ঘি চা কোষ্ঠকাঠিন্যে ন্যাচারাল ঔষধ
পেটের সমস্যা আমাদের দেশের ৮০ ভাগ লোকের ? প্রতিদিন অনেক সময় টয়লেটে ব্যয় হয়। তারপরেও অশান্তি দূর হয় না। কোন নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই, ধারনা থেকে বলছি। আপনি আপনার পাশে বসা লোকটিকে জিজ্ঞেস করুন। পরিবারে কথা বলুন, বন্ধুবান্ধব দের সাথে কথা বলুন। নিজেই একটা হিসাব করতে পাবেন।
কেন পেটের এমন সমস্যা হয়। কারন কোষ্ঠকাঠিন্য অর্থাৎ কষা পায়খানা। ফলাফল অন্ত্রের নড়াচড়া খুব কম হয় । শরীরের পক্ষে মল বের করা খুব কঠিন হয়ে যায়। যার ফলে পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, এমনকি কখনও কখনও শরীরে ঠান্ডা এবং কাঁপুনি দেখা দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের অনেক কারণ থাকতে পারে।
এই সমস্যা দূর করতে আপনার জন্য ন্যাচারাল ঔষধের কাজ করতে পারে ঘি চা। বিভিন্ন সাস্থ্য গবেষণার ফলাফলে আমরা জানতে পেরেছি । এটা খেতেও ভালো লাগবে আর কিভাবে তৈরি করবেন শিখিয়ে দিব।
হাতের কাছেই পাওয়া যায় অসাধারন পুষ্টিকর খাবার ছোলা।
কোষ্ঠকাঠিন্য সাধারণত ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, PCOD, বা অনিয়মিত ঘুমের চক্র, রাত জাগা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঘটে। এছাড়া অপর্যাপ্ত পানি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ না করা, ব্যায়ামের অভাব, অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া এবং অন্যান্য অনেক কারণে এটি ঘটে।
ঘি চা ১০ টি উপকারিতা জেনে নিন ?
১. ঘি-মিশ্রিত লাল চা একটি পুরানো আয়ুর্বেদিক রেসিপি হিসাবে পরিচিত। যা অন্ত্রের সমস্যা প্রশমিত করতে রেচক হিসাবে কাজ করে। ঘিকে বুট্রিক অ্যাসিডের একটি সমৃদ্ধ উৎস হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যা অন্ত্রের বিপাককে উন্নত করে, মল চলাচলে সহায়তা করে। এটিতে লুব্রিকেটিং এবং হজমের বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। যা অন্ত্রের দেয়ালকে নরম করতে সাহায্য করে, পরিষ্কার করে এবং স্বাস্থ্যকর অন্ত্র বজায় রাখে।
২. কিছু গবেষণা অনুসারে, লাল চা শরীরের নিউরোট্রান্সমিটার রেট বাড়াতে সাহায্য করে। অধিকন্তু, এর ক্যাফেইন উপাদান একটি উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে যা শারীরিক ক্রিয়াকলাপের গতি বাড়াতে পারে। অন্ত্রের গতিবিধিকে উদ্দীপিত করে।
৩. ঘি একটি পুষ্টিকর প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। এটি সহজে হজমযোগ্য চর্বি যা শরীরের তাপ উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
৪. খাঁটি মাখনকে চুলায় মৃদু আঁচে গরম করলেই তা ঘিয়ে পরিণত হয়। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনের অধিকারী হতে অবশ্যই প্রতিদিন ঘি খেতে হবে। অধিক তাপমাত্রায়ও ঘি তার গুনাগুন হারায় না। গরম চায়ে নিশ্চিন্তে মেশাতে পারেন ঘি। চা এবং ঘিয়ের মিশ্রণে তৈরি হয় দারুন পুষ্টিকর খাবার।
দেখুন – ঘি নিয়ে একটি রিসার্চ পেপার।
৫. অনেকের মনে একটা ভুল ধারণা আছে আর তা হলো ঘি স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ হিসেবে তাদের ধারণা হলো ঘি ওজন বারায়। খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। যা ঘি সম্পর্কে ভুল ধারণা। ঘি অতি উচ্চ মানের সাস্থ্যকর চর্বি ঘি এবং চায়ের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মিলে ত্বকের দারুন উপকার করবে। বয়সের ছাপ পরবে দেরিতে।
৫. স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাড়ের সুস্থতা, পাচনতন্ত্রের উন্নতি, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ঘি বেশ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত ১ চা চামচ ঘি খাওয়ার অভ্যাসে আপনার সুস্বাস্থ্যের শতভাগ দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা রাখে এই ঘি। কি ভাবছেন চায়ে মেশাবেন ?
৬. ঘি ওমেগা ৩ এর একটি দারুণ উৎস। এছাড়া এটি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ, ই, ডি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। নিয়মিত ১ কাপ ঘি চা খেলে শরীরের কোষের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।
৭. চুলের সৌন্দর্য আমরা সবাই চিন্তিত। প্রতিদিন এক কাপ করে এই চা খাবেন। ঘিতে আছে সাস্থ্যকর এবং সমৃদ্ধ ফ্যাটি এসিড। যা চুলে শুধু পুষ্টি জোগায় না বরং এটিকে নরম, চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে। তাই হয় আজকে থেকেই এই ঘি চা খাওয়া শুরু করবেন।
৮. চুলে খুশকি সমস্যা থাকলে চুল পরে যায়। এই খুশকি থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই বিশেষ চা দারুন সহায়তা করবে। ত্বকে চুলকানির সমস্যা থাকলেও তা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন নিয়মিত রঙিন পানীয় খাওয়ার মাধ্যমে।
৯. ত্বকের নানান সমস্যার সমাধানে, কর্মক্ষমতা বাড়াতে, স্ট্রেস কমাতে, বাট্রিক অ্যাসিডেন উপাদানের জন্য পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়াতে ঘিয়ের জুরি নেই। ভিটামিন ডি এর উৎস এই ঘি হাড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। আকর্ষণীয় ত্বকের অধিকারী হতে রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন ঘি। চায়ে মিশিয়ে নিন ঘি দিন হোক আনন্দের।
১০. ঘিতে থাকা লিনোলিক অ্যাসিড স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ডকোসাহেক্সায়েনোইক অ্যাসিড (ডিএইচএ) এবং ওমেগা-৬ (সিএলএ) দ্বারা পরিপূর্ণ। এই স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে। ঘি চর্বি কোষ পুড়িয়ে শরীরে অতিরিক্ত শক্তি যোগায়। হঠাৎ সর্দি, কাশি বা কফ থেকে মুক্তি পেতে এই ঘি চা টনিকের মত কাজ করবে।
কেন বাড়ছে ডিভোর্স ? কারন জানলে অবাক হবেন।
ঘি চা কিভাবে তৈরি করবেন।
আমারা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এই চা খেতে বলেছি। কিন্ত আমরা আরও জানতে পেরেছি, ঘি চা আমাদের জন্য কতটা উপকারি হতে পারে। তো প্রতিদিন কয় কাপ খাব ? প্রতিদিন মাত্র এক কাপ খাবেন।
পানি কে পুরোপুরি ফুটান। পানি ফোটার পরে এক মিনিট অপেক্ষা করুন। চুলা নিভিয়ে দিন। প্রয়োজনীয় চা পাতা নিন।শুকনো পরিস্কার কেটলিতে বা অন্য কোন পাত্রে চা পাতা ঢালুন। এবার ফুটন্ত পানি কেটলিতে বা পাত্রটিতে ঢালুন। কেটলির ঢাকনা লাগিয়ে দিন বা পাত্রের মুখ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
চা পাতাকে ভালোভাবে ভিজতে দিন। ৫ মিনিট ধরে ভেজান। ৫ মিনিট পরে লিকার বড় স্টিলের মগে ছেঁকে ঢালুন। এক চামচ ঘি ঢেলে দিন। হ্যান্ড ব্লিন্ডার দিয়ে ব্লিন্ড করুন। দারুনভাবে মিক্সিং হবে। খেতেও সুস্বাদু হবে। সুযোগ না থাকলে সাধারনভাবে চামচ দিয়ে নেড়েচেড়েও তৈরি করতে পারেন।
সেলিম হোসেন – ২৯/০৮/২০২৪ ইং
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.