সফলতা আসবেই
কেন এবং কিভাবে ? আধুনিক মালয়েশিয়ার রুপকার মহাথির মোহাম্মাদ বলেছেন “কোন কাজে সফলতা পেতে দরকার প্রয়োজনীয় প্রস্ততি।” আমরা আরও একটু গভীরে যাব। একটি ঐতিহাসিক ঘটনা জানব। আমরা দেখব সফলতার পথে ফোকাস টা কোথায় রাখতে হয়।
পড়ুন – গ্রিক দেবতা অরফিয়াসের ব্যর্থতার কাহিনী

নাদির শাহ
ইরানের দিগ্বিজয়ী বিখ্যাত শাসক। ১৭৩৮ সালের ৬ ই নভেম্বর তিনি দিল্লি জয়ের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলেন। সাথে ১২৫০০০ হাজার সৈন্য বাহিনী। তার বাহিনিতে ছিল কাজিল বাস, তুর্কি, জর্জিয়ান, উজবেক, আফগান, পাঠান এবং বেলুচ সৈন্য। এছাড়াও ছিল ইংরেজ, ফ্রান্স এবং ইতালির ইঞ্জিনিয়ার । আরও ছিল গোলন্দাজ বাহিনী।
চেষ্টা করলে সফলতা আসবেই
শীতকালে উপত্যকা ধরে এগোচ্ছিলেন। বরফ পড়ছিল, পথ হয়ে উঠছিল দুর্গম। এরপর কাবুল আর পাঞ্জাবের সমভূমিতে চলছিলেন। এখানকার মানুষজন ন্যাচারালি ডাকাত। মাঝে মাঝেই তারা কাফেলার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যেত।
তিনি চাইলেই তাদের উচিত শিক্ষা দিতে পারতেন। কিন্ত তিনি তা করলেন না। তার উদ্দেশ্য ছিল দিল্লি দখল। চলার গতি বাড়িয়ে দিলেন।
খাইবার পাসের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছল সৈন্য কাফেলা। এটা ফাঁদের মত জায়গা। পাহাড়ের চুড়ায় চুড়ায় ডাকাত দলেরা জড়ো হয়েছে। ডাকাতদের মোকাবেলা করে এগোতে হলে দেরি হয়ে যাবে। দিল্লিতে গরম শুরু হয়ে যাবে। তখন সৈন্যরা বিপদে পড়বে। দিল্লি দখল তো হবেই না। বরং সৈন্যরা সব মারা পড়বে।
জেনে নিন – হাইফোথাইরয়েড ন্যাচারালি দূর করার উপায়

নাদির শাহ আছরের নামাজ পড়লেন
সূর্য যখন ডুবু ডুবু তখন তিনি তাবু গোটানোর নির্দেশ দিলেন। শীত রাতের আকাশে চাঁদের আলো আর মিটি মিটি তারা জ্বলছে। এই আলোতেই চলতে শুরু করলেন। রাতভর পথ চলে পাড়ি দিলেন পঞ্চাশ মাইল দুর্গম সরু পথ। তখন ডাকাতরা ঘুমিয়ে ছিল লেপের নিচে। ডাকাতরা যখন ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাচ্ছিল। তখন ভোর বেলায় নাদির শাহের দখলে এল পেশোয়ার শহর।
এরপর সিন্ধু নদী, পাঞ্জাবের মরুভুমি পার হয়ে গেলেন। লাহোরের মোঘল সুবেদার জাকারিয়া খান আত্মসমর্পণ করলেন। ক্ষতিপুরন দিলেন ২০ লাখ রুপি নাদির শাহ্কে।
দেখুন ভিডিও – যে কোন কাজে সফলতা অর্জনের দুটি পূর্ব শর্ত। বলছেন ডঃ আহাম্মদ উল্লাহ।

পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই
তিন লাখ সৈন্যের বাহিনী নিয়ে মোঘল সম্রাট নাসিরুদ্দিন শাহ প্রতিরোধ গড়লেন কারনাল শহরের উপকণ্ঠে। নাদির শাহের যুদ্ধ কৌশলে পরাজিত হলেন মোঘল সম্রাট। ক্ষতিপুরন চুক্তি করলেন চার কোটি রুপি। এরপর ঘটে অনেক ঘটনা। মোঘলদের ময়ুর সিংহাসন, হীরক খণ্ড কোহিনুর কৌশলে নিয়ে নেন নাদির শাহ। বীরদর্পে ফিরে যান ইরানে।
স্বাস্থ্য, চাকরি, ব্যবসা বা পরিবার যেখানেই সফলতা চাই লক্ষ্য থেকে কোন অবস্থাতেই বিচ্যুত হওয়া যাবেনা। লক্ষ্যের উপর তীক্ষ্ণ নজর থাকলে সফলতা আসবেই।
জেনে নিন – মুঠো ভর্তি ঔষধ কেন খাই

অপরানহো উইনফ্রে
এক বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। ২০১৭ সালে ফোর্বসের আমেরিকার সবচেয়ে ধনী মহিলা বিনোদনকারীদের তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
কিন্তু অপরাহর বেড়ে ওঠার জীবন সহজ ছিল না। তার জীবন প্রবাহিত হয়েছে অনেক প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে। সফলতা পেতে তাকে অনেক ধৈর্য আর পরিশ্রম করতে হয়েছে।
ছোট বেলায় তার বাবা মা আলাদা হয়ে যান। তারপর ৬ বছর বয়সে তাকে তার মায়ের সাথে উইসকনসিনে থাকতে পাঠানো হয়। বিষয় টা তার ভালো লাগেনি। উইসকনসিনে সে একা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করেন।
উইসকনসিনে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার আগেই, তাকে টেনেসিতে তার বাবার সাথে থাকতে পাঠানো হয়। কারন ডিভোর্স চুক্তিটা মেয়েকে লালন পালনের ক্ষেত্রে সময় ভাগ করা ছিল। আবার তার মায়ের সাথে থাকতে ফিরে যায়। মুলত তিনি বেড়ে ওঠেন তার দাদির কাছে।
এই সময় উইনফ্রে তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত হন। তার দাদী তাকে বেত্রাঘাত করেন। যার ফলে তার শরীরে দাগ পড়ে যায়। যখন তার বয়স ৯ বছর, তখন তার ১৯ বছর বয়সী এক চাচাতো ভাই তাকে ধর্ষণ করেন।
১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী অন্যান্য আত্মীয়দের দ্বারাও তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়। উইনফ্রে ১৪ বছর বয়সে গর্ভবতী হন। এসময় আত্মহত্যা করার কথাও ভাবেন। অবশেষে সময়ের আগেই শিশুটি দুনিয়াতে আসে এবং মারা যায়। উইনফ্রে মনে করেন তিনি নতুন একটা জীবন পেলেন।
শৈশবকাল কঠিন হলেও, তিনি মনে করতেন সফলতা আসবেই। উইনফ্রে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীদের একজন হয়ে ওঠেন। সফলতার মাপ কাঠিতে তাকে উদাহরন হিসেবে দেখা হয়।
সেলিম হোসেন – তাং ১৮/০৫/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।