মাদকাসক্তির সামাজিক ভয়
যে দ্রব্য পান বা ব্যাবহার করলে নেশা তৈরি হয় এবং এটিতে অভ্যাস্ত হওয়াকে মাদকাসক্তি বলে। আর যারা মাদক নিয়মিত গ্রহন করে তাদের কে মাদকাসক্ত বলে। একজন ব্যক্তির জন্য একটি ক্ষতিকর শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া হল এই আসক্তি। মাদকাসক্তির নেশা এতটাই ভয়াবহ যে এর থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। আর এই আসক্তির ফল হল নিজ জীবনে, পরিবারে বেদনায়ক অশান্তি এবং অকালমৃত্যু।
আবার অন্যভাবে বলা হয়, যে দ্রব্য গ্রহণের ফলে মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব আসে এবং দ্রব্যটির প্রতি
মানুষের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায় তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। এই নেশা দ্রব্যের প্রতি ব্যক্তির যখন আগ্রহ ক্রমশ বাড়তে থাকে তখন তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। তাই এই দ্রব্যের প্রতি নেশাকেই মাদকাসক্তি বলা হয়। বিচার বিশ্লেষণে প্রেম মাদকাসক্তির পর্যায়ে পরে না।
জেনে নিন – ডেটিং করতে কেন ছুটি দিচ্ছে অফিস।
মাদকাসক্তির সামাজিক ভয় প্রেম এবং মাদকদ্রব্য
নেশা দ্রব্যের সংজ্ঞা টা আমরা আর একটু বিস্তারিত জানি। যেসব দ্রব্য সেবন করলে বা গ্রহণ করলে মানুষের মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন হয়। মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সেগুলোকে বলা হয় মাদকদ্রব্য। এটা বলতে বোঝায় সেসব দ্রব্য যা প্রয়োগ করলে মানবদেহে সংজ্ঞাবহ এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্ষমতা হ্রাস পায় তাকে মাদকদ্রব্য বলা হয়। আমাদের দেশ এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নানান রকম নেশা দ্রব্যের ব্যাবহার রয়েছে।
যেমন – আমাদের দেশে প্রধান নেশা টা বেশ সস্তা এবং সহজেই পাওয়া যায়। সেটা হল গাঁজা। তবে গাঁজা সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। পৃথিবীর কোন কোন দেশে গাঁজা কে বৈধতা দেয়া হয়েছে। গাঁজা অতি পুরাতন মাদক, এছারাও পুরনো নেশা গুলোর মধ্যে আছে মদ, আফিম, ভাঙ ইত্যাদি।
এছাড়াও বর্তমানে যেসব মাদকদ্রব্য প্রচলিত রয়েছে তা হলো – হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা,
মারিজুয়ানা,মরফিন, কোকেন, প্যাথেডিন, এল এস ডি, চরস, পপি,ক্যানবিস, হাশিশ,
স্মাক ইত্যাদি। আমরা প্রেমকে মাদকের সাথে এক করতে পারিনা। কিন্ত প্রেম কারও কারও ক্ষেত্রে আসক্তির মত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
প্রেম এবং মাদকাসক্তির ৫ টি কারন
বয়সন্ধিকাল পার হলেই মানুষ বিপরিত লিঙ্গের প্রতি প্রচণ্ড আকৃষ্ট হয়। আগেকার দিনে এই আকর্ষণ কে মুলত বিয়ের মাধ্যমে পূর্ণতা দেয়া হত। তৈরি হত পরিবার। এভাবেই সভ্যতা আজকের পর্যায়ে এসেছে। এখন সমাজ অনেক টা খোলামেলা। তাই বিয়ের পূর্বেই নরনারী প্রেমে মত্ত হচ্ছেন। দেহ বিনিময় করছেন, একজন থেকে বহুজনের দিকে ছুটছেন। কোন কোন জুটি আনন্দ বাড়াতে একসাথে ক্ষতিকর নেশা দ্রব্য গ্রহন করছেন।
হতাশা
আমাদের যুব সমাজের নেশাগ্রস্ত হওয়ার পেছনের প্রধান কারণ হলো হতাশা। আমাদের যুব
সমাজ নিজেকে নিয়ে অনেক উচ্চ আশা পোষণ করে। কিন্তু সে মোতাবেক কাজ করে না।
যার কারণে সে তার মনের আশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় যার কারণে সে মাদক দ্রব্যের আশ্রয় নেয়।
খারাপ সঙ্গ
একজন মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে তার পরিবেশ। একজন মানুষ অনেক সময়
আসক্ত বন্ধুর সাথে মিশে নিজের অজান্তেই মাদকদ্রব্য সেবনে সে অভ্যস্ত হয়ে
ওঠে। যা তার পরিবার এবং নিজের জন্য বিপদ ডেকে আনে।
পারিবারিক অশান্তি
পারিবারিক কলহ ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দের অভাব বড় প্রভাব ফেলে কিশোর কিশোরীদের মনের উপর। পরিবারের অশান্তি আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে কিশোর কিশোরীদের ভুল পথে পরিচালিত করে । কিশোর কিশোরী নেশায় আসক্ত হয়ে পরে ভালবাসাহীন পরিবারের কারনে।
পড়ুন – প্রডাক্টের নাম নির্ধারণ কেন জরুরী। রাতারাতি ধনী কোম্পানি।
কৌতুহলবশত
কৌতূহলবশত অনেক কিশোর – কিশোরী নেশা দ্রব্যে আসক্ত হয়ে ওঠে। কারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি
আগ্রহ হয় নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি। দেখি কেমন লাগে, এই ভাবনা থেকে আজ একবার, কাল একবার এভাবেই আসক্তিতে ধরা পরে যায়।
প্রেম
কিশোর বয়সেই মানুষ নেশায় আসক্ত হয়। কেন হয়, কিভাবে আমরা কয়েক টি কারন উল্লেখ করেছি। প্রেম এর মধ্যে অন্যতম। কিশোর কিশোরী যখন প্রেমে মত্ত থাকেন, তখন তাদের পৃথিবী টা হয় স্বর্গের মত। হঠাৎ ঘটতে পারে ছন্দপতন। আর তখনি শুরু বিপদ। তারা নানান বন্ধুর কাছে। কিন্ত কোথাও শান্তি পান না। হৃদয় অস্থির থাকে। এমন কোন বন্ধু হাজির নেশা দ্রব্য নিয়ে। এখান থেকেই শুরু হয়। এরপর নেশায় আসক্তি, জীবনে বাজে ধ্বংসের দামামা।
প্রেম এবং পুরনো দিনের কথা
প্রেম এবং জীবনের ভুল পথ। আমরা একটু পিছনে ফিরে তাকাই। স্বামীর নাম মুখে বলতে নেই। বাংলার সমাজে একটা প্রচলিত রীতি ছিল। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখনো এমন টা দেখেছি।ছোট বেলায় দাদিকে দুষ্টুমি করে বলতাম ” দাদি, দাদার নাম টা যেন কি? মনে করতে পারছি না” । দাদি মিটি মিটি হাসতেন।
এখন গ্রাম অঞ্চলেও রাস্তা ঘাট, ব্রিজ,কাল্ভার্ট হয়েছে। ৪০ বছর আগেও এমন টা ছিলনা। তখন ছোট নদী খাল পার হতে খেয়া নৌকার ব্যবস্থা ছিল। নির্দিষ্ট নৌকা সারাদিন লোকজন পারাপার করত। গ্রাম বাসী নগদ টাকায় নয়, ধান কাটার মৌসুমে ধান দিয়ে যাতায়াতের দাম পরিশোধ করতেন।
অন্য গ্রাম বা অপরিচিত লোকের কাছ থেকে মাঝিরা নগদ পয়সা নিতেন।
প্রেম
টিনের চালে বৃষ্টি পরলে কেমন রোমান্টিকতা তৈরি হয়, দেখুন ভিডিওতে।
গ্রামের এক মহিলা নৌকায় পাড় হতে এসেছেন। মুখ ঢাকা থাকায় মাঝি বললেন “পার হতে পয়সা দিতে হবে”।
মহিলা ঃ আমরা ধান দিয়ে দাম পরিশোধ করি। ওপারে মধুপুর গ্রামেই আমার বাড়ি।
মাঝি ঃ আপনার স্বামীর নাম কি ?
মহিলা কবিতার ছন্দে স্বামীর নাম বললেন
” তিন তের আরও বারো
নয় আইনা পুরা কর
আমার স্বামীর এই নাম
পাড় কইরা দেও বাড়িতে যাম ( যামু ) “
মহিলার স্বামীর নাম ছিল “ষাইটা”। মুখে বলা যাবে না, তাই কৌশলে বলে দিলেন । সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সমাজে কোন রীতি বদলায়, কোন টা থেকে যায়। কখনো নতুন সামাজিক আচরনের প্রচলন ঘটে। বুড়িগঙ্গায় পানি বয়ে চলে, মিঠা স্বাদের মাছ বিলীন হয়, বিষাক্ত সাকার ফিসে ভরে যায় বুড়িগঙ্গা।
সমাজে পরিবর্তন হবেই, তবে সেটা যদি হয় ইতিবাচক, সীমার মধ্যে থাকে, এটা শুভ ফল বয়ে আনে। আর যদি সীমা লঙ্ঘন করে তবে তা ব্যাক্তির সাস্থ্য, মানসিক, আর্থিক ক্ষতির কারন হয়। দেশ ও জাতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পরে।
সেলিম হোসেন – ০১/০৩/২০২৪ ইং
Pingback: মদ খেয়ে মৃত্যু মাদারীপুরে। মদের আসরে হই হুল্লোড়। 2 people died after drinking alcohol in Madaripur - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্ব সেরা দশ সম্পর্কে জেনে নিন। Know about top 10 intelligence agencies in the world - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: প্রেম, ব্যর্থতা এবং সংঘাতের ঐতিহাসিক গল্প - Historical love story - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: টেপা টেপির গল্প। আমাদের গ্রাম বাংলার পুরনো দিনের বিনোদন। 1 Bangladeshi village story - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: পেছনে ফেলে আসা পরিবেশ, প্রতিবেশ। আগেকার দিনে বিয়ে হত কিভাবে ? দুটি গ্রামীণ গল্প। 2 story of the olden days of Bengal - OVIZAT
Pingback: তাকদির কি তাকদির নিয়ে ২ টি ঘটনা যা ঈমান বাড়িয়ে দিবে What is fate? 2 facts about fate that will increase faith - OVIZAT