সবজি রান্নার রেসিপি
আমাদের হেলদি লাইফ স্টাইলে সবজি হবে প্রধান খাবার। সাধারনত আমরা যেভাবে সবজি রান্না করি, ওটা ভাতের সাথে খাওয়ার জন্য। কিন্ত সবজি খেতে হবে সরাসরি মাছ, মাংস বা ডিমের সাথে। শুধু সবজিও খেতে পারেন। এক্ষেত্রে রান্নায় কিছুটা ভিন্নতা আছে। সহজ রেসিপি জেনে নিন।
পছন্দমতো কিউব করা সবজি- ৪ কাপ
অল্প আলু দিতে পারেন যাদের ওজন কমানোর ইস্যু নেই তারা।
খাঁটি সরিষার তেল তেল- ১/২ কাপ খাঁটি ঘি ।
হলুদ- ১ চা চামচ / মরিচ গুঁড়া- ১/২ চা চামচ / পাঁচফোড়ন- ১ চা চামচ / আদাবাটা- ১ চা চামচ / জিরা বাটা- ১ চা চামচ / ধনে গুঁড়া- ১/২ চা চামচ / ঘি- ২ টেবিল চামচ / গরম মসলা গুঁড়া- ১/২ চা চামচ / লবণ- স্বাদমতো।
প্রথমে সবজি ভালোভাবে ধুয়ে কেটে নিন।
যদি কোনো সবজি কাটার পরে ধোওয়ার প্রয়োজন পড়ে তবে সেটি কাটার পর আরেকবার ধুয়ে নিন।
এছাড়া কাটার পর সবজি ধোওয়া হলে পুষ্টিগুণ অনেকটাই চলে যায়। এরপর গরম প্যানে তেল দিয়ে তাতে পাঁচফোড়ন দিন।
এবার তাতে দিয়ে দিন সব সবজি। যে সবজি গুলো দেরিতে সিদ্ধ হয় সেগুলো প্রথমে দিন। যেমন – পেঁপে, গাজর।
ভালোভাবে নাড়তে হবে।
এরপর বাকি মশলা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে ঢেকে রাখুন।
সবজি সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে দিন ঘি ও গরম মসলা গুঁড়া বা ম্যাজিক মসলা দিন। এরপর নামিয়ে পরিবেশন করুন।
স্ন্যাক হিসেবে সবজি নয় বাদাম খাবেন
বাদাম এমনিতেই খেতে সুস্বাদু। বাদামের পুষ্টি গুনের কথা নতুন করে কিছু বলার নেই। বাদাম টাকে একটু ভিন্ন ভাবে মাখিয়ে নিলেই স্বাদ বেড়ে যাবে বহুগুন।
বাদাম মাখা রেসিপি
ধাপ ১ – পরিমান মত চিনা বাদাম নিন। একটি পাত্রে ভালোভাবে টেলে নিন।
ধাপ ২ – এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ওর মধ্যে পেঁয়াজ কুচি,কাচামরিচ কুচি,একটু পিংক সল্ট মেশান। এর মধ্যে খাটি সরিষার তেল দিন।ভালো করে মাখেন। শশা কুচি,টমেটো কুচি যোগ করুন।
ক্যাপসিকাম কুচিও যোগ করতে পারেন।
ধাপ ৩ – এরপর ভালো করে মেখে উপর থেকে একটু লেবুর রস ছিটিয়ে নিন।
ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো মুখরোচক বাদাম মাখা।
সবজি বিটরুটের জুস
১. মেয়েদের জন্য বিশেষ উপকারি একটা বয়সের পর নারীদের মনোপজ হয়। শরীর তখন যেমন বেশি পরিমাণে লবণ শোষণ করে খাবার থেকে। যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। যেখান থেকে শুরু হবে বুক ধড়ফড় করা, মাথাব্যাথা এবং উদ্বেগ। চিকিৎসা না করলেই পড়বেন বিপদে। বিটরুট কিন্তু এইক্ষেত্রে বেশ উপকারি। গবেষণায় জানা গেছে বিটে রয়েছে নাইট্রেটস, যা রক্তনালী প্রসারিত করে ও রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।
২. জ্বালা পোড়া বা প্রদাহ কমায়বিটরুটে থাকা নাইট্রেট রক্তনালীর প্রদাহ কমিয়ে দেয়। নাইট্রেট ছাড়াও বিটে পাবেন বেটালাইনস। এটি এক ধরনের পিগমেন্ট। বেটালাইনসও রক্তনালীর প্রদাহ কমিয়ে দেয়। এই দুটো উপাদান মিলেই আপনার শরীরে রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
৩. যাদের হজম ক্ষমতা কম হজমের সমস্যায় ভুগলে বিট খাওয়া শুরু করে দিন। কারণ, আপনার হজম সংক্রান্ত সকল সমস্যা দূর করবে বিট। বিট আঁশ জাতীয় খাবার। আঁশ জাতীয় খাবার হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডাইভার্টিকুলাইটিস এমনকি কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
ওজন কমাতে পুষ্টিকর সালাদ।
৪. শরীরে শক্তি কম পাচ্ছেন ? বয়সের সাথে সাথে শরীরের শক্তি কমে যায়। শরীরের শক্তি বাড়াতে চাইলে আপনাকে সাহায্য করবে বিট। বিট এমনই একটি সবজি যার বহু গুণ। বুড়ো বয়সে নাতি-নাতনির সাথে দৌঁড়াতে চাইলে খাদ্য তালিকায় বিটরুট যোগ করুন।৫. ভুলোমনাদের জন্য যত দিন যাবে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমতে থাকবে। ভুলে যাবেন সবকিছু। এক কাপ বিট খেলেই কিন্তু বেঁচে যাবেন এই অবস্থা থেকে। বিট মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয় এবং ব্লাড সুগার ঠিক রাখে। অতএব অন্তত সপ্তাহে তিন দিন বিটের জুস খান।৬. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়
কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বিট খুব ভালো কাজ করে এবং এর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পিগমেন্টের কারণে ধারণা করা হয় লাল বিট কার্সিনোজেনের বিরুদ্ধে কাজ করে যেটি কোলন ক্যন্সারের জন্য দায়ী।
৭. সবার চোখে চশমা
বিট চোঁখের জন্য খুবই উপকারি। সবুজ বিট কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়। সিদ্ধ বা পরিপক্ক অবস্থায় এটিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লুটেইন নামে পরিচিত। লুটেইন বয়স সম্পর্কিত চোঁখের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটিতে উদ্ভিদ উৎপাদিত ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে যা চোঁখের স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে। চোখের চারপাশের স্নায়ু টিস্যুগুলির শক্তি এবং সুস্থতা বাড়ায়।
রোজা রেখে ইফতারে রাখতে পারেন বিটরুটের জ্যুস। ফাস্টিং শেষেও খেতে পারেন এই টনিক।
উপকরন এবং যেভাবে তৈরি করবেন।
গাজরে সলিউবল ও ইনসলিউবল- দুই ধরনের ফাইবার বা খাদ্য আঁশ থাকে। এগুলো হজম হতে দেরি হয় ও বেশি সময় পেট ভরা রাখে। তাই বিটের জুসে গাজর যোগ করতে পারেন।
- ২ কাপ বিট
- ২ কাপ গাজর
- আধা কাপ পানি
- ৫ টেবিল চামচ লেবুর রস
- এক চিমটি পিঙ্ক সল্ট
- কয়েকটা পুদিনা পাতা
বিট, গাজর ও পুদিনা পাতা একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। এতে পানি, লেবুর রস ও লবণ নেড়ে মিশিয়ে নিন।
এবারে খাবার নিয়ে একটি গল্প বলি
আওলাদ হোসেন একজন শিল্পপতি। ভালো ইংরেজি বলতে পারেন। কিছু দুতাবাস কর্তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়েছে। পারিবারিক পর্যায়ে পৌঁছেছে কারও কারও সাথে সম্পর্কটা। আওলাদ এবং তার স্ত্রী দুজনেই ভোজন রসিক। আওলাদ ভালো ইংরেজি জানেন কিন্ত স্ত্রী ইংরেজি একদম জানেন না। একদিন এক দুতাবাস কর্তা তাদের কে বাসায় ডিনারের দাওয়াত করলেন।
রাতে স্বামী স্ত্রী দুজন গেলেন দাওয়াত খেতে। ডিনার খেয়ে ফিরে আসছিলেন নিজ গাড়িতে করে। তারা খাবার কেমন হয়েছিল এ বিষয়ে গল্প শুরু করলেন। স্ত্রী বললেন ” পালক পনির টা হয়েছিল একেবারে বাজে, গাজরের হালুয়াটা ছিল কাদার মত।” আওলাদ স্ত্রীর সাথে একমত হলেন, বললেন ” শুধু ক্যাটারিং ছাড়া আর কোন কিছুই ভালো ছিল না।” আমি তো ক্যাটারিং চেখেই দেখিনি – স্ত্রী বললেন।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.