙ্গ উত্থান সমস্যা দূর করে, বলছেন ডাঃ এরিক বারগ।

সেলিম হোসেন – তাং ০৬/০১/২০২৫ ইং Reference: Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.









