সাদা চিনি সাদা বিষ। প্রতিনিয়ত খেয়ে যাচ্ছি। White sugar is white poison

সাদা চিনি
সাদা চিনি সাদা বিষ 

সাদা চিনি ছাড়া আমাদের চলেই না। চায়ে, কফিতে, কেক, বিস্কুটে, হোটেলের পরোটায় কোথায় ব্যাবহার করা হয় না সাদা চিনি ? আমাদের বহু খাবারে এর উপস্থিতি আছে। আমরা জানি আখ থেকে তৈরি হয় চিনি। সেই চিনির রঙ হয় হালকা ঘোলাটে। কিন্ত সাদা চিনি প্রক্রিয়াজাত।

সাদা চিনি তৈরির এই প্রক্রিয়ার সময় মেশানো হয় লেবুর রস। আর এটা করতে গিয়েই সর্বনাশ হয় আখের চিনির। আখের চিনিতে থাকা উপকারী ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায় প্রক্রিয়াজাত করনে। এ ছাড়াও চিনি ব্লিচিং করার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্যালসিয়াম সালফেট ও সালফিউরিক অ্যাসিড। চিনি সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয় এই দুটি কেমিক্যাল।

ঝরঝরিয়ে ওজন কমবে, একদম ন্যাচারালি, শুধু আপনার ইচ্ছা প্রয়োজন।

সাদা চিনি

আমরা প্রতিদিন যে পরিমান চিনি মিশ্রিত খাবার খাই, তা নিঃসন্দেহে উব্দেগজনক। আমারা যদি আরব আমিরাতে পরিসংখ্যান দেখি তাহলে বিষয় টা অনুধাবন করতে পারব। এই মিষ্টি খাবার টি আমাদের শরীর ভরে দিচ্ছে বিষক্রিয়ায়।  এ ছাড়া সবধরনের বিপাকজনিত রোগ যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের আধিক্য, ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন। এই চিনি মিশ্রিত খাবার আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। আমরা তারাতারি বুড়িয়ে যাই। এসব কারণেই বিশ্বজুড়ে এখন চিনির আরেক নাম ‘হোয়াইট পয়জন’ অর্থাৎ সাদা বিষ। 

আমাদের জাতীয় চরিত্রের সাথে অসাধু শব্দটা লেগে আছে। এরই মাঝে কিছু অসাধু লোক আমদানি করছি ঘন চিনি। যা আরও মারাত্মক। কেননা, এই ঘন চিনিতে ২০০৬ সালে নিষিদ্ধ হওয়া সোডিয়াম সাইক্লামেট উপাদান থাকে। যা ভয়ংকর এবং বিষাক্ত। এই রাসায়নিক ঘন চিনি সাধারণ চিনির চেয়ে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। অর্থাৎ, ১ কিলোগ্রাম চিনি যতটা মিষ্টি স্বাদ আনতে পারে, মাত্র ২০ গ্রাম সোডিয়াম সাইক্লামেটের পক্ষেই খাবারকে ততটা মিষ্টি করে তোলা সম্ভব।

মাত্র একমাসেই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে পারেন ন্যাচারালি। 

সাদা চিনি
এই উপাদান খাওয়ার ফলে দীর্ঘমেয়াদি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগ গুলোর প্রকাশ ঘটে ধীরে ধীরে।  তাৎক্ষণিকভাবে টের পাওয়া যায় না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে শতকরা ৪০ জনের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি হৃদ্‌রোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল ও লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, চিনিতে থাকা ফ্রুক্টোজ যকৃতে বিষক্রিয়া এবং নানারকম দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ। এই চিনি ব্যাবহার হয় আমাদের হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বেকারি ইত্যাদি জায়গায়। আর এসব জায়গায় তৈরি খাবার আমরা প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকি। এভাবে এই চিনি আমাদের শরীরে ঢুকে অসুস্থ করে ফেলছে, মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারের কঠোর নজরদারি এবং আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন চিনি আসক্তি তৈরি করে তামাক এবং এলকোহলের মত। এটি যত খাওয়া হয়, তত মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে আরও খাওয়ার জন্য। এই উপাদান খাওয়ার ফলে গ্রেলিন, লেপটিন, ডোপামিন ইত্যাদি হরমোনের স্বাভাবিক প্রবাহ-ছন্দ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। যা মস্তিষ্কে ক্ষুধার অনুভূতি বাড়িয়ে দেয় এবং আমরা অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে উঠি। 
সাদা চিনি
সাদা চিনি খেয়ে বিপদে 
সংযুক্ত আরব আমিরাত !! কি হচ্ছে সে দেশে ?
চিনি খোর সংযুক্ত আরব আমিরাতে, অসুস্থতা বাড়ছে। চলুন জেনে নিই।
আমরা এটা জানি যে, সরাসরি চিনি অথবা শর্করা জাতীয় খাবার আমাদের রক্তে চিনি হিসিবে প্রবেশ করে।
২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষ ১৮৫৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি খেয়েছিল।
তাদের মোট জনসংখ্যা তখন ছিল ৯০ লাখ।
হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রতিটি নাগরিক গড়ে প্রতিদিন হাফ কেজি করে চিনি খেয়েছিলেন। বর্তমান পরিসংখ্যান জানা যায় নি, তবে দৃশ্যত চিনি খাওয়া আগের থেকে বেড়েছে।
কিভাবে তারা প্রতিদিন হাফ কেজি চিনি খান ? আসুন জেনে নেই। তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন প্রতিদিন আপনি কতটা চিনি খাচ্ছেন ?
সাদা চিনি
সাদা চিনি সাদা বিষ 

ওখানকার নাগরিকেরা গড়ে প্রতিদিন যা খান ।

• ১০০ গ্রাম চকলেট বার এতে থাকে ৫০ গ্রাম চিনি।
• ২ কাপ আইসক্রিম এতে আছে ১০০ গ্রাম চিনি ।
• ১ টা স্যান্ডউইচ, এতে আছে ৫০ গ্রাম চিনি ।
• ২ টি বার্গারে থাকে ১০০ গ্রাম চিনি।
• ২ পিৎজা স্লাইস ১০০ গ্রাম চিনি
• ১ লিটার কোক বা অন্য পানীয় এতে আছে ১০০ গ্রাম চিনি।
মোট ৫০০ গ্রাম বা হাফ কেজি চিনি

সাদা চিনি

প্রশ্ন জাগতে পারে এসব খাবারের মধ্যে এত চিনি কিভাবে আসতে পারে ?
উত্তর হল চিনির মুল উপাদানকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় এখানে ব্যাবহার করা হয়। একারনে আমরা চিনির আধিক্য অনুভব করতে পারি না। ক্যালরি ঠিক ই ঢুকে পরে আমাদের শরীরে। ধরুন এক বোতল কোমল পানীয় খেলেন। এতে ক্যালরি আছে ১৬০ যা দশ চামচ চিনিতে পাবেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষের মুটিয়ে যাওয়ার পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি । তাদের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মারাত্মকভাবে অতিরিক্ত ওজন বহন করছে । সারা দেশে ডায়াবেটিস ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আকারে, সেই সাথে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ এবং অতিরিক্ত ওজন জনিত অন্যান্য সমস্যা তো আছেই।
চিনি নিয়ে নানান গবেষণায় এর ভয়াবহতা উঠে এসেছে। সেটা আমরা আগেই জেনেছি। আমিরাতের নাগরিকদের মত চিনি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে, এখনই ত্যাগ করুন। তাহলে সুস্থ থাকবেন, ডাক্তারের কাছে দৌড়াতে হবে না। সাদা চিনি – সাদা বিষ- নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কি বিপদে আছে , আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
সাদা চিনি

সেলিম হোসেন – ১৭/০৯/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *