গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি এবং ৪ টি দারুন উপকারিতা। Raisin soaked in water in summer and its 4 great benefits.

কিশমিশ ভেজানো পানি

কিশমিশ ভেজানো পানি এবং ৪ টি দারুন উপকারিতা

গরমকাল শুরু হয়েছে। প্রতিদিন শরীর থেকে প্রচুর পরিমান ঘাম বের হবে। শরীর পানিশূন্য হবে। হজমে সমস্যা দেখা দিবে। ক্লান্ত হয়ে পরবে শরীর।
গরমে ভালো থাকতে প্রতিদিন ডাবের পানি পান করতে হবে। কারন ডাবের পানির রয়েছে অনেক উপকারিতা। যা গরমের দিনে আরও বেশি উপযোগী। আসুন জেনে নিই ডাবের পানিতে কি পুষ্টি উপাদান আছে। খেলে কোন উপকারে আসবে।

পুষ্টিগুণ:

ডাবের পানি – ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ (পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম)। এতে আরও আছে, ভিটামিন C ও B গ্রুপের কিছু ভিটামিন, অল্প পরিমাণে চিনি ও ক্যালোরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ওজন কমাতে বুলেট কফি কেন খাবেন। কিভাবে খাবেন। 

কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

উপকারিতা:

১. গরমে ঘাম ঝরে শরীর পানি শূন্য হয়। ডাবের পানি দ্রুত পানিশূন্যতা পূরণ করে (অর্থাৎ, হাইড্রেশন)

২. হৃদপিণ্ডের সাস্থ্যের জন্য উপকারী কারন এতে পটাসিয়াম আছে।

৩. হালকা ডায়ারিয়া বা গরমে দুর্বলতা কাটাতে কার্যকর।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক কারন এতে তুলনামুলক কম ক্যালরি আছে।

কিন্ত ডাবের দাম তো বেশি ! ২৫০ মিলি পানি পাওয়া যায় এমন একটি ডাবের দাম ১৫০ টাকা। প্রতিদিন ১ টি ডাব খেলে মাসে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে। যা সবার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।  বিকল্প উপায় কি ? উত্তর হল, কিশমিশ ভেজানো পানি।
কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

কিশমিশ ভেজানো পানি নাকি ডাবের পানি 

ডাবের অসাধারন বিকল্প। ১০০ টাকার কিসমিস ৭-৮ দিন খাওয়া যাবে। তাহলে খরচ কম পরবে।
২৫০ মিলি সাইজের একগ্লাস পানিতে রাতে ভিজিয়ে রাখুন ২০-২৫ টি কিসমিস। সকালে খেয়ে ফেলুন। অথবা সকালে ভিজিয়ে রাখুন। সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফিরবেন। পেট খালি থাকবে, তখন পান করুন।
কিসমিস ভেজানো পানি। সাথে কিসমিস গুলোও চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন।
এই গরমে কিসমিস ভেজানো পানি সুস্থ থাকতে দারুন সাহায্য করবে। আর পুষ্টিতে কোন কোন উপাদানে ডাবের থেকে অনেক বেশি।
আসুন জেনে নিই কিসমিস ভেজানো পানিতে কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে এবং উপকারিতা কি কি ।

কিশমিশ ভেজানো পানির পুষ্টিগুণ 

১. আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম

২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনলস)

৩. প্রাকৃতিক চিনিযুক্ত কিন্তু ভেজানোর ফলে হজম সহজ হয়

৪. ফাইবার (ভেজানো কিসমিস খেলে)

উপকারিতা:

কিশমিশ ভেজানো পানি রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া) প্রতিরোধে সহায়ক কারন এতে আছে আয়রন।হজমে সহায়তা করে, লিভার ডিটক্সে সাহায্য করে। ত্বক ও চুলের জন্য ভালো কারন এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

সুখী হতে চান ? সুখ কি সেটা আগে জেনে নিন। 

কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

ডাবের পানি এবং কিশমিশ ভেজানো পানির তুলনামুলক চিত্র।

বৈশিষ্ট্য ডাবের পানি কিসমিস ভেজানো পানি
পানিশূন্যতা রোধ  খুবই ভালো  সীমিত
আয়রন  কম উচ্চ
ওজন নিয়ন্ত্রণ  সহায়ক  মাঝারি (চিনির কারণে বেশি খেলে প্রভাব ফেলতে পারে)
হজমে সহায়তা  হালকা  ভালো
শক্তি বৃদ্ধিতে  তাত্ক্ষণিক  দীর্ঘমেয়াদি
সকালে খাওয়া  ভালো  খুব ভালো, সন্ধ্যায় খালি পেটে খেতে পারেন।

 কুমড়ো বীজের রয়েছে অসাধারন সাস্থ্য উপকারিতা। সালাদে কিভাবে খাবেন জেনে নিন। 

কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

রাসুলুল্লাহ ﷺ এর খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক হাদীসে নানা ধরনের খাদ্য ও পানীয়ের উল্লেখ আছে, এর মধ্যে “কিশমিশ ভেজানো পানি” (আরবিতে এটাকে বলা হয় “নবীয” / نَبِيذٌ) সম্পর্কিত তথ্য অনেক হাদীসে পাওয়া যায়।

হ্যাঁ, নবীজি ﷺ কিশমিশ বা খেজুর ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করতেন। এই পানীয়কে বলা হতো “নবীয” (Nabeez)।

হাদিস থেকে আমরা দেখতে পাই

সহীহ মুসলিম:

“আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি নবীজিকে (ﷺ) দেখে ছিলাম কিশমিশ পানিতে ভিজিয়ে রাখতেন এবং তা পরদিন সকালে খেতেন।”

(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২০০৪)

দ্রুত চর্বি ঝরিয়ে সুস্থ হওয়ার ৩ টি উপায়। 

কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

নবীজির নিয়ম অনুযায়ী নবিজ তৈরি

এক মুঠো কিশমিশ ভালোমত পানিতে ধুয়ে নিতেন। এরপর পরিমান মত পানি দিয়ে মাটির পাত্রে বা কাঁচের বোতলে ভিজিয়ে রাখতেন।

রাতভর ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে খেতেন।

ভুলক্রমে ২ দিন পার হলে ফেলে দিতেন, কারণ সেটা তখন ফারমেন্ট হয়ে নেশাদ্রব্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকত।

কিশমিশ কোন দেশে কিভাবে তৈরি হয় ? 

যে কিসমিসের এত পুষ্টি গুন তা কিভাবে তৈরি হয় ? রসালো যে আঙুর আমরা বাজারে ফলের দোকানে ঝুলতে দেখি তা শুকিয়ে কিশমিশ করা হয়। এটি বিভিন্ন দেশে উৎপন্ন হয়। নিচে কিসমিস কোথায় কোথায় উৎপন্ন হয় তার একটি তালিকা ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলাম

কিসমিস ভেজানো পানির উপকারিতা নিয়ে বলছেন ডাঃ মিশেল ব্রাউন। 

কিসমিস ভেজানো পানি
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি

সারা বিশ্বে কোন কোন অঞ্চলে কিশমিশ উৎপন্ন হয় 

১. তুরস্ক 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কিশমিশ রপ্তানিকারক।

বিশেষ করে “সালতানা” ধরনের কিশমিশ বিখ্যাত।

২. ইরান 

বহু প্রাচীনকাল থেকেই কিশমিশ উৎপাদনে পারদর্শী।

দেশীয় বাজারে ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা আছে।

৩. আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতে 

“থম্পসন সিডলেস” জাতের আঙুর থেকে তৈরি কিশমিশ সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয়।

বড় আকারের, মিষ্টি ও নরম কিশমিশ উৎপন্ন করে।

৪. আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে 

বিশেষ করে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক রাজ্যে প্রচুর কিশমিশ উৎপাদন হয়।বাংলাদেশে যেসব কিশমিশ পাওয়া যায় তার অনেকটাই ভারত থেকে আসে।

৫. চায়নাতে 

সম্প্রতি কিশমিশ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। তারা নানা ধরনের কিশমিশ উৎপন্ন করে।

সেলিম হোসেন – ২৬.০৪.২০২৫ ইং – ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *