ধন সম্পদ বৃদ্ধি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্যাক্টশিট আমাদের কে চমকে দেয়। সারা বিশ্বে ৩০ কোটির বেশি মানুষ হতাশা আর বিষণ্ণতায় ভুগছেন। তথ্য টি আমরা জানতে পারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে। আমরা অনেকেই জানিইনা আমরা বিষণ্ণতায় ভুগছি, হতাশায় ডুবে আছি। যে কারণে প্রতিবছর গড়ে আট লাখের বেশি মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। যাঁদের গড় বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছর।
বিষণ্ণতা, হতাশাকে আমরা পাত্তা দেই না। এটাকে কোন রোগ মনে করি না। কিন্তু হতাশার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ব্যাপক বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা। হতাশার সবচেয়ে চরম দিকটি হচ্ছে আত্মহত্যার দিকে পা বাড়ানো। বিষণ্ণতা আর হতাশাকে আত্মহত্যার পেছনে বড় একটি কারণ ভাবা হয়।
আমাদের সবার মাঝেই কম বেশি লোভ, লালসা আছে। ধন সম্পদ বৃদ্ধি করতে চাই। কিন্ত সমস্যা হয় তখন, যখন লোভ লালসা আমাদেরকে পেয়ে বসে। আমরা ক্রমাগত ছুটতে থাকি সম্পদের পিছনে। ধন সম্পদ বৃদ্ধি আমাদের নেশায় পরিনত হয়। মানুষের চাহিদার শেষ নেই। আর চাহিদা মেটাতে না পারলেই হতাশা পেয়ে বসে।
পণ্য দাসত্ব মানুষের হতাশ হওয়ার অন্যতম কারণ। মানুষ মনে করে পণ্য মানুষকে সুখী করবে তাই সম্পদ সংগ্রহ করতে কঠোর পরিশ্রম করে । তার পর ঐ বস্তু লাভ করার পর তার প্রতি এক সময় আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। কারণ বস্তু অনুভতিতে সাড়া দিতে পারে না।
মেজাজ গরম হয়ে যায়, হোটেল বয়, রিকশাওয়ালা, অন্যদেরকে মারতে ইচ্ছে করে। কিন্ত কেন ?
ধন সম্পদ বৃদ্ধি ইসলামিক দৃষ্টি ভঙ্গি
ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করতে হবে। প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে, জীবনের লক্ষ্য পুরনে। জীবনের লক্ষ্য অনেক টাকা আয় করা, প্রচুর সম্পদের মালিক হওয়া। এমন উপদেশ ইশারা, ইঙ্গিতে বা প্রকাশ্যে আমরা পাই অভিভাবক দের কাছ থেকে। আর সোশ্যাল মিডিয়া, মুভি, নাটক বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতি মুহূর্তেই আসে প্রলোভন। সাকিবের অনেক টাকা, শাহরুখ বাড়ির দাম কত ? ইলন মাস্ক এক্স এ কত টাকা বিনিয়োগ করলেন ? সব কিছু মিলিয়েই আমাদের অবচেতন মনে গেথে যায়, টাকা এবং সম্পদ এটাই জীবনের লক্ষ্য।
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, নামাজ পড় এবং জমিনের বুকে ছড়িয়ে পর রিজিকের খোঁজে। জীবনযাপনের জন্য সঙ্গতি থাকা জরুরি। তাই সম্পদ উপার্জনও আবশ্যিক কর্ম। তবে সম্পদের পেছনে মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করা উচিত নয়। জীবন চলার মতো হালাল উপার্জনই যথেষ্ট একজন মানুষের জন্য।
জান কি করছ ? বাবু খেয়েছ ? প্রেম করে বিয়ে। কিন্ত সংসারে অশান্তি। শান্তি আসবে কিভাবে জেনে নিন।
সম্পদের আধিক্য আল্লাহর কাছে হিসাবের মুখোমুখি করে তুলবে। এর সঠিক ব্যয় না হলে পরকালের পাকড়াও থেকে বাঁচা দায় হয়ে যাবে। তাই সম্পদ উপার্জনের পরিমিত বোধ থাকা জরুরী। সম্পদ উপার্জনের দৌড়ে নিজেকে অস্থির করে তোলা যাবে না। এই দৌড়ে সাস্থ্যের হানি ঘটানো এবং অবসর সময়কে ধ্বংস করা হল, নিজের প্রতি জুলুম। খেয়াল রাখতে হবে কোরআন-হাদিসের বাণী।
ধন সম্পদ বৃদ্ধি রাসুল ( সঃ ) কি বলেন
মোহাম্মদ ( সঃ ) মাত্রাতিরিক্ত ধন সম্পদ বৃদ্ধিকে কিয়ামতের আলামত বলেছেন। বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত আছে, কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে মানুষের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। ফকীর-মিসকীন খুঁজে পাওয়া যাবেনা। সদকা ও জাকাতের টাকা নিয়ে খোঁজাখোঁজি করেও নেওয়ার মত কোন লোক পাওয়া যাবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ الْمَالُ فَيَفِيضَ حَتَّى يُهِمَّ رَبَّ الْمَالِ مَنْ يَقْبَلُ صَدَقَتَهُ وَحَتَّى يَعْرِضَهُ فَيَقُولَ الَّذِي يَعْرِضُهُ عَلَيْهِ لَا أَرَبَ لِي
‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত না তোমাদের মধ্যে এত প্রাচুর্য দেখা দেবে যে তা উপচে পড়বে। এমনকি সম্পদের মালিক তখন চিন্তা করবে—কে তার সদকা গ্রহণ করবে? সদকা নেওয়ার জন্য মানুষকে ডাকা হবে। তখন সে বলবে, আমার প্রয়োজন নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭; বুখারি, হাদিস : ১৪১১)
ঔষধ ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করবেন। সুস্থ থাকবেন, যৌবন অটুট থাকবে। জেনে নিন উপায়।
ধন সম্পদ বৃদ্ধি মোহাম্মদ ( সঃ ) আরও বলেন
তবে কিয়ামতের এই আলামত টি কয়েক বার প্রকাশিত হবে। একবার ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের শাসন আমলে তা প্রকাশিত হয়েছিল। ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান বলেন, ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের শাসন আমলে লোকেরা প্রচুর সম্পদ নিয়ে আমাদের কাছে আগমন করতো। তারা আমাদেরকে বলতো তোমরা যেখানে প্রয়োজন মনে কর সেখানে এগুলো বিতরণ করে দাও।
গ্রহণ করার মত লোক না পাওয়া যাওয়ার কারণে তাদের কাছ থেকে কেউ মাল গ্রহণ করতে রাজি হতো না। শেষে মাল ফেরত নিতে বাধ্য হতো। মোট কথা তাঁর শাসন আমলে জাকাত নেয়ার মতো লোক ছিল না।
কিয়ামতের এই আলামতটি ইমাম মাহদীর আমলে পুনরায় প্রকাশিত হবে বিশেষজ্ঞ আলেমরা মতামত দিয়েছেন। (ফাতহুল বারী, ১৩/৮৩)
এ বিষয়ে হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অচিরেই তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচারক রূপে মারিয়াম তনয় [ঈসা (আ.)] অবতরণ করবেন। তারপর তিনি ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিজিয়া রহিত করবেন এবং ধন-সম্পদের এরূপ প্রাচুর্য হবে যে কেউ তা গ্রহণ করবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২২২২)
ধন সম্পদ বৃদ্ধি হচ্ছেনা, মন খারাপ। মিজানুর রহমান আজহারীর ভিডিও টি দেখুন।
সেলিম হোসেন – তাং ১১/১১/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী