আইবিএস কি ভাল হয়। ঔষধ ছাড়াই
মার্কেটের কয়তলায় টয়লেট আপনি জানেন। কোন মার্কেটের টয়লেট পরিচ্ছন্ন, কোন টা নোংরা আপনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন। শহরের কোথায় কোথায় টয়লেট আপনার মুখস্থ। এই দক্ষতার কারন কি ? আপনি আই, বি , এস রোগী।
বার বার টয়লেট যাওয়া খুব বিরক্তিকর। ডাক আসার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। কোমরে ব্যাথা আর মনে ভয় নিয়েই বাসা থেকে বের হন। দিনের পর দিন ঔষধ খাচ্ছেন, কিন্ত যেই লাউ সেই কদু।
যৌন ক্ষমতা কমে গিয়েছে। অথবা ডিউরেশন খুব কম। সব মিলিয়ে দারুন এক স্ট্রেসময় জীবন।
আমাদের আশপাশে অনেকেই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এর কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত দীর্ঘদিন কষ্ট পান। কোনো সুফল না পেয়ে একজনের পর একজন চিকিৎসক পরিবর্তন করতে থাকেন। সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায়। আইবিএস কি ভাল হয় ?
আসলে রোগটির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানা থাকলে একে মোকাবিলা করা সহজ হয়। নয়তো অধৈর্য হওয়াটা স্বাভাবিক। লাইফে কিছু বিষয় যোগ আর কিছু বিয়োগেই সমস্যা দূর হতে পারে। কোন ঔষধ লাগবে না।

আইবিএস কি ভাল হয় এটা কত প্রকার
IBS-এর চারটি উপশ্রেণী রয়েছে । যার প্রতিটিরই সমান প্রাদুর্ভাব রয়েছে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়রিয়া এবং পেটের অস্বস্তি (IBS-D)। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের অস্বস্তি (IBS-C)। পর্যায়ক্রমে আলগা মল এবং পেটের অস্বস্তির সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য এটাকে বলে (IBS-মিশ্র)। পেটে ব্যাথা হতে পারে। পায়ু পথ ব্যাথা হতে পারে।
আই বি এস হলে যে সমস্যা গুলো দেখা যায়
আই বি এস হলে কারও কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। নিয়মিত পায়খানা হয় না। টয়লেটে গেলেও পেট পরিস্কার হয় না। পায়ু পথে তীব্র জ্বলে, মনে কেউ মরিচ বাটা লাগিয়ে দিয়েছে।
খাবার খাওয়ার আগে বা পরে পেট মোচড়াতে পারে। ব্যাথা হতে পারে।
পেটে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হতে পারে, যা অস্বস্তি সৃষ্টি করে। পায়ু পথে বায়ু সশব্দে বের হতে পারে। কখনো কখনো বেশ দুর্গন্ধ ছড়ায়। আইবিএস-এর কারণে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। ইন্টারকোর্স সময় কমে যায়। বউয়ের কাছে লজ্জা পেতে হয়। অনেক সংসারে অশান্তি তৈরি হয়।
আইবিএস-এর কারণে কাজের প্রতি অনীহা, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অনীহা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে। যা জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয়। আইবিএস-এর কারণে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে। যা রোগের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

এটা ক্যান্সার বা ঐ জাতীয় রোগের মত ভয়ঙ্কর নয়। তবে আমরা চাইলেই এ রোগ থেকে মুক্ত হতে পারি। এই রোগ থেকে সুস্থ থাকার উপায় গুলো জেনে নিন।
৫ উপায়ে আজীবন আই বি এস মুক্ত থাকুন
১. খাবারের ১০ মিনিট পূর্বে একগ্লাস পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খাবেন। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন। ধীরে ধীরে খাবেন। খাবারের সময় অন্য কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন। যেমন – ফেসবুক চেক করা, টিকটক দেখা, মেইল চেক করা ইত্যাদি। যদি আপেল সিডার ভিনেগার আই বি এসে সমস্যা করে, তাহলে খাবারের মাঝখানে খাবেন।
খাবারের প্রথমেই সালাদ খাবেন। এরপর সবজি। এরপর মাছ বা মাংস সহকারে শর্করা জাতীয় খাবার খাবেন। অনেকেই সালাদ শেষে খান। কিন্ত এটা খাবার খাওয়ার ভুল পন্থা। খাবারের মাঝখানে কোন পানি খাবেন না। কমপক্ষে খাবার শেষের এক ঘণ্টা পর পানি খাবেন।
২. আই বি এস রোগী গম বা আটা থেকে তৈরি হয় এমন কোন খাবার খাবেন না। কোমল পানীয়, বিস্কুট, চানাচুর এজাতীয় প্রসেসড ফুড খাবেন না। দুধ থেকে তৈরি খাবার খাবার খাবেন না। আলট্রা প্রসেস ফুড খাবেন না। যেমন – পিতজা, বার্গার, চিকেন ফ্রাই, পুরি, সিঙ্গারা ইত্যাদি।
প্রতিবার খাবারের সাথে প্রবায়োটিক খাবার খাবেন। যেমন – কিমচি, সাউয়ার ক্রাউট, টক দই।

৩. নিয়মিত ফাস্টিং করবেন। প্রথম দিকে ১২ ঘণ্টা থেকে শুরু করবেন। অভ্যস্ত হয়ে গেলে লম্বা সময় ফাস্টিংকরবেন। এতে করে পেট খাবার হজম করার যথেষ্ট সময় পাবে। ২০-২৩ ঘণ্টা ফাস্টিং করলে পেটে স্টেমসেল তৈরি হবে। স্টেমসেল ক্ষতিগ্রস্ত পাকস্থলিকে মেরামত করে দিবে।
৪. নিয়মিত শ্বাস প্রসাশ্বের ব্যায়াম করবেন। এক মাসের মধ্যে ম্যাজিক্যাল ফলাফল পাবেন। নিশ্বাসের ব্যায়াম করতে ৪-৭-৮ ব্রিদিং সেসন লিখে ইউটিউবে সার্চ দিন। ডাঃ উইলসের শ্বাস প্রসাশ্ব ব্যায়াম মেথড টা পাবেন। উইম হফ মেথড টা সবচেয়ে ভালো এটাও ইউটিউবে সার্চ দিলে পাবেন।
৫. ভালো ঘুমাবেন। রাত ১০-১১ টার মধ্যে বিছানায় চলে যাবেন। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠবেন। শরীরের সহনীয় মাত্রায় ব্যায়াম করবেন। দৌড়াতে পারলে খুবই ভালো। মাঝে মাঝে কফি এনেমা করবেন।
ইনশাআল্লাহ আজীবন সুস্থ থাকবেন। আশাকরি আইবিএস কি ভাল হয় এই প্রশ্ন আর করবেন না। আপনার পছন্দের খাবার গুলো খেতে পারবেন।

সেলিম হোসেন – তাং ২৪/০৬/২০২৫ ইং – ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.