মাহাথির মোহাম্মদ
৯৯ তম জন্মদিন পালন করলেন মাহাথির মোহাম্মদ। এখনো সুস্থ আছেন। এত বছর সুস্থ থাকার রহস্য কি ? সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন। তিনি উত্তরও দিয়েছেন।
জন্ম ১০ ই জুলাই ১৯২৫ সাল। কেদাহ রাজ্যের আলোর সেতার নামক এলাকায়। এলাকাটি রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দূরে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে মালয়েশিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একটানা ২০০৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
জীবনে সফল হতে আব্রাহাম লিঙ্কনের জীবনের কিছু ঘটনা আপানাকে অনুপ্রেরনা যোগাবে।

২০০৩ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। নাজিব রাজাক প্রধানমন্ত্রী হলে দুর্নীতি ব্যপকতা লাভ করে। তিনি ব্যাথিত হন। অবসর গ্রহণের দীর্ঘ পনের বছর পর আবার রাজনীতিতে আসেন। বয়স তখন ৯২ বছর। ২০১৮ সালের ৯ মে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। পরদিন ১০ মে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর ২০২২ নির্বাচনে হেরে যান।
মাহাথির মোহাম্মদ এর ৫ টি উক্তি
১. প্রধানমন্ত্রী থেকে অবসর গ্রহনের পর সাংবাদিক রা তাকে প্রশ্ন করেন সফল হতে কি করা প্রয়োজন। নি বলেন ” কোন কাজে সফল হতে দরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি। আর কঠোর পরিশ্রম।”
২. আইনের শাসন সবসময় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে না।
৪. একজন চিকিৎসক হিসাবে আপনি বেশির ভাগ রাতেই ডিউটিতে থাকেন, তাই আপনার অবিরাম ঘুম হয় না, এবং এটা আপনার জন্য পরিচিত একটি বিষয় হয়ে যায়। তাই, কঠোর পরিশ্রম আমাকে বিরক্ত করে না।
৫. পরিকল্পনা মানে ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি দেওয়া।
জেনে নিন – আজীবন সুস্থ থাকতে কিভাবে ভালো অভ্যাস গড়তে হয়।

মাহাথির মোহাম্মদ কত বছর ক্ষমতায় ছিলেন
তিনি ছিলেন একজন চিকিৎসক । সরাসরি রাজনীতিতে আসেন। সাংসারিক জীবনে তার এক স্ত্রী সিতি হাসমাহ সহ সাত সন্তান রয়েছে। তিনি তার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দল পরপর পাঁচ বার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তিনি এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২২ বছর একটানা প্রধানমন্ত্রী থাকেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২ বছর ক্ষমতায় থাকেন।
দেশটির প্রায় সবকটি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানাগেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যে মাহাথির মোহাম্মদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বন্যা বইছে। মূলত মাহাথিরের নেতৃত্বেই একটি অনুন্নত দেশ থেকে থেকে দ্রুত মালয়েশিয়া এশিয়ার ইউরোপ হিসেবে মর্যাদা লাভ করে।
মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিলেন
১৯৯৮-৯৯ সাল তার দিকে একটি অভিযোগ ওঠে। তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করছেন। পাশাপাশি সরকার সংস্কারের দাবিও অত্যন্ত জোরালো আকার ধারণ করে। একদিকে জাতিগত অসন্তোষ। অপরদিকে শরীক দলগুলোর জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি। সব মিলিয়ে মাহাথির বিরাট সমস্যায় পতিত হন।
এতোকিছুর পরেও তিনি মালয়েশিয়াকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। আগেই বলেছি ২০০৩ সাল পর্যন্ত মাহাথির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন। ২২ বছরের শাসনামলে পুরো মালয়েশিয়াকে তিনি বদলে দিয়েছেন। তিনি রাজনীতিবিদ, অন্য রাজনিতিকদের যেমন বিতর্ক আছে, তাকে নিয়েও অনেক বিতর্ক হয়েছে। সব সমালোচনা শেষে মেনে নেয়া হয়, মাহাথির মুহাম্মদই মালয়েশিয়ার আধুনিকতার জনক।
সফল হতে নাদির শাহ্ কিভাবে বাধা পেরোলেন।

মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশের ছেলে
২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) এক সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন মাহাথির। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাঙ্গুনিয়ার কোন একটি গ্রামে আমার দাদার বাড়ি ছিলো।
দাদা পরবর্তীতে মালয়েশিয়াতে বসতি স্থাপন করেন। শুরু হয় তার এই কথার সূত্রধরেই খোঁজ। অবশেষে জানা যায় চট্টগ্রাম জেলার উত্তরাংশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী সড়কের সামান্য পূর্বে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম। নাম মরিয়মনগর।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক ব্রিটিশ শাসিত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক। মালয়েশিয়ায় এ্যালোর সেটর গিয়ে এক মালয় রমণীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হন।
তাদের ঘরেই জন্ম নেন মুহম্মদ ইস্কান্দার। আর এই মুহম্মদ ইস্কান্দারের ছেলে সন্তান হিসেবে জন্ম নেন মাহাথির মুহম্মদ। সে হিসেবে চট্টগ্রাম হচ্ছে মাহাথির মুহম্মদ এর পূর্বপুরুষের দেশ। সে অনুযায়ী বাংলাদেশী রক্ত তার শরীরে বহমান।
সেলিম হোসেন – ১১/০৭/২০২৪ ইং – ছবি গুল পেক্সেলস থেকে নেয়া