ঘিয়ের উপকারিতা ১০ টি: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য
পেটের সমস্যা কেন হয় – সমাধান কী?
আমাদের দেশে একটি বড় অংশের মানুষ পেটের সমস্যায় ভোগেন। ধারণা করা হয়, প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ হজম সংক্রান্ত বা মলত্যাগের জটিলতায় আক্রান্ত। এই সমস্যাগুলির প্রধান কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা, যার ফলে অন্ত্রের নড়াচড়া কমে যায় এবং শরীর থেকে মল বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলস্বরূপ পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, এবং কখনও কখনও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধের মতো বিব্রতকর জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ বহুমুখী: অপর্যাপ্ত জল ও ফাইবার গ্রহণ, ব্যায়ামের অভাব, অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া, এবং ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা PCOD-এর মতো স্বাস্থ্য সমস্যাও এর জন্য দায়ী।
এই সাধারণ কিন্তু জটিল সমস্যা দূর করতে আপনার জন্য প্রাকৃতিক ঔষধের মতো কাজ করতে পারে ঘি চা (Ghee Tea)। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই এটি বহু স্বাস্থ্য গবেষণার ফলাফল দ্বারা প্রমাণিত।
হাতের কাছেই পাওয়া যায় অসাধারন পুষ্টিকর খাবার ছোলা।

খাঁটি ঘিয়ের ১০টি আশ্চর্য উপকারিতা (এবং ঘি চা কেন খাবেন)
খাঁটি মাখনকে মৃদু আঁচে গরম করলেই তৈরি হয় ঘি—একটি স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর প্রাকৃতিক উপাদান। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ঘি যোগ করলে আপনি নিম্নলিখিত উপকারিতাগুলো পেতে পারেন:
১. উন্নত হজম ক্ষমতা এবং রেচক ক্রিয়া
ঘি হলো বুট্রিক অ্যাসিডের এক সমৃদ্ধ উৎস, যা অন্ত্রের বিপাক উন্নত করে এবং রেচক (Laxative) হিসেবে কাজ করে। এটি মল চলাচলে সহায়তা করে এবং অন্ত্রের দেওয়ালকে নরম রেখে স্বাস্থ্যকর অন্ত্র বজায় রাখে।
২. সঠিক অন্ত্রের গতিবিধি
ঘি-মিশ্রিত চা পান করলে এর ক্যাফেইন উপাদান একটি উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে যা অন্ত্রের গতিবিধিকে উদ্দীপিত করে এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের গতি বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপের ভারসাম্য
ঘি সহজে হজমযোগ্য চর্বি, যা শরীরের তাপ উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। উচ্চ তাপমাত্রায়ও ঘি তার গুণাগুণ হারায় না, তাই গরম চায়ে নিশ্চিন্তে মেশানো যেতে পারে।
৪. স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস
অনেকের মনে ভুল ধারণা থাকলেও, ঘি আসলে উচ্চ মানের স্বাস্থ্যকর চর্বি। এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না। বরং, ঘি এবং চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একত্রে ত্বকের উপকার করে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া বিলম্বিত করে।
৫. কোষের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে
ঘি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং ভিটামিন এ, ই, ডি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। নিয়মিত ঘি চা পান করলে শরীরের কোষের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়।
দেখুন – ঘি নিয়ে একটি রিসার্চ পেপার।

৬. হাড় ও স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষা
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘি হাড়ের সুস্থতা, পাচনতন্ত্রের উন্নতি, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। ঘি-এ থাকা ভিটামিন ডি হাড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
৭. চুলের জন্য পুষ্টিকর টনিক
ঘিতে থাকা স্বাস্থ্যকর এবং সমৃদ্ধ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের পুষ্টি জোগায়। এটি চুলকে নরম, চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
৮. খুশকি এবং ত্বক চুলকানি দূর করে
চুলে খুশকি সমস্যা থাকলে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। প্রতিদিন এক কাপ ঘি চা পান করলে খুশকি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সুবিধা হতে পারে। ত্বকে চুলকানির সমস্যা কমাতেও এটি সহায়তা করে।
৯. ওজন কমাতে সাহায্য করে
ঘিতে থাকা লিনোলিক অ্যাসিড স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে এবং ফ্যাট কোষ পুড়িয়ে শরীরে অতিরিক্ত শক্তি যোগায়।
১০. হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ঘি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (ডিএইচএ) এবং ওমেগা-৬ (সিএলএ) দ্বারা পরিপূর্ণ। এটি হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ভূমিকা রাখে। এছাড়া হঠাৎ সর্দি, কাশি বা কফ থেকে মুক্তি পেতেও এই ঘি চা টনিকের মতো কাজ করে।
কেন বাড়ছে ডিভোর্স ? কারন জানলে অবাক হবেন।

ঘি চা তৈরির সহজ রেসিপি
প্রতিদিন মাত্র এক কাপ ঘি চা পান করা আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১. জল ফোটান: পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পুরোপুরি ফুটান। জল ফোটার পরে এক মিনিট অপেক্ষা করে চুলা নিভিয়ে দিন।
২. চা পাতা ভেজান: প্রয়োজনীয় চা পাতা শুকনো, পরিষ্কার কেটলিতে বা অন্য কোনো পাত্রে ঢালুন।
৩. লিকার তৈরি: ফুটন্ত জল চা পাতার পাত্রটিতে ঢালুন। কেটলির ঢাকনা বা পাত্রের মুখ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট ধরে ভেজান।
৪. ঘি মেশান: ৫ মিনিট পরে লিকার একটি বড় স্টিলের মগে ছেঁকে ঢালুন। এতে এক চামচ খাঁটি ঘি ঢেলে দিন।
৫. ব্লেন্ড বা মিক্স: একটি হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে মিশ্রণটি ব্লেন্ড করুন। এতে মিক্সিং দারুনভাবে হবে এবং খেতেও সুস্বাদু লাগবে। ব্লেন্ডার না থাকলে চামচ দিয়ে নেড়েচেড়েও তৈরি করতে পারেন।
সাস্থ্য সচেতন সবার মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে দিন। সেলিম হোসেন – ২৯/০৮/২০২৪ ইং – প্রতীকী ছবি গুলো পেক্সেলস থেকে নেয়া।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

