ভিটামিন ডি, কে এবং ক্যালসিয়াম। কেন একসাথে খাওয়া প্রয়োজন। Vitamin D, K and calcium. 5 benefits of vitamin D

ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি

এটি চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন। যার মধ্যে আছে ভিটামিন ডি১, ডি২ ও ডি৩। এটি হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি করতে পারে। সরাসরি সূর্যের আলোতে আমাদের শরীর ন্যাচারালি ভিটামিন ডি উৎপন্ন করে। এছাড়া কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও সাপ্লিমেন্ট থেকেও ভিটামিনটি পাওয়া যায়।

আমাদের শরীরে ভিটামিন ডির বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এ ছাড়া ভিটামিন এটির আরও কিছু উপকারিতা আছে। 

আজীবন সুস্থ থাকার উপায় গুলো সবারই জানা দরকার। 

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডির উপকারিতা 

১. হাড় শক্ত করে – শরীরে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন ডি। এই ২টি উপাদান হাড়ের মূল গঠন তৈরি করে। ভিটামিন ডির অভাবে হাড় দুর্বল হয় । ধীরে ধীরে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। যাকে অস্টিওপরোসিস রোগও বলা হয়। 

২. শিশুদের জন্য উপকার – শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের হাড়ের বৃদ্ধির জন্য ভিটামিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন টির অভাবে শিশুদের হাড়ে বিকৃতি বা রিকেট রোগ হতে পারে। এছাড়া রোগ ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে ভিটামিন ডি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। 

৩. দাঁত শক্ত করে – গবেষণায় পাওয়া গেছে, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট শিশু ও বয়স্কদের দাঁতের ক্ষয়রোধ করে৷ এটি দাঁতের মিনারেলের উন্নতি ঘটিয়ে দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।

৪. পেশির শক্তি বাড়ায় – শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ভিটামিনটি পেশির শক্তি বৃদ্ধি করে। শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।

৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে – এই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার ক্ষুধা কমায় বলে ওজন কমাতেও সাহায্য করে ৷ পরিশ্রমের ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্লান্তি কমিয়ে ফিট রাখে।

এছাড়াও অস্টিওপরোসিস, বিষণ্ণতা, জরায়ু ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এমনকি ডায়াবেটিস এবং মেদবৃদ্ধি প্রতিরোধে এর  ভূমিকা আছে। অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না যে তারা এই ভিটামিনের অভাবে ভুগছেন। যদি নিজের মধ্যে ওপরের লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে কাছাকাছি হাসপাতালে গিয়ে ভিটামিন ডির মাত্রা পরীক্ষা করে নিন। 

যে কারনে লিভার নষ্ট হয়, প্রতিকারের উপায় জেনে নিন। 

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষন 

দুর্বল মাংসপেশি

এই ভিটামিনের অভাবে শরীরের মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে মাংসপেশী বেড়ে যাওয়া ও মাংসপেশী কাঁপার মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে ৷ কাজেই মাংসপেশীর দুর্বলতা কাটাতে শরীরে ভিটামিন ডির পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করুন।

বিষণ্ণতা

এই  ভিটামিনের অভাবে বিষণ্ণতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ৷ এর ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয় ৷ যাদের মেজাজ খিটখিটে আপাতত ধরে নিতে পারেন তাদের এই ভিটামিন টির অভাব আছে। 

হাড় ফেটে যাওয়া 

এই ভিটামিনের অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায়, একারনে হাড় ভেঙে যেতে পারে ৷কখনো কখনো হাড়ে ব্যাথা করলে ধরে নিতে পারেন এই ভিটামিনের অভাব হতে পারে। 

দাঁত ভাঙা

এই ভিটামিনের অভাবে শিশু ও বৃদ্ধদের দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। পাশাপাশি দাঁত ভেঙেও যেতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ

এর অভাবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে।

ক্লান্তি ও অবসাদ

এই ভিটামিনের ঘাটতিতে শরীর ক্লান্ত লাগে বেশি এবং অবসাদগ্রস্ত লাগে। 

দ্রুত ওজন কমানোর সবচেয়ে সাস্থ্যকর উপায়। 

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি কোথায় পাওয়া যায় 

ভিটামিন ডি চাহিদা পুরনে সূর্যের আলো ন্যাচারাল এবং সহজ উপায়। নিয়মিত সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টার মধ্যে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকতে পারলে শরীরের শত ভাগ ভিটামিন ডি-র চাহিদাই পূরণ হয়ে যায়। অনেকেই রোদে যেতে চান না বা সুযোগ নেই। তাই এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জেনে নিন, যা এই ভিটামিনের ঘাটতি মেটাতে সক্ষম। 

সামদ্রিক মাছ

সমুদ্রের চর্বিযুক্ত মাছের মধ্যে রয়েছে স্যালমন, সার্ডিন, ম্যাক্রেল, রপচাদা, কোরাল ইত্যাদি। এসব মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনটির উপস্থিতি আছে। ওমেগা-৩ মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি লোপের শঙ্কা কমায়। এছাড়াও, কড মাছের তেল ভিটামিন ডির চমৎকার উৎস। যাদের মাছ খেতে ভালো না লাগে, তারা এই মাছের তেল সাপ্লিমেন্ট আকারে গ্রহণ করতে পারেন।

রিকেটস, সোরাইসিসের মতো রোগ নিরাময়ে কড মাছের তেল বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।  সামুদ্রিক মাছ টুনা এই ভিটামিনের বেশ ভালো উৎস। সরাসরি টুনা মাছ এখন বাজারে মাঝে মাঝে কিনতে পাওয়া যায়। এতে থাকা ২৬৯ আইইউ ভিটামিনটির ঘাটতি হতে দেয় না। 

সরিষার তেলে হার্টের অসুখ হয় ! সত্য জানুন, বিভ্রান্তি দূর করুন। 

ভিটামিন ডি

ডিম 

ডিম এই ভিটামিনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস । ডিমের কুসুমে রয়েছে ৩৭ আইইউ ভিটামিন ডি। নিউট্রিশনে ভরপুর হাঁসের ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ ও ডি, আয়রন মুরগির ডিমের থেকে বেশি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দুটি করে ডিম রাখলে ভিটামিনটির ঘাটতি মিটবে অনেকটাই।

মাশরুম

মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন -ডি রয়েছে। মাশরুম রক্তে ভিটামিনটির উৎপাদন বাড়ায়। যা বাচ্চাদের দাঁত ও হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে চাষ করা মাশরুমে এই ভিটামিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। 

ভিটামিন ডি, কে এবং ক্যালসিয়াম 

শরীরে তিনটি ভিটামিনই প্রয়োজন। কিন্ত সাউয়ার ক্রাউট কেন ? কারন ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম কে শোষণ করে।ক্যালসিয়াম রক্তেই থেকেই যায় যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন ডি না থাকে। ভিটামিন ” কে ” আবার ভিটামিন ডি কে রক্ত থেকে আমাদের হাড়ে, জয়েন্টে নিয়ে যায়। আর ভিটামিন ” কে ” আমরা পেতে পারি সাউয়ার ক্রাউট থেকে। 

সবজি যেভাবে রান্না করলে স্বাদে তৃপ্তিতে খাবেন। 

ভিটামিন ডি 

ভিটামিন ” কে ” এর অভাবে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে পারে। কেটে বা ফেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে অসুবিধা হয়। মেয়েদের মাসিকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়।

খাদ্যনালীর ভিতরে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে, যে কারনে মলের রঙ কালো হতে পারে। ত্বকের নিচে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে, এ কারনে ত্বকে ছোপ ছোপ লাল, কালো দাগ দেখা দিতে পারে। আমাদের প্রয়োজনীয় ভিটামিন “কে” আমরা পেতে পারি সাউয়ার ক্রাউটে।

রীতিমত ক্যালরি, পুষ্টি, ভিটামিন, মিনারেল সম্মৃদ্ধ খাবার সাউয়ার ক্রাউট।

প্রতি ১০০ গ্রাম সাউয়ার ক্রাউটে আছে ১৩.০ mcg ভিটামিন ” কে “। আছে বিলিয়ন বিলিয়ন প্রবায়োটিক যা শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ” কে ” তৈরি করে।

জেনে নিন – কেন খাবেন প্রবায়োটিক। কোন খাবারে প্রবায়োটিক। 

ভিটামিন ডি 

সাউয়ার ক্রাউট তৈরি করা খুবই সহজ। প্রস্তুতি চলছে। 

আমি নিয়মিত তৈরি করি এই প্রিয় খাবার টি। এটা খাওয়ার সময় এতে যোগ করি, অলিভ অয়েল, পরিমান মত কাচা মরিচ, পেঁয়াজ। চিবানোর সময় একসাথে মুখে দেই হালকা আঁচে ভাজা বাদাম এবং সাউয়ার ক্রাউট। খুবই মজার স্বাদ।

ভিডিও দেখুন – ক্যালসিয়াম নিয়ে ডাঃ মুজিবুর রহমান কি বলছেন। 

সেলিম হোসেন – ২৩/০৫/২০২৩ ইং – কিছু পেক্সেলস থেকে নেয়া।   

Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals. 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *