বিজয়ের মাস ডিসেম্বর
ডিসেম্বরের শেষ সূর্যটি ডুবে গিয়েছে। দেশে বিজয়ের আচার অনুষ্ঠান কমে গিয়ে, ধীরে ধীরে বাড়ছে থার্টি ফাস্টের অপ্রয়োজনীয় উদযাপন।
পুরো সপ্তাহ জুড়ে পটকা ফাটানো, আতশবাজির মহড়া চলছে। রাত একটু একটু ভারী হলেই শুরু হবে শব্দ দূষণের অত্যাচার।
নয় মাস নারকীয় তাণ্ডব চালানোর পর এই ডিসেম্বরেই ইয়াহিয়া খান পরাজিত হয়েছিলেন।
পড়ুন – আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ট্রাম্প বা বাইডেন কি রেকর্ড ভাঙবেন?
ইহাহিয়া খানকে নিয়ে একটি গল্প বলি
১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেন জিয়াউল হক। তিনি ভীতির শাসন, স্বৈরশাসন কায়েম করেন। তাকে নিয়ে প্রচুর জোকস চালু হয়। বিমান দুর্ঘটনায় ১৯৮৮ সালে মারা যান জিয়াউল হক।
মৃত্যুর পর তিনি দোজখে প্রবেশ করলেন। ভিআইপি হিসেবে তাকে দোজখ বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হল। প্রথমে যে দোজখে ঢুকলেন সেখানে গোলাম মোহাম্মদকে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। গরম পুঁজের ড্রামে তাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, তিনি ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করছেন। প্রচণ্ড সাহসী জিয়াউল হক ভয় পেলেন।
দ্বিতীয় দোজখে গেলেন, এখানে আরও বীভৎস দৃশ্য। সেখানে আইয়ুব খানকে দুই হাত লোহার পেরেক দিয়ে গেঁথে, মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে, শঙ্কর মাছের চাবুক দিয়ে পেটানো হচ্ছে। পাষাণ হৃদয় জিয়াউল হক চোখ বন্ধ করে সরে এলেন।
তৃতীয় দোজখে প্রবেশ করলেন। আরও যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য। এখানে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে একটি বিছানায় পেরেকের ওপর শুইয়ে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। গনগনে আগুন লাল লোহার ডাণ্ডা দিয়ে তার শরীরে ছেঁকা দেয়া হচ্ছে। এই নিষ্ঠুরতা সহ্য হলোনা জিয়াউলের। তিনি শিউড়ে উঠলেন।
চতুর্থ দোজখে গেলেন।
আশ্চর্য হলেন, কি অবাক করা দোজখ !! শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে সোফায় বসে আছেন ইয়াহিয়া খান, তার কোলে বিবসনা হলিউডের বিখ্যাত সুন্দরী নায়িকা মেরিলিন মনরো। ইয়াহিয়া তার নিজ কায়দায় মনরোকে আদর সোহাগ করছেন।
সিদ্ধান্ত নিতে এক মুহূর্ত দেরি করলেন না জিয়াউল হক। দোজখের পরিচালক কে অনুরোধ করলেন ” আমাকে এই দোজখ টাই দেন “।
দোজখের পরিচালক বললেন ” আপনি ভুল করছেন”।
এই দোজখে ইয়াহিয়া খান শাস্তি পাচ্ছেন না। শাস্তি পাচ্ছেন মেরিলিন মনরো।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।
সেলিম হোসেন – তাং – ৩১/১২/২০২৩ ইং