স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন কি কারনে

স্ত্রীর হাতে বটি বাঁশ ঝাড়ে স্বামী
২০১৫ সালে তারা বিয়ে করেন। জীবন্নাহার আর রফিকুল ইসলাম। বিয়ের পূর্বে তাদের বেশ জানা শোনা হয়। তারা একই এলাকায় কর্ম করতেন। গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী (গিলারচালা), শ্রীপুর, গাজীপুর এলাকায়। রফিকুল ‘হাউ আর ইউ’ পোশাক কারখানায় স্টোর লোডার। আর জীবন্নাহার পাশের মেঘনা নিট কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার সুইং অপারেটর। জীবন্নাহারের বেতন ১৩ হাজার টাকা। মারিয়া আক্তার রোজা নামের চার বছরের একটি কন্যাশিশু রয়েছে তাদের।
জীবন্নাহারের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিষমপুর গ্রামে। বাবার নাম চাঁন মিয়া। রফিকুলের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার উলামাকান্দি গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল লতিফ। তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয় টাকা নিয়ে। স্বামী তার স্ত্রীর বেতনের টাকা তার কাছে দিতে বলতেন। কিন্তু জীবন্নাহার তার বেতনের টাকা রফিকুল কে দিতেন না। তার মায়ের কাছে রাখতেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর প্রায়ই ঝগড়া বাধত। জীবন্নাহার রফিকুলকে ছেড়ে চলে যাওয়ারও হুমকি দেন।
দাম্পত্য জীবনে কিভাবে সর্বনাশ ঢুকে পরে। সুখী দাম্পত্য জীবনের উপায় জেনে নিন।

সেদিন ছিল বুধবার রাত। বেশ শীত। এমন রাতে প্রায় স্বামী স্ত্রীরা সাধারণত উষ্ণতা বিনিময় করেন। কিন্ত তারা ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে স্ত্রীকে থাপ্পর মেরে রফিকুল বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের বাচ্চা মেয়েটি পাশেই খালার বাসায় বেড়াতে গিয়েছে।
জীবন্নাহার একটি ইট সংগ্রহ করেন। ঘুমন্ত রফিকুলের মাথায় ইট দিয়ে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করেন। রফিকুল খাট থেকে নিচে পরে যান। অজ্ঞান রফিকুলের মাথায় ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন জীবন্নাহার। একপর্যায়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করেন। স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন হন। লাশ লুকাবেন কোথায় ? মাথায় বুদ্ধি আসে জীবন্নাহারের। লাশ ওয়ারড্রোবে রেখে দেন।
পরদিন সকালে নিজের কর্মস্থলে যান জীবন্নাহার। কাজ থেকে ফিরে পাশের বাসায় বোনের ঘরে রাতের খাবার খান। রাত ১১টায় বাসায় ফিরে রান্নাঘর থেকে বটি আনেন। এরপর রফিকুলের দেহ থেকে মাথা, কনুই থেকে দুই হাত ও হাঁটু থেকে দুই পা বিচ্ছিন্ন করেন। পরে পা দুটি অদূরে টয়লেটের পাশে রাখেন । মাথা আর হাত দুটি নর্দমায় এবং দেহ বস্তায় ভরে পাশের বাঁশঝাড়ে ফেলে দেন।
এলাকাবাসী শুক্রবার বেলা ১১টায় বাঁশঝাড়ের নিচে রক্তমাখা বস্তা দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্ত্রীর হাতে নিহত রফিকুলের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী জীবন্নাহারকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জীবন্নাহার খুনের ঘটনা স্বীকার করেন।
শ্রীপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, রফিকুল হত্যার ঘটনায় তার বাবা আবদুল লতিফ বাদী হয়ে জীবন্নাহারকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় জীবন্নাহারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ। ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ সালে নিউজ আকারে ঘটনাটি সব জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়।
বিবাহিত নারী বা পুরুষ কেন পরকীয়া প্রেমে পড়ে।

স্ত্রীর হাতের পায়েস
রেলওয়ের চাকরি, সরকারি চাকরি। চাকরি টি পাওয়ার পর পাত্রী মহলে চাহিদা বেড়ে যায় মাহবুবুর রহমানের। ভৈরবের চণ্ডিবেড় উত্তরপাড়ায় বাড়ি মাহবুবের। তার প্রতি আকৃষ্ট হন প্রতিবেশী শহীদ মিয়ার মেয়ে মোছাঃ রোকসানা। তাদের প্রেম হয়, ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অবশেষে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় ২০০৮ সালে। তাদের ভালোবাসার ফসল হিসেবে সংসারে আসে আজিজুল (১৫), সামিউল (১২) ও সাদিয়া (৯) নামে তিনটি সন্তান।
সন্তানদের সাথে নিয়ে রোকসানা এলাকাতেই থাকত। একই গ্রামের বাবুল আহমেদের ছেলে আসিফ আহম্মেদ (২৬) মাহবুবের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। রোকসানা আর আসিফের মাঝে সম্পর্ক তৈরি হয়। শুরু হয় দৈহিক মেলামেশা। কম বয়সী আসিফ তার চেয়ে ৬ বছরের বড় তিন সন্তানের মা রোকসানার শরীরে মজে যায়। পরকীয়া গভীর হয়। কিন্ত এই প্রেমের মাঝে বিরক্তি হয়ে দাড়ায় মাহবুব।
নিজের অজান্তেই আমরা সন্তানের সর্বনাশ করি। সন্তানকে সঠিক পথে রাখার উপায়।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর মাহবুব বাড়িতে আসে। পায়েস খেতে ভালোবাসে মাহবুব। রাতে রোকসানা পায়েস রান্না করে। মাহবুব তৃপ্তি সহকারে স্ত্রীর হাতে রান্না পায়েস খায়। সে বুঝতে পারেনা এই পায়েসে আসিফের সরবরাহ করা ঘুমের ঔষধ মিশিয়েছে রোকসানা। গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় মাহবুব। ঘুমন্ত স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে রোকসানা। সাথে কোপানিতে যোগ প্রেমিক আসিফ। নিজ বিছানায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন হয়।
এ ঘটনার পরদিন নিহতের বড়ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ভৈরব থানায় রোকসানাকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর পুলিশ রোকসানাকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তিতে আসিফের নাম উঠে আসে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাহালুল খান ২০২০ সালের ৩০ জুন আদালতে দুইজনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র জমা দেন। সাক্ষ্য- প্রমাণ ও ১৮ ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রায়ে আসিফ এবং রোকসানা দুজন কে মৃত্যুদণ্ড দেয় কিশোরগঞ্জের ২ নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাম্মী হাসিনা পারভীন।
জীবনে সফল হতে চাই সঠিক মোটিভেশন। যে বইটি আপনাকে অসাধারন নির্দেশনা দিতে পারে।


স্ত্রীর হাতের স্যুট
