দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করে এই ৫ ভাইরাস
” বিয়ে নির্ধারিত হয় বেহেশতে, দুনিয়াতে শুধুমাত্র বিয়ে উদযাপিত হয়।” কাশ্মীরিরা তাদের বিয়ের দাওয়াত কার্ডে আমাদের বিয়ের দাওয়াত কার্ডের মতই বর্ণনা লিখেন। কিন্ত কার্ডের একদম শেষের দিকে উপরোক্ত বাক্যটি তারা অতিরিক্ত লিখে থাকেন। ওই ছোট এক লাইনের বাক্যের মধ্যেই রয়েছে বিয়ের মাহাত্ম্য এবং গুরুত্ব। তৈরি সম্পর্কের মধ্যে সেরা এবং সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক হচ্ছে বিয়ে। যার মাধ্যমে আসে দাম্পত্য জীবন।
সময় বদলেছে, পরিবেশ এবং সামাজিক অবস্থায়ও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক এই জীবনে বেশিরভাগ সংসারেই স্বামী স্ত্রী দুজনেই ব্যস্ত। এরই মাঝে সম্পর্ক এগিয়ে চলে। কখনো সম্পর্ক গভীর হয়, কখনো হাল্কা হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক।
চোখ আটকে থাকে ফেসবুক, টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়ায়।সেখানে দম্পতিদের অনেক হাসিখুসি ছবি দেখা যায়। তারা কত সুখী !! অথচ আমাদের কি অবস্থা ? এমন হাহুতাশ অনেকের মাঝে দেখা যায়। বাস্তবতা হল যেই দম্পতিদের ছবি দেখে আপ্লূত হন, তাদের দাম্পত্য জীবন সমস্যায় ভরা।
হয়ত বা ডিভোর্সের পর্যায়ে দাড়িয়ে আছে। পরিচিত যারা, স্বামী স্ত্রীর সুখময় ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন, তাদের খবর নিন। সত্য আপনার সামনে উন্মোচিত হবে। ওই লোক দেখানো প্রচারের চেয়ে থেকে হয়ত আপনাদের দাম্পত্য জীবন অনেক সহজ।
জেনে নিন – স্ত্রীর মন জয় করার ৮ টি উপায়
দাম্পত্য জীবন শেরপুর জেলায় বিপর্যস্ত
ভয়ানক খবর ছেপেছে একটি অনলাইন মিডিয়া। ১৪/০৯/২০২৪ ইং তারিখে। শেরপুরে দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার। জেলায় গত একবছরে সংঘটিত ১০০ টি বিয়ের মধ্যে ৪৪ টি ডিভোর্স হয়ে গেছে। ডিভোর্স সম্পন্নের ক্ষত্রে নারীরা বেশি এগিয়ে।
তবে শেরপুরে ডিভোর্সের মধ্যে শিক্ষিত লোকের সংখ্যাই বেশি। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রবণতা কিছুটা কম। পরিবারের অমতে বিয়ে করা বা প্রেম করে বিয়ে করা, এরকম বিয়ে ডিভোর্সে গড়াচ্ছে বেশি। যে সব প্রেমের বিয়ে পরিবারের সদস্যদের সম্মতিক্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো ভাঙার হার খুব কম।
অনেকের বিয়ের পরে অনেক দিন ধরে বাচ্চা হচ্ছে না। এমন বিয়ে গুলোও ভেঙে যাচ্ছে। জেলার বিভিন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়নে দায়িত্বরত কাজী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে উঠে আসে এই চিত্র।
সবচেয়ে বেশি ডিভোর্স হয়েছে শ্রীবরদি উপজেলায়। আনুপাতিক হারে যা ৫২.২৫ শতাংশ । সবচেয়ে কম বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে নালিতাবাড়ি উপজেলায় যা ৩৮.৬০ শতাংশ। বিয়ে হয় খুব ধুমধাম করে। কিন্ত ডিভোর্স গোপনেই হয়ে যায়। অনেকেই অতি গোপনীয়তা অবলম্বন করেন। তাই সব ডিভোর্সের তথ্য রেজিস্ট্রি হয় না। বিয়ে ভাঙার সংখ্যা প্রকৃত অনেক বেশি হতে পারে বলে কারও কারও ধারনা। শুধু শেরপুর জেলা নয়, সারা দেশেই অবস্থা ভালো নয়।
ডিভোর্স ব্রান্ডের পারফিউম
দুবাইয়ের রাজকুমারী শেখ মাহরা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। গত ১৮/০৭/২০২৪ তারিখে এক ইন্সটাগ্রাম পোস্টে জানান। তার দাম্পত্য জীবন ইতি হয়েছে। তবে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদে তিনি থেমে নেই। বাজারে আনছেন নতুন পারফিউম। শুধু তাই নয়, পারফিউমের নামেও রয়েছে ভিন্নতা। এটির নামকরণ করা হয়েছে “ডিভোর্স।”

দাম্পত্য জীবন বাজে প্রভাব জাপানে
দাম্পত্য জীবন উপকারিতা কি

১. তুলনা ভাইরাস
‘তুলনা’ দাম্পত্য জীবনের অন্যতম বড় শত্রু। মানুষ একে অন্যের থেকে আলাদা বৈশিষ্টের। আর সবার আগে জীবন সাথীর স্বাতন্ত্র্যকে স্বীকার করে নিতে হবে। সবাই সব কিছু পারবে, এটা ভাবাটাই ভুল। ধরুন আপনি বউকে বললেন মিলা ভাবী কত সুন্দর রোস্ট রান্না করে, অথচ তুমি শুধু মুরগির ঝোল নিয়ে আছো। এমন কথা বলা অন্যায়।
আবার বউ যদি বলে, তোমার পোশাক পরিচ্ছদ আন স্মার্ট। আমাদের বস কে দেখেছ, সব পোশাক কি সুন্দর ম্যাচ করে পরেন। এমন কথায় স্বামী অপমানিত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিয়ে বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যারেজ ডটকম। এর সম্পর্ক–বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে অন্যের সঙ্গে তুলনা করাকে মানসিক নির্যাতন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অন্যের সঙ্গে তুলনা আপনার সম্পর্ককে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেয়। দিন শেষে সম্পর্কটা হয়ে ওঠে বিষাক্ত। তাই ভুলেও নিজের স্বামী বা স্ত্রী কে অন্য কারও সাথে তুলনা করবেন না।
ভিডিও দেখুন – ইসলাম কি বলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে। বলছেন মিজানুর রহমান আজহারী।
২. ঝগড়ায় জেতা ভাইরাস
মনের মত স্বামী পাবেন না। মনের মত স্ত্রীও পাবেন না। কারন মানুষ পারফেক্ট নয়। সবারই মুদ্রা দোষ, ভুল ত্রুটি আছে। কিছু ক্ষেত্রে আপনি বেশি ছাড় দেবেন। কিছু ক্ষেত্রে আরেকজন, এভাবেই এগিয়ে যায় সম্পর্ক। ঝগড়ার ক্ষেত্রেও তা–ই। কেউ একজন দুটো কথা বেশি বলে। আবার কেউ বা বেশি উত্তেজিত হয়ে যায়। আপনি-ই না হয় সে ক্ষেত্রে ছাড় দিন। প্রতিবার ঝগড়ায় জিততে গিয়ে দাম্পত্য সম্পর্ককেই হারিয়ে ফেললেন, তা যেন না হয়। দাম্পত্য সম্পর্ক তৈরিতে ” ব্লেইম গেম ” কে বিদায় জানান। কে দোষী, কার কত বড় সমস্যা, সেদিক থেকে মনোযোগ সরিয়ে দুজনেই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হোন।
৩. তৃতীয় পক্ষ ভাইরাস
দাম্পত্য সম্পর্ককে তৃতীয় পক্ষের প্রভাবমুক্ত রাখতেই হবে। নিজেদের দাম্পত্য সম্পর্কের সমাধান অন্য কোথাও খুঁজতে যাওয়া চরম বোকামি। জীবন সাথীকে সম্মান করুন, দাম্পত্যের সংকট পেরিয়ে তাঁকে মন থেকে ক্ষমা করুন। প্রতিনিয়ত সম্পর্কে এমন অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির তৈরি হয়। যেখানে কখনো আপনার দায় বেশি থাকে, কখনো অপর পক্ষের। যেমন ধরুন একটু ঝগড়া হল। ঘটনা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বাবা মা বা ভাই বোনকে জানিয়ে দিলেন। সবচেয়ে ক্ষতিকর এক্স বা পুরনো বন্ধু বা বান্ধবীদের সাথে শেয়ার করা।
সারা জীবনের দাম্পত্য সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তিক্ততা ভুলে একজন আরেকজনকে ক্ষমা করুন। দাম্পত্য সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষকে যত গুরুত্ব দেবেন, আপনাদের ভেতরকার জটিলতা ততই ঘনীভূত হবে। দাম্পত্য সম্পর্কের একেকটা নতুন মোড় থেকে ইতিবাচক ভাবে শুরু করুন। তাতে একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়াও বাড়ে, আবার সম্পর্কটাও মজবুত হয়। কখনো সাথী কে নিয়ে অন্যের কাছে ‘বিচার’ দিয়ে তাঁকে ছোট করবেন না। তাতে আদতে কিন্তু আপনিই ছোট হবেন। নিজেদের ভেতরকার জটিলতা কেবলই বাড়বে।
জেনে নিন – একমাসেই কিভাবে ন্যাচারালি ভুঁড়ি কমিয়ে ফেলবেন।
৪. নীরবতা ভাইরাস
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। ছোট ছোট বিষয় গুলো নিয়ে ভাবুন। মনে জিদ চেপে রেখে একজন আরেকজনের কথা মানবেন। এতে সমস্যা তৈরি হবে। মনের মধ্যে রাগ জমা হবে। একসময় টা বিস্ফোরিত হবে। অনেক কথা জমতে জমতে সেগুলো এমন দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি করে যে সেখান থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক সম্পর্কে ফেরা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অভিমানের বরফ মনে জমতে দিবেন না। খোলা মন নিয়ে আলাপ আলোচনা করুন। রেড লাইন টাচ করার আগেই আলাপ আলোচনায় সমস্যা মুছে ফেলুন।
যখনই দুজন কাছাকাছি হবেন, ফোনটা দূরে রাখুন। বাসায় অথবা কোথাও বেড়াতে গেলে। স্ত্রী আপনার পাশে বসে আছেন, আর আপনি ফোন নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এতে স্ত্রীকে অবজ্ঞা করা হয়। সব মানুষের মনেই অবজ্ঞা দারুন কষ্ট দেয়। এমন আচরন মানে দাম্পত্য জীবনে আপনি অন্যায় করছেন। এই অন্যায় কে প্রশ্রয় দিলে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে একসময় দাম্পত্য জীবনের স্বাভাবিক ছন্দটাই নষ্ট হয়ে যাবে। সেই জীবন্মৃত দাম্পত্য সম্পর্কে অবশিষ্ট থাকবে কেবল একসঙ্গে বেঁচে থাকার অভ্যাস। ফোনের বদলে ল্যাপটপ, ট্যাব, গেম খেলা বা টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
Pingback: ধন সম্পদ বৃদ্ধি আল্লহর রাসুল ( সঃ ) কি বলেন ? ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা কেন আত্মহত্যা করেন ? Why do 15 to 29 year old's comm
ধন্যবাদ
Pingback: গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্ব সেরা দশ সম্পর্কে জেনে নিন। Know about top 10 intelligence agencies in the world - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: বাড়ছে ডিভোর্স - মন মস্তিষ্কে আরিয়ান আর শাহরুখ খান। Divorce is 3 important issues - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: মন্দিরে চুরি চায়নাতে। দেশীয় মন্দিরে চুরি এবং ১ টি মজার গল্প। The theft in the native temple and 1 is an interesting story - OVIZAT
ধন্যবাদ
Pingback: স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন, ঝুলিয়ে রাখলেন, গলা, হাত, পা কেটে দিলেন, ওয়্যার ড্রোবে রেখে কাজে গেলেন ৩ টি
ধন্যবাদ
Pingback: ইংল্যান্ডের রাজ পরিবার। রানী আয়ন বলিন। প্রিন্সেস ডায়না। রাজ পরিবার ৫ টি অদ্ভুত নিয়ম। 5 strange rules of the ro
ধন্যবাদ
Pingback: টেস্টোস্টেরন কী? পুরুষের স্বাস্থ্য ও শক্তির গোপন রহস্য। বউকে অবাক করে দিন। How to Increase Testosterone Naturally Without Supplemen
ধন্যবাদ
Pingback: অনলি ফর ম্যান ১ টি মাস্টার পিছ, সংসারে পুরুষের দায়, বুক রিভিউ Only for Men 1 Master Pich, Men's Responsibilities in the World, Book Review - OVIZAT