ইরান
মাতৃত্বের বিজয় ইরানের নোসাহরে শহরে। কিভাবে ? ভোর কেটে সবেমাত্র সকালের শুরু। বেলালের ফাঁসি হবে। কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন। এই ফাঁসি কার্য দেখার জন্য। ইরানের উত্তরাঞ্চলের নোসাহরে শহরে। ইরানে এরকম প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হয় যাতে অন্যরা শিক্ষা গ্রহন করে।
ইরান
বেলালের বয়স তখন ১৯। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সমবয়সী আব্দুল্লাহর সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। উত্তেজিত বেলাল ছুরিকাঘাতে হত্যা করে আব্দুল্লাহকে। ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালে। কয়েক বছর মামলা চলে।
জেনে নিন – সহজে ওজন কমানোর প্রথম ধাপ
আব্দুল্লাহ রা দুই ভাই একবোন। আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে রাজ্যের শোক। এরপর ২০১০ সালে তার ভাইটি মোটর সাইকেল এক্সিডেন্টে মারা যায়। পরিবারে আবারো নামে শোক। বাবা মা দুটো তরুন সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায়।
একপর্যায়ে আবদুল্লাহ হত্যার মামলা শেষ হয়। সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ১৫ ই এপ্রিল ২০১৪ সাল মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ধার্য হয়। সমবেত জনতার সাথে উপস্থিত আছে আব্দুল্লহর পরিবারের লোকজন এবং আত্মীয়স্বজন।
নিরাপত্তা রক্ষীরা বেলাল কে এগিয়ে আনছেন ফাঁসির মঞ্চের দিকে। সমবেত জনতার মধ্যে পিনপতন নীরবতা। শুধুমাত্র একজন আরেকজনের নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। এরই মাঝে আব্দুল্লাহর মা এগিয়ে যান ফাঁসির মঞ্চের দিকে। পিছনে অনুসরন করেন আব্দুল্লাহর বাবা।
বেলালের চোখে কালো কাপড় বাঁধা হয়। মুখোশ পরিয়ে দেন জল্লাদ। গলায় দড়ি পরানো হয়। এমন সময় আব্দুল্লাহর মা চিৎকার ওঠেন। থামুন, থামুন। আসামীর সাথে আমার কথা আছে।
আব্দুল্লাহর মা সামেরেহ আলিনেজাদ জনতার উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলেন ” আপনারা কি জানেন ? সন্তান বিহীন খালি ঘরে বসবাস করা কতটা কঠিন।” এরপর তিনি নিরাপত্তা রক্ষীদের বলেন আমাকে আসামীর কাছে যেতে দিন।
তাঁকে আসামীর কাছে যেতে দেয়া হয়। তিনি বেলালের মুখোশ পরা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পড়তে থাকে। কষে একটি চড় মারেন বেলালের মুখে। তারপর বলেন ” তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।”
নিজ হাতে বেলালের গলা থেকে ফাঁসির দড়ি খুলে দেন। সামেরেহ কে দড়ি খুলতে সহায়তা করেন তার স্বামী। বেলাল ফিরে পান তার জীবন। মায়ের ক্ষমায় বাঁচল ছেলের খুনির প্রাণ।
সারা দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এই নিউজ।
পড়ুন – কেন বউয়ের হাতে মার খেল অমিত
সেলিম হোসেন – তাং ২৮/০২/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।