অপহরণ ৩ টি ঘটনা একটি একেবারেই নতুন। Abduction 3 incidents, one strange and brand new.

অপহরণ ৩ টি ঘটনা

অপহরণ ৩ টি ঘটনা: বিচিত্র উদ্দেশ্য 

কোনো ব্যক্তিকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া বা জোর করে আটক রাখাকে অপহরণ বলা হয়। অপহরণের প্রধান উদ্দেশ্য সাধারণত ভিকটিমকে কোনো প্রকার অনিচ্ছাকৃত দাসত্বের অধীন করা, তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ করা অথবা নিরাপদ মুক্তির জন্য মুক্তিপণ আদায় করা।

চাঁদাবাজরা অর্থনৈতিক লাভের জন্য, বিপ্লবীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এবং সন্ত্রাসীরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য অপহরণ করে থাকে। পৃথিবীর সব দেশেই এটিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

কিন্তু অনেক সময় অপহরণের উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি এমন বিচিত্র হয় যে তা পুলিশ ও সাধারণ মানুষকে অবাক করে দেয়। নিচে তেমনই তিনটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটের অপহরণের ঘটনা তুলে ধরা হলো।

এই নিয়ম গুলো অনুসরণ করুন সন্তানেরা বিপথে যাবে না। 

অপহরণ

১. নাবালিকা অপহরণের অভিযোগ: অপহরণ ৩ টি ঘটনা 

ঘটনা: গাজীপুরের পূবাইলে ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে ২৬ বছর বয়সী রিফাত নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

প্রেক্ষাপট: মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্ত রিফাত ওই ছাত্রীকে প্রায়ই স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করত। ঘটনার দিন গভীর রাতে মেয়েটি প্রকৃতির ডাকে বাইরে বের হলে রিফাত তাকে ধরে নিয়ে যায়।

বিচিত্রতা: এ ধরনের মামলায় প্রায়শই তদন্তের পরে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা বেরিয়ে আসার নজির দেখা যায়। তাই পূবাইল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রাসেদুর রহমান ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করতে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন। এই ধরনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, প্রেম বা অন্য কোনো জটিলতা ছিল কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ।

ন্যাচারাল উপায়ে লিভার কে সুস্থ করুন, সুস্থ থাকুন আজীবন। 

অপহরণ

২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছদ্মবেশ: রহস্যময় ব্যবসায়ী অপহরণ

ঘটনা: ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবত (কার সিলেকশনের স্বত্বাধিকারী) অফিস শেষ করে ফিরছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার কালসি মোড় ফ্লাইওভারের নিচে তাঁর গাড়ি পৌঁছালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক পরা কয়েকজন ব্যক্তি গাড়িটি থামানোর ইশারা দেন।

প্রেক্ষাপট: চালক গাড়ি থামালে ছদ্মবেশী ব্যক্তিরা আসলামকে নিশ্চিত করেন এবং সিভিল পোশাকের এক ব্যক্তি তাঁর হাতে থাকা দুটি মুঠোফোন নিয়ে নেন। এরপর আসলামকে একটি গাড়িতে তুলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

বিচিত্রতা: আসলামের ভায়রা তারেক হোসেন থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে পল্লবী থানার ওসি জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে কাউকে জোর করে গাড়িতে তুলতে দেখা যায়নি, যা ঘটনাটিকে আরও রহস্যময় করে তোলে। এই ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে অপহরণকারীরা কীভাবে সাধারণ মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে নিজেদের অপরাধমূলক কাজ হাসিল করার জন্য সরকারি পরিচয় ব্যবহার করে। (৩০ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রথম আলোতে প্রকাশিত।)

৩. মুক্তিপণের জন্য আত্ম-অপহরণ: দামি ফোনের আকাঙ্ক্ষা

ঘটনা: ভারতের জয়পুরের বাসিন্দা বিজন তার বন্ধুদের নিয়ে এক রেস্টুরেন্টে বসেছিল। সেখানে অন্যদের হাতে দামি ফোন ও ল্যাপটপ দেখে তাদের মধ্যে ঈর্ষা জন্মায়। নিজের বাবার কাছে দামি ডিভাইস চেয়ে না পেয়ে বিজন বন্ধুদের সাথে মিলে এক ভয়ংকর পরিকল্পনা করে—নিজের অপহরণের নাটক সাজানো।

প্রেক্ষাপট: ইউটিউব থেকে অপহরণের কৌশল শিখে তারা এই দুষ্কর্ম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যায় বিজন কাজ আছে বলে বাসা থেকে বের হয়। রাত ১০টার দিকে তার বাবা শঙ্কর লালের কাছে ফোন আসে। অপহরণকারীরা ৪০ লাখ রুপি মুক্তিপণ দাবি করে এবং হুমকি দেয়, পরদিন বেলা ১১টার মধ্যে মুক্তিপণ না পেলে তারা বিজনের একটি আঙুল কেটে ফেলবে।

বিচিত্রতা: বাবা সঙ্গে সঙ্গেই মোহনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ কারিগরি নজরদারি ও সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে দ্রুত তদন্ত শুরু করে। অবশেষে, পুলিশ বিজনকে উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ সত্য। বিজনেই এই অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল! দামি মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ কেনার জন্য সে নিজেই নিজেকে অপহরণের নাটক সাজিয়েছিল।

এই নাটকের পরিকল্পনাকারী বাকি পাঁচ বন্ধুকেও পুলিশ আটক করে। যদিও কিশোর দুজন মুক্তি পায়, বাকি চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। ঘটনাটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়, যা দেখায় বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে বস্তুবাদী আকাঙ্ক্ষা কীভাবে অপরাধের জন্ম দিতে পারে। (০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত।)

পরকীয়া কি সর্বনাশ ডেকে আনে ! 

অপহরণ

৪. দেড় ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার: প্রেমের প্রস্তাব ও অভিযোগ

ঘটনা: রাণীনগর উপজেলার বলিদাগাছী গ্রামের শিক্ষিকা আমিরা আফছানাকে অপহরণের অভিযোগে হাবিবুর শেখ নামে এক যুবককে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রেক্ষাপট: অভিযোগ অনুযায়ী, মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে হাবিবুর শেখ আমিরাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন এবং বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দেখাতেন। ২ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে হাবিবুর তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তার বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন।

দ্রুত পদক্ষেপ: রাণীনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মেহেদী মাসুদ জানান, মামলা হওয়ার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হাবিবুর শেখকে গ্রেফতার করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফতার হওয়ার এই ঘটনাটি পুলিশের তৎপরতাকে তুলে ধরে।

এই ঘটনাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে অপহরণের উদ্দেশ্য কেবল অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক নাও হতে পারে, এর পেছনে ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা, প্রযুক্তিগত প্রতারণা কিংবা আবেগের জটিলতাও থাকতে পারে।

অপহরণ
যাদের দুষ্ট সন্তান আছে তাদের কে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – তাং ২৮/১০/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *