টেস্টোস্টেরন
পুরুষ, সুপুরুষ, সক্ষম পুরুষ। যাই বলি না কেন, পুরুষের পুরুষ হয়ে উঠার পিছনে কাজ করে একটি পাওয়ার হাউস। এর নাম এড্রেনাল গ্রন্থি। এখানেই উৎপন্ন হয় টেস্টস্টেরন হরমোন। শরীর কে পেশীবহুল করতে পর্যাপ্ত পরিমান এই হরমোনের প্রয়োজন। পুরুষের যৌন সক্ষমতা বাড়া, কমা বা ফুরিয়ে যাওয়ার পিছনেও কাজ করে টেস্টোস্টেরন। বিষয়ে বিস্তর গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছে The new England journal of medicine.
টেস্টোস্টেরন উৎপাদন কমে গেলে
কি হয় ? এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানিরা আমাদের অনেক ধারনা দিয়েছেন।
১. পুরুষের স্বাভাবিক যৌনাচরণের পরিবর্তন ঘটে। কারও কারও ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ দুটি আকারে ছোট হতে পারে। যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়।
২. কর্মস্পৃহা অনেক কমে যায়। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দেয়। যখন এই হরমোনের উৎপাদন কমে যায়। তখন যৌবনের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, মনের জোর, সব জয় করার এক উদগ্র বাসনা সেটা হারিয়ে যায়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়। কেউ কেউ বিভিন্ন মাত্রার বিষণ্ণতায় ভুগেন। তবে অন্যান্য শারীরিক অসুখ যেমন- থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, বিষণ্ণতা রোগ, অতিরিক্ত মদ্যপান ইত্যাদি কিংবা ওষুধ সেবনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবেও এ রকম হতে পারে।
৩. পুরুষের পরিণত বয়সে টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়া কোন দুর্ঘটনা বা অসুখ নয়। এটি জীবনের একটি পরিবর্তিত ধাপ বা পর্যায় মাত্র। এটাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়ে জীবনের এই নতুন পর্যায়টিকে উপভোগ করা বুদ্ধিমানের কাজ। শেষ বয়সে যৌবন বয়সের মত টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কতগুলো বিষয় খেয়াল রাখা উপকারী।
৪. সমস্যাগুলো যদি বয়স বাড়ার কারণে না হয়ে অন্য কোনো অসুখ-বিসুখ কিংবা ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়, তাহলে তার সমাধান করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
৫. হেলদি লাইফ স্টাইল অনুসরন করবেন। যেমন- স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করা ইত্যাদি। রাত ১০ টায় ঘুমাতে যাওয়া, তারাতারি ঘুম থেকে উথা। প্রতিদিন ৩০ মিনিট শরীরে রোদ লাগানো। পরিবারের সদস্যের সাথে ভালো আচরন করা। প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরন করা। বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটানো।সাধ্যমত দান খয়রাত করা।
৬. টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গেলে পুরুষের কর্মস্পৃহা, মানসিক উৎসাহ-উদ্দীপনা হ্রাস পায়। বিষণ্ণতার কারণে অনেকের মেজাজ খিট খিটে হয়ে যায়। নিঃসঙ্গ থাকতে পছন্দ করেন এবং সামাজিক কর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। অনেক সময় মাত্রাতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতা দেখা দেয়।
৭. টেস্টোস্টেরন প্রতিস্থাপন চিকিৎসায় অনেকে উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে এর কার্যকারিতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। যদি ভোরে ঘুম থেকে উঠেন। নিয়মিত অপটিমাল স্টেজে অর্থাৎ শরীরের সহনীয় মাত্রায় দৌড়ান। দারুন কাজ দিবে।
টেস্টোস্টেরন কখন থেকে কমে
গড়ে ৩০ বছর বয়স হওয়ার পরে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা প্রতিবছর ১% করে কমে। সাধারণত ৭০ বছর বয়স্ক পুরুষের শরীরে এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক কমে যায়। কারও কারও এ মাত্রা আরও কমে যেতে পারে। আজীবন পুরুষ থাকতে হেলদি লাইফ স্টাইল অনুসরন করবেন। ম্যাজিক টনিক তৈরি করবেন এবং খাবেন। তৈরি করা খুবই সহজ। পুরো রেসিপি শিখিয়ে দিব। কিছু খাবারও কাজ দিবে।
টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর পাঁচটি খাবার
উদ্ভিজ দুধ – নারিকেল দুধ, কাঠ বাদামের দুধ, ওট্সের দুধ শরীরে এই হরমোনের ক্ষরন বাড়িয়ে দেয়। গরুর দুধে যাদের সমস্যা হয় তারা এই দুধ খেতে পারেন।
বেদানা – রঙিন রসালো এই ফলে আছে প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট। যা প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ শরীরে হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করার অন্যতম বড় কারণ। নিয়মিত বেদানা খেলে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে টেস্টোস্টেরনের মাত্রার উপরেও।
তেলযুক্ত মাছ – ইলিশ, পাংগাস, রুই, কাতলা, বোয়াল, চিতলের মতো তেলযুক্ত মাছ ওমেগা-৩ এর ভালো উৎস । সামুদ্রিক মাছ এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো খাবার। পুকুর বা চাষের মাছ কখনো খাবেন না। ওমেগা ৩ হৃদপিণ্ডের সুস্থতা বজায় রাখে। টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে কার্যকর ভুমিকা রাখে।
ডিম – অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি-তে ভরপুর ডিম শরীরে এই হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। ডিম প্রোটিনের ভাল উৎস। প্রতিদিন ডিম খাবেন। ডিম মাংস এবং মাছের চেয়ে সহজে হজম হয়।
কলা – শরীরে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করতে রোজের ডায়েটে কলা রাখতে পারেন। নিয়ম করে কলা খেলেও শরীর চাঙ্গা থাকে, শরীরে স্ফূর্তি আসে। প্রতিদিন খাবারে অন্তত একটা কলা রাখবেন।
পড়ুন – কিভাবে ওজন কমাবেন। শরীরের বাড়তি ওজন আপনার স্ত্রীর প্রতি আগ্রহী কমিয়ে দেয়।
টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর ম্যাজিক টনিক
মুলত এই টনিক আপনাকে পুরুষ রাখবে আজীবন। আপনি খুশি রাখতে পারবেন আপনার স্ত্রী কে। আজ থেকে খাওয়া শুরু করুন। স্ত্রী অবাক হয়ে যাবেন। রাত গুলো হবে আনন্দের। যারা তরুন আছেন তারা খাবেন নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। যাদের বয়স ৪০ পার হয়েছে তারা অবশ্যই খাবেন। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন। ম্যাজিক টনিক টি সকালের ব্রেক ফাস্টে খাবেন। এরপর দুপুর ২ টা পর্যন্ত আর কিছুই খাবেন না।
কিভাবে তৈরি করবেন ? কি কি লাগবে। তৈরি করা খুবই সহজ। উপকরন যা যা লাগবে।
১. চারটে ডিমের কুসুম। হাঁস অথবা দেশি মুরগির হতে হবে। ২. এক টেবিল চামচ ঘি। ৩. এক টেবিল চামচ মধু। ৪. এক টেবিল চামচ কোল্ড প্রেস কোকোনাট ওয়েল। ৫. স্বাদের জন্য সামান্য পিঙ্ক সল্ট।
প্রস্তত প্রণালী – একটি পরিস্কার বাটিতে কুসুম চারটি রাখুন। চামচ দিয়ে নেড়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে বাকি উপকরন গুলো ঢেলে দিন। ভালো নেড়ে পুরো একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ব্যস হয়ে গেল ম্যাজিক টনিক। দারুন সুস্বাদু খেতে এই খাবার টি।
নিজে নিয়মিত খান। যে বন্ধু দুর্বল আছে তাকে শেয়ার করুন পোস্টটি।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.
সেলিম হোসেন – ১১/০৮/২০২৪ ইং