পেঁপে কেন খাবেন
পাকা পেঁপে এনজাইমে পূর্ণ। খেলে কি হয় জানেন ?
শরীরের শক্তি উৎপাদনের জন্য মানব দেহের কোষে বায়ো কেমিক্যাল প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন, এই প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন করে এনজাইম। এই এনজাইম শরীরে যত বেশি থাকবে, আমরা শক্তি বেশি পাব, আমরা তরুন থাকব। আমাদের শরীরের শক্তিই আমাদের কে তরুন রাখে।
কাঁচা পেঁপেতেও এনজাইম !
কাঁচা পেঁপেতেও থাকে পেপসিন নামক এনজাইম। এটি খাবার হজমে সাহায্য করে। পেটের মধ্যে প্রোটিনকে অর্থাৎ এমাইনো এসিডকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় রূপন্তরিত করে। আমরা অনেকেই মাংস সিদ্ধের সময় রান্নায় কাঁচা পেঁপে দেই। রান্নায় কাঁচা পাপায়া মাংসকে সিদ্ধ করে। এ ছাড়া পেপসিনের কাজ হলো দেহের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখা। শারীরিক গঠন মবজুত করা, রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখা, মাংসপেশি দৃঢ় করা।
অনেকেই বাড়িতে এই ফল গাছটি লাগাই। জায়গা কম নেয়। ফল ধরেও সহজে, বাড়তি কোন যত্ন নিতে হয় না। কিন্ত বিপত্তি দেখা দেয় কোন কোন গাছে ফল ধরে না। একারনে গাছ চিনতে হবে। তিন ধরনের গাছের পরিচয় দিলাম, চিনতে পারবেন সহজে।
পাকা পেঁপে চুল পড়া কমায় !
পাকা পেঁপে খেতে সুস্বাদু। এটি বেশ পুষ্টিকর এসব তথ্য তো জেনেছেন। আপনি হয়তোবা পাকা পাপায়া দিয়ে চুলের যত্ন নেয়া যায়। চুল পড়া বন্ধ এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের আশ্চর্য এক উপাদান হলো এই পাকা পাপায়া।
ঝাঁকড়া চুলের মাথাটা ধীরে ধীরে খালি হয়ে যাচ্ছে। নানান ধরনের টাক মাথার মিম চলে আসে সামাজিক মাধ্যমে ঢুকলে। দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কারন কার্যকর রেমিডি আপনি খুজে পাচ্ছেন না। চুল পড়ার পর যদি সেখানে নতুন চুল না গজায় তবে চুল পাতলা হতে শুরু করবে। বাজারে অনেককিছুই কিনতে পাবেন। যেগুলো চুল পড়া ঠেকাতে বা নতুন চুল গজাতে কার্যকরী বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সেসব যে আশানুরূপ নয় ফলাফল দেয় না। সেকথাও সবার জানা। এর বদলে ঘরোয়া উপায় অনেক বেশি ভালো। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে পাকা পেঁপে।
তিন টেবিল চামচ পাকা পেঁপের পেস্ট, এক টেবিল চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ নারিকেলের দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এরপর প্যাকটি চুলে ভালো করে লাগিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা সময় ধরে। এরপর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। এভাবে নিয়ম করে সপ্তাহে ২/৩ দিন লাগান। নতুন চুল গজাবে, খুশি হয়ে উঠবেন আপনি।
পুরুষ পেঁপে গাছ
পুরুষ পেঁপে গাছ চেনা যায় এর ফুল দেখে। এর ফুল টিউবের মতো লম্বা। পাতার ডাটার গোড়া থেকে ৫ থেকে ৬ ফুট লম্বা চিকন ডাটা বের হয়। ডাটার মাথায় থোকা বেঁধে ধরে ফুল। এক একটি ফুলে পুংকেশর বা পুরুষ যৌনাঙ্গ এবং গর্ভকেশর বা স্ত্রী যৌনাঙ্গ দুটোই থাকে। তবে এ গর্ভকেশর কোনো কাজের নয়, বন্ধ্যা। এ কারণে পুরুষ গাছে ফল ধরে না। তবে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পুরুষ গাছের লিঙ্গ বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে (বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য) এমনটি হতে পারে।
এরকম আবহাওয়ার সময় পুরুষ গাছ উভলিঙ্গ বা হিজড়া গাছে পরিণত হতে পারে। তখন এর গর্ভাকেশর সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখন ফুলে পরাগায়ন হয় এবং ফল উৎপন্ন হয়। কখনো কখনো একটি পাপায়া গাছ সাময়িক সময়ের জন্য শুধু পুরুষ ফুল দেয়। খুব দ্রুতই গাছটি স্ত্রী বা হিজড়া গাছে পরিণত হয়। আবার অনেক সময় পুরুষ গাছে আগা কেটে দিলেও সেটি স্ত্রী গাছে পরিণত হয়। তবে এ কৌশল সব সময় কাজে লাগে না।
স্ত্রী পেঁপে গাছ
স্ত্রী গাছে পাতার গোড়ার উপরে থোকায় থোকায় বা আলাদা ভাবে ফুল ফোটে। তবে এ থোকা পুরুষ গাছের ফুলের থোকার চেয়ে ছোট হয়। স্ত্রী গাছের ফুল পুরুষ গাছের ফুলের চেয়ে বড় হয়। তবে ফুলের ডাটাটি পুরুষ গাছের তুলনায় অনেক ছোট। স্ত্রী গাছের ফুলে পুংকেশর থাকে না। তবে সক্রিয় গর্ভকেশর থাকে। এ কারণে পরাগায়ন হলে ফল উৎপন্ন হয়। স্ত্রী গাছের পাপায়া হয় সবুজ বর্ণের এবং ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা, ভেতরের অংশ সাদা, পাকলে হলুদ বা গাঢ় কমলা রঙের, বীজ কালো। স্ত্রী পেঁপের ফুলে পরাগ যোগ না হলেও ফল উৎপন্ন হতে পারে তবে সে ফলে বীজ হয় না।
হিজড়া পেঁপে গাছ
উভলিঙ্গ পেঁপে গাছের ফুলে পুংকেশর ও গর্ভকেশর অর্থাৎ স্ত্রী ও পুরুষ উভয় যৌনাঙ্গ থাকে। আর দুটি যৌনাঙ্গই সক্রিয় থাকে। এ কারণে উভলিঙ্গ পেঁপে গাছে ফল হয়। এধরনের ফল ধরতে ফুলে পরাগ যোগেরও দরকার পড়ে না। হিজরা পেঁপে গাছ পুরুষ গাছের মতো লিঙ্গ পরিবর্তনও করতে পারে। গরমকালে বা গাছের আগা কেটে দিলে হিজড়া গাছ স্ত্রী গাছে পরিণত হতে পারে।
অনেক সময় না বুঝে হিজড়া গাছ কেটে ফেলা হয়। কাটার আগে ফল আসা পর্ন্ত অপেক্ষা করা ভালো। অবশ্য বাণিজ্যিক বাগানের জন্য হিজড়া গাছ লাভজনক নয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে এনজাইম কমতে থাকে
আমরা শুরু করেছিলাম এনজাইম নিয়ে। তো সেটা দিয়েই আমাদের আলোচনা শেষ করি। আমাদের শরীর দুই ভাবে এনজাইম পায়।
১. খাবারের মাধ্যমে
২. আমাদের গাঁট এনজাইম উৎপন্ন করে।
খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত এনজাইম গ্রহন করলে শরীরের ভিতরের এনজাইম খরচ না হয়ে জমা থাকে। পর্যাপ্ত পরিমান এনাজাইম এর উপস্থিতিতে আমরা সুস্থ থাকি।
যে কারনে আমাদের এনজাইম কমে যায়, ক্ষয় হয়, আমরা অসুস্থ হই, তারাতারি বৃদ্ধ হই।
১. মদ্য পান করা
২. ধূমপান করা
৩. ফাস্ট ফুড এবং প্রসেসিং ফুড গ্রহণ
৪. শারীরিক এবং মানসিক চাপ
নিয়মিত এনজাইম পূর্ণ খাবার খান, তারুন্য ধরে রাখুন।
আশাকরি এখন থেকে নিয়মিত খাবেন।
সেলিম হোসেন – তাং – ২৩/০১/২০২৩ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।