কোলাজেন কি ন্যাচারাল বিউটি
বয়সকালে ত্বক শিথিল হয়ে যায়। বলিরেখা পড়ে। আর এ সবই হয় ত্বকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন কোলাজেনের অভাবে। এখন আমরা অনেকেই এটা জানি। ত্বকের প্রোটিনের অন্তত ৩০ শতাংশই কোলাজেন। সবাই সুস্থ আর সুন্দর থাকতে চাই আজীবন। আর এখানেই রয়েছে কোলাজেনের ভুমিকা।
তো এই কোলাজেন কি আসলে ?
কোলাজেন হল শরীরের এক ধরণের প্রোটিন ৷ যা ত্বক, হাড়, জয়েন্ট এবং অন্যান্য টিস্যুতে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ত্বককে সবচেয়ে বেশি যত্ন নেয় এই পুষ্টি উপাদান।
দ্রুত ত্বক ফর্সা করতে কি করবেন

শরীরে দুই ধরণের কোলাজেন থাকে
১. এন্ডোজেনাস কোলাজেন – এন্ডোজেনাস কোলাজেন প্রাকৃতিকভাবে শরীরের মধ্যেই তৈরি হয়। এটি আমাদের শরীর নিজেই সংশ্লেষিত করে।
২. এক্সোজেনাস কোলাজেন – এক্সোজেনাস কোলাজেন শরীরের বাইরের উৎস থেকে আসে। যেমন আমরা যদি কোলাজেন যুক্ত খাবার খাই। খাবার থেকে কোলাজেন ন্যাচারালি আসতে পারে আবার ক্যাপসুল বা কোলাজেন পাউডার খেলেও পেতে পারি।
কোলাজেন কমে গেলে যা হয়
আমাদের বয়স ৩০ বছর এর পর থেকেই কোলাজেন কমতে থাকে। এই কমে যাওয়ার মাত্রা একটু বেশি হলেই আমরা যে সমস্যা গুলো অনুভব করি
- অকালে বুড়িয়ে যাওয়া
- ত্বক নিস্তেজ এবং প্রাণহীন দেখাতে শুরু করবে। বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখা দেখা দেবে।
- দুর্বল পেশী এবং হাড়ের ঘনত্ব কম থাকার ফলে জয়েন্টে ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া। নমনীয় ভাব কমে যায় জয়েন্টের। একারনে হাঁটা চলা বা হাতের কাজ করতে অসুবিধা হয়।
- ত্বক শুষ্ক হয়ে পরে। নখ ভঙ্গুর এবং চুল পাতলা হয়ে যায়। ত্বকে পিগমেনটেশন বা মেছতার মত দাগ পরে, যাকে আমরা বার্ধক্যের ছাপ বলি।
ত্বকে কখনো মেছতা পরবে না, জেনে নিন উপায়

কোলাজেনের উপকারিতা কি
১. ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে
ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য কোলাজেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ত্বকের সাস্থ্যকে শক্তি যোগায়। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং ত্বকের ময়েসচারাইজিং বাড়ায়। এটি বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখার মতো বার্ধক্যের অকাল লক্ষণগুলি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
২. হৃদরোগের উন্নতি করতে পারে
অবস্থা এখন এমন যে, অল্প বয়সীরা ছেলে মেয়েরাও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। কারন তারা ফাস্টফুডে অভ্যস্ত। যে খাবারে কোলাজেন নাই। কোলাজেন হল একটি কাঠামোগত প্রোটিন। যা ধমনীর গঠন প্রদান করে। ধমনীগুলি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি রক্তনালী। যা হৃদপিণ্ড থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত বহন করে। কোলাজেন ধমনীগুলিকে শক্তিশালী করে তাই হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে।
এটি অতিরিক্তভাবে ‘ভালো’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ফলস্বরূপ হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
৩. হাড় এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
কোলাজেন জয়েন্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। অস্টিওপোরোসিস এবং অস্টিওআর্থারাইটিসের মতো জয়েন্টের অবক্ষয়জনিত ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এটি হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে এবং হাড়ের ক্ষয় কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
৪. অন্যান্য সুবিধা
- চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি – যখন কোলাজেন উৎপাদন উদ্দীপিত হয়, তখন এটি চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
- নখের স্বাস্থ্য উন্নত – কোলাজেন নখের ভঙ্গুরতা এবং ভাঙ্গাভাব কমাতে এবং নখের শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করবে।

যারা সঠিক ধরণের কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার খান, তাদের কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
কোলাজেন সমৃদ্ধ কিছু খাবার
- ফল যেমন – সাইট্রাস ফল ( টক জাতীয় ), গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যেমন পেয়ারা, আনারস, অ্যাভোকাডো, আম।
- সবজি যেমন – রসুন, সবুজ শাকসবজি, মটরশুটি, টমেটো, ক্যাপ্সিক্যাম।
- অন্যান্য খাবার যেমন – নেহারি, ডিমের সাদা অংশ, মুরগি, নদীর মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ।
- বাদামের মতো – আখরোট
ঘরেই তৈরি করুন ৩ টি কোলাজেন বুস্টিং পানীয়
২. আনারস কমলার পানীয়
উপকরণ:
- ১ কাপ আনারসের টুকরো
- ১/২ কাপ কমলার রস
- ১ স্কুপ কোলাজেন পাউডার
- ১/৪ টক দই
- ১/২ কাপ বরফ
নির্দেশাবলী
১. একটি ব্লেন্ডারে সমস্ত উপকরণ ঢেলে দিন।
২. মিশ্রণ টি মিহি এবং আঠালো হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন।
৩. একটি গ্লাসে ঢেলে নিন। চুমুকে চুমুকে খেয়ে ফেলুন।
আত্মহত্যা বেড়ে গেছে, মানুষ কেন আত্মহতা করে

৩. কোলাজেন কি চুলপরা বন্ধের পানীয়
মাথার ত্বকের সাস্থ্যকে উন্নত করে।
- পানি
- শসার টুকরো
- পুদিনা পাতা
- তাজা লেবু
- কোলাজেন পাউডার
নির্দেশাবলী:
১. বড় এক গ্লাস পানিতে শসার টুকরো এবং পুদিনা পাতা গুলো ছেড়ে দিন।
২. বড় লেবু হলে অর্ধেক টা নিন। অর্ধেক লেবুর পুরো রস গ্লাসে ঢালুন।
৩. সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত না হওয়া পর্যন্ত কোলাজেন পাউডার মিশিয়ে নিন।
৪. এরপর ব্লেন্ড করুন। এবার খেয়ে ফেলুন। অথবা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে চাইলে ফ্রিজে রেখে দিন!
কোলাজেন নিয়ে ডাঃ এরিক বারগের ভিডিও দেখুন

কেন এটি কাজ করে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য হাইড্রেশন গুরুত্বপূর্ণ। এই সতেজ পানীয়টি আপনার মাথার ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখার জন্য উপযুক্ত। ভিটামিন সি তে পরিপূর্ণ পানীয়টি।
সেলিম হোসেন – তাং – ১৫/০৭/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.