কেন সব ভুলে যাই – ৬ টি খাবার এবং ১ টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে সমাধান Why We Forget Everything – 6 Foods and 1 Important Ingredient Solution

সব ভুলে যাই

যেসব কারনে সব ভুলে যাই

সমস্যাটা আগে ছিল না। ইদানিং দেখা যাচ্ছে। পরিচিত কেউ সামনে আসলে হঠাৎ তার নাম মনে করতে পারছেন না। কি যেন নাম ! কি যেন নাম ! মনে মনে চেষ্টা করেন, কিন্ত সফল হতে পারেন না। লজ্জায় তার নাম জিজ্ঞাসাও করতে পারেন না। আলাপ শেষে পরিচিত জন চলে গেলেন, তবুও নামটা মনে আসল না।

বাসায় ফিরেও ঘটে নানান ঘটনা। হয়ত পিপাসা পেয়েছে। মগে পানি ভরতে কিচেনে ঢুকলেন। ফিরে আসলেন সবরি কলা হাতে। কলা খাওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পর, আবার পিপাসা পেল। তখন খেয়াল হল, ওহ ! আমি তো তখন পানি খেতে কিচেনে ঢুকেছিলাম !

এমন নানান সমস্যা হচ্ছে। কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না। কাজ শেষে বাসায় ফিরে মনে পরল, অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা ফোনালাপ করা হয়নি। একটানা কাজ করতে গিয়ে কাজে ভুল হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে ? কি হয়েছে আপনার ? ভুলে যাওয়ার কারন কি ? আপনার ব্রেইন ঠিকমত ফাংশন করছেনা।

লাল মাংস নিয়ে অযথাই ভয়, নির্ভয়ে খান 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

সব ভুলে যাই কারন ডিমেনশিয়া 

“সব ভুলে যাই” বলতে ডিমেনশিয়া (Dementia) বোঝায়।  যা একটি মস্তিষ্কের রোগ। যার ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। মানুষের আচরণগত পরিবর্তন ঘটে।আলঝেইমার হলো ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। প্রায় ৬০–৭০% ডিমেনশিয়া রোগীর মধ্যে আলঝেইমার পাওয়া যায়। এটি একটি নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের রোগ, যেখানে ব্রেন সেলের ক্ষয়, অস্বাভাবিক প্রোটিন জমা (amyloid plaques ও tau tangles) হয়।

ডিমেনশিয়ার লক্ষণ সাম্প্রতিক ঘটনা মনে রাখতে না পারা, ভুল জিনিস রাখা, শব্দ খুঁজে পেতে বা বুঝতে অসুবিধা হওয়া, মনোযোগের ঘাটতি। পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা-চেতনার ক্ষয় হতে পারে। ডিমেনশিয়া মূলত মস্তিষ্কের কোষগুলোর ধীরে ধীরে মারা যাওয়ার কারণে হয়। 

জেনে নিন কেন ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পরেন 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

অল্প বয়সেই সব ভুলে যাই 

সমাজে ধারনা আছে ভুলে যাওয়া রোগ বার্ধক্যের বিষয়। বয়স বাড়লে অনেক কথাই মনে থাকে না। কিন্ত ইদানীং কম বয়সিদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর মুল কারন সোশ্যাল মিডিয়া। এখানে অল্প বয়সীরা প্রচুর সময় অপচয় করে। যা তাদের মনোযোগ কেড়ে নেয়। এছাড়াও মানসিক চাপ, দেরিতে ঘুমানো, সামাজিক মেলামেশা না করা, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা বিষয় গুলোও গুরুত্বর কারন।

এই কারণগুলোর জন্য অল্প বয়সে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তবে এই প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না একেবারেই। না হলে বার্ধক্যে পৌঁছনোর আগেই ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়তেই থাকবে। তবে কিছু খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে ভুলে যাওয়া সমস্যা কমে যাবে। বাড়বে স্মৃতি শক্তি, অল্প বয়স্ক বা প্রাপ্ত বয়স্ক সবার।

ভয়ের কিছু নেই। ব্রেইন ঠিকমত ফাংশন করলেই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। ব্রেইন ঠিকমত ফাংশন করতে একটি উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার নাম কোলিন  ( Choline )। এটি পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায় ডিমে। প্রতিদিন কুসুম সহ ডিম খেলেই ব্রেইন যথেষ্ট কোলিন পাবে। আরও কিছু খাবার ভালো ভুমিকা রাখে স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সেগুলোও জানাব।

কিছুই ভালো লাগে না কেন জানেন 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

প্রশ্ন হল কয়টা ডিম খাবেন 

অনেকেই ভয় দেখায়, ডিম খেতে সাবধান। কুসুম ছাড়া খেও। কত কথা ! আমি হেলদি লাইফস্টাইল ফলো করি ২০১৯ এর জুন থেকে। তখন থেকেই প্রতিদিন গড়ে ৩ টার বেশি ডিম খেয়েছি।

গত কয়েক বছরে আমাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ। ওজন প্রায় ৮০ কেজি থেকে ৬৬ চলমান। কোন অসুখ হয়নি। কোন গ্যাসের ট্যাবলেট খাইনি।

আপনি যদি হেলদি লাইফস্টাইল ফলো করেন, তাহলে ৪ টা ডিম প্রতিদিন অনায়াসে খেতে পারবেন। ব্রেইন ফাংশন করবে স্বাভাবিক। কাজে মনোযোগ বাড়বে। নাম ভুলে যাবেন না। প্রয়োজনীয় কাজ যথাসময়ে করবেন।

৩ টি উপায়ে ডিম খাবেন। ১. কুসুম আস্ত এবং কাঁচা রেখে ঘি দিয়ে পোঁচ। এই উপায়ে খেলে সব ধরনের পুষ্টি অক্ষুন্ন থাকবে। ওজন কমাতেও দারুন। ২. কুসুম নরম রেখে সিদ্ধ করে খাবেন। ৩. পুরোপুরি সিদ্ধ করে খেতে পারেন।

কেন অল্প বয়সীরাও লিভার সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

আরও যেসব খাবার ব্রেইন ফাংশন কে উন্নত করবে

রঙিন সবজি

টমেটো, রাঙা আলু, কুমড়া কিংবা গাজরের মতো সবজিতে প্রচুর পুষ্টি উপাদান আছে। আরও আছে ক্যারোটিনয়েড জাতীয় উপাদান। এ উপাদানটি স্নায়ু ভাল রাখতে সহায়তা করে। বিশেষত চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ক্যারোটিনয়েড অত্যন্ত উপকারী। পাশাপাশি এই ধরনের সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। যা মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মস্তিষ্কের বিকাশে প্রতিদিনের খাবারে রাখতে হবে সবুজ শাকও।

ডার্ক চকলেট

প্যাকেটের গায়ে লেখা দেখবেন কত ভাগ ডার্ক। কমপক্ষে ৭০ ভাগ ডার্ক হতে হবে। বেশি হলে আরও ভালো। মানসিক চাপ কমানো, অবসাদ দূর করা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ডার্ক চকলেট। নিয়মিত এক টুকরো করে ডার্ক চকোলেট যদি খেতে পারেন। তা হলে উপকার পাবেন। এই জাতীয় চকলেট বার্ধক্য আটকাতেও কার্যকর।

অতি গুরুত্বপূর্ণ যে খাবার সম্পর্কে আমরা অসচেতন 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

ব্লাক কফি

কফি অনেকেই আমরা দুধ চিনি মিশিয়ে খাই। এতে করে এর মেডিসিনাল উপাদান কাজ করে না। ব্লাক কফি খাবেন। স্মৃতি শক্তি উন্নত করতে দারুন কাজ দিবে। যদিও বেশি ক্যাফিনের প্রভাব শরীরে নানাভাবে পড়তে পারে। বাড়তি প্রস্রাবে শরীরে পানির পরিমান কমতে পারে। কারও কারও হজমে গোলমাল দেখা দেয়। যদি আপনার সমস্যা না হয়, তাহলে খেতে পারেন। সাস্থ্য উপকারিতা পাবেন।

বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার

ভিটামিন ‘ই’ এর ভালো উৎস বাদাম এবং বীজজাতীয় খাবার। সঠিক মাত্রার ভিটামিন ই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে নিয়ম করে খেতে পারেন বাদাম। আখরোট, কাজু, পেস্তা, চিনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, তিলের বীজ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বীজ জাতীয় খাবার আমাদের সুস্থ রাখে। আয়ুও বাড়ায়।

বাদামের যে এত পুষ্টি গুন জানা ছিল না 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

হোল গ্রেইন ওট্‌স

এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। পেটের নানা সমস্যা দূর করে। শরীরে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ওট্স। নিয়মিত ওট্‌স খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে তো বটেই, সেই সঙ্গে স্মৃতি শক্তিও বৃদ্ধি করে। ওট্‌স শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশেও সাহায্য করে। হোল ওট্‌স অর্থাৎ স্টিল কাট বা রোলড ওট্‌স খাবেন। ডাবের পানি, টক দই বা দুধে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে খাবেন।

ব্লুবেরি

এটি আমাদের দেশে খুব একটা পাওয়া যায় না। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্লুবেরির মতো ফলের তুলনা হয় না। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, তা হলে অবশ্যই ব্লুবেরি রাখুন হাতের কাছে। ব্লুবেরি মস্তিষ্ক সচল রাখে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।

আলঝেইমার নিয়ে সুন্দর একটি টেড টক ভিডিও দেখুন 

সব ভুলে যাই
সব ভুলে যাই

যারা ভুলে যাওয়া রোগে ভুগছেন, তাদেরকে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – তাং ২৩/০৯/২০২৫ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *