মদ খেয়ে মৃত্যু মাদারীপুরে
আকণ্ঠ মদপান হইচই। সময় গড়াতে থাকে রাত বাড়তে থাকে। সাগরিকা ( ২০ ) এবং পারুল ( ২০ ) দুজনেই বান্ধবী। মাদারীপুর শহর কলেজ রোডের পাশে সাগরিকার বাসা। একটানা বেশ কিছুদিন তীব্র গরমের পর শনিবার বিকেলে বৃষ্টি নামে। পরিবেশ শান্ত হয়। বাতাসে হিমেল পরশ। সাগরিকা আরও কয়েকজন বান্ধবী সহ বাসায় মদের আসর বসায়। সাথে যোগ দেন সাগরিকার মামা বাবু ( ৪০ ) এবং তার মা সাবিনা ইয়াসমিন ( ৪২ ), ডালিয়া সাবিনার বান্ধবী ( ৪১ ) । সবাই আকণ্ঠ মদ পান করে বেহুঁশ হয়ে যান।
ওই বাসার কেয়ারটেকার হেলাল সরদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে চিৎকার–চেঁচামেচি শুনে এগিয়ে যাই। পরে দেখি একজন মরে ফ্লোরে পড়ে আছেন, কয়েকজনের অবস্থায় ভালো না, মাতলামি করছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আরও একজন মারা যান। পরে পুলিশকে খবর দিই। এই বাড়িতে কীভাবে কী হলো কিছুই বুঝতে পারলাম না।’
সাগরিকাদের প্রতিবেশী সুমি আক্তার বলেন, ‘হেলালের চিৎকার শুনে সাগরিকাদের ঘরে যাই। সেখানে দেখি সবাই চিত–কাত হয়ে পড়ে আছেন। কেউ বিছানায়, কেউ ফ্লোরে। ঘরটাও ছিল অগোছালো।’
নিহত সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর কাছে রাতের ঘটনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ের বান্ধবী পারুল মদ আনে। ওই মদ সবাই কমবেশি খাই। অন্যরা নাচ–গান করেছে। আমি বসে ছিলাম। হঠাৎ সাগরিকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর কী থেকে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝলাম না।’
মাদারীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. এনায়েত হোসেন বলেন, যাঁরা এই বাসায় ভাড়া থাকতেন, তাঁদের জন্মস্থান এখান থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে। সেখান থেকে এখানে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকাটা রহস্যজনক। এ ঘটনার পেছনে অন্য কিছু থাকতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
সাগরিকা এবং পারুলের মৃত্যু মাদারীপুরে নিজ বাসাতেই হয়।
সময় বদলেছে, ঢাকা শহরের ছাদ রেস্টুরেন্টে দেখা যায় আলাদা ধূমপানের জায়গা আছে। সেখানে যুবক যুবতিরা ফাস্ট ফুড কোক পেপসি খান। আড্ডা চলে অবিরাম, যতক্ষণ আড্ডা চলে ততক্ষন ঠোঁটে লেগে থাকে সিগারেট। ফুটপাতের চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে ছেলেরা তো বটেই, মেয়েরাও দুধ চা, সিগারেট খায় । ২৫-৩০ বছর পুর্বে এমন দৃশ্য দেখা যেত না, মেয়েরা রেস্টুরেন্টে খেতেও আসত না।
মদ লিভার ধ্বংস করে। জীবনের সব সুখ কেড়ে নেয়।
মদ খেয়ে মৃত্যু মাদারীপুরে।
এই ঘটনা আমাদের জন্য কি ইঙ্গিত বহন করে। একটা বাজে সময় আমরা পার করছি। ধনী গরীব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত বেশিরভাগ মানুষই এই অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন। ওষুধের দোকান বেড়েছে, ক্লিনিক হাসপাতাল বেড়েছে। এখন শুধু বড়রাই নন, তরুন তরুনীরাও হাসপাতালে ছুটছেন চিকিৎসা নিতে।
জেনে নিন – জীবন ধ্বংসকারী স্ট্রেস থেকে মুক্তির সহজ উপায়।
মাদারীপুরে মৃত্যু, মাতালদের একটি গল্প শুনুন
মদের দোকানের তিন জন নিয়মিত খরিদ্দার। বড়দা, মেজদা, ছোড়দা। এক সন্ধ্যায় তিন জনে বসে মদপান করছিলেন। বড়দা একটু বেশি খাচ্ছিলেন। ডোজের মাত্রা বেশি হয়ে গেল বড়দার। কিছুক্ষন পর চেয়ার থেকে গড়িয়ে মেঝেতে পরে গেলেন। মেঝদা এবং ছোড়দার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই । বরং বড়দার এই বেহুঁশ হয়ে পরে যাওয়াকে দুজন তারিফ করতে লাগলেন। বললেন ” বড়দার একটা মাত্রা জ্ঞ্যান আছে। কখন থামতে হয় বড়দা সেটা জানে। এই সময় নতুন একজন মদারু ঢুকলেন পানশালায়। বসলেন মেঝদা এবং ছোড়দার সামনা সামনি চেয়ারে। বেয়ারা এসে বলল নতুন আগত কে ” কি দেব?”
নতুন মদারু মেঝেতে শুয়ে থাকা বড়দাকে খেয়াল করলেন। এরপর বেয়ারাকে বললেন ” ইনি কে? ” ইনি বড়দা – বেয়ারা বললেন।
আগত মদারু খুব ভালোভাবে বড়দাকে পর্যবেক্ষণ করলেন। এরপর বেয়ারার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে বললেন ” উনাকে যা দিয়েছিলে আমাকেই তাই দাও। ”
মদ খেয়ে মৃত্যু মাদারীপুরে
যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কি সুস্থ থাকতে চান, তিনি অবশ্যই বলবেন ” হ্যা চাই “। তাহলে আপনার লাইফ স্টাইলে মাদক, সিগারেট, ফাস্ট ফুড এসব বাজে খাবার কেন ? রাত ভর মাস্তি করেন আর দিনের বেলা কেন ঘুমান ? কারন এখানে দ্রুত ডোপামিন হরমোন রিলিজ হয়, সাময়িক আনন্দে বিভোর হওয়া যায়।
অথচ সুস্থ থাকা, ডোপামিন রিলিজ করা কঠিন নয়। শুধু মাত্র লাইফ স্টাইল বদলাতে হবে। সাস্থ্য খাবার গ্রহন করুন।ফাস্টিং করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। তারাতারি ঘুমাতে যান, তারাতারি ঘুম থেকে উঠুন। নিয়মিত নামাজ পড়ুন।
অমুক জায়গায় চুয়ানি খেয়ে মৃত্যু, তমুক জায়গায় বিষাক্ত মদ খেয়ে মৃত্যু। আমরা চাই মাদারীপুরে মৃত্যুর মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হোক। আমরা চাই সবাই সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক।
সেলিম হোসেন – ২৪/১০/২০২৩ – ছবি গুলো প্রতীকী।