হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল
ইন্টারকন্টিনেন্টাল এবং ফাস্টিং এর গল্প। ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর সাথে ফাস্টিং মিল কোথায়। জেনে অবাক হবেন। আরও জানবেন ফাস্টিং এর গুরুত্ব। তার আগে বলি, ইন্টারকন্টিনেন্টাল কবে চালু হয় জানেন ? ১৯৬৬ সালে ঢাকার পরিবাগে। সেসময় ইংরেজিতে ঢাকার বানান ছিল Dacca. ঢাকায় এটিই ছিল প্রথম ফাইভ স্টার হোটেল। ডিজাইন করেছিলেন আর্কিটেক্ট উইলিয়াম বি ট্যাবলার।
একটা আধুনিক ফাইভ স্টার হোটেল হতে পারে একটি ছোট আধুনিক শহর। এই ফাইভ স্টারে থাকতে পারে আধুনিক দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকরন। সুইমিং পুল, টেনিস কোর্ট, জিমনেশিয়াম, হেয়ার ড্রেসিং সেলুন, ম্যাসাজ পার্লার, ক্লিনিক, ব্যাংক, ওয়াইফাই, ফটোকপি মেশিন, বিজনেস রুম, ধূমপায়ীদের জন্য স্পেশাল স্মোকিং রুম, নাচ ও বড় পার্টির জন্য গ্র্যান্ড বলরুম, ছোট ছোট মিটিং রুম, বড় কনফারেন্স হল, একাধিক লাউঞ্জ ও রেস্টরুম। প্রতিদিন প্রয়োজনীয় আরও নানান কিছু।
ভিডিওতে দেখুন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে শেরাটন
এটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামেই চলে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। এরপর স্টারউড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়। ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকা শেরাটন হোটেল নামে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলে।
শেরাটনের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। তারপর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে এই প্রতিষ্ঠানটি। মন্ত্রণালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘রূপসী বাংলা হোটেল’ নামে এটি পরিচালনা শুরু করে। এরপর বেসরকারি কোম্পানির অধীনে যায়।
২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেলটির মালিক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ (এশিয়া প্যাসিফিক) প্রাইভেট লিমিটেডের (আইএইজি) সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধের পর ২০১৫ সালের মার্চে সংস্কারকাজ শুরু হয়।
রূপসী বাংলাতে পূর্বে কক্ষ ছিল ছোট-বড় মিলিয়ে ২৭২টি। সংস্কারের পর কক্ষের সংখ্যা কমে ২৩১ টিতে দাঁড়িয়েছে। আয়তনের দিক থেকে কক্ষের আকার দাঁড়িয়েছে ২৬ থেকে ৪০ বর্গমিটার। বিশ্বমানের অতিথিসেবা নিশ্চিত করতে পরিবর্তন করা হয়েছে সুইমিং পুল ও ডাইনিং হলের স্থান।
দ্রুত ন্যাচারাল উপায়ে শরীরের চর্বি ঝরিয়ে ফিট হয়ে উঠুন।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এবং মুক্তিযুদ্ধ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে জীবন বাজি রেখে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার ছবি ধারণ করেছিলেন এখানে অবস্থানরত বিবিসির বিখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি ও সাইমন ড্রিং। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) পাকিস্তান ব্যুরোর প্রধান আর্নল্ড জেইটলিন, ক্লেয়ার হলিংওর্থ, ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিবেদক ডেভিড গ্রিনওয়ে। এসব ছবির মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পেরেছিল বাংলাদেশ কী নৃশংসতার শিকার হয়েছে।
এর আগে এটির বলরুম ছিল একদিকে, উইন্টার গার্ডেন নামে সবচেয়ে বড় হলরুমের অবস্থান ছিল আরেক দিকে। এখন দুটি এক করে দেওয়া হয়েছে। এর মূল ফটকও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেতরের সুইমিং পুলটিও স্থানান্তর করে সাজানো হয়েছে নতুন করে। গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় নিয়ে বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। সংস্কারকাজে প্রায় ৬২০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
অপহরনের এই ঘটনা জানলে আপনি অবাক হবেন।
তো ফিরে যাই প্রথম দিকে
তখন পশ্চিমা সাহেব রা এসে উঠতেন এখানে। তাদের কে পরিবেশন করা হত নিউইয়র্ক কাট বিফ স্টেক। নিউইয়র্ক থেকে বিফের বড় বড় চাংক এনে হোটেলের কোল্ড স্টোরেজে রাখা হয়েছিল। বছর দুয়েক পরে মাংসের স্টক ফুরিয়ে যায়। হোটেল ভাল চলছিল না। সরকার নতুন করে মাংস আমদানির লাইসেন্স দিচ্ছিল না। বিফ স্টেক ছাড়া ফাইভ স্টার হোটেল চলে ?
ভিডিও দেখুন – হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা।
হোটেল কর্তৃপক্ষ মহাবিপদে
আমেরিকা, ব্রিটিশ, জার্মান যে সাহেবরাই আসুন না কেন, তারা অর্ডার দিবেন সারলয়ন স্টেক, রাম্প স্টেক, ফিলে স্টেক। পারচেজ ম্যানেজার মাংস সাপ্লায়ারদের ডাকলেন।
সাপ্লায়াররা দেশি গরুর মাংসের স্যাম্পল পাঠালেন। কিন্তু তাদের পাঠানো মাংসে বিফ স্টেক হচ্ছিল না। কারন দেশি গরু ঘাস খায়, মাংসে আঁশ বেশি। সাধারনত যে সব গরু ভুট্টা খায়, তাদের মাংসেই ভাল স্টেক তৈরি হয় । তখনকার সময়ে আমাদের দেশীয় কোন গরুই ভুট্টা খেত না, মহাবিপদ!!
অটোফেজি নিয়ে আরও জানতে পড়ুন এখানে ক্লিক করুন।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এবং ফাস্টিং এর গল্প
বিপদ দূর করতে এগিয়ে এল ফরিদপুরের এক মিশনারি প্রতিষ্ঠান। তারা সাস্থ্যবান গরু বাজার থেকে কিনে আনল। তাদের ফার্মে রাখল। কিন্ত গরু গুলোকে খাবার দেয়া হল না। এক,দুই বা তিন দিন এ অবস্থায় থাকার পর, ভুট্টা খেতে দেয়া হল।
প্রথম প্রথম গরু ভুট্টা খেতে চাইত না, কিন্ত আর কোন খাবার না পেয়ে ধীরে ধীরে ভুট্টা খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে গেল। এরপর ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল এদের মাংস থেকে ভাল মানের স্টেক তৈরি করতে পারল। বিপদ কেটে গেল। মিশনারি প্রতিষ্ঠান কি করল, গরু গুলোকে ফাস্টিং করাল। ফাস্টিং গরুর শরীরের মাংসের গঠনই বদলে দিল।
আমরা ফাস্টিং করলে কি হবে ? শরীরে অটোফেজি হবে। অটোফেজি সব ধরনের রোগের নিরাময় করে। এটা প্রমান করে বিজ্ঞানি ইউশোনারি অসুমি ২০১৬ সালে নোবেল প্রাইজ পান।
শরীরের কোথায় চুলকাচ্ছে আপনার ? কি হতে যাচ্ছে জেনে নিন।
সেলিম হোসেন – ২২/০৯/২০২৩ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী