নারিকেল তেলে পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা ৫ পর্যায়ে মুক্তি এবং গল্প Home treatment of piles with coconut oil in 5 stages of relief and story

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

নারিকেল তেলে পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা: স্থায়ী মুক্তি ও সুস্থ থাকার উপায় 

সেলিম হোসেন | ১১/০২/২০২৪ ইং

টয়লেটে প্রবেশ করলেই যদি মনটা দুর্বল হয়ে যায়, যদি মলত্যাগের পর ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত ঝরে, তবে বুঝতে হবে আপনি পাইলস বা অর্শ্বরোগে (Haemorrhoids) ভুগছেন। এটি এমন এক শারীরিক সমস্যা যা দৈনন্দিন জীবনকে অস্বস্তিকর করে তোলে। এই কষ্টকর শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তন প্রয়োজন। নারিকেল তেলের মতো সহজলভ্য ঘরোয়া চিকিৎসা খুবই কার্যকর হতে পারে। 

জেনে নিন – ঔষধ ছাড়াই আজীবন সুস্থ থাকার হেলদি লাইফ স্টাইল   

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস বা অর্শ্বরোগ কেন হয়?

পাইলস মূলত পায়ু অঞ্চলের শিরাগুলোতে চাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়। পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোনো ভাল্ভ না থাকায় অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেনই এই রোগের প্রধান কারণ।

পাইলস হওয়ার প্রধান কারণসমূহ:

  • দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য: পাইলসের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

  • মলত্যাগের অভ্যাস: টয়লেটে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা মলত্যাগের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা।

  • খাদ্যাভ্যাস: আঁশযুক্ত (ফাইবার) খাবার কম খাওয়া।

  • শারীরিক শ্রম: ভারি মালপত্র বহন করা বা কায়িক শ্রম কম করা।

  • অতিরিক্ত ওজন: শরীরের চর্বির আধিক্য।

  • অন্যান্য কারণ: গর্ভাবস্থা, লিভার সিরোসিস বা যকৃত রোগ, পারিবারিক ইতিহাস এবং পায়ুপথে যৌনক্রিয়া।

ফ্যাটি লিভার মাত্র একমাসে ন্যাচারালি নিরাময় করুন 

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা এবং লক্ষণসমূহ

পাইলস বা অর্শ্বরোগ হলে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা যায়, যা প্রাথমিক পর্যায়েই চিহ্নিত করা প্রয়োজন:

অর্শরোগের প্রকার

প্রধান লক্ষণ

বহিঃঅর্শরোগ (External Piles)

পায়ুপথ চুলকানো, বসলে ব্যথা, পায়ুর চারপাশে থোকা থোকা ফোলা অনুভব।

অন্তঃঅর্শরোগ (Internal Piles)

সাধারণত ব্যথা বা অস্বস্তি থাকে না, তবে মলত্যাগের সময় টকটকে লাল রক্ত দেখা যায় (টিস্যুতে লেগে থাকা)।

সাধারণ লক্ষণ

মলত্যাগে ব্যথা লাগা, পায়ুর চারপাশে এক বা একের অধিক ফোলা থাকা।

গুঁড়া কৃমির জম নারিকেল তেল। জেনে নিন কিভাবে গুঁড়া কৃমি দূর করবেন 

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা: নারিকেল তেলের ব্যবহার

পাইলসকে দ্রুত নিরাময় এবং ব্যথা কমাতে অর্গানিক কোল্ড প্রেস নারিকেল তেল খুবই উপকারী হতে পারে, কারণ এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহরোধী) এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ রয়েছে।

যা প্রয়োজন:

১. অর্গানিক কোল্ড প্রেস নারিকেল তেল (Organic Cold Pressed Coconut Oil)

২. হেলদি লাইফস্টাইল (Healthy Lifestyle)

প্রয়োগ পদ্ধতি (কিভাবে করবেন):

১. হাত ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।

২. আঙুলের মাথায় অরগানিক কোল্ড প্রেস নারিকেল তেল নিন।

৩. এবার আঙুলটি ধীরে ধীরে আপনার পায়ুপথে প্রবেশ করান (এক ইঞ্চির কম)।

৪. আঙুলটি পায়ুর ভিতরে ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে পায়ুপথটি তৈলাক্ত করুন।

৫. এভাবে প্রতিদিন তিন বার করুন।

৬. পাশাপাশি একটি হেলদি লাইফস্টাইল অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

বিশেষ সতর্কতা: যাদের পাইলস পেকে গিয়েছে, পুঁজ বের হয় বা রক্তপাত গুরুতর, তারা অবশ্যই দেরি না করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

দেখুন ডাঃ বারগের একটি চমৎকার ভিডিও 

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস রোগীর খাদ্যতালিকা: কী খাবেন, কী এড়িয়ে চলবেন?

যে কোনো অসুখকে দূরে রাখতে খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাইলস রোগীর প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন খাবার খাওয়া যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

১. পাইলস হলে যে খাবারগুলো খাবেন (আঁশযুক্ত খাবার):

এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, খনিজ এবং ভিটামিন থাকে, যা অন্ত্রে হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।

  • সবজি: ব্রোকলি, গাজর, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজ, শসা, টমেটো, ইত্যাদি সবুজ সবজি।

  • খোসা সহ ফল: আপেল, আঙুর, আলুবোখারা, কিশমিশ ইত্যাদি তন্তুজ ফল খোসাসহ খাওয়া খুব উপকারী।

  • খোসা ছাড়া ফল: কলা, পেঁপে।

  • প্রচুর পানি: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অপরিহার্য।

২. পাইলস হলে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন:

এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

  • কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টিকারী: প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত মাংস, ফাইবার বিহীন খাবার।

  • বিরক্তিকর খাবার: ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার।

  • অন্যান্য: মদ্যপান ও ধূমপান কঠোরভাবে পরিহার করা উচিত।

ত্বকে শীতের দিনের অসাধারন রেমিডি সরিষার তেল 

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

হাস্যরস: ডাক্তারদের নিয়ে একটি গল্প

কথায় বলে, “ডাক্তারের হাতে পড়ার চাইতে পায়ে পরাই ভালো।” গল্পটি শুনুন, বুঝতে পারবেন কেন:

একদিন এক কাঠুরে বাগান থেকে ডালপালা কেটে মাথায় করে নিয়ে ফিরছিলেন। খড়ির বোঝার কারণে তিনি ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছিলেন না। পথে এক ডাক্তারের সাথে তার সজোরে ধাক্কা লেগে গেল। ডাক্তার সাহেব ব্যথা পেলেন। কাঠুরে ডাক্তারের পায়ে পড়ে ক্ষমা চাইলেন এবং কাতর গলায় বললেন, “আমার ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দিন।”

পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক রসিক লোক পুরো ঘটনাটি খেয়াল করে বললেন, “ঠিকই করেছেন ভাই, ডাক্তারের হাতে পড়ার চাইতে পায়ে পরাই ভালো!

আশা করি, এই কষ্টকর শারীরিক সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় জানতে পেরেছেন। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের উপকারের জন্য পোস্টটি শেয়ার করে দিন।

Reference: Dr. Eric Berg, Dr. Mujibul Haque, Dr. Jahangir Kabir, Dr. Mujibur Rahman, Dr. Mandell, Dr. Jason Faung, Dr. Sten Ekberg and many medical health journals.

প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *