গল্প বলা প্রতিযোগিতা
আড্ডায় অমিত যখন হাসির গল্প বলা শুরু করে, তখন বন্ধুরা কেউ বাইরে তাকায়, কেউ ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়। অনেক হাসির গল্প বললেও ওর দিকে উদ্ভ্রান্তের মত তাকায়। অমিত চেষ্টা করছে গল্প গুছিয়ে বলতে। কিন্ত হচ্ছে না।
গল্প বলা মোটিভেশনাল স্পিকাররা
খুব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলেন। তাদের কথা শুনতে মানুষ টাকা খরচ করে টিকেট কাটে ।
এমনই এক বক্তার কথা শুনতে গিয়েছিলেন অমিত, আসুন তার মুখেই শুনি পুরো ঘটনার বিবরণ।
অতিথি বক্তা ধারাবাহিক গল্প বলা শুরু করলেন। এক পর্যায়ে বললেন “এত বছর পরে, লুকানোর আর কিছুই নেই। আমি জীবনের সবচেয়ে মধুর দিনগুলো এমন এক নারীর সাথে কাটিয়েছি, যে ‘আমার স্ত্রী’ নয়!”
বলেই বক্তা চুপ !!
উপস্থিত দর্শকরাও হতভম্ব !!
দীর্ঘ নীরবতা ভঙ্গ করে বক্তা বলে উঠলেন : সেই নারী ছিলেন আমার ‘মা’ ।
এই অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা শুনে সারা হল হাততালিতে ফেটে পড়ল । অমিতের চোখ দিয়েও জল বেরিয়ে এল । অনুপ্রাণিত হল অমিত।
গল্প বলার কৌশল
বাড়ি ফিরে, বোতল গ্লাস নিয়ে বসল অমিত । চার পেগ খাবার পর, কথাগুলো মনে পড়ল অমিতের । ভাবল, বউকে চমকে দেবার এর থেকে ভালো সুযোগ আর হবে না ! বউ জানুক আমিও গল্প বলা শিখেছি ।
রান্নাঘরে গেল। টলায়মান দুটি পা।
অমিতকে ঢুকতে দেখে গলদঘর্ম বউ একবার তাকালো ।
কোনোরকম ভণিতা না করে অমিত বলল : এত বছর পরে, লুকানোর আর কিছুই নেই। আমি জীবনের সবচেয়ে মধুর দিনগুলো এমন এক নারীর সাথে কাটিয়েছি, যে “আমার স্ত্রী” নয় !
পরের লাইনটা আর মনে পড়ল না। তো … মনেই পড়ল না । নেশা চড়ে গেছিল ।
বউ স্থির দৃষ্টিতে অমিতের দিকে তাকিয়ে ।
ঘাবড়ে গিয়ে বিড়বিড় করে বলল অমিত : ‘আমার ঠিক মনে পড়ছে না নারীটা, কে ছিলো’ !
পরের দিন হাসপাতালের বেডে হুঁশ ফিরেছিল অমিতের । সারা গায়ে ব্যান্ডেজ । বেলুন দিয়ে মারের চোটে হাত, পা, চোয়াল ভেঙে গেছিলো । গরম ডাল পড়ে মাথার চুল উঠে গেছিলো । প্রাণে বেঁচে গেছি … এই অনেক। ভাবল অমিত
সেলিম হোসেন – তাং ০৫/০৫/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।