রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস কি ক্ষতিকর – শক্তির উৎস রেডমিট খাবেন ৬ টি কারনে Is red meat harmful? – 6 reasons to eat red meat, a source of energy

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস কি ক্ষতিকর 

এসি রুম, তারপরেও কিছুটা গরম অনুভব করছেন। ডাক্তার টেস্ট গুলো দেখেছেন, মন্তব্য করেছেন। প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন। সাদা কাগজে অনেক গুলো ঔষধ লেখা আর উপদেশ। বাম দিকের লাল রঙের লেখায় বার বার আপনার দৃষ্টি পরছে। ডাক্তারের সহকারি একটা দুই পাতার রঙিন কভারের মাঝে প্রেসক্রিপশন উপরে রেখে, টেস্টের কাগজ গুলো গেঁথে দিলেন।

ডাক্তারের রুম থেকে বেড়িয়ে এলেন। ওয়েটিং রুমে স্ত্রী আত্মীয়রা অপেক্ষা করছেন। ছোঁ মেরে তারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিলেন। সবাই একযোগে দেখছেন। তাদের চোখ পড়ল লাল রঙের লেখায়। ‘রেডমিট খাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ’। সবাই একযোগে উপদেশ দিতে লাগলেন। তুমি এখন থেকে গরুর মাংস খেতে পারবেনা। আপনার ছোট মেয়েটি ব্যাথিত কণ্ঠে হাত ধরে বলল, বাবা তুমি আর রেডমিট খেয়ো না।

বাসায় ফিরছেন আর ভাবছেন। এত সুস্বাদু গরুর মাংস, খাসির লেগ রোস্ট, ভেড়ার ভুনা মাংস প্রিয় খাবার গুলো খাওয়া যাবে না ! আমি তো ঔষধ খাচ্ছি ! যদি এসব খাবার নাই খেতে পারি, তাহলে ঔষধ খেয়ে লাভ কি। অযথাই টেস্ট খরচ, ডাক্তার কে টাকা দিলাম ! নানান ভাবনা মনে, হতাশ হয়ে গেলেন।

ভয় নেই আপনি রেডমিট খাবেন। প্রথমত আপনাকে প্রপার ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। হেলদি লাইফস্টাইল অনুসরন করতে হবে। তাহলে ঔষধ ছেড়ে দিতে পারবেন। তৃপ্তি সহকারে খেতে পারবেন আজীবন। আসুন প্রথমে জেনে নিই রেডমিট আমাদের জন্য কতটা উপকারি।

জেনে নিন মোবাইল পরিবারে কি ক্ষতি করছে 

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস
রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস

কোন কোন প্রাণীর শরীরে আছে রেডমিট

লাল মাংস বা রেড মিট বলতে কি বোঝায় ? প্রাপ্তবয়স্ক স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাংস বোঝায়। যার একটা বৈশিষ্ট আছে, এতে মায়োগ্লোবিন নামক প্রোটিন থাকে। যেমন গরুর মাংস, মহিষের মাংস, খাসির মাংস,ভেড়ার মাংস, দুম্বার মাংস, উটের মাংস, শুয়োরের মাংস ( আমাদের জন্য হারাম ) হরিণের মাংস। এই মাংসগুলো উচ্চ পরিমাণে মায়োগ্লোবিন উপস্থিতির কারণে অক্সিজেনের স্পর্শ পেলে লালচে দেখায়।

কেন মানুষ এত হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছে 

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস
রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস

রেডমিটে কি আছে উপকারিতা 

রেডমিটে ২০ ধরনের এমাইনো এসিড থাকে। যার মধ্যে ৯ টা এসেনশিয়াল। আমাদের শরীর এসেনশিয়াল ৯ টি এমাইনো এসিড তৈরি করতে পারে না। এগুলো খাবার থেকে নিতে হয়। বাকি ১১ টা শরীর নিজেই তৈরি করতে পারে। একমাত্র রেডমিটে ৯ টা এসেনশিয়াল এমাইনো এসিড একসাথে পাওয়া যায়।

১. আমাদের পেশি, হাড়, চুল, নখ, চামড়া তৈরিতে প্রোটিন লাগে। আর সেটা তৈরি হয় অ্যামাইনো এসিড দিয়ে।

২. হজম, মেটাবোলিজম, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, স্নায়বিক সংকেতে দরকার এমাইনো এসিড। এসব কাজ সম্পন্ন করতে এমাইনো এসিড বিশেষ প্রোটিন ও হরমোন তৈরি করে। 

৩. এন্টিবডি তৈরি হয় এমাইনো এসিড দিয়ে। যা রোগ প্রতিরোধ করে।

৪. যদি কোন কারনে খাবার থেকে শক্তি না আসে, তখন শরীর এমাইনো ভেঙে শক্তি উৎপন্ন করে। আমার সচল থাকি।

৫. কিছু অ্যামাইনো এসিড আছে যেমন – ট্রিপটোফ্যান, টাইরোসিন। এরা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন, ডোপামিনের মতো রাসায়নিক উৎপাদনে সাহায্য করে। যা আমাদের মেজাজ ও ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে।

৬. ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু সারিয়ে তোলে এবং বৃদ্ধি করে এমাইনো এসিড।

এখন প্রশ্ন হল, এত উপকারী খাবার খাবেন না ? উত্তর হ্যাঁ অথবা না দুটোই হতে পারে।
যদি বর্তমান প্রেসক্রিপশনে চলেন, বাকি জীবন ঔষধ খাবেন। অসুস্থ থাকবেন। সুস্বাদু রেডমিট খেতে পারবেন না।

আর যদি প্রেসক্রিপশন বদলান। ভিন্ন ধারার ডাক্তার আপনার ঔষধ এবং লাইফস্টাইল দুটোই বদলে দিবে। হেলদি লাইফস্টাইলের ৭ টি বিষয়। এগুলো পালন করলে আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আজীবন ঔষধ ছাড়াই সুস্থ থাকবেন। বাকি জীবন লাল মাংস তৃপ্তি সহকারে খেতে পারবেন।

গ্রিন টির উপকারিতা জানলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করবেন 

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস
রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস

রেডমিট খেতে দরকার হেলদি লাইফস্টাইল 

১. সাস্থ্যকর খাবার  হেলদি খাবার আমাদের চিনতে হবে। হেলদি লাইফস্টাইলের এটি প্রধান অঙ্গ। আমাদের হাতের কাছেই অনেক হেলদি খাবার রয়েছে। যেমন শাক সবজি। দেশী মুরগি, হাঁস, দেশী মুরগির ডিম, ভেড়া/ছাগলের মাংস, দেশী গরুর মাংস, হাসের ডিম, ঘি, মধু, মাখন, সব ধরনের বাদাম, ডাল বা অন্য কোন শস্য দানা, ফলমূল ( প্রধানত দেশী ফল ) নদীর মাছ, সমুদ্রের মাছ। খুব ভালো ভাবে খেয়াল করুন এগুলোই হেলদি লাইফস্টাইলের খাবার।

মিষ্টি জাতীয় খাবারে ব্যবহার করবেন দেশী চিনি বা লাল চিনি, গুর, নারকেল চিনি।

২. প্রোবায়োটিক  পাকস্থলি কে সুস্থ রাখতে প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খাবেন। যেমন – কিমচি, সাওয়ার ক্রাউট, টক দই, ডার্ক চকোলেট, পনির এবং আপেল সিডার ভিনেগার।

৩. ব্রিদিং এক্সারসাইজ  শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম। উইম হফের শ্বাসের ব্যায়াম করবেন। আবার ডাঃ উইলসের ৪-৭-৮ শ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। ইউটিউবে সার্চ দিলে পাবেন।

৪. ব্যায়াম অবশ্যক  ব্যায়াম করতে হবে। বিকল্প নেই। অন্তত সপ্তাহে ৪/৫ দিন ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম করবেন।

৫. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং  নিয়মিত ফাস্টিং করতে হবে বা রোজা রাখতে হবে।

৬. স্ট্রেস বা চাপ  মানসিক চাপ ম্যানেজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শ্বাসের ব্যায়াম ভালো কাজ দিবে। মেডিটেশন করতে পারেন। নিয়মিত নামাজ আদায় করবেন। সবার সাথে ভালো ব্যাবহার করুন। সামাজিক মেলামেশা বাড়িয়ে দিন। মানসিক চাপ কমে যাবে, আত্মিক উন্নতি ঘটবে।

৭. সূর্য কিরন  সূর্যের আলো গায়ে লাগাবেন। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টার মধ্যে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট আলো গায়ে লাগাতে পারলে খুবই ভালো। সপ্তাহে কমপক্ষে ৩/৪ দিন লাগাবেন।

রেডমিট নিয়ে ডাঃ এরিক বারগ কি বলেন 

রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস
রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস

যারা রেডমিট খেতে ভয় পান, তাদের কে পোস্ট টি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ১৫/০৯/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *