ব্লাক রাইস টি রেসিপি
সম্পর্কে জানার আগে আমরা জানব চা কিভাবে এল ? চীনে জনশ্রুতি আছে সম্রাট শেন নাঙ কে নিয়ে। খৃস্ট পূর্ব ২৭৩৭ সালের সময়। সম্রাট যাচ্ছিলেন একটি এলাকা পরিদর্শনে। তখন গ্রীষ্মকালের দুপুর। সম্রাটের জন্য একটি পাত্রে পানি ফুটানো হচ্ছিল। খোলা জায়গায়।
হঠাৎ শেন খেয়াল করলেন, পাশের বুনো ঝোপ থেকে কিছু শুকনো পাতা পানির পাত্রে পড়ল। পানি রঙিন হয়ে উঠল। সম্রাট অবাক হলেন। রঙিন পানি তিনি পান করলেন। তৃষ্ণা চলে গেল, বেশ উতফুল্ল অনুভব করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন এই পানীয় খুবই উপকারী। শুরু হল নিদ্রা নিবারন এবং উদ্যমতার প্রতীক চা পানের যাত্রা।
ব্লাক রাইস টি কিভাবে তৈরি করবেন।
এক টেবিল চামচ কালো চাল নিন। ওটাকে অল্প আঁচে ভালো করে টেলে নিন। দের মগ পানি নিন। পানি টাকে ফুটতে দিন। এরপর ৫-৬ মিনিট ফুটন্ত পানিতে কালো চাল সিদ্ধ করুন। আপনার প্রিয় মগে গ্রিন টির পাতা অথবা টি ব্যাগ ছেড়ে দিন। এবারে ছাঁকনি হাতে নিন। ছাঁকনি টাকে মগের উপর ধরুন। ধীরে ধীরে ছাকনিতে ঢালুন কালো চাল সহ সিদ্ধ পানি।
জেনে নিন – গ্রিন টি কেন খাবেন।
ব্লাক রাইস টি তে কি কি আছে।
এনার্জি ,প্রোটিন,হেলদি ফ্যাট,কার্বোহাইড্রেট ,উচ্চ মানের ফাইবার,আয়রন। এতে কোন ক্ষতিকর কোলেসট্রল নেই। গ্লুটেন মুক্ত। আরও আছে ভিটামিন বি – রিবোফ্লাভিন, নাইয়াসিন, ভিটামিন ই , বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম, আয়রন এবং কপারের মতো খনিজ পদার্থ। আছে ৯ প্রকারের এমাইনো এসিড।
গ্রিন টি তে কি কি আছে।
গ্রিন টিতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, বি, বি৫, ডি, ই, সি, ই, এইচ সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিংক, ক্যাফেইন, মেঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।
ব্লাক রাইস টি এবং গ্রিন টি দুটো মিলে ডাবল শক্তি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লাক রাইস টি র উপাদানগুলো আপনার হজমক্ষমতার জন্য উপকারী। এ ছাড়া থাইরয়েড ফাংশন ঠিক রাখতেও কাজ করে। আবার ত্বকের যত্নেও কালো চালের চা পান করেন। ত্বকে ভাঁজ পড়াও রোধ করে এটি।
নিয়মিত পানীয় টি পান করলে ধমনী শিথিল হয় । দেহে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ভালো থাকে। দাঁতের ক্ষয় রোধ এবং মাড়িকে মজবুত করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকেও ত্বককে রক্ষা করতে পারে এই পানীয়।
এ ছাড়া মেটাবলিজম বাড়িয়ে ফ্যাট বার্নে সহায়তা করে । যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। কিডনি রোগের জন্যও বিশেষভাবে উপকারী। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমাতে নিয়মিত পান করুন।
ভিডিও দেখুন – কালো চালের ভাত খেতে কেমন ?
গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজানকে উদ্দীপ্ত করে। কোলাজেন ত্বকের টানটান ভাবকে ধরে রাখে। এর থিয়ানিন নামে অ্যামাইনো এসিড দুশ্চিন্তা, অবসাদ ও হতাশা কমাতে পারে অনেকটাই।
পানীয় টি নিয়মিত পান করলে ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমবে। চুল ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করতেও দারুণভাবে সহায়তা করবে এই পানীয়।
তবে এই উপকারিতা তখনই পাওয়া যাবে। যখন আপনি হেলদি লাইফ স্টাইল অনুসরন করবেন।
এই পানীয় একদিনে ২০০ মিলির বেশি পান করবেন না। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা রাতে পান করবেন না। খাওয়ার কমপক্ষে একঘণ্টা পর চা পান করুন। খাবার শেষ করার পর পরই পান করবেন না।
ব্লাক রাইস টি কারা খায়।
রাইস টি নামেই বেশি পরিচিত এ পানীয়। মেঘালয়ে এর উৎপত্তি। সেখানে এটাকে ডাকা হয় চা-কু নামে (কু মানে চাল)। জাপানেও চালের চায়ের প্রচলন আছে। তবে জাপানিজ রা পান করে লাল চালের চা।
কি ভাবছেন ? খাবেন এই কালো চা ? হ্যা খাবেন আপনি। আপনার নিজের জন্য খাবেন। সুস্থ থাকতে খাবেন। আনন্দ পেতে খাবেন।
সেলিম হোসেন – ১৩/০৭/২০২৭ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.