সুস্থ থাকতে
আমরা প্রথমেই প্রশ্ন করি কোন খাবার খাব ? কোন খাবার আমার যৌন ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখবে? কোন খাবার আমাকে সুস্থ রাখবে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে। যে কারনে বেড়েছে কিছু খাবারের চাহিদা।যেমন ঃ চিয়া সিড, টক দই, সব ধরনের বাদাম, পনির, ডার্ক চকলেট, বুলেট কফি ইত্যাদি।
ভালো খাবার, সাস্থ্যকর খাবার এমনিতেই আপনার পাতে চলে আসবে যদি আপনি বাজে খাবার বাদ দিতে পারেন। বাজে খাবার ছেড়ে দিলে আপনার শরীর সঠিক ওজনে থাকবে, আপনি সুস্থ থাকবেন। এ কারনে সবার আগে বাজে খাবার গুলো চিনতে হবে। আসুন জেনে নিই বাজে খাবার গুলো কি কি।
১. প্রসেসড ফুড, শিঙারা, সমোছা, পুরি, কেক, বিস্কুট, চিপস, কোমল পানীয়, চানাচুর।
২. যখন খাবার খাবেন তখন এসিডিক ফুড কম খাবেন। যেমন ঃ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ। খাবারে ৮০ ভাগ জুড়ে থাকবে এলকালাইন খাবার। শাক সবজি ফলমূল সবই এলকালাইন খাবার।
৩. ফার্মের মাছ, মুরগি, ডিম, গরুর মাংস যে গুলোকে মোটাতাজা করতে প্রচুর স্টেরয়েড ব্যাবহার করা হয় এগুলো খাবেন না। সামুদ্রিক মাছ, নদীর মাছ, দেশি মুরগি, দেশি গরুর মাংস এগুলো খাবেন।
৪. দোকানের পাওয়া যায় এমন প্রায় সব খাবারই সুগার কোটেড। সুগারি খাবার খেতে চাইলে লাল চিনি, নারকেল চিনি, মধু, খাঁটি আখের গুড়, খাঁটি খেজুর গুড় এগুলো খেতে পারেন।
৫. সবচে গুরুত্বপূর্ণ মনে রাখার বিষয় গমের তৈরি কোন খাবার খাবেন না। গম জেনেটিক্যালি মডিফায়েড। এতে গ্লুতেন আছে। আমেরিকান হেলথ ইন্সটিউট গবেষণায় জানিয়েছে ৯০ ভাগ রোগের কারন গমের তৈরি খাবার। যারা সুস্থ আছেন তারা মাঝেমধ্যে খেতে পারেন। অসুস্থরা গমের খাবারের কাছেই যাবেন না। যেমন ঃ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুস্থ থাকতে যে খাবার গুলো খাবেন।
সুস্থ থাকতে কি করতে হবে। যে ব্যায়াম গুলো করলে আজীবন সুস্থ থাকবেন।
আমরা কীভাবে সুস্থ থাকতে পারি এ প্রশ্ন গুলো চলে আসে। আমরা জেনেছি কি খেতে কি বাদ দিতে হবে। ঘুমাতে যাব কখন ? আমরা ঘুমাতে যাব রাত ১১ টার মধ্যে। ঘুম থেকে উঠব সূর্য উঠার আগেই।
সুস্থ থাকতে ব্যায়াম
যেই কাজের বিকল্প নেই, সেটা হল ব্যায়াম। সুস্থ থাকতে এর বিকল্প খুজলে ঠকে যাবেন। যা আর পুষিয়ে উঠতে পারবেন না। বহু বছর ধরে আমাদের পূর্ব পুরুষদের শিকারির জীবন যাপন করতে হতো। খাবারের জন্য ধাওয়া করতে হতো পশুদের পিছে। পানির জন্য যেতে হতো ক্ষেত্র বিশেষে বহুদূর। সেই জীবন আমরা পেছনে ফেলে এসেছি।
এখন ঘরে বসেই পাওয়া যায় খাবার ও পানি। কোথাও যাওয়ার জন্যও আগের মতো পায়ের ওপর ভরসা নয়। আমাদের আছে রিক্সা, সাইকেল, মোটর সাইকেল, সি এন জি, কার, মাইক্রোবাস, হেলিকপ্টার, প্লেন কত কিছু। স্থল, জল ও আকাশ সবই এখন আমাদের আগের চেয়ে অনেক সহজ যাতায়াত। কিন্তু বদলায়নি আমাদের শরীর। আর তাই নিয়মিত আদিম যুগের মতো নড়াচড়া না করলে দেখা দেয় নানা শারীরিক জটিলতা। ব্যথা, যন্ত্রণা, পক্ষাঘাত। সেসব এড়াতে প্রতিদিন এই সহজ ব্যায়ামগুলো আবশ্যক।
১. সময়ের অভাব, সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট মেঝেতে বসে থাকার অভ্যাস আপনার কোমর ও মেরুদণ্ডকে মজবুত করবে। সে জন্য তিন ধরনের আসনে বসতে পারেন। স্কুলের দিনগুলোর মতো দুই পা সামনে আড়াআড়ি করে রেখে বসতে পারেন। এক পা সোজা রেখে আরেক পা মেঝের সমান্তরালে নিয়ে ৯০ ডিগ্রি কোণ বানিয়ে বসুন। কিংবা দুই পা সামনে সোজা রেখে পিঠ টান টান করে বসুন।
বসা অবস্থা থেকে হাতে ভর না দিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। প্রথম প্রথম না পারাটাই স্বাভাবিক। তাতে হতাশ না হয়ে অনুশীলন চালিয়ে যান। পা আড়াআড়ি রাখা অবস্থা থেকে সোজা উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।
স্কুলে হাফ চেয়ার করে রাখার যে শাস্তি প্রচলিত আছে, স্কোয়াট অনেকটা সে রকম। হাঁটু ভাঁজ করে দাঁড়াতে হবে। কোমর নিচের দিকে ঝুলে থাকবে। হাত দুটো রাখতে হবে মেঝের সমান্তরালে। পায়ের আঙুলগুলো সামনের দিকে ভর দিয়ে থাকবে। এটা হাঁটু, কোমর, পিঠ ও শ্রোণী অঞ্চলের জন্য সহায়ক।
জেনে নিন সুস্থ থাকতে কিভাবে দৌড়াবেন।
২. আপনার ডান পা একটা বেঞ্চি বা টেবিলের ওপর রাখুন। হাঁটু পর্যন্ত সমান্তরাল করে নামান। বাঁ হাত দিয়ে গোড়ালি চেপে রাখুন। এবার শরীর (ধড়) একবার ডানে ঘোরান, আরেকবার বাঁয়ে। যোগব্যায়ামের ভাষায় একে বলে পিজিয়ন পোজ।
ছোটবেলার আরেকটা কার্যকর শাস্তি হলো এক পায়ে দাঁড়ানো। অবশ্য বেশিক্ষণ এক পায়ে দাঁড়ানো আসলেই মুশকিলের ব্যাপার। সে জন্য ২০ সেকেন্ড করে শুরু করুন। ২০ সেকেন্ড পরপর পা বদলে নিন। তাতে দক্ষতা চলে এলে সময় বাড়াতে পারেন। তবে আরও কার্যকর হবে চোখ বন্ধ রেখে করতে পারলে।
আরেকটা দারুণ ব্যায়াম হলো দড়িলাফ। কিন্তু এ বাবদে নিয়মিত না হলে দড়িলাফের বদলে শুধু লাফাতে পারেন। আঙুলে ভর দিয়ে ছোট ছোট করে লাফ দিন। লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৫০ বার। জিমে যাওয়ার সুযোগ নেই, সুস্থ থাকতে বাসাতেই এটা করতে পারেন।
৩. দিনে যদি ৬-৭ ঘণ্টা বসেই কাটিয়ে দেন, তাহলে পিছিয়ে পড়তে হবে। কারণ, বসে থাকার চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকায় দ্বিগুণ ক্যালরি খরচ হয়। তাই কাজে ব্যবহার করতে পারেন দাঁড়ানোর টেবিল। না পারলে নিয়মিত বিরতি নিয়ে খানিকটা হাঁটুন। লিফটের বদলে ব্যবহার করুন সিঁড়ি।
টানা বসে থাকলেও তার মধ্যেই অল্পবিস্তর হালকা নড়াচড়া করবেন। একটু পরপর আসন বদলাতে পারেন। কিংবা পায়ের অবস্থান। মুদ্রাদোষের মতো হাতের নড়াচড়া। কারণ, এগুলোতেও খানিকটা ক্যালরি খরচ হয়। দাঁড়ানো অবস্থায় হাত সোজা ওপরে তুলুন। একদম সোজা রেখে হাত ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে আনুন। এভাবে একেক হাত ১০ বার করে ঘোরান। হাঁটবেন, সুযোগ পেলেই হাঁটবেন। পিঠে ব্যাগ নিয়ে হাঁটলে বেশি উপকার পাবেন।
সেলিম হোসেন – তাং ২৩/০৬/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী
Information source : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.