জামাই কাণ্ড ভাইরাল: চিরায়ত গল্প ও আধুনিক সমস্যা
‘জামাই’ শব্দটি আমাদের সমাজে একইসঙ্গে আদর, আপ্যায়ন এবং হাস্যরসের প্রতীক। তবে ইদানীং এই শব্দটির ব্যবহার বেশ শ্রুতিকটু ও বিদঘুটে হয়ে উঠেছে।
শব্দের ব্যবহার ও বিতর্ক: স্বামী না জামাই?
সাধারণ অর্থে ‘জামাই’ শব্দটি দিয়ে কন্যা বা মেয়ের স্বামীকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ, একজন পুরুষ তার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে জামাই, কিন্তু তার স্ত্রীর কাছে তিনি কেবল ‘স্বামী’।
কিন্তু বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েরা তাদের স্বামীকে বোঝাতে সরাসরি ‘জামাই’ শব্দটি ব্যবহার করছেন— যেমন: “জানিস, জানুয়ারিতে আমার জামাই আমাকে থাইল্যান্ড নিয়ে যাবে” অথবা “আমাকে এখুনি যেতে হবে, আমার জামাই বাসায় চলে আসবে।” এই ধরনের ব্যবহারকে অনেকেই ভুল এবং অশোভন মনে করেন। মেয়েটির স্বামী আসলে তার মায়ের জামাই বা তার বাবার জামাই।
জামাই শব্দের সঠিক অর্থ কী?
‘জামাই’ শব্দের সঠিক প্রয়োগের একটি উদাহরণ হলো: শেখ হাসিনার জামাই কে? তিনি হচ্ছেন খন্দকার মাসরুর হোসেন মিতু, যিনি শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের স্বামী।

১. শ্বশুরবাড়ির মধুর হাঁড়ি: এক পুরনো দিনের গল্প
একসময়কার একটি জনপ্রিয় গল্পে আছে, মাস্টার মশাই শ্বশুরবাড়িতে এসে দারুণ আদর-যত্নে ও অলসতায় দিন কাটাচ্ছিলেন। একদিন তিনি টয়লেটে গিয়ে আবেগে দেয়ালে চক দিয়ে লিখলেন:
-
মাস্টার: “শ্বশুর বাড়ি, মধুর হাঁড়ি।”
পরে প্রাকৃতিক কাজ সারতে এসে শ্বশুর মশাই লেখাটি দেখলেন এবং নিচে একটি লাইন যুক্ত করলেন:
-
শ্বশুর: “খাও ব্যাটা দিন চারি।”
পরদিন মাস্টার সাহেব বিষয়টি বোধগম্য না হওয়ায় পাল্টা লিখলেন:
-
মাস্টার: “সে আবার কেমন?”
এরপর শ্বশুর মশাই লিখলেন:
-
শ্বশুর: “নেরি কুকুর যেমন।”
নিজের লেখাটি পড়ে প্রচণ্ড লজ্জা পেয়ে মাস্টার সাহেব তৎক্ষণাৎ বউকে রেখেই শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন। শ্বশুর বেঁচে থাকতে তিনি আর কোনোদিন সেই বাড়িতে যাননি।
দেখুন – জামাই নাম্বার ১ নাটক ।অলস মিয়ার ব্যাটারা কি সমস্যা তৈরি করে।

২. আপ্যায়নের ভিন্ন রূপ
এক্ষেত্রে একটি মজার সামাজিক সত্য হলো— যদি জামাইয়ের বাড়ি শ্বশুরবাড়ীর কাছাকাছি হয়, তাহলে এই বিশেষ আদর বা আপ্যায়ন কমে যায়। এমনি এক বাড়ির পাশের জামাই শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখেন সবাই খেতে বসেছেন, কিন্তু তাকে তেমন পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না।
শ্বশুর তাকে জিজ্ঞেস করলেন: “জামাই কি ভাত খাবে?”
বেচারার খাওয়ার খুব ইচ্ছা, কিন্তু সরাসরি বলতে পারলেন না। কৌশলে বললেন: “তা তরকারি কী?”
শ্বশুর সঙ্গে সঙ্গে বললেন: “ঠিক আছে, না খেলে, অন্যদিন খেও।”
বউরা কেন স্বামীদের ভবলীলা সাঙ্গ করে দিচ্ছেন !

শাশুড়ি-জামাই সম্পর্ক: আধুনিক বিপত্তি
শাশুড়ি এবং জামাইয়ের সম্পর্ক বরাবরই স্পর্শকাতর। অনেক সময় ছোটখাটো বিষয়ও বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
ইতালির ভেনিসে টুথপেস্ট-কাণ্ড
সম্প্রতি ইতালির ভেনিসে ছুটি কাটাতে গিয়ে এক ভদ্রলোক তার স্ত্রী-কন্যা ও শাশুড়িকে ফেলেই মাঝপথে দেশে ফিরে আসেন। কারণ শুনলে চোখ কপালে ওঠার মতো— শাশুড়ি তার ও তার স্ত্রীর টুথপেস্ট ব্যবহার করেছিলেন!
ওই ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যম রেডিটে ঘটনাটি শেয়ার করে জানান, তিনি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে পছন্দ করেন। তার ব্যবহারের টুথপেস্ট আরেকজন ব্যবহার করছেন দেখে তিনি ‘অসুস্থ’ বোধ করেন। ঝগড়াঝাঁটির পর তিনি সবাইকে ফেলে উড়োজাহাজের টিকিটের তারিখ বদলে বাড়িতে ফিরে আসেন।
পরে অবশ্য নেটিজেনদের মন্তব্যে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা জানান। (নিউজটি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়: ১২ আগস্ট ২০২৪)
পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর একান্ত সময় কিভাবে উপভোগ করবেন।

শেষ কথা
শাশুড়ি বা শ্বশুর, তারা আমাদের সন্তানের মা/বাবা এবং আমাদের জীবনসঙ্গিনীর জন্মদাতা। তাদের প্রতি আমাদের যথেষ্ট শ্রদ্ধা রাখা উচিত।
ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ২৫/০৮/২০২৪ ইং

