ইংল্যান্ডের রাজ পরিবার। রানী আয়ন বলিন। প্রিন্সেস ডায়না। রাজ পরিবার ৫ টি অদ্ভুত নিয়ম। 5 strange rules of the royal family

রাজ পরিবার

রাজ পরিবার কতটা জনপ্রিয় 

বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেকের আগে রাজ-পরিবার সম্পর্কে জনগণের মনোভাব জানতে একটি জনমত সমীক্ষা পরিচালিত হয়। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষ রাজতন্ত্র অব্যাহত রাখার পক্ষে। তাদের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ। আর ২৬ শতাংশ চায় নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করা হোক। রাজ পরিবারের প্রতি ব্রিটেনের বিভিন্ন বয়েসের লোকজনের মনোভাব একেক রকমের। তাদের প্রতি বয়স্ক লোকজনের সমর্থন বেশি। তরুণ প্রজন্মের কাছে রাজপরিবারের আবেদন তুলনামূলকভাবে কম।

জরিপে অংশগ্রহণকারী যাদের বয়স ৬৫-এর উপরে তাদের ৭৮ শতাংশ রাজা-রানির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৪, রাজপরিবারের প্রতি তাদের সমর্থন সবচেয়ে কম, মাত্র ৩২ শতাংশ। কিন্তু এই গ্রুপের ৩৮ শতাংশ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপ্রধান নির্ধারণ করার পক্ষে। বাতি ৩০ শতাংশ বলেছে এবিষয়ে তারা কিছু জানে না। অল্পবয়সীরা রাজপরিবারের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তাদের সংখ্যা ৭৮ শতাংশ।

কেন বাড়ছে ডিভোর্স, রেহাই মিলবে কিভাবে ? পড়ুন বিস্তারিত। 

রাজ পরিবার

বর্তমান রাজপরিবারের সদস্যরা কোথায় থাকেন 

রাজা তৃতীয় চার্লস এবং কুইন কনসর্ট ক্যামিলা বাকিংহাম প্রাসাদে বাস করেন। এর আগে তারা লন্ডনের ক্ল্যারেন্স হাউজ এবং গ্লস্টারশায়ারের হাইগ্রোভে সময় ভাগাভাগি করে থাকতেন। রাজ-পরিবারের অন্যান্য বাসভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে উইন্ডসর ক্যাসল, নরফোকের স্যানড্রিংহাম, এডিনবরায় প্যালেস অব হলিরুডহাউজ এবং অ্যাবার্ডিনশায়ারের ব্যালমোরাল ক্যাসল। প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস ২০২২ সালের অগাস্টে পশ্চিম লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেস ছেড়ে উইন্ডসর এস্টেটের অ্যাডেলেইড কটেজে চলে যান।

রাজ পরিবার ৫ টি অদ্ভুত নিয়ম

ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারে কিছু বাধাধরা নিয়ম আছে। যে নিয়মগুলো আপানাকে চমকিত করবে।

প্রেমের বিয়ে, কিন্ত সংসার কেন ভেঙে যায়। 

রাজ পরিবার 

১. এক বিমানে ভ্রমন করতে পারবেন না সিংহাসনের দুজন উত্তরাধিকারী 

রাজ পরিবারের সদস্যরা প্রচুর ছুটি কাটাতে পারেন। আর ছুটি পেলেই তারা পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ঘুরতে চলে যান। কিন্তু ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রোটোকল বলছে, সিংহাসনের বর্তমান বা ভবিষ্যৎ দুইজন উত্তরাধিকারী একই বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন না। কোনও কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে যাতে সিংহাসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি না হয়, তাই এই ব্যবস্থা। 

২.  সন্ধ্যা ৬-টা অবধি  টুপি পরে থাকতে হবে

রাজপরিবারের মহিলা সদস্যদের ফর্মাল অনুষ্ঠানে টুপি পরতে হয়। রোদ বা গরমে টুপি পরতে পারেন বিষয় টা স্বাভাবিক। কিন্তু রাজপরিবারের প্রোটোকল বলছে, এর পিছনেও নিয়ম আছে। যে কোনও সরকারি বা আনুষ্ঠানিক জমায়েতে রাজপরিবারের মহিলা সদস্যদের সন্ধ্যে ৬ টা অবধি টুপি পরতেই হবে। 
সন্ধ্যে ৬ টা পেরিয়ে গেলে কী পরতে হবে ? সেই নিয়েও নিয়ম আছে। তখন মাথায় পরতে হবে ‘টায়রা’। তবে, এটা শুধুমাত্র বিবাহিতদের জন্যই। 

‘জো বাইডেন’ জনসমক্ষে কি কাজ টা করলেন। 

রাজ পরিবার

৩.  বিয়ের প্রস্তাব দিতেও আসে আইনি সম্মতি
বরাবরই তাদের পরিবারের সদস্যদের বিয়ে নিয়ে টানাপড়েন দেখা যায়। সেটা হতে পারে কূটনৈতিক বা অন্য কারনে। বাদশা আকবর থেকে ফরাসি সম্রাট লুই—বিয়ের মাধ্যমে কূটনীতির নিদর্শন আছে। বিয়ে করার আগে রাজপরিবারে রাজার অনুমতি নেওয়াটাও খুবই সাধারণ ব্যাপার।

 

ব্রিটিশ রাজপরিবার বলে কথা ! ১৭৭২ সালের ‘রয়্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট’ অনুসারে, রাজা বা রানির সম্মতি ব্যতীত রাজপরিবারের কেউই বিয়ে করতে পারবেন না। ২০১৩ সালে আইনটিকে বাতিল করে নতুন আইন আনা হয়েছে। কিন্তু তাতেও গল্প একই থাকছে। অর্থাৎ, চার্লস সম্মতি না দিলে পরিবারের অবিবাহিতরা কেউই বিয়ে-থা করতে পারবেন না। এই নিয়মের বাইরে  গেলে কি হয় সেতো সবারই জানা। প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগানের ঘটনা তরতাজা আমাদের সামনে। 

নাছোড় বান্দা ক্রেতা, রসিক দোকানদার। 

রাজ পরিবার

৪.  অটোগ্রাফ দেওয়া যাবে না

অটোগ্রাফ আর সেলফি এখন সেলিব্রিটিদের আবশ্যক বিষয়। ব্রিটেনের রাজপরিবারের সদস্য মানেই সেলিব্রিটি । বিশ্বের তাবৎ সেলেব্রিটির সাথে এদের তুলনা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু রাজপরিবারের কড়া নিয়ম – অটোগ্রাফ দেওয়া যাবে না! পাছে যদি কেউ জাল করে ফেলে? শোনা যায়, চার্লস নাকি একবার নাছোড়বান্দা ভক্তের আবদারে সাড়া দিতে না পেরে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন, “কী করব বলো, ওরা যে এটা আমায় করতে দেয় না!” 

তবে এই নিয়ে একটা ব্যতিক্রম আছে—২০১০ সালের কর্নওয়াল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক পরিবারের আবেদনে সাড়া দিয়ে চার্লস জীবনে একবারই একটা অটোগ্রাফ দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, ‘চার্লস-২০১০’।

পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন ? নারিকেল তেলেই সমাধান। 

রাজ পরিবার 

৫.  ডিনারের আগে আর পরে ওজন মাপা

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সবচেয়ে অদ্ভুত নিয়মগুলোর আরেকটি হলো প্রতি বছর বড়দিনের নৈশভোজে বসার আগে আর পরে রাজপরিবারের সদস্যদের ওজন মাপা হয়। যদি কেউ ভালমত ওজন বাড়াতে পারেন, সেটাই সুখবর। অর্থাৎ, তিনি বেশ জমিয়েই তৃপ্তি করে খেয়েছেন!

রাজ পরিবার পুরনো দিন 

প্রিন্সেস ডায়না ছিলেন বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের স্ত্রী। তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। প্রিন্সেস ডায়নার প্রতি নির্মম আচরন করা হয়েছিল। এই সমালচিত কাজটি করেছিল ইংল্যান্ডের রাজ পরিবার। সবাই তেমন টাই বলেন। ডায়নার ঘটনাটা আমাদের অনেকের মনেই দারুনভাবে দাগ কেটেছিল। এমন অন্যায় যুগে যুগে রাজা বা প্রিন্স রা করেছিলেন। নিজেদের ইচ্ছা বা বাসনাকে পূর্ণ করতে। 

সবচেয়ে নির্মম ভয়ানক অন্যায় আচরন করা হয়েছিল রানী আয়ন বলিনের সাথে। কি ছিল সেই অন্যায় ? কি ছিল সেই আচরন ? 

পৃথিবীর ভয়ঙ্কর সাপ কোন গুলো জানেন ? 

রাজ পরিবার 

রাজা অষ্টম হেনরি। তার শাসন আমলে ৭২ হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান। কারন তার তিনি পুত্র সন্তান চাচ্ছিলেন সিংহাসনের উত্তররাধিকারি হিসেবে।

স্ত্রী আয়ন বলিন তাকে কন্যা সন্তান উপহার দেন, যার নাম এলিজাবেথ। এরপর আয়ন বলিনের আরও দুটি সন্তান মিস্কারেজ হয়। দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রী সবচেয়ে বড় বাধা। কি করা যায় !

রাজা অর্থমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করলেন, তার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। অর্থমন্ত্রী বললেন দ্বিতীয় বিয়ে আপনার জন্য ঠিক হবে না। রাজা পোপের পরামর্শ নিলেন। পোপ বললেন ” এটা আপনার জন্য একদম অনুচিত কাজ ” ।

রাজা অষ্টম হেনরি চিন্তায় পরে গেলেন। তিনি কৌশল নিলেন, ষড়যন্ত্র করলেন রানীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ আনলেন, রানী পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত। সাজানো নাটক, ষড়যন্ত্র। প্রাসাদ থেকে রানীর স্থান হল অন্ধকার কারাগারে। বিচার শুরু হল। ক্যাঙ্গারু কোর্ট রায় দিল । পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত থাকার কারনে রানীর মৃত্যুদণ্ড। কুঠারাঘাতে শিরচ্ছেদে মৃত্যু হবে রানীর। 

জেনে নিন – ইংল্যান্ড রাজ পরিবারের বিস্তারিত।  

রাজ পরিবার

রাজ পরিবার ১৫৩৬ সাল

রানীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় ঘনিয়ে এল। মৃত্যুমঞ্চ প্রস্তত।  রানীকে তাঁর শেষ কথা বলার অনুমতি দেয়া হল। তিনি বলতে শুরু করলেন। 

প্রিয় ক্রিশ্চিয়ান ভাই ও বোনেরা

আমি এখানে মরতে এসেছি, আইন এবং বিচার অনুসারে আমাকে মরতেই হবে। আমি কারও বিরুদ্ধে বলব না। কোন অভিযোগ নেই। আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন রাজাকে দীর্ঘজীবী করেন। তিনি যেন দীর্ঘকাল রাজত্ব করতে পারেন। তারমত ভদ্র, দয়ালু রাজা অতীতে কেউ ছিলেন না। আমার কাছে তিনি সবসময়ই ভালো, ভদ্র এবং আমার রাজা।

আমি সর্বান্তকরণে চাই আপনারা আমার জন্য প্রার্থনা করুন। ঈশ্বর আমার প্রতি দয়া করুন। আমার আত্মা ঈশ্বর কে সমর্পণ করেছি। আকাশের দিকে তাকালেন। ওহ ঈশ্বর আমার প্রতি করুনা করুন , ওহ ঈশ্বর আমার প্রতি করুনা করুন।

পড়ুন – ইঁদুরেরা মদ খায়। এরপর তারা কেমন আচরন করে ? 

রাজ পরিবার

রাজ পরিবার 

ঐতিহাসিক গন বলেন, মৃত্যুর পূর্বে রানী, রাজা সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলেছিলেন। কারন অষ্টম হেনরি যেন তার কন্যা এলিজাবেথের প্রতি ভালো আচরন করেন, সদয় হন। পরবর্তীতে আয়ন বলিনের কন্যা এলিজাবেথ হন ইংল্যান্ডের পরম প্রতাপশালী রানী প্রথম এলিজাবেথ। মায়ের ভালোবাসা সন্তানকে ভালো রাখে, জিতিয়ে দেয়। 

সেলিম হোসেন – ০২/০৬/২০২৩ ইং 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *