মদ খেলে কি হয়
যার এই পানীয়টির প্রতি ভালোবাসা আছে, তিনি এমন কথা বলতেই পারেন। মানুষ পানীয়টি খায়, মাতাল হয়। ইঁদুর কখনো খায় ? মাতাল হয় ? ইঁদুর সাধারণত কাটি কুটি করে, ভালো জিনিস নষ্ট করে। আমরা বিষয় টা পুরোপুরি জানব।
মদ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
ইসলামে এই পানীয়টি খাওয়া হারাম। ইসলামে মদ বা নেশা জাতীয় বস্তু অর্থাৎ মাদক গ্রহণ কিংবা সেবন করা যেমন হারাম, তেমনি এর ব্যবসা, এ কাজে সাহায্য এবং এ কাজের জন্য বাড়িঘর ও দোকান ভাড়া দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আমাদের এই সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম দেশে এটা পানের বাধাহীন প্রচলন নেই। একারনে এদেশে মদ্যপায়ি মানুষের সংখ্যা কম। যেসব দেশে এটা পান বাধাহীন, সেখানে মাতালদের নিয়ে নানান ঘটনা ঘটে।
পড়ুন – বেকিং সোডার উপকারিতা কি ?
বিশ্বের সবচেয়ে দামি মদের নাম কি ?
মানুষ কেন প্রাচীন কড়া স্বাদের পানীয়টি খায় ? কটু স্বাদের পানীয়টি মানুষকে দেয় জীবনের একঘেয়েমি থেকে ক্ষনিকের পলায়ন। মুহূর্তের জন্য জীবনের সমস্যা ভুলে থাকা। ক্লান্ত, শ্রান্ত, অপমানিত জীবনে একটুখানি প্রসন্নতার ছায়া।
পড়ুন – একজন শিখ নারীর প্রেম, ইসলাম গ্রহন, বিয়ে এবং ডিভোর্স এর কাহিনী।
মদ খেলে কি হয়
যারা মন বিজ্ঞানে কাজ করেন, তারা মাঝে মাঝে বেশ বেখেয়ালি হয়ে যান। হয়ত বাজারে গেলেন, বউয়ের স্যানডেল পায়ে দিয়েই চলে গেলেন! এমন টা কারন তারা ভাবনায় ডুবে যান। মনস্তত্ত্ববিদরা ভাবেন, গভীরভাবে ভাবেন। তাদের চিন্তা চেতনা মানুষের অনেক কাজে লাগে।
এমন একজন মার্কিন মনস্তত্ত্ববিদ তিনি ইঁদুরের উপর গবেষণা চালালেন। ইঁদুর মদ খায় কি না। খেলে কি হয় তাদের আচার আচরনে, কাজে কর্মে।
ভদ্রলোকের নাম প্রফেসর গেলার্ড এলিসন। গবেষণা টি প্রকাশিত হয় নিউইয়র্ক টাইমসে।
একদল ইঁদুর নিলেন। ইঁদুর গুলোকে যথেষ্ট পরিমান কটু স্বাদের পানীয়টি সরবরাহ করা হল।
দেখা গেল অল্প সংখ্যক ইঁদুর রীতিমত পান করছে। মাতাল হয়ে যাচ্ছে। এলিসন সাহেব হিসাব করলেন এদের সংখ্যা হবে শতকরা দশ ভাগ।
জেনে নিন – ঔষধ ছাড়া, ন্যাচারালি ডায়াবেটিস দূর করার উপায়।
মদ খেলে কি হয় আরও জানুন
আরেক দল ইঁদুর পানীয়টির কাছেও ঘেঁষছে না। এদের সংখ্যা হবে পঁচিশ ভাগ।
বাকি ইঁদুর গুলো সময় সুযোগমত পান করে। সাধারণত রাতের খাবারের ঘণ্টা দুয়েক আগে পান করে। পরিমিত পরিমান পান করে। রাতের খাবারের পর এরা এটা ছোঁয় না। এদের মধ্যে কেউ কেউ ঘুমানোর পূর্বে সামান্য খেয়ে নেয়।
সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার মাতাল ইঁদুরদের নিয়ে। তাদের আচার আচরন মাতাল মানুষ দের মত। এই এলকোহলিক ইদুরেরা সকাল থেকেই পান শুরু করে।
সময় গড়াতে থাকে। এদের পানের পরিমান বাড়তে থাকে। এরা খুব আলসে। এদের ঘুম ভালো হয় না। অন্য ইদুরেরা এদের মোটেই সম্মান করে না। গ্রাহ্য করে না।
মদের বোতলের ছবি।
যে সব ইঁদুর মদ খায় না। অথবা পরিমিত পরিমান পান করে তাদের ইঁদুর সমাজে বেশ সম্ভ্রমের সাথে দেখা হয়। ভাষা ব্যাকরন গত ত্রুটি ক্ষমা করবেন। আমাদের সহজ অনুভবের জন্য খাওয়া এবং পান দুটো শব্দই ব্যবহার করেছি।
কোলকাতার স্বনামধন্য লেখক সুনীল গঙ্গপ্যাধ্যায়। তিনি তার এক উপন্যাসে লিখেছেন মদ খেলে তিন টি জিনিস হয়। ১. টাকা নষ্ট হয়। ২. শরীর নষ্ট হয়। ৩. সময় নষ্ট হয়। আর আপনি যদি একজন মুসলিম হন তাহলে এটা আপনার জন্য হারাম। এটি খেলে ক্ষনিকের আনন্দ পেতে পারেন। কিন্ত দিন শেষে এই তরল আপনার সার্বিক অশান্তির কারন।
পড়ুন – এলকোহল পানের ক্ষতি নিয়ে আরও লেখা।
তবে মাতালেরা কিন্ত নানান রসালো গল্পের জন্ম দিয়েছে। সন্তোষ বাবু কোলকাতার পুরনো মদ্যপ, ভালো জাতের মাতাল। থার্টি ফার্স্ট নাইটে প্রচুর মদ পান করলেন এবং প্রতিজ্ঞা করলেন, আগামীকাল কাল নববর্ষের দিন থেকে মদ পান ছেড়ে দিবেন। আর নয়, বহু খাওয়া হয়েছে নিজের মনেই বললেন।
সোজা বাড়ি গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলেন। ঘুম ভাঙল পরদিন দুপুরের পর। আগের রাতের প্রতিজ্ঞার কথা মনে পড়ল। খুশি হলেন মনে মনে। নববর্ষের দিনে দারুন একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সত্যি সত্যি আর কখনো মদ্যপান নয়।
বিকেলের দিকে রাস্তায় বেরোলেন তিনি। চিরচেনা পরিচিত কোলকাতার রাজপথ। নিজের মনের জোর পরীক্ষা করার জন্য বারের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন। নববর্ষের সন্ধ্যা পূর্ব বিকেল। বারের নানান রকম মানুষ উচ্ছল, আনন্দে মাতোয়ারা। মৃদু সঙ্গীতের সুর বার থেকে ভেসে আসছে কানে। সব কিছু অবহেলা করে, সুরার হাতছানি উপেক্ষা করে নিতান্ত মনের জোরে বারের সামনে দিয়ে হেঁটে পার হলেন সন্তোষ বাবু।
কিছু দূরে আরেকটি বার। সেখানেও অনুরুপ প্রলোভন, প্রচুর নরনারী মদপান করছে। কিন্ত তিনি বেপরোয়া, একে একে বহু মদের দোকান পার হয়ে গেলেন। তারপর আবার ফিরতি পথে, ওই একই বারের সামনে দিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে, শক্ত মনে চলে গেলেন। এই ভাবে বার দশেক পারাপার করে ভদ্রলোক নিজের মনকে বললেন, ওরে মন তোর তো খুব জোর। এই দোকান, এই মদ, এত মানুষজন পান করছে। এতেও তোর কোন দুর্বলতা নেই, লোভ নেই। শাবাশ মন শাবাশ !!
ততক্ষনে নববর্ষের মধুর সন্ধ্যা কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়েছে। রাজপথে খুশি জনতার ভিড়। সুর লহরি ভেসে আসছে পাশের বার থেকে। সেই সাথে হাসি, গান।
এবার সন্তোষ নিজের মনকে বললেন ” ওরে মন, ওরে আমার মন, তুই যখন এতই সাহসের পরিচয় দিলি, আয় আজ এই নববর্ষের খুশির দিনে তোকে একটু খুশি করি। এই স্বগতোক্তি করে, নিজের মনকে খুশি করার জন্য সামনের বারে ঢুকে পড়ল সন্তোষবাবু।
সেলিম হোসেন – ২৭.০৫.২০২৪ – ছবি গুলো প্রতীকী