প্রোবায়োটিক শারীরিক মানসিক সুস্থতায় এবং প্রিবায়োটিক। প্রোবায়োটিক এর ৮ টি কাজ । Probiotics and prebiotics in physical and mental health. 8 functions of probiotics

প্রোবায়োটিক
প্রোবায়োটিক  শারীরিক  সুস্থতায়। 
প্রোবায়োটিক এবং প্রিবায়োটিক। ২০ শতকের গোড়ার দিকে রাশিয়ান নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এলি মেচনিকফ এক আশ্চর্য বিষয় আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি লক্ষ করেছিলেন অত্যন্ত দারিদ্র এবং খারাপ আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করেও বুলগেরিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের একদল ব্যবসায়ী বহুদিন পর্যন্ত সুস্থ শরীরে জীবনযাপন করছেন।
কীভাবে তা সম্ভব! বিষয়টা তাঁকে ভাবিয়েছিল।
তিনি এদের জীবন যাত্রা পর্যবেক্ষণ শুরু করলেন। তিনি দেখলেন, যে তারা যতটুকুই খাদ্য গ্রহন করুন, সঙ্গে টক দই রাখাটা প্রায়  বাধ্যতামূলক।
প্রোবায়োটিক
টক দই
তিনি এরপর নিজেও বেশ কয়েকদিন যাবত খাদ্যতালিকায় টক দই রাখতে শুরু করলেন। টক দইতে আছে ভালো ব্যাকটেরিয়া। ফলও পেলেন হাতে নাতে। সমগ্র পরীক্ষা থেকে তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন—অন্ত্রের মধ্যে ভালো ব্যাকটেরিয়ার প্রবেশ করিয়ে সুস্বাস্থ্য গঠন করা সম্ভব। এই ভালো ব্যাকটেরিয়া টাই হল প্রোবায়োটিক।
সেইথেকে আধুনিক প্রোবায়োটিক নিয়ে ধারণার যাত্রা শুরু। এরপর বহু গবেষণায় প্রোবায়োটিকের ভালো দিকগুলি বেরিয়ে এসেছে।
আমরা যে খাবারই গ্রহণ করি না কেন, এর সাথে রোগ জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া ঢুকবেই।
আমরা যে খাবার গুলো গ্রহন করি, এর থেকে পুষ্টি তখনই নিশ্চিত হয়, যখন আমাদের পেটের ভিতর ভালো ব্যাকটেরিয়ার অবস্থান সুসংহত থাকে।
প্রোবায়োটিক
আঁশ যুক্ত খাবার

প্রিবায়োটিক কি? 

পেটে থাকা প্রোবায়োটিক, যা জটিল খাদ্য কনা গুলিকে ভেঙে ফেলতে এবং হজম করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই ভালো ব্যাকটেরিয়ার অবস্থান অন্ত্রে অর্থাৎ পেটে সুসংহত করতে দরকার প্রিবায়োটিক। এই প্রিবায়োটিক হল উদ্ভিদের ফাইবার যা ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রিবায়োটিকের আকারে এই পুষ্টিগুলি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলির কার্যকলাপ এবং বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করার জন্য অত্যাবশ্যক। সুতরাং, নিশ্চিত করুন মিলে যেন প্রচুর পরিমানে আঁশ যুক্ত খাবার থাকে।

পেটে খারাপ ব্যাকটেরিয়া বেশি থাকলে, পেট খারাপ হয়, খাবার হজম হয় না।
পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়ার অবস্থান শক্তিশালী থাকলে, খাবার হজম হয়। শরীর পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে, আমরা বিভিন্ন রকম রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারি। পেট ভালো থাকলে আমরা মানসিক ভাবে ভালো থাকি।
প্রোবায়োটিক এর সবচেয়ে সেরা উৎস হচ্ছে জাপান এবং কোরিয়ান দের খাবার “কিমচি”। জার্মান এবং রাশিয়ান দের খাবার “সাওয়ারক্রাউট”। এছাড়া দইয়ের ঘোল, ডার্ক চকোলেট, গ্রিন অলিভ, চিজ ইত্যাদিতেও প্রোবায়োটিক থাকে।
প্রোবায়োটিক
সাউয়ার ক্রাঊট তৈরি হচ্ছে
প্রোবায়োটিক এর ৮ টি কাজ

কোন কোন ক্ষেত্রে এই অণুজীব আমাদের কাজে লাগে।

১. বারবার ক্রনিক আমাশা,

২. পেটের সমস্যা,

৩. রোজ অম্বল,

৪. হজমের সমস্যা

৫. কোলাইটিস,

৬. আইবিএস,

৭. আইবিডি,

৮. মানসিক সুস্থতায়। অবাক ব্যাপার তাই না ! হ্যা, সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, মানুষের একটি নয়, দুটি ব্রেইন। একটি মাথার খুলিতে অন্যটি পেটের ভিতরে। পেট থেকে বেশিরভাগ নির্দেশ মস্তিস্কে যায়। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করি। সাস্থ্য বিজ্ঞানীরা এটা প্রমান করেছেন। অতএব পেট অর্থাৎ অন্ত্রের সাস্থ্য ভালো রাখতে হবে। তাহলে মস্তিস্ক ভালো নির্দেশ পাবে। মস্তিস্ক ভালো থাকার অর্থই মানসিক অসুস্থতা নেই।

উপকারিতা জানলে, পান্তা ভাত খাওয়া ছাড়বেন না। 

প্রোবায়োটিক
এটা পান্তা ভাত
প্রোবায়োটিক এবং এন্টিবায়টিক

এন্টিবায়টিকের ব্যবহারে আমরা সচেতন নই। এটা নিয়ে বারবার কথা বলে এসেছেন চিকিৎসকরা। সতর্ক করেছেন কর্তৃপক্ষ।  এবার সেই জায়াগায় অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে প্রোবায়োটিক। এই সাপ্লিমেন্ট নানা সময় মানুষকে সুস্থ করার কাজে লাগছে। আসুন সেই সম্পর্কে জানা যাক।

আমরা আগেই জেনেছি শরীরে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া শরীরকে বাঁচায় নানা অসুখ থেকে। এবার বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে এই ভালো ব্য়াকটেরিয়া ঢোকানো যায়। আমরা এ কাজটাই করতে পারি।

এই সাপ্লিমেন্ট আমাদের শরীরের হিতে কাজ করে। এতে করে অণুজীব পৌঁছে যায় শরীরের ভিতরে। সেখান থেকে অন্ত্রে যায়। এবার কোলোনে ভালো ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যায়। ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়লে কি হয় সেখানে? একটু সহজ করে বললে সেখানে যুদ্ধ হয়। খারাপ ব্যাকটেরিয়া কে ভালো ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে। শরীরে অসুখের কারন হচ্ছে খারাপ ব্যাকটেরিয়া। যখন খারাপ জীবাণু মারা যায় তখন শরীর সুস্থ হয়।

ভিটামিন ডি, কে এবং ক্যালসিয়াম। এই তিন ভিটামিন সম্পর্কে প্রত্যকের জানা থাকা জরুরি। 

প্রোবায়োটিক
কিমচি

আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে প্রোবায়োটিক  শরীরের জন্য উপকারী। তবে এর ব্যবহার নিয়ে সতর্ক হতে হবে। এভাবেই সমস্যার সহজ সমাধান করা যেতে পারে।

প্রোবায়োটিক এবং এন্টিবায়টিক  দুটির কাজ আলাদা। আসলে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে। সেখানে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ায় প্রোবায়োটিক। এবার লুজ মোশানের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। সেক্ষেত্রে এর প্রয়োজন নেই। তখন ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে দেওয়া হয়ে থাকে প্রোবায়োটিক। তাই মানুষের ধারণা রয়েছে এটা বুঝি বিকল্প । যদিও ব্যাপারটি তা নয়। তাই এই নিয়ে এখনও অনেকটা সচেতনতা প্রয়োজন।

যদি কোন বড় ধরনের অসুস্থতা না থাকে, তাহলে ফার্মেসি থেকে কিনেও প্রোবায়োটিক খেতে পারেন।
অসুস্থতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
প্রোবায়োটিক
সেলিম হোসেন – ২৬/০৪/২০২২ ইং
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *