বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস। The month of victory December. 16th December victory day.

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এবং দোজখ
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর 
দেশ ভাগের পর থেকেই পাকিস্তানিরা আমাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে থাকে। এখন যেমন ভারতীয়রা আমাদের নিচু চোখে দেখে ঠিক তেমন। সেই সাথে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে থাকেন বাজে লোকেরা। তাদেরই একজন মির্জা ইস্কান্দার।
মির্জা ইস্কান্দার যখন প্রেসিডেন্ট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি তখন প্রধান মন্ত্রী। মির্জা ইস্কান্দারের সাথে সোহরাওয়ার্দির ছিল খুবই মাখামাখি সম্পর্ক। সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল, মির্জা ইস্কান্দারের স্ত্রী নাহিদের সাথে অধিকাংশ পার্টিতে সোহরাওয়ার্দি নাচে অংশ নিতেন।
 
একরাতে সোহরাওয়ার্দির বাসায় পার্টি চলছিল। মির্জার স্ত্রী নাহিদ একটু বেশি পান করলেন। মাতাল হয়ে পরলেন, নড়ার ক্ষমতা নেই। মির্জাও প্রায় মাতাল, রাত বেশি হলে স্ত্রী কে রেখেই তিনি প্রেসিডেন্ট ভবনের দিকে রওনা দিলেন।
নাহিদের অবস্থা বেগতিক, তিনি প্রায় উলঙ্গ হয়ে সোফায় পরে রইলেন। খানিক পরে সোহরাওয়ার্দি তাকে দেখতে পেয়ে কাপড় চোপড় ঠিক করে দেন। এরপর পাঁজা কোলে নিয়ে গাড়িতে করে প্রেসিডেন্ট ভবনে পৌঁছে দিয়ে আসেন।
 
ডিসেম্বর
 
১৯৫৮ সালের ৭ ই অক্টোবর মির্জা সামরিক আইন জারি করেন। সেনাপ্রধান আয়ুব খান প্রশাসক নিজুক্ত হন। ২০ দিন পর ক্যু এর মাধ্যমে আয়ুব খান আসেন ক্ষমতায়, তিনি কেমন ছিলেন আমরা মোটামুটি জানি।
আয়ুব খান কে সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট এরশাদের মত লম্পট চরিত্রের ইয়াহিয়া খান। মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায়। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগ দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে। হানাদার পাকিস্তানিদের উপর তীব্র আক্রমণ শুরু হয়।
 
এই খবর নিয়ে এক সেনা অফিসার ইয়াহিয়ার অফিসে যান। তাকে দুই ঘণ্টা বাইরে দাড় করিয়ে রাখা হয়। কারন ইয়াহিয়া তখন তার বন্ধুদের নিয়ে ‘ ব্লু ফিল্ম’ দেখছিলেন। নয় মাস নারকীয় তাণ্ডব চালানোর পর এই ডিসেম্বরেই ইয়াহিয়া খান পরাজিত হয়েছিলেন। 

পড়ুন – আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ট্রাম্প বা বাইডেন কি রেকর্ড ভাঙবেন? 

ডিসেম্বর 

ইহাহিয়া খানকে নিয়ে একটি গল্প বলি

১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেন জিয়াউল হক। তিনি ভীতির শাসন, স্বৈরশাসন কায়েম করেন। তাকে নিয়ে প্রচুর জোকস চালু হয়। বিমান দুর্ঘটনায় ১৯৮৮ সালে মারা যান জিয়াউল হক।

মৃত্যুর পর তিনি দোজখে প্রবেশ করলেন। ভিআইপি হিসেবে তাকে দোজখ বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হল। প্রথমে যে দোজখে ঢুকলেন সেখানে গোলাম মোহাম্মদকে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। গরম পুঁজের ড্রামে তাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, তিনি ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করছেন। প্রচণ্ড সাহসী জিয়াউল হক ভয় পেলেন। 

দ্বিতীয় দোজখে গেলেন, এখানে আরও বীভৎস দৃশ্য। সেখানে আইয়ুব খানকে দুই হাত লোহার পেরেক দিয়ে গেঁথে, মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে, শঙ্কর মাছের চাবুক দিয়ে পেটানো হচ্ছে। পাষাণ হৃদয় জিয়াউল হক চোখ বন্ধ করে সরে এলেন।

তৃতীয় দোজখে প্রবেশ করলেন। আরও যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য। এখানে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে একটি বিছানায় পেরেকের ওপর শুইয়ে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। গনগনে আগুন লাল লোহার ডাণ্ডা দিয়ে তার শরীরে ছেঁকা দেয়া হচ্ছে। এই নিষ্ঠুরতা সহ্য হলোনা জিয়াউলের। তিনি শিউড়ে উঠলেন।  

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। 

ডিসেম্বর

চতুর্থ দোজখে গেলেন।

আশ্চর্য হলেন, কি অবাক করা দোজখ !! শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে সোফায় বসে আছেন ইয়াহিয়া খান, তার কোলে বিবসনা হলিউডের বিখ্যাত সুন্দরী নায়িকা মেরিলিন মনরো। ইয়াহিয়া তার নিজ কায়দায় মনরোকে আদর সোহাগ করছেন।

সিদ্ধান্ত নিতে এক মুহূর্ত দেরি করলেন না জিয়াউল হক। দোজখের পরিচালক কে অনুরোধ করলেন ” আমাকে এই দোজখ টাই দেন “।

দোজখের পরিচালক বললেন ” আপনি ভুল করছেন”।

এই দোজখে ইয়াহিয়া খান শাস্তি পাচ্ছেন না। শাস্তি পাচ্ছেন মেরিলিন মনরো। 

কেন ভরা মজলিশে পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করলেন মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ্‌। 

ডিসেম্বর

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।

সেলিম হোসেন – তাং – ৩১/১২/২০২৩ ইং 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *