স্পিরুলিনা উপকারিতা ১০ টি
নানা গুনের সুপার ফুড। একটি নীলাভ-সবুজ শৈবাল। এটি সমুদ্রের পানিতে জন্মানো একটি শৈবাল । নামটি নেয়া হয়েছে মূলত ল্যাটিন শব্দ Spira থেকে। যার অর্থ সর্পিলাকার বা পাকানো। কারণ স্পিরুলিনা দেখতে সর্পিলাকারের হয়ে থাকে। এটি সাধারণত সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে থাকে। এতে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকায় একে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়। সুপার ফুড বলার কয়েকটি কারণ আছে। কি সেই কারন ?
এতে মাছ ও গরুর মাংসের তুলনায় ৩ গুণ এবং ডিমের তুলনায় ৬ গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে। সয়াবিনের তুলনায় ২ গুণ বেশি মিনারেল রয়েছে। আটার চেয়ে ৪ গুণ বেশি ফাইবার বা খাদ্য আঁশ রয়েছে। এতে গাজরের তুলনায় ৫ গুণ ও পালং শাকের তুলনায় ৪০ গুণ বেশি ক্যারোটিন রয়েছে। দুধের তুলনায় ৮ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে।
এতে পালং শাকের তুলনায় ৬৫ গুণ বেশি এবং গরুর মাংসের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি আয়রন থাকে। এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি সবজি।
বয়স হয়েছে, তিন বেলা ঔষধ খেতে হবে। ডজন ডজন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল খেতে হবে। ধারনা সঠিক ??

জেনে নিন – কি বলছেন এই সুপার ফুড সম্পর্কে ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির।
স্পিরুলিনা উপকারিতা
১. স্পিরুলিনাতে প্রচুর ক্লোরোফিল রয়েছে। যা রক্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিমোগ্লোবিনে রূপান্তরিত হতে পারে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া স্পিরুলিনাতে ভিটামিন বি, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন ও অ্যামিনো এসিড রয়েছে। যা রক্ত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২. শিশু বিশেষজ্ঞরা বাচ্চাদের সবসময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, কিন্তু সবসময় তা সম্ভব হয়ে উঠে না আবার বাচ্চারা খেতেও চায় না। পুষ্টি সমস্যা পূরণে স্পিরুলিনা ভালো ভূমিকা রাখে। ইমিউন সিস্টেম বুস্টার এই খাবারটি বাচ্চাদের বিভিন্নভাবে খাওয়ানো যায়।
৩. এতে বেশি পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন বি১২ রয়েছে যা নিরামিষ ভোজীদের এ দুটি পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি কমায়। কারণ তাদের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও ভিটামিন বি১২ অনুপস্থিত থাকে।
৪. এতে প্রচুর ক্লোরোফিল ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা রক্তের দূষক পদার্থসমূহ দূর করে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
স্পিরুলিনার গুনাগুন বর্ণনা করছেন জনপ্রিয় ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির।

৫. এতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
৬. উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
৭. ইমিউন সিস্টেম বুস্টার স্পিরুলিনা ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট বা মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৮. এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
৯. যারা খুব বেশি দুর্বলতা অনুভব করে থাকেন তারা সতেজ থাকার জন্য স্পিরুলিনা সেবন করতে পারেন।
১০ যারা মনে রাখতে পারেন না, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেশি তাদের জন্য এটা খুব উপকারী।
অনেকেই কনফিউশনে থাকি, প্রতিদিন কয়টা ডিম খাব। জেনে নিন বিস্তারিত।

স্পিরুলিনা যেভাবে খেতে পারেন
এটা একটা সাপ্লিমেন্টারী ফুড। এটার কোন স্বাদ নেই। ক্যাপসুল ফরম্যাটে পাওয়া যায়। প্রতিদিন ক্যাপসুল খেতে পারেন। পাউডার ফরম্যাট যেকোন খাবারের সঙ্গে খাওয়া যায়।
আপনি যেকোনো ভাবে এটা খেতে পারেন। জুস্ করে খেতে পারেন, চায়ের সাথে মিশিয়ে, যেকোনো ভর্তা/তরকারি শাক সবজি বা সালাদের সাথে সামান্য পরিমাণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
বাচ্চাদের দুধ ভাতের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
এছাড়া রুটি, আলুভর্তা, নুডলস্, শরবত, হালুয়া ইত্যাদিতে স্পিরুলিনা মিশিয়ে নানা খাবার তৈরি করে খেতে পারেন।
আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে স্পিরুলিনা হতে পারে ভালো প্রতিকার। এক গ্লাস পানির সাথে দুই টেবিল চামচ স্পিরুলিনা পাউডারে এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
ডাঃ মুজিবুর রহমান এম ডি স্পিরুলিনা থাইরয়েডিজম দূর করতে খেতে বলেন। তিনি সাধারণত প্রতিদিন সাধারণত দুটি খেতে বলেন। এর সাথে হেলদি লাইফ স্টাইল অনুসরণ করবেন। তাহলেই থাইরয়েডিজম থেকে মুক্তি পাবেন।
দ্রুত ওজন কমিয়ে ফিট হয়ে উঠুন। একদম ন্যাচারালি।

স্পিরুলিনা নানা গুনের সুপার ফুড। আমরা সবসময়ই আপনাদের কি উৎসাহিত করি হেলদি লাইফ স্টাইলে। আমরা সবাই জানি অসুস্থতা কত কষ্টের, কত খরচের বিষয়। সেই সাথে ডাক্তার, হাসপাতাল দৌড়াদৌড়ি কিযে বিড়ম্বনা, ভুক্তভোগীরাই ভালো জানেন।
একজন ডাক্তারের চেম্বারের নিচে ছিল নাম ফলকের দোকান। পাথরের উপর ফলক লেখার কাজটি করতেন দোকানদার। একদিন হঠাৎ ডাক্তারের চোখ পড়ল একটি ফলকের উপর। লেখক সেখানে ফলকের উপর শুধু লিখে রেখেছনে ” পুন্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে …………।” ডাক্তার সাহেব লেখককে বললেন ” কি হে মৃত ব্যাক্তির নামের জায়গা খালি কেন ? আপনার রোগী দেখা শেষ হলেই আশাকরি বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। ফলক দোকানদার বিনয়ের সাথে বললেন।
ব্লাক রাইস নামের এই সুপার ফুড কেন খাবেন ? কিভাবে খাবেন ?

সেলিম হোসেন – তাং ১৮/০৩/২০২২ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.