দাম্পত্য জীবন: স্ত্রীকে খুশি করার ৮টি আন্তরিক উপায়
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একটি পবিত্র বন্ধন—আজীবন একসাথে পথ চলার অঙ্গীকার। ঠিক যেমন একটি তাজা ফল খাওয়ার আগে ধুয়ে, কেটে, যত্ন করে পরিবেশন করতে হয়, তেমনি এই সম্পর্কটিকেও প্রতিদিনের ছোট ছোট যত্ন আর আন্তরিকতার মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে হয়।
দুর্ভাগ্যবশত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু নেতিবাচক আলোচনা প্রায়শই দম্পতিদের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। এই বিদ্বেষ দূর করে সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে, সম্পর্কের জ্ঞানী ব্যক্তিরা কিছু আন্তরিক উপায়ের কথা বলেন। আসুন জেনে নিই স্ত্রীকে খুশি করার সেই ৮টি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
আপনার দাদা দাদীদের বিয়ে কিভাবে নির্ধারিত হয়েছিল জানেন।

সম্পর্ককে উষ্ণ রাখতে ৮টি সহজ উপায়
১. আবেগ বুঝুন, সময় দিন
অনেক সময় মেয়েদের মুড সুইং (Mood Swing) হতে পারে। কাজের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, স্ত্রীর ঘন ঘন মুড সুইং হলে তাকে পর্যাপ্ত সময় দিন। তার মন বোঝার চেষ্টা করুন। স্বামীর একটুখানি আন্তরিক মনোযোগই অনেক সময় তার মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
২. একঘেয়েমি কাটাতে বাইরে ঘুরতে যান
সারাদিন ঘরে থাকতে থাকতে আপনার স্ত্রীর একঘেয়েমি লাগতে পারে। তাই ছুটির দিনগুলোতে তাকে নিয়ে দূরে বা কাছে ঘুরতে বের হন। কোথায় যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিন। প্রিয়জনের সাথে একান্ত সময় কাটানো মানুষের বিষণ্ণতা দূর করে সম্পর্কের সজীবতা বজায় রাখে।
৩. অভিমান ভাঙান পছন্দের উপহারে
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাগ, ঝগড়া বা অভিমান হওয়া খুবই স্বাভাবিক। যদি আপনার স্ত্রী অভিমান করে থাকেন, তবে বাসায় ফেরার সময় তার পছন্দের জিনিস, যেমন – একটি গোলাপ, এক বাক্স চকলেট বা তার পছন্দের অন্য কোনো উপহার নিয়ে ফিরুন। এই সামান্য চেষ্টা তার রাগ ভাঙাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর একান্ত সময়কে কিভাবে গভীর আনন্দে পূর্ণ করবেন

৪. রোমান্টিকতা ও খুনসুটি বজায় রাখুন
সব মেয়েরাই রোমান্টিকতা পছন্দ করেন। আপনার দাম্পত্য জীবনে খুনসুটি ও দুষ্টুমি ধরে রাখুন। রান্নার সময় চুপিচুপি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তাকে একটু বিরক্ত করুন—এই ধরনের ছোট ছোট রোমান্টিকতা সে উপভোগ করবে।
৫. প্রকৃতির সাথে একান্ত মুহূর্ত কাটান
প্রকৃতির সৌন্দর্য সবসময়ই ভালোলাগার এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়। ছাদে বা বারান্দায় উঠে জোছনা রাতে দুজনে একসাথে চাঁদ দেখতে পারেন। সেই চাঁদ দেখতে দেখতে হবে অনেক গল্প, অনেক কথা। এই সুখের অনুভূতি দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং জীবনের দৈনন্দিন ঝামেলা মোকাবেলা করা সহজ করে তুলবে।
৬. অসুস্থতায় পরম যত্নে সেবা করুন
অসুস্থ থাকলে স্ত্রীর কোনো কিছু ভালো লাগে না। অনেক সময় তিনি সময়মতো ওষুধ খাওয়ার কথা ভুলেও যেতে পারেন। তাই এই সময়গুলোতে নিয়ম করে আপনি তাকে ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিন বা পাশে থাকলে নিজেই খাইয়ে দিন। স্ত্রীর প্রতি এই যত্নশীল মনোভাব তাকে খুশি করে।
পড়ুন – কেন স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিলেন স্ত্রী

৭. বিশেষ সময়ে (মাসিক) সহানুভূতিশীল হন
মাসিক চলাকালীন সময়ে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এ সময়ে পেট ব্যথা বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সময়গুলোতে স্ত্রীর শারীরিক ও মানসিক সমর্থন খুব প্রয়োজন। শত ব্যস্ততার মাঝেও তার ঘন ঘন খোঁজ নিন ও খেয়াল রাখুন। এই সময়গুলোতে তার সাথে বাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং অবশ্যই ইন্টারকোর্স (শারীরিক মিলন) করবেন না। সহনশীলতার সাথে তার পাশে থাকুন।
৮. অর্থের চেয়ে সময়কে বেশি গুরুত্ব দিন
সংসারে টাকার প্রয়োজন অনিবার্য, কিন্তু শুধু টাকার পাহাড়ে স্ত্রীকে শুইয়ে দিলেই তিনি ভালো থাকবেন না। শুধু টাকা দিয়েই যদি সুখ কেনা যেত, তবে কোনো ধনী স্বামীর স্ত্রী পরকীয়ায় জড়াতেন না বা অন্য কারও সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন না। জীবনসঙ্গীর পিছনে কেবল টাকা ব্যয় করার চেয়ে তাকে নির্ভেজাল ও ভালোবাসায় পূর্ণ সময় ব্যয় করাটা বেশি জরুরি। টাকা দিয়ে সৌখিন চাহিদা পূরণ করা যায়, কিন্তু মনের পরিপূর্ণ তৃপ্তি আসে শুধু আন্তরিক ভালোবাসা থেকেই।
পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর সুখী হওয়া নিয়ে একটি গবেষণা

স্ত্রীর মন নিয়ে দুটি মজার গল্প
দাম্পত্য জীবনের মনস্তত্ত্ব নিয়ে বিশ্বজুড়ে রয়েছে নানা রসঘন গল্প। এখানে দুটি গল্প রইল—একটি ব্রিটিশ এবং অন্যটি ভারতীয় প্রেক্ষাপটে।
ইংরেজদের রসিকতা
এক ব্রিটিশ যুবক তার পাকিস্তানি বন্ধুর সাথে ফোনে দুঃখ করে বলছিল, “আমি বিয়ে করতে পারছি না। কারণ আমি যে মেয়ে বন্ধুকেই বাড়িতে নিয়ে আসি, মা তাকে অপছন্দ করেন।”
বন্ধু পরামর্শ দিল, “তাহলে এক কাজ কর না কেন? তোমার মায়ের চেহারা ও আচরণের সাথে হুবহু মিল রেখে একজন মেয়ে বন্ধুকে বাসায় নিয়ে এসো। নিশ্চয়ই মা পছন্দ করবেন।”
ব্রিটিশ যুবকটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “সেটাও করেছিলাম। কিন্তু এক্ষেত্রে বাবা রাজি হননি।”

স্ত্রীকে খুশি করার উপায় ভারতীয় প্রেক্ষাপট
মহারাষ্ট্রের এক ভদ্রলোক সকালে অফিসে যাচ্ছিলেন। স্ত্রী ব্রিফকেস এগিয়ে দিয়ে বললেন, “অফিস থেকে ফেরার পথে চারটা মোরগ নিয়ে এসো। আগামীকাল আমাদের বিবাহবার্ষিকী, মোরগ পোলাও রান্না করব।”
ভদ্রলোক একগাল হেসে বললেন, “পাঁচ বছর পূর্বের আমাদের এক ভুলের জন্য চারটা মোরগের প্রাণনাশ করাটা কি সঙ্গত হবে?”
জীবন একটাই। সুখে থাকতে হলে স্ত্রীর মনের গুরুত্ব দিতেই হবে। দাম্পত্যে অসুখী কাছের মানুষ বা বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ০৬/০৯/২০২৪ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া









