চিয়া সিড কি ? কিভাবে খাবেন ? চিয়া সিডের ১০ টি উপকারিতা জেনে নিন। Know the 10 benefits of this super food

চিয়া সিড কি
চিয়া সিড কি

এটি একটি শস্য দানা। শস্য জাতীয় উদ্ভিদ যা মরুভূমিতেই বেশি জন্মায়। জানা যায়, প্রাচীন অ্যাজটেক জাতির প্রধান খাদ্য তালিকায় এটি রাখা হতো। চিয়া সিড দেখতে অনেকটা তিলের দানার মতো। আমেরিকা ও মেক্সিকোতে চিয়া নামে এক ধরনের গাছ হয়। এই গাছের বীজকেই চিয়া সিড বলে।

চিয়া সিড কি তোকমা দানা 

আমরা অনেকেই তোকমা দানা এবং চিয়া সিড একই জিনিস ভাবি। আসলে তা নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা গাছে জন্মায়। আলাদা বীজ। তবে তোকমা দানাও অনেক উপকারি খাবার। তোকমা দানা আমরা বছরের পর বছর ধরে বংশ পরম্পরায় খেয়ে আসছি। কিন্ত চিয়া সিড আমাদের কাছে একেবারেই নতুন।

জেনে নিন – জীবনের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন কি ?

চিয়া সিড কি

চিয়া সিড কি ? কিভাবে আমাদের কাছে এল  

ডাঃ জাহাঙ্গির কবির যখন হেলদি লাইফ স্টাইল নিয়ে প্রচারনা শুরু করেন। তখন নতুন নতুন সাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। তারই ধারাবাহিকতায় বছর তিনেক আগে এই সুপার ফুডের সাথে আমরা পরিচিত হই। এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অবহিত হই। বাড়তে থাকে চিয়া সিডের জনপ্রিয়তা।

চিয়া সিড কি কোথায় পাবেন 

প্রথম দিকে এটি বেশ দুস্প্রাপ্য ছিল। এখন সব খানেই পাওয়া যায়। আপনার নিকটস্থ মুদি দোকান থেকে কিনতে পারেন। অনলাইন সপ থেকে কিনতে পারেন। ডাঃ জাহাঙ্গির কবির, ডাঃ মুজিবুর রহমান অথবা ডাঃ মুজিবুল হকের সপ কিনতে পারেন। তবে উনাদের সপে দাম অনেক বেশি। অনলাইনে কিছুটা কম।  সবচেয়ে কমে পাবেন মুদি দোকানে। মুদি দোকানে কেনার সময় দরদাম করে কিনবেন। দানা গুলো দেখে নিবেন পরিস্কার ঝরঝরে আছে কি না।

পড়ুন – ওজন কমানোর ন্যাচারাল এবং সাস্থ্যকর উপায়। 

প্রচণ্ড গরমে চিয়া সিড

এক গ্লাস অর্থাৎ ৩০০ মিলি পানিতে পাঁচ এক চামচ চিয়া সিড। এরপর এতে মিশাতে পারেন লেবুর রস বা ভিনেগার। তৈরি হল দারুন একটি পানীয়। যা গরমে দিবে প্রশান্তি। সেই সাথে হজম শক্তি বাড়াবে। খেতে পারেন দিনে এক/দুই বা তিন বার।

চিয়া সিড কি

চিয়া সিড কি পুডিং কিভাবে  

অসাধারন পুষ্টিতে পরিপূর্ণ একটি খাবার। একটি বাটি বা বড় মগ নিন। এতে কাঠবাদামের দুধ বা নারিকেল দুধ ঢালুন। যদি শুধুমাত্র বাচ্চারা খায় এক্ষেত্রে গাভীর দুধও নিতে পারেন। এরপর দুধে পরিমান চিয়া সিড মিশান। পরিমান মত মধু দিন। এতে বেশি মিষ্টি হবে। কম মিষ্টি খেতে চাইলে মধু দিবেন না। ভালোভাবে চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। মিশিয়ে দিন দুধের সাথে। ফ্রিজে রেখে দিন ৭-১০ ঘণ্টা। বের করে আনুন। পরিবেশনের সময় উপরে কলা, আপেল বা অন্য কোন পছন্দের ফল দিন। এবার খাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তত।

চিয়া সিড কি, এর পুষ্টিগুণ কি     

চিয়া সিডে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালংশাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩ রয়েছে।
এতে আরও রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।

চিয়া সিড কি এর ১০ টি উপকারিতা কি   

১.  চিয়া সীড শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে।
২.  চিয়া সিড ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
৩.  চিয়া সিড হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি
৪.  চিয়া সিড হজম শক্তি বাড়ায়। মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৫.  চিয়া সিড শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয় এবং প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে।
৬.  চিয়া সীড ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে
৭.  চিয়া সিড হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
৮. ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে কাজ করে এই বীজ।
৯.  চিয়া সিডে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে যায় এবং ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে।
খাওয়ার নিয়ম
১০. চিয়া সিড মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করে ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং ডায়বেটিসের ঝুঁকিও কমে যায় এই বীজ খেলে।
চিয়া সিড কি
চিয়া সিড কি,  সাবধানতা কেন   
সব সময়ই একটা জিনিস মনে রাখবেন, কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। এটাও পরিমিত পরমানেই খাবেন। . পরিমাণের থেকে বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। 
আমি নিজে চিয়া সীড প্রতিদিন খাই। আর নির্দ্বিধায় বলতে পারি সত্যি দারুন একটি খাবার। রান্না করার ঝামেলা নেই। খোসা ছাড়ানোর ঝামেলা নেই। ভিজিয়ে রাখবেন, খেয়ে ফেলবেন। ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এমন টাই নির্দেশনা বিশেষজ্ঞদের।
সেলিম হোসেন – ০২/০৯/২০২৪ ইং
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *